বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা
[১৫। (১) এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে কোন রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থার মাধ্যমে লেনদেন প্রতিরোধ ও সনাক্ত করিতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবে এবং এতদুদ্দেশ্যে উহার নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব থাকিবে, যথা:-
(ক) কোন রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থা হইতে সন্দেহজনক লেনদেন সম্পর্কিত প্রতিবেদন তলব করা, উহা বিশ্লেষণ বা পুনরীক্ষণ করা এবং বিশ্লেষণ বা পুনরীক্ষণের উদ্দেশ্যে উহার সহিত সম্পর্কিত অতিরিক্ত তথ্য সংগ্রহ করা এবং উহার রের্কড বা ড্যাটাবেজ সংরক্ষণ করা এবং, ক্ষেত্রমত, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে উক্ত তথ্য সরবরাহ বা রিপোর্ট প্রদান করা;
(খ) কোন লেনদেন সন্ত্রাসী কার্যের সহিত সম্পৃক্ত মর্মে সন্দেহ করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকিলে, সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থাকে উক্ত লেনদেনের হিসাব অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের জন্য স্থগিত বা অবরুদ্ধ রাখিবার উদ্দেশ্যে লিখিত আদেশ জারি করা এবং এইরূপে উক্ত হিসাবের লেনদেন সম্পর্কিত সঠিক তথ্য উদ্ঘাটনের প্রয়োজন দেখা দিলে লেনদেন স্থগিত বা অবরুদ্ধ রাখিবার মেয়াদ অতিরিক্ত ৩০ (ত্রিশ) দিন করিয়া সর্বোচ্চ ৬ (ছয়) মাস বর্ধিত করা;
(গ) রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থার কার্যক্রম পরিবীক্ষণ ও তদারক করা;
(ঘ) সন্ত্রাসী কার্যে এবং ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের (weapons of mass destruction, WMD) বিস্তারে অর্থ যোগান প্রতিহত করিবার উদ্দেশ্যে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণে রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থাসমূহকে নির্দেশ প্রদান করা;
(ঙ) রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থা কর্তৃক নির্দেশ প্রতিপালন পর্যবেক্ষণ করা এবং এই আইনের যে কোন উদ্দেশ্য পূরণকল্পে রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থাসমূহকে সরেজমিনে পরিদর্শন করা; এবং
(চ) সন্দেহজনক লেনদেন সনাক্ত ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থাসমূহের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
(২) বাংলাদেশ ব্যাংক, সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়নের সহিত সম্পৃক্ত সন্দেহজনক কোন লেনদেনের বিষয়ে কোন রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থা বা উহার গ্রাহককে সনাক্ত করিবার সঙ্গে সঙ্গে, উহা পুলিশ বা যথাযথ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবহিত করিবে, এবং অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যে পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করিবে।
(৩) অপরাধটি যদি অন্য কোন রাষ্ট্রে সংঘটিত হয় বা অন্য কোন রাষ্ট্রে বিচারাধীন থাকে, তাহা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত বিদেশী রাষ্ট্রের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বা কোন আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক বা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুসমর্থিত জাতিসংঘের কনভেনশন বা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক গৃহীত সংশ্লিষ্ট রেজুলেশনের আওতায় কোন ব্যক্তি বা সত্তার হিসাব জব্দ করিবার উদ্যোগ গ্রহণ করিবে।
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন জব্দকৃত অর্থ সংশ্লিষ্ট আদালত কর্তৃক বা সংশ্লিষ্ট চুক্তি, কনভেনশন বা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক গৃহীত রেজুলেশনের আওতায় নিষ্পত্তিযোগ্য হইবে।
(৫) এই আইনের অধীন বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা ও দায়-দায়িত্ব বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বি,এফ,আই,ইউ) কর্তৃক প্রয়োগ ও সম্পাদিত হইবে এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এই আইনের অধীন কোন তথ্য সরবরাহের অনুরোধ করিলে, সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা সংশ্লিষ্ট অন্য কোন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা উহাকে তাহা সরবরাহ করিবে অথবা, ক্ষেত্রমত, স্বপ্রণোদিত হইয়া তথ্য সরবরাহ করিবে।
(৬) বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, অনুরোধের প্রেক্ষিতে বা, ক্ষেত্রমত, স্বপ্রণোদিত হইয়া সন্ত্রাসী কার্য বা সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন সম্পৃক্ত তথ্যাদি অন্য দেশের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা অন্য কোন রাষ্ট্রের অনুরূপ কর্তৃপক্ষকে (counter part) সরবরাহ করিবে।
(৭) সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়নের বিষয়ে তদন্তের স্বার্থে কোন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক কোন ব্যাংকের দলিল বা কোন নথিতে নিম্নবর্ণিত শর্তে প্রবেশাধিকার থাকিবে, যথা:-
(ক) উপযুক্ত আদালত বা বিশেষ ট্রাইব্যুনালের আদেশক্রমে;
অথবা
(খ) বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে।
(৮) যদি কোন রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থা এই ধারার অধীন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা প্রতিপালনে ব্যর্থ হয় অথবা জ্ঞাতসারে কোন ভুল বা মিথ্যা তথ্য বা বিবরণী সরবরাহ করে, তাহা হইলে উক্ত রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ও নির্দেশিত অনূর্ধ্ব ২৫ (পঁচিশ) লক্ষ টাকা জরিমানা পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত সংস্থা বা সংস্থার কোন শাখা, সেবাকেন্দ্র, বুথ বা এজেন্টের বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধ করিবার উদ্দেশ্যে উহার নিবন্ধন বা লাইসেন্স স্থগিত করিতে পারিবে অথবা, ক্ষেত্রমত, উক্ত সংস্থার বিরুদ্ধে যথাযথ কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নিবন্ধনকারী বা লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করিবে।
(৯) যদি কোন রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক উপ-ধারা (৮) অনুসারে আরোপিত জরিমানা পরিশোধে ব্যর্থ হয় বা পরিশোধ না করে, তাহা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থার নিকট হইতে উক্ত জরিমানার অর্থ উক্ত সংস্থা কর্তৃক অন্য কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বাংলাদেশ ব্যাংকে পরিচালিত হিসাব বিকলনপূর্বক আদায় করিতে পারিবে এবং জরিমানার কোন অংশ অনাদায়ী বা অপরিশোধিত থাকিলে, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রয়োজনে, উহা আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতে আবেদন করিতে পারিবে।]