প্রিন্ট ভিউ

স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯

( ২০০৯ সনের ৬১ নং আইন )

সপ্তম অধ্যায়

পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সম্পর্কিত বিধান

পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের শপথ বা ঘোষণা

২৮। (১) চেয়ারম্যান ও প্রত্যেক সদস্য তাঁহার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে প্রথম তফসিলে উল্লিখিত ফরমে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোন ব্যক্তির সম্মুখে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা প্রদান করিবেন এবং শপথপত্র বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিবেন।

 
 

(২) চেয়ারম্যান বা সদস্য হিসাবে নির্বাচিত ব্যক্তিগণের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইবার ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান ও সকল সদস্যের শপথ গ্রহণ বা ঘোষণার জন্য সরকার বা তদ্‌কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।

পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের কার্যকাল

২৯। (১) কোন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ, এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, সংশ্লিষ্ট পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠানের তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর সময়ের জন্য উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।

 
 

1[(২) নির্বাচন সম্পন্ন হইবার পর অবিলম্বে চেয়ারম্যান ও সদস্যের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইবে এবং তাঁহাদের শপথ গ্রহণের তারিখ হইতে পরবর্তী ১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হইবে|]

 
 

(৩) পরিষদ গঠনের জন্য কোন সাধারণ নির্বাচন ঐ পরিষদের জন্য অনুষ্ঠিত পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর পূর্ণ হইবার ১৮০ (এক শত আশি) দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হইবে।

 
 

(৪) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষে নির্বাচনের পর উহার তিন-চতুর্থাংশ সদস্য শপথ গ্রহণ করিলে ইউনিয়নটি যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

 
 

ব্যাখ্যাঃ গঠিত পরিষদের মোট সদস্যদের তিন-চতুর্থাংশ নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভগ্নাংশের উদ্ভব হইলে এবং তাহা দশমিক পাঁচ শুন্য শতাংশের কম হইলে অগ্রাহ্য করিতে হইবে এবং দশমিক পাঁচ শুন্য শতাংশ বা তার বেশী হইলে তাহা এক বলিয়া গণ্য করিতে হইবে।

 
 

2[(৫) দৈব-দুর্বিপাক বা অন্য কোন কারণে নির্ধারিত ৫ (পাঁচ) বৎসর মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হইলে, সরকার লিখিত আদেশ দ্বারা, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত, পরিষদের কার্যাবলী পরিচালনার জন্য ১ (এক) জন উপযুক্ত কর্মকর্তা বা উপযুক্ত ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করিতে পারিবে এবং প্রশাসকের মেয়াদ হইবে ধারা ১৮ এ বর্ণিত প্রশাসকের মেয়াদের অনুরূপ|]

দায়িত্ব হস্তান্তর

3[৩০। পরিষদ গঠনের বা প্রশাসক নিয়োগের পর, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, পূর্ববর্তী চেয়ারম্যান বা প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য বা প্রশাসক তাহার দখলে বা নিয়ন্ত্রণে থাকা পরিষদের সকল নগদ অর্থ, পরিসম্পদ, দলিল-দস্তাবেজ, রেজিস্টার ও সিলমোহর যথাশীঘ্র সম্ভব অথবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক স্থিরীকৃত তারিখ, সময় ও স্থানে নূতন নির্বাচিত চেয়ারম্যান, বা ক্ষেত্রমত, প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য বা প্রশাসকের নিকট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মনোনীত ১ (এক) জন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বুঝাইয়া দিবেন|]

ব্যত্যয়ের দণ্ড

৩১। 4[(১) যদি কোন চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন সদস্য বা প্রশাসক ধারা ৩০ অনুযায়ী নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে তাহার বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তাহার উপর অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা জরিমানা আরোপিত হইবে|]

 
 

(২) কোন চেয়ারম্যান বা সদস্য ধারা ২৬ (৩) অনুযায়ী তাহার অযোগ্যতা সম্পর্কে মিথ্যা হলফনামা দাখিল করিলে তিনি ৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত মেয়াদে কারাদণ্ড অথবা ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের পদত্যাগ

৩২। (১) কোন সদস্য পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর তাঁহার পদত্যাগ করিবার অভিপ্রায় লিখিতভাবে ব্যক্ত করিয়া পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ পদত্যাগ পত্র চেয়ারম্যান কর্তৃক গৃহীত হওয়ার সাথে সাথে উক্ত সদস্যের পদ শুন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট সদস্যের পদত্যাগ পত্র গৃহীত হওয়ার বিষয়টি অনধিক ৭ (সাত) দিনের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করিবেন।

 
 

5[(২) চেয়ারম্যান এতদুদ্দেশ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট, তাহার পদত্যাগ করিবার অভিপ্রায় লিখিতভাবে আবেদন করিয়া পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং উক্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক পদত্যাগপত্র গৃহীত হইবার সঙ্গে সঙ্গে উক্ত চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইবে|]

 
 

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন পদত্যাগের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনধিক ৭ (সাত) দিনের মধ্যে পরিষদ, নির্বাচন কমিশন এবং সরকারকে অবহিত করিবেন।

চেয়ারম্যানের প্যানেল

৩৩। (১) পরিষদ গঠিত হইবার পর প্রথম অনুষ্ঠিত সভার ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে অগ্রাধিকারক্রমে ৩ (তিন) সদস্যবিশিষ্ট একটি চেয়ারম্যানের প্যানেল, সদস্যগণ তাঁহাদের নিজেদের মধ্য হইতে নিবার্চন করিবেনঃ

 
 

তবে শর্ত থাকে যে, নির্বাচিত ৩(তিন) জন চেয়ারম্যান প্যানেলের মধ্যে কমপক্ষে ১ (এক) জন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যগণের মধ্য হইতে নির্বাচিত হইবেন।

 
 

(২) অনুপস্থিতি, অসুস্থতাহেতু বা অন্য যে কোন কারণে চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে তিনি পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত চেয়ারম্যানের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।

 
 

(৩) পদত্যাগ, অপসারণ, মৃত্যুজনিত অথবা অন্য যে কোন কারণে চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে নির্বাচিত নতুন চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত চেয়ারম্যানের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।

 
 

(৪) এই আইনের বিধান অনুযায়ী চেয়ারম্যানের প্যানেলভুক্ত সদস্যগণ অযোগ্য হইলে অথবা ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করিলে পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে নতুন চেয়ারম্যানের প্যানেল তৈরী করা যাইবে।

 
 

(৫) উপ-ধারা (১) ও (৪) অনুযায়ী সদস্যদের মধ্য হইতে চেয়ারম্যানের প্যানেল প্রস্তুত করা না হইলে, সরকার প্রয়োজন অনুসারে, সদস্যগণের মধ্য হইতে চেয়ারম্যানের প্যানেল তৈরি করিতে পারিবে।

চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের সাময়িক বরখাস্তকরণ ও অপসারণ
 

৩৪। (১) যে ক্ষেত্রে কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যের বিরুদ্ধে উপ-ধারা (৪) এ বর্ণিত অপরাধে অপসারণের জন্য কার্যক্রম আরম্ভ করা হইয়াছে অথবা তাঁহার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলায় অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হইয়াছে অথবা অপরাধ আদালত কর্তৃক আমলে নেওয়া হইয়াছে, সেইক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের মতে চেয়ারম্যান অথবা সদস্য কর্তৃক ক্ষমতা প্রয়োগ পরিষদের স্বার্থের পরিপন্থী অথবা প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন না হইলে, সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে চেয়ারম্যান অথবা সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে পারিবে।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীনে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে আদেশ প্রাপ্তির ৩ (তিন) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ধারা ৩৩ এর বিধানমতে নির্বাচিত প্যানেল চেয়ারম্যানের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করিবেন এবং উক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা চেয়ারম্যান অপসারিত হইলে তাঁহার স্থলে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।

 

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীনে পরিষদের কোন সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে উক্ত সদস্যের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা উক্ত সদস্য অপসারিত হইলে তাঁহার স্থলে নতুন সদস্য নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে অপর একজন সদস্য উক্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।

 

(৪) চেয়ারম্যান বা সদস্য তাঁহার স্বীয় পদ হইতে অপসারণযোগ্য হইবেন, যদি, তিনি-

 

(ক) যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে পরিষদের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন;

 

(খ) পরিষদ বা রাষ্ট্রের স্বার্থের হানিকর কোন কার্যকলাপে জড়িত থাকেন, অথবা দুর্নীতি বা অসদাচরণ বা নৈতিক স্খলনজনিত কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া দণ্ডপ্রাপ্ত হইয়া থাকেন;

 

(গ) তাঁহার দায়িত্ব পালন করিতে অস্বীকার করেন অথবা শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন;

 

(ঘ) অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দোষে দোষী হন অথবা পরিষদের কোন অর্থ বা সম্পত্তির কোন ক্ষতি সাধন বা উহার আত্মসাতের বা অপপ্রয়োগের জন্য দায়ী হন;

 

(ঙ) এই আইনের ধারা ২৬ (২) অনুযায়ী নির্বাচনের অযোগ্য ছিলেন বলিয়া নির্বাচনের পর যদি প্রমাণিত হয়;

 

(চ) বার্ষিক ১২ (বার) টি মাসিক সভার স্থলে ন্যূনতম ৯ (নয়) টি সভা গ্রহণযোগ্য কারণ ব্যতীত অনুষ্ঠান করিতে ব্যর্থ হন;

 

(ছ) নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব দাখিল না করেন কিংবা দাখিলকৃত হিসাবে অসত্য তথ্য প্রদান করেন; অথবা

 

(জ) বিনা অনুমতিতে দেশ ত্যাগ করেন অথবা অনুমতিক্রমে দেশ ত্যাগের পর সেখানে অননুমোদিতভাবে অবস্থান করেন।

 

ব্যাখ্যাঃ এই উপ-ধারায় 'অসদাচরণ' বলিতে ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্তব্যে অবহেলা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ইচ্ছাকৃত কুশাসনও বুঝাইবে।

 

(৫) সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে আদেশ দ্বারা, উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত এক বা একাধিক কারণে চেয়ারম্যান বা সদস্যকে অপসারণ করিতে পারিবে :

 

তবে শর্ত থাকে যে, অপসারণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করিবার পূর্বে বিধি মোতাবেক তদন্ত করিতে হইবে ও অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হইবে।

 

(৬) কোন চেয়ারম্যান বা সদস্য এর অপসারণের প্রস্তাব, সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদন লাভের পর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে অপসারিত হইবেন।

 

(৭) পরিষদের কোন চেয়ারম্যান বা সদস্যকে উপ-ধারা (৫) অনুযায়ী তাঁহার পদ হইতে অপসারণ করা হইলে তিনি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত আদেশের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে আপিল করিতে পারিবেন এবং আপিল কর্তৃপক্ষ উক্ত আপিলটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপসারণ আদেশটি স্থগিত রাখিতে পারিবেন এবং আপিলকারীকে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দানের পর উক্ত আদেশটি পরিবর্তন, বাতিল বা বহাল রাখিতে পারিবেন।

 

(৮) আপিল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উপ-ধারা (৭) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

 

(৯) এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারা অনুযায়ী অপসারিত কোন ব্যক্তি কোন পদে সংশ্লিষ্ট পরিষদের কার্যকালের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না।

চেয়ারম্যান বা সদস্য পদ শূন্য হওয়া

৩৫। (১) চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদ শূন্য হইবে, যদি-

 
 

(ক) তিনি ধারা ২৬ (২) অনুযায়ী চেয়ারম্যান বা সদস্য হইবার অযোগ্য হইয়া পড়েন;

 
 

(খ) তিনি ধারা ৩৪ অনুযায়ী সাময়িকভাবে বরখাস্ত হন বা অপসারিত হন;

 
 

(গ) তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধারা ২৮ (১) এ বর্ণিত শপথ গ্রহণ করিতে ব্যর্থ হন;

 
 

(ঘ) তিনি ধারা ৩২ এর অধীন পদত্যাগ করেন;

 
 

(ঙ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন; অথবা

 
 

(চ) ধারা ৩৯ অনুযায়ী তাহার বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।

 
 

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদ শূন্য হইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করিয়া পদটি শূন্য ঘোষণা করিবেন।

শূন্য পদ পূরণ

৩৬। যদি কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যের পদ তাঁহার মৃত্যু, পদত্যাগ, অপসারণ বা অন্যবিধ কারণে তাঁহার মেয়াদ পূর্তির কমপক্ষে ১৮০ (একশত আশি) দিন পূর্বে শূন্য হয়, তাহা হইলে, উক্ত শূন্যতার তারিখ হইতে ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে অবশিষ্ট সময়ের জন্য শূন্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠান করিতে হইবে:

 
 

তবে শর্ত থাকে যে, দৈব দুর্বিপাক জনিত কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হইলে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের জন্য সুবিধাজনক তারিখ নির্ধারণ করিতে পারিবে।

সদস্যপদ পুনর্বহাল

৩৭। পরিষদের কোন নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা সদস্য এই আইনের বিধান অনুযায়ী সাময়িকভাবে বরখাস্ত বা অপসারিত হইয়া অথবা অযোগ্য ঘোষিত হইয়া সদস্যপদ হারাইবার পর আপিলে তাঁহার উক্তরূপ সাময়িক বরখাস্ত আদেশ বা অপসারণ আদেশ রদ বা বাতিল বা প্রত্যাহার হইলে বা তাঁহার অযোগ্যতা অবলোপন হইলে, তাহার সদস্যপদ পুনর্বহাল হইবে এবং তিনি অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য স্ব-পদে বহাল হইবেন।

চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের অধিকার ও দায়বদ্ধতা

৩৮। (১) পরিষদের চেয়ারম্যান বা প্রত্যেক সদস্যের এই আইন ও সংশ্লিষ্ট বিধানাবলী সাপেক্ষে পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার থাকিবে।

 
 

(২) পরিষদের প্রত্যেক সদস্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সভাপতির নিকট পরিষদের বা স্থায়ী কমিটির প্রশাসনিক এখতিয়ারভুক্ত বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন বা কৈফিয়ৎ দাবী করিতে পারিবেন।

 
 

(৩) পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট নোটিশ প্রদান করিয়া পরিষদের যে কোন সদস্য অফিস চলাকালীন সময়ে, গোপনীয় নথিপত্র ব্যতীত, রেকর্ড ও নথিপত্র দেখিতে পারিবেন।

 
 

(৪) পরিষদের চেয়ারম্যান বা প্রত্যেক সদস্য পরিষদ বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়িত কোন কাজ বা প্রকল্পের ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে পরিষদের মনোযোগ আকর্ষণ করিতে পারিবেন।

 
 

(৫) পরিষদের চেয়ারম্যান, স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সদস্যগণ এই আইনের বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে পরিষদের কার্য পরিচালনা করিবেন এবং পরিষদের নিকট যৌথভাবে দায়ী থাকিবেন।

 
 

(৬) সংরক্ষিত আসনের সদস্য এবং সাধারন আসনের সদস্যদের দায়িত্ব এবং কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

 
 
 
অনাস্থা প্রস্তাব

৩৯। (১) এই ধারার বিধান সাপেক্ষে পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য বা পরিষদের উপর সুনির্দিষ্ট অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে।

 
 

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী অনাস্থা প্রস্তাব পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের স্বাক্ষরে লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট পরিষদের যে কোন একজন সদস্য ব্যক্তিগতভাবে দাখিল করিবেন।

 
 

(৩) অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে একজন কর্মকর্তা নিয়োগ করিবেন এবং উক্ত কর্মকর্তা অভিযোগসমূহের বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য ১০ (দশ) কার্যদিবসের সময় প্রদান করিয়া অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বা সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিবেন।

 
 

(৪) জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হইলে উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা জবাব প্রাপ্তির অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবে যে সকল অভিযোগের বর্ণনা করা হয়েছে, সে সকল অভিযোগ তদন্ত করিবেন।

 
 

(৫) তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হইলে উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা অনধিক ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বা সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সকল নিবার্চিত সদস্যের নিকট সভার নোটিশ প্রেরণ নিশ্চিতকরণপূর্বক পরিষদের বিশেষ সভা আহবান করিবেন।

 
 

(৬) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে প্যানেল চেয়ারম্যান (ক্রমানুসারে) এবং কোন সদস্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে পরিষদের চেয়ারম্যান সভায় সভাপতিত্ব করিবেনঃ

 
 

তবে শর্ত থাকে যে, চেয়ারম্যান বা প্যানেল চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে উপস্থিত সদস্য্যগণের মধ্যে একজন সদস্যকে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সভাপতি নিবার্চিত করা যাইবে।

 
 

(৭) উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা সভায় একজন পর্যবেক্ষক হিসাবে উপস্থিত থাকিবেন।

 
 

(৮) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্যে আহুত সভাটি নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কোন কারণ ছাড়া স্থগিত করা যাইবে না এবং মোট নির্বাচিত সদস্য সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য সমন্বয়ে সভার কোরাম গঠিত হইবে।

 
 

(৯) সভা শুরু হইবার তিন ঘন্টার মধ্যে উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব না হইলে অনাস্থা প্রস্তাবটির উপর গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করিতে হইবে।

 
 

(১০) সভার সভাপতি অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে কোন প্রকাশ্য মতামত প্রকাশ করিবেন না তবে তিনি ব্যালটের মাধ্যমে উপ-ধারা (৯) অনুযায়ী ভোট প্রদান করিতে পরিবেন কিন্তু তিনি নির্ণায়ক বা দ্বিতীয় ভোট দিতে পারিবেন না।

 
 

(১১) অনাস্থা প্রস্তাবটি কমপক্ষে ৯ (নয়) জন সদস্য কর্তৃক ভোটে গৃহীত হইতে হইবে।

 
 

(১২) উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা সভা শেষ হইবার পর অনাস্থা প্রস্তাবের কপি, ব্যালট পেপার, ভোটের ফলাফলসহ সভার কার্যবিবরণী প্রস্তুত করিয়া আনুষঙ্গিক কাগজপত্রসহ সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন।

 
 

(১৩) সরকার, উপযুক্ত বিবেচনা করিলে, অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন অথবা অননুমোদন করিবে।

 
 

(১৪) অনাস্থা প্রস্তাবটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটে গৃহীত না হইলে অথবা কোরামের অভাবে সভা অনুষ্ঠিত না হইলে উক্ত তারিখের পর ৬ (ছয়) মাস অতিক্রান্ত না হইলে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বা সদস্যের বিরুদ্ধে অনুরূপ কোন অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে না।

 
 

(১৫) পরিষদের চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের দায়িত্বভার গ্রহণের ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে তাহার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে না।

চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের ছুটি

৪০। কোন চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যকে পরিষদ যুক্তিসঙ্গত কারণে ১ (এক) বৎসরে সর্বোচ্চ ৩ (তিন) মাস ছুটি মঞ্জুর করিতে পারিবেঃ

 
 

তবে শর্ত থাকে যে, ৩ (তিন) মাসের অধিক ছুটি প্রয়োজন হইলে সরকারের অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবেঃ

 
 

আরো শর্ত থাকে যে, মহিলা চেয়ারম্যান বা সদস্যের মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগের ক্ষেত্রে সরকারি বিধি বিধান প্রযোজ্য হইবে।

সম্পত্তি সম্পর্কিত ঘোষণা

৪১। চেয়ারম্যান ও সদস্য তাঁহার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে তাঁহার এবং তাঁহার পরিবারের কোন সদস্যের স্বত্ব, দখল বা স্বার্থ আছে এই প্রকার যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির একটি লিখিত বিবরণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও নির্ধারিত ব্যক্তির নিকট দাখিল করিবেন।

 
 

ব্যাখ্যা।-"পরিবারের সদস্য" বলিতে চেয়ারম্যান ও সদস্যের স্বামী বা স্ত্রী এবং তাঁহার সংগে বসবাসকারী এবং তাঁহার উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল তাঁহার ছেলে-মেয়ে, পিতা, মাতা ও ভাই-বোনকে বুঝাইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs