প্রিন্ট ভিউ
[সেকশন সূচি]
সপ্তম অধ্যায়
পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সম্পর্কিত বিধান
৩৪। (১) যে ক্ষেত্রে কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যের বিরুদ্ধে উপ-ধারা (৪) এ বর্ণিত অপরাধে অপসারণের জন্য কার্যক্রম আরম্ভ করা হইয়াছে অথবা তাঁহার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলায় অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হইয়াছে অথবা অপরাধ আদালত কর্তৃক আমলে নেওয়া হইয়াছে, সেইক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের মতে চেয়ারম্যান অথবা সদস্য কর্তৃক ক্ষমতা প্রয়োগ পরিষদের স্বার্থের পরিপন্থী অথবা প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন না হইলে, সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে চেয়ারম্যান অথবা সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীনে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে আদেশ প্রাপ্তির ৩ (তিন) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ধারা ৩৩ এর বিধানমতে নির্বাচিত প্যানেল চেয়ারম্যানের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করিবেন এবং উক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা চেয়ারম্যান অপসারিত হইলে তাঁহার স্থলে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীনে পরিষদের কোন সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে উক্ত সদস্যের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা উক্ত সদস্য অপসারিত হইলে তাঁহার স্থলে নতুন সদস্য নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে অপর একজন সদস্য উক্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৪) চেয়ারম্যান বা সদস্য তাঁহার স্বীয় পদ হইতে অপসারণযোগ্য হইবেন, যদি, তিনি-
(ক) যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে পরিষদের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন;
(খ) পরিষদ বা রাষ্ট্রের স্বার্থের হানিকর কোন কার্যকলাপে জড়িত থাকেন, অথবা দুর্নীতি বা অসদাচরণ বা নৈতিক স্খলনজনিত কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া দণ্ডপ্রাপ্ত হইয়া থাকেন;
(গ) তাঁহার দায়িত্ব পালন করিতে অস্বীকার করেন অথবা শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন;
(ঘ) অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দোষে দোষী হন অথবা পরিষদের কোন অর্থ বা সম্পত্তির কোন ক্ষতি সাধন বা উহার আত্মসাতের বা অপপ্রয়োগের জন্য দায়ী হন;
(ঙ) এই আইনের ধারা ২৬ (২) অনুযায়ী নির্বাচনের অযোগ্য ছিলেন বলিয়া নির্বাচনের পর যদি প্রমাণিত হয়;
(চ) বার্ষিক ১২ (বার) টি মাসিক সভার স্থলে ন্যূনতম ৯ (নয়) টি সভা গ্রহণযোগ্য কারণ ব্যতীত অনুষ্ঠান করিতে ব্যর্থ হন;
(ছ) নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব দাখিল না করেন কিংবা দাখিলকৃত হিসাবে অসত্য তথ্য প্রদান করেন; অথবা
(জ) বিনা অনুমতিতে দেশ ত্যাগ করেন অথবা অনুমতিক্রমে দেশ ত্যাগের পর সেখানে অননুমোদিতভাবে অবস্থান করেন।
ব্যাখ্যাঃ এই উপ-ধারায় 'অসদাচরণ' বলিতে ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্তব্যে অবহেলা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ইচ্ছাকৃত কুশাসনও বুঝাইবে।
(৫) সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে আদেশ দ্বারা, উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত এক বা একাধিক কারণে চেয়ারম্যান বা সদস্যকে অপসারণ করিতে পারিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, অপসারণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করিবার পূর্বে বিধি মোতাবেক তদন্ত করিতে হইবে ও অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হইবে।
(৬) কোন চেয়ারম্যান বা সদস্য এর অপসারণের প্রস্তাব, সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদন লাভের পর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে অপসারিত হইবেন।
(৭) পরিষদের কোন চেয়ারম্যান বা সদস্যকে উপ-ধারা (৫) অনুযায়ী তাঁহার পদ হইতে অপসারণ করা হইলে তিনি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত আদেশের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে আপিল করিতে পারিবেন এবং আপিল কর্তৃপক্ষ উক্ত আপিলটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপসারণ আদেশটি স্থগিত রাখিতে পারিবেন এবং আপিলকারীকে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দানের পর উক্ত আদেশটি পরিবর্তন, বাতিল বা বহাল রাখিতে পারিবেন।
(৮) আপিল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উপ-ধারা (৭) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
(৯) এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারা অনুযায়ী অপসারিত কোন ব্যক্তি কোন পদে সংশ্লিষ্ট পরিষদের কার্যকালের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না।