প্রিন্ট ভিউ

[সেকশন সূচি]

বীমা আইন, ২০১০

( ২০১০ সনের ১৩ নং আইন )

পঞ্চম অধ্যায়

অপরাধ ও দণ্ড

কতিপয় ক্ষেত্রে বীমাকারীর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার বা ক্ষতিপূরণ দানের আদেশ প্রদানে আদালতের ক্ষমতা৷
১৩৬৷ (১) কোন আদালত কর্তৃপক্ষ অথবা ধারা ৯৫ এর অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন প্রশাসক অথবা বীমাকারীর অথবা বীমা কোম্পানীর কোন সদস্য বা বীমা কোম্পানীর অবসায়ক (অবসায়নাধীন কোন কোম্পানীর ক্ষেত্রে) আবেদনের প্রেক্ষিতে যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে-
 
(ক) কোন বীমাকারী (যেইক্ষেত্রে বীমাকারী একটি বীমা কোম্পানী সেইক্ষেত্রে উক্ত বীমাকারী কোম্পানীর সংগঠন ও গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কোন ব্যক্তি বা কোন প্রাক্তন বা বর্তমান পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব অথবা অবসায়ক অন্তর্ভুক্ত) অথবা বীমাকারীর কোন কর্মকর্তা, কর্মচারী অথবা বীমা এজেন্ট;
 
(অ) কোন বীমাকারীর টাকা বা সম্পত্তি অপব্যবহার করিয়াছেন বা দখলে রাখিয়াছেন অথবা এই দায়ে দায়ী হইয়াছেন অথবা তজ্জন্য দায়ী জবাবদিহিতার মুখোমুখি হইয়াছেন, বা
 
(আ) বীমাকারী-সংশ্লিষ্ট কোন বৈধ কাজ অন্যায়ভাবে সম্পন্ন করিবার জন্য বা বিশ্বাস ভংগের দায়ে অভিযুক্ত হইয়াছেন;
 
(খ) কোন ব্যক্তি, যিনি কোন প্রকারে বীমাকারীর ব্যবসায়ের সহিত সংশ্লিষ্ট আছেন বা ছিলেন, অন্যায়ভাবে বীমাকারীর কোন অর্থ বা সম্পত্তি দখলে রাখিয়াছেন অথবা অন্যায়ভাবে উক্ত অর্থ বা সম্পত্তি দখলে রাখিয়া তাহা বেআইনীভাবে ধারণ করিয়াছেন বা বীমাকারীর ব্যবহার ভিন্ন অন্য কোন ব্যবহারে রূপান্তর করিয়াছেন, অথবা
 
(গ) এই আইনের বিধান লংঘন জনিত কোন কারনে লাইফ ইন্স্যুরেন্স তহবিলের অর্থ হ্রাস পায়; তাহা হইলে আদালত অনুরূপ কোন বীমাকারী, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধি, সচিব বা অবসায়ক বা এইরূপ অন্য কর্মকর্তা, কর্মচারী, বীমা এজেন্ট বা প্রযোজ্য অন্য কোন ব্যক্তিকে পরীক্ষা করিতে পারিবেন এবং আদালত যেরূপ সঠিক বিবেচনা করিবেন অপব্যবহৃত, অধিকারভুক্ত বা অন্যায় কর্ম সম্পাদন বা বিশ্বাসভংগের ক্ষতিপূরণ হিসাবে বীমাকারীর অনুকুলে তাহার সম্পদে সেই পরিমাণ অর্থ প্রদান করিতে তাহাকে বাধ্য করিতে পারিবেন অথবা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বীমাকারীর কোন অর্থ বা সম্পদ বা উহার অংশ বিশেষ পুনর্বহাল করিতে বাধ্য করিতে পারিবেন, এবং লাইফ ইন্সু্যরেন্স তহবিলের অর্থের পরিমাণ এই আইনের কোন বিধান লংঘন এর কারণে হ্রাস পাইলে, ঐ অর্থ কি পরিমাণ হ্রাস পাইয়াছে তাহা নির্ধারণ করিবার ক্ষমতা আদালতের থাকিবে এবং অনুরূপ লংঘনের জন্য দোষী ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ স্বরূপ উক্ত অর্থের সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ বীমা ইন্স্যুরেন্স তহবিলে প্রদানের আদেশ প্রদান করিবার ক্ষমতাও আদালতের থাকিবে ; এবং পূর্ব উল্লিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রে আদালত যাহা যথার্থ মনে করিবেন সেইরূপ হারে এবং সময়ের জন্য সুদ পরিশোধ করিবার আদেশ প্রদানের ক্ষমতা থকিবে৷
 
(২) উপ-ধারা (১) বা উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত বিধান সমূহ ক্ষুন্ন না করিয়া, যখন এইরূপ প্রমাণিত হয় যে, কোন বীমাকারীর কোন অর্থ বা সম্পত্তি অন্তর্হিত হইয়াছে বা হারাইয়া গিয়াছে তবে আদালত এইরূপ অনুমান করিবে যে প্রাথমিক সময়ে উক্ত অর্থ বা সম্পত্তির দায়িত্বে নিয়োজিত প্রত্যেক ব্যক্তি (তিনি একজন পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্যবস্থাপক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা অন্য কোন কর্মকর্তা হউন না কেন) উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) এর উপ-দফা (অ) অনুযায়ী উক্ত অর্থ বা সম্পত্তি অন্তর্হিত হওয়া বা হারাইয়া যাওয়ার দায়ে দায়ী হইয়াছেন এবং সেই প্রেক্ষিতে একই উপ-ধারার বিধান একইভাবে প্রয়োগযোগ্য হইবে, যদি না উক্ত ব্যক্তি এইরূপ প্রমাণ করিতে পারেন যে, সংশ্লিষ্ট অর্থ বা সম্পত্তি বীমাকারীর বীমা ব্যবসায়কালীন সময়ে ব্যবহার করা হইয়াছে বা বন্টন করা হইয়াছে এবং উক্ত অর্থ অন্তর্হিত হওয়া বা হারাইয়া যাওয়া হইতে রক্ষার্থে সকল যৌক্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ করিয়াছেন এবং ঐ অর্থ বা সম্পত্তির অন্তর্হিত হওয়া সম্পর্কে অন্য কোন প্রকার সন্তোষজনক হিসাব প্রদান করিতে পারেন৷
 
(৩) বীমাকারী একটি বীমা কোম্পানী হইলে এবং উপ-ধারা (১) এর দফা (ক), (খ) এবং (গ) এ বর্ণিত কার্যাবলীর কোন একটি ঐ বীমা কোম্পানীর যে কোন ব্যক্তি কর্তৃক সংঘটিত হইলে, প্রত্যেক ব্যক্তি যিনি উক্ত প্রাসঙ্গিক সময়ে বীমা কোম্পানীর পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্যবস্থাপক, অবসায়ক, সচিব বা অন্য কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত ছিলেন, এই উপ-ধারার উদ্দেশ্যে তাহারা উক্ত কার্যাবলী সম্পাদন করিয়াছেন এইরূপ ব্যক্তির অনুরূপভাবে এবং অনুরূপ ব্যাপকতায় উহার জন্য দায়ী বলিয়া বিবেচিত হইবেন; যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত ঘটনা তাহার অনুমতি অথবা সহযোগিতা ব্যতীত সংঘটিত হইয়াছে এবং তাহার কোন গাফিলতি বা ক্রটির কারণে সংঘঠিত হয় নাই৷
 
(৪) এই ধারার অধীন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কার্যক্রমের যে কোন পর্যায়ে (অতঃপর অভিযুক্ত নামে উল্লেখিত) আদালত যদি হলফনামা বা অন্য কোন প্রকারে এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিপক্ষে দৃশ্যতঃ একটি মোকদ্দমার ক্ষেত্র প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে ; এবং বীমাকারীর বীমা পলিসি গ্রাহক অথবা বীমা কোম্পানীর সদস্যদের স্বার্থ রক্ষার্থে যথাযথ ও ন্যায় সঙ্গত ভিত্তি রহিয়াছে তাহা হইলে আদালত নিম্নরূপ ক্রোক করিবার আদেশ প্রদান করিবেন যথা:-
 
(ক) অভিযুক্ত ব্যক্তির দখলে থাকা বীমাকারীর সম্পত্তি ;
 
(খ) অভিযুক্ত ব্যক্তির মালিকাধীন কোন সম্পত্তি যাহা উপ-ধারা (৫) এর অর্থ অনুযায়ী তাহার দখলে রহিয়াছে বা দখলে আছে বলিয়া বিবেচিত ;
 
(গ) উপ-ধারা (১) এর অধীন কার্যধারা আরম্ভ হওয়ার পূর্বে ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে বা উক্ত কার্যধারা চলাকালীন সময়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি দ্বারা হস্তান্তর হইয়াছে এইরূপ কোন সম্পত্তি ক্রোক করিবার ক্ষমতা রাখেন, যদি আদালত সত্যপাঠ বা অন্য কোন প্রকারে এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, উক্ত হস্তান্তর সরল বিশ্বাসে বা ন্যায্য মূল্যে হস্তান্তরিত হয় নাই ৷
 
(৫) উপ-ধারা (৪) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নিম্নোক্ত শ্রেণীর সম্পত্তি সমূহ অভিযুক্ত ব্যক্তির বলিয়া গণ্য হইবে, যথাঃ-
 
(ক) কোন ব্যক্তির নামে থাকা কোন সম্পত্তি আত্মীয়তা জনিত কারণে বা অন্য কোন প্রাসঙ্গিক কারণে অভিযুক্ত ব্যক্তির সহিত সম্পর্কের কারণে অভিযুক্ত ব্যক্তির বলিয়া প্রতীয়মান হয়;
 
(খ) মালিকানাধীন কোম্পানীর সম্পত্তি, যেইক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজে বা তাহার মনোনীত আত্মীয়, অংশীদার বা কোম্পানীর শেয়ারে আগ্রহী ব্যক্তিগণের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উহার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগ বা গ্রহণের অধিকারী হয়৷
 
ব্যাখ্যাঃ- এই উপ-ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কোন ব্যক্তি একজন অভিযুক্ত ব্যক্তির মনোনীত ব্যক্তি বলিয়া গণ্য হইবেন যদি তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তিনি অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষে বা অভিযুক্ত ব্যক্তির নির্দেশের মাধ্যমে এমন ক্ষমতার অধিকার অর্জন করেন যাহা দ্বারা অভিযুক্ত ব্যক্তি কোম্পানীর বিষয়াদির নিয়ন্ত্রণের অধিকারী হন ৷
 
(৬) এই ধারার অধীন ক্রোককৃত কোন সম্পত্তিতে দাবী বা উক্ত ক্রোকের বিরুদ্ধে কোন আপত্তি থাকিলে তাহা আদালতে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে করিতে হইবে; এবং এই ধারার অধীন উক্ত সম্পত্তি ক্রোকযোগ্য নহে এই মর্মে দাবীকারী বা আপত্তি উত্থাপনকারীকে প্রমাণ প্রদর্শন করিতে হইবে এবং আদালত সংক্ষিপ্ত উপায়ে উক্ত দাবী বা আপত্তি তদন্তে অগ্রসর হইবেন ৷
 
(৭) আদালত উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন নিষ্পত্তি কালে ক্রোক হইয়াছে এমন সম্পত্তির স্বার্থ সংশ্লিষ্ট হিসাবে প্রতীয়মান হয় এইরূপ সকল ব্যক্তিকে তাহাদের বক্তব্য উপস্থাপন করার সুযোগ দানের পর এই ধারার অধীন কোন দায় যথাযথ উপায়ে কার্যকর করার জন্য উক্ত সম্পত্তির বিলি ব্যবস্থার বিষয়ে যাহা প্রয়োজনীয় মনে করিবেন, তদ্রূপ আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং এই ধারার অধীন অনুরূপ সকল ব্যক্তি উক্ত কার্যধারায় পক্ষ বলিয়া গণ্য হইবেন৷
 
(৮) এই ধারার অধীন সকল কার্যক্রমে যে কোন প্রকৃতির প্রশ্ন, বিশেষ করিয়া এই ধারার অধীন ক্রোককৃত সম্পত্তির বিষয়ে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে এই আদালতের পূর্ণ ক্ষমতা এবং একক এখতিয়ার থাকিবে এবং অন্য কোন আদালতের কোন মোকদ্দমা বা অন্য আইনগত কার্যক্রমে এই প্রশ্নে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন এখতিয়ার থাকিবে না ৷
 
(৯) উপ-ধারা (৫) এর অনুচ্ছেদ (খ) এ বর্ণিত ব্যক্তি মালিকানাধীন কোন কোম্পানীর সম্পত্তি বিধি ব্যবস্থার আদেশ প্রদান কালে আদালত ঐ ধারায় উল্লিখিত অভিযুক্ত ব্যক্তিগণ এবং ঐ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত ব্যক্তিগণ ব্যতীত উক্ত সম্পত্তিতে অন্যান্য সকলের স্বার্থ যথার্থ বিবেচনায় আনিবেন ৷
 
(১০) এই ধারার অধীন কার্যক্রম গ্রহণে কোম্পানী আইন এ প্রদত্ত সকল ক্ষমতা আদালতের থাকিবে৷
 
(১১) তৃতীয় অধ্যায়ে উল্লিখিত বীমা কোম্পানী বা সমবায় বীমা সমিতির ক্ষেত্রে বীমাকারীর ক্ষেত্রের অনুরূপ এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে ৷
 
(১২) এই ধারার অধীন কার্যক্রমের অধিক্ষেত্র হাইকোর্ট বিভাগের হইবে এবং এই আইন বলবৎ হইবার অব্যবহিত পূর্বে হাইকোর্ট বিভাগ ছাড়া অন্য আদালতে এই বিষয়ে বিচারাধীন থাকা কোন কার্যক্রম এই আইন বলবৎ হওয়ার পর হাইকোর্ট বিভাগে স্থানান্তরিত হইবে।
 
(১৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সুপ্রিম কোর্ট নিম্নরূপ বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথাঃ-
 
(ক) এই ধারার অধীন তদন্ত ও কার্যক্রম পরিচালনার পদ্ধতি; এবং
 
(খ) এই ধারার অধীন উহার অধিক্ষেত্র কার্যকর নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত যে কোন বা সকল বিষয়৷

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs