প্রিন্ট ভিউ

মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২

( ২০১২ সনের ৩ নং আইন )

অভিযোগ দায়ের
১৭। (১) এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইলে কোন ব্যক্তি পুলিশ অথবা ট্রাইব্যুনালের নিকট উক্ত অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবে এবং পুলিশ এই ধরণের অভিযোগ আনয়নকারী ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রদান করিবে এবং আইনি কার্যধারার কারণে অন্যরূপ প্রয়োজন না হইলে, তাহার নাম পরিচয় গোপন রাখিবে।
 
 
(২) ট্রাইব্যুনালে মামলা পরিচালনা করিবার জন্য সরকার, প্রয়োজন মনে করিলে, এক বা একাধিক বিশেষ প্রসিকিউটর (রাষ্ট্রপক্ষীয় আইনজীবী) নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
 
(৩) ট্রাইব্যুনাল উপ-ধারা (২) এর অধীন নিযুক্ত কোন বিশেষ প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে দায়িত্বে গুরুতর অবহেলার প্রতিবেদন সরকারের নিকট দাখিল করিলে সরকার উক্ত প্রসিকিউটরকে অপসারণ বা প্রতিস্থাপিত করিবে।
 
 
অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে আইনগত অনুমান
১৮। কোন ব্যক্তির হেফাজত হইতে অথবা তাহার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে থাকা কোন স্থান হইতে মানব পাচার অপরাধের শিকার কোন ব্যক্তিকে অথবা মানব পাচার অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত কোন কিছু উদ্ধার করা হইলে এবং উক্ত ব্যক্তিকে যদি মানব পাচারকারী হিসাবে যুক্তিসঙ্গতভাবে সন্দেহ হয় অথবা তিনি যদি উদ্ধারকৃত ভিকটিম কর্তৃক মানব পাচারকারী হিসেবে চিহ্নিত হন, তবে, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, উক্ত ব্যক্তি এই আইনের অধীন মানব পাচার অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া অনুমান করা যাইবে।
তদন্ত
১৯।(১) পুলিশের নিকট এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনের সংবাদ আসিলে বা ট্রাইব্যুনাল কোন অপরাধের তদন্তের নির্দেশ দিলে সংশ্লিষ্ট থানার উপ-পরিদর্শকের নিম্ন পদমর্যাদার নহেন এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তা এই আইনের অধীন তদন্তকার্য সম্পাদন করিবেন।
 
 
 
 
(২) এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইতে পারে এমন ক্ষেত্রে পুলিশ অপরাধ সংঘটনের এজাহার (first information report) দাখিলের পূর্বে প্রতিরোধমূলক অনুসন্ধান (proactive inquiry) পরিচালনা করিতে পারিবেন।
 
 
 
 
(৩) ধারা ২০ এর বিধান সাপেক্ষে, উপ-ধারা (১) এর অধীন মামলা দায়েরের বা ট্রাইব্যুনাল হইতে তদন্তের নির্দেশ প্রাপ্তির অনধিক ৯০ (নববই) কার্যদিবসের মধ্যে এই ধারার অধীন তদন্ত সম্পন্ন করিতে হইবে।
 
 
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন না হইলে, তদন্ত কর্মকর্তা উক্ত সময়সীমা শেষ হইবার অন্তত তিন কার্যদিবস পূর্বে তাহার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা অথবা, ট্রাইব্যুনাল হইতে তদন্তের নির্দেশ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে, ট্রাইব্যুনালের নিকট সময়সীমা বৃদ্ধির জন্য লিখিতভাবে আবেদন করিবেন অথবা উক্ত নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা অথবা, ক্ষেত্রমত, ট্রাইব্যুনাল উক্ত সময়সীমার মধ্যে তদন্ত সম্পাদনে ব্যর্থতার জন্য প্রদর্শিত কারণে সন্তুষ্ট হইলে তদন্তের সময়সীমা অতিরিক্ত ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবস বৃদ্ধি করিতে পারিবেঃ
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, আন্তঃরাষ্ট্রীয় তদন্তের ক্ষেত্রে কেবল ট্রাইব্যুনাল এই ধরনের তদন্তের সময়সীমা বৃদ্ধি করিতে পারিবে এবং উক্ত ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল তাহার স্বীয় বিবেচনায় যৌক্তিক মেয়াদে তদন্তের সময়সীমা বৃদ্ধি করিবে।
 
 
 
 
(৫) এই আইনের অধীন কোন আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ তদন্তের ক্ষেত্রে বিদেশী সাক্ষ্য-প্রমাণ নিরীক্ষণ করিবার জন্য বিদেশ গমনের আবশ্যকতা দেখা দিলে, ট্রাইব্যুনালের অনুমতিক্রমে, তদকর্তৃক নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তদন্তকার্য সম্পন্ন করিবার উদ্দেশ্যে পুলিশ কর্তৃপক্ষ একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করিবে এবং উক্ত তদন্ত দলকে যথাসম্ভব প্রশাসনিক এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করিবে।
 
 
 
 
(৬) এই আইনের অধীন পুলিশের তদন্ত, নিরাপত্তা বিধান ও প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম ও দায়িত্বসমূহের সমন্বয় এবং তদারক করিবার উদ্দেশ্যে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পুলিশ সদর দপ্তরে একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল গঠন করিবে।
 
 
প্রতিরোধমূলক তল্লাশী এবং আটক
২০। (১) কোন মানব পাচার অপরাধ প্রতিরোধকল্পে, উপ-পরিদর্শকের নিম্ন পদমর্যাদার নহেন, এমন কোন পুলিশ কর্মকর্তা তাহার ঊর্ধ্বতন নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার অনুমোদন সাপেক্ষে বা নির্দেশে এই আইনের অধীন প্রতিরোধমূলক তল্লাশী করিবার, যে কোন আঙ্গিনায় প্রবেশ করিবার এবং এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত হইবার সম্ভাবনা রহিয়াছে এমন সরঞ্জামাদি বা তথ্য-প্রমাণ বা দলিল আটক করিবার ক্ষমতাপ্রাপ্ত হইবেন।
 
 
 
 
(২) কোন ব্যক্তির সহিত অথবা কোন স্থানে এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের উপযোগী সরঞ্জাম বা উপাদান উপস্থিত আছে এবং তল্লাশী পরোয়ানা সংগ্রহে বিলম্বের কারণে অপরাধটি প্রকৃতই সংঘটিত হইবার বা কোন সাক্ষ্য প্রমাণ নষ্ট হইবার যুক্তিসঙ্গত কারণ বিদ্যমান থাকিলে উপ-ধারা (১) এর অধীন বিনা পরোয়ানায় তল্লাশী করা যাইবে এবং তল্লাশী চালাইবার পূর্বে তল্লাশীর জন্য প্রস্ত্তত অফিসার যেই স্থানে তল্লাশী চালাইবেন উক্ত স্থানটি যেই এলাকায় অবস্থিত সেই এলাকার দুই বা ততোধিক সম্মানিত অধিবাসীকে তল্লাশীতে হাজির থাকিতে ও উহার সাক্ষী হইতে আহবান জানাইবেন এবং উক্ত সাক্ষীদের উপস্থিতিতে তল্লাশী চালাইতে হইবে এবং উক্ত অফিসার তল্লাশীর সময় জব্দকৃত সমস্ত সামগ্রী এবং যেই সকল স্থানে উক্ত সামগ্রীসমূহ পাওয়া গিয়াছে তাহাদের একটি তালিকা প্রস্ত্তত করিবেন এবং উহাতে সাক্ষীগণের স্বাক্ষর গ্রহণ করিবেন।
 
 
 
 
(৩) ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ১০৩ এর বিধানের আলোকে এবং যেই ব্যক্তির শরীর বা সম্পত্তিতে তল্লাশী চালানো হইবে তাহার মানবাধিকার ও মানবিক মর্যাদার প্রতি যথোপযুক্ত সম্মান প্রদর্শনপূর্বক উপ-ধারা (১) এর অধীন তল্লাশী সম্পাদন করিতে হইবে এবং, বিশেষতঃ, কোন নারীর বিরুদ্ধে তল্লাশী পরিচালনা করা হইলে তল্লাশী দলের সহিত অবশ্যই একজন নারী কর্মকর্তা বা নারী প্রবেশন কর্মকর্তা থাকিবেন।
 
 
 
 
(৪) তল্লাশী সম্পাদনের ৭২ (বাহাত্তর) ঘন্টার মধ্যে তল্লাশী কার্যে নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তা তল্লাশীর কারণ এবং ফলাফলের বিবরণ সম্বলিত প্রতিবেদন তৈরী করিবেন এবং তাহার অনুলিপি ইলেকট্রনিক বা অন্য কোনো উপায়ে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট এবং একই সাথে সংশ্লিষ্ট অপরাধের বিচারের এখতিয়ারসম্পন্ন ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করিবে, যাহা ট্রাইব্যুনালের হেফাজতে রক্ষিত থাকিবে এবং উক্ত কর্মকর্তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং যাহার বিরুদ্ধে তল্লাশী পরিচালিত হইয়াছে তাহাকে প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি প্রদান করিতে হইবে।
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs