প্রিন্ট ভিউ

[সেকশন সূচি]

মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২

( ২০১২ সনের ৩ নং আইন )

সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে—
 
 
(১) ‘‘আশ্রয় কেন্দ্র’’ অর্থ জেলখানা ব্যতীত এমন প্রতিষ্ঠান যাহা, যেই নামেই অভিহিত হউক না কেন, মানব পাচারের শিকার বা মানব পাচার হইতে উদ্ধারকৃত ব্যক্তিবর্গের গ্রহণ, আশ্রয় এবং পুনর্বাসনকল্পে প্রতিষ্ঠিত;
 
 
(২) ‘‘আশ্রয় দেওয়া’’ বা ‘‘লুকাইয়া রাখা’’ (harbouring)অর্থ কোন ব্যক্তিকে তাহার দেশের অভ্যন্তরে বা বাহিরে বিক্রয় বা পাচারের উদ্দেশ্যে লুকাইয়া রাখা, আশ্রয় দেওয়া বা অন্য কোনভাবে সহায়তা করা এবং দণ্ডবিধি, ১৮৬০ (১৮৬০ সনের ৪৫ নং আইন) এর ধারা ৫২ক এ যেই অর্থে ””Harbour” অভিধাটি ব্যবহৃত হইয়াছে, তাহাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(৩) ‘‘ঋণ-দাসত্ব (debt-bondage)”” অর্থ কোন ব্যক্তির সেইরূপ অবস্থান যাহার কারণে উক্ত ব্যক্তি কোন ঋণের জন্য প্রকৃতপক্ষে দায়গ্রস্ত হইলে অথবা বেআইনিভাবে তাহাকে ঋণ-দায়গ্রস্ত বলিয়া দাবী করা হইলে উক্ত ব্যক্তিকে উক্ত ঋণের জামানতস্বরূপ নিজের ব্যক্তিগত সেবা বা শ্রম প্রদান করিতে হয়, কিন্তু উক্ত সেবা বা শ্রমের মূল্য ঋণ পরিশোধ হিসাবে গণ্য হয়না অথবা উক্ত সেবা বা শ্রম প্রদানের কাল অসীম হয়;
 
 
(৪) ‘‘জবরদস্তিমূলক শ্রম বা সেবা’’ অর্থ কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, অধিকার, সম্পত্তি বা সুনামের ক্ষয় বা ক্ষতি করিবার হুমকি প্রদর্শন করিয়া তাহার নিকট হইতে যে কাজ বা সেবা গ্রহণ করা হয়;
 
 
(৫) ‘‘ট্রাইব্যুনাল’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল অথবা মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল হিসাবে নিযুক্ত (assigned) বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোন ট্রাইব্যুনাল;
 
 
(৬) ‘‘দাসত্ব’’ অর্থ কোন ব্যক্তির অবস্থান বা মর্যাদার (status) এমন পর্যায়ে অবনমন যাহার ফলে উক্ত ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক সম্পত্তির মত নিয়ন্ত্রিত ও ব্যবহৃত হয় এবং উক্ত ব্যক্তি কর্তৃক গৃহীত কোন ঋণ বা সম্পাদিত কোন চুক্তির কারণে উদ্ভুত কোনো শর্ত বা অবস্থাও (condition) উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(৭) ‘‘দূতাবাস’’ অর্থ বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের কোন মিশন যা দূতাবাস, হাইকমিশন, উপ- হাইকমিশন, বা সহকারী হাইকমিশন এবং উক্ত দেশসমূহে অবস্থিত কনস্যুলেট- জেনারেল এবং কনস্যুলেট এবং ভিসা অফিসসমূহও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(৮) ‘‘পতিতাবৃত্তি’’ অর্থ বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে অথবা অর্থ বা সুবিধা (kind) লেনদেন করিয়া কোন ব্যক্তির যৌন শোষণ বা নিপীড়ন;
 
 
(৯) ‘‘পতিতালয়’’ অর্থ পতিতাবৃত্তি পরিচালনার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত কোন বাড়ি, স্থান বা স্থাপনা;
 
 
(১০) ‘‘মানব পাচারের শিকার ব্যক্তি’’ বা ‘‘ভিকটিম’’ অর্থ এই আইনের অধীন সংঘটিত মানব পাচার অপরাধের শিকার কোন ব্যক্তি এবং উক্ত ব্যক্তির আইনগত অভিভাবক বা উত্তরাধিকারীও (legal heirs) ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(১১) ‘‘প্রতারণা’’ (fraud) অর্থ ঘটনা বা আইন লইয়া ইচ্ছাকৃত বা দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে কথা বা আচরণ বা লিখিত কোন চুক্তি বা দলিল দ্বারা অন্যকে প্রতারিত (to defraud) বা প্রলুদ্ধ (to induce)বা ভুল পথে পরিচালিত করা এবং প্রতারণাকারী ব্যক্তি বা অন্য কোন ব্যক্তির অভিপ্রায়কে কেন্দ্র করিয়া সংঘটিত প্রবঞ্চনা (deception) এবং চুক্তি আইন, ১৮৭২ (১৮৭২ সনের ৯নং আইন) এর ধারা ১৭ এ যেই অর্থে ”Fraud ”অভিধাটি ব্যবহৃত হইয়াছে তাহাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(১২) ‘‘বলপ্রয়োগ’’ অর্থ শক্তি প্রয়োগ বা ভীতি প্রদর্শন বা মনস্তাত্ত্বিকভাবে চাপ প্রয়োগ এবং ইহার সহিত কোন প্রকার ক্ষতিসাধন করিবার বা দৈহিকভাবে আটক রাখিবার হুমকি প্রদর্শন, নির্যাতন বা কোন ব্যক্তির প্রাতিষ্ঠানিক, দাপ্তরিক বা আইনগত অবস্থানকে অন্য কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কাজে লাগাইবার হুমকি প্রদান বা মনস্তাত্ত্বিক চাপ প্রয়োগও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(১৩) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থ স্বাভাবিক ব্যক্তিসহ (natural person)যে কোন কোম্পানী, অংশীদারী কারবার বা ফার্ম বা একাধিক ব্যক্তির সমিতি বা সংঘ তাহা নিবন্ধিত হউক বা না হউক;
 
 
(১৪) ‘‘শিশু’’ অর্থ আঠার বৎসর বয়স পূর্ণ করে নাই এমন কোন ব্যক্তি;
 
 
(১৫) ‘‘শোষণ’’ বা ‘‘নিপীড়ন’’ (exploitation) অর্থ কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাহার সম্মতিক্রমে বা বিনা সম্মতিতে কৃত নিম্নলিখিত কার্যসমূহ, তবে কেবল এইসব বিষয়েই ইহার অর্থ সীমিত হইবেনাঃ—
 
 
(ক) পতিতাবৃত্তি বা যৌন শোষণ বা নিপীড়নের মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে শোষণ বা নিপীড়ন;
 
 
(খ) কোন ব্যক্তিকে পতিতাবৃত্তি অথবা পর্ণোগ্রাফি উৎপাদন বা বিতরণে নিয়োজিত করিয়া মুনাফা ভোগ;
 
 
(গ) জবরদস্তিমূলক শ্রম বা সেবা আদায়;
 
 
(ঘ) ঋণ-দাসত্ব (debt-bondage), দাসত্ব বা সার্ভিচিউড্(servitude) , দাসত্বরূপ কর্মকাণ্ড, বা গৃহস্থালীতে সার্ভিচিউড্;
 
 
(ঙ) প্রতারণামূলক বিবাহের মাধ্যমে শোষণ বা নিপীড়ন;
 
 
(চ) কোন ব্যক্তিকে জোরপূর্বক বিনোদন ব্যবসায় ব্যবহার;
 
 
(ছ) কোন ব্যক্তিকে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করা; এবং
 
 
(জ) ব্যবসা করিবার উদ্দেশ্যে অপরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গহানী বা কাউকে বিকলাঙ্গ করা;
 
 
(১৬) ‘‘সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র ’’ অর্থ জাতীয়তা এবং অবস্থান নির্বিশেষে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির কাঠামোবদ্ধ কোন সংগঠন যাহা নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত সক্রিয় এবং যাহার সদস্যরা এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে একত্রে কাজ করে;
 
 
(১৭) ‘‘সম্মতি’’ অর্থ কোন ব্যক্তির স্বাধীন এবং স্বজ্ঞানে প্রদত্ত মতামত যাহা তাহার বয়স, লিঙ্গ এবং আর্থ- সামাজিক পশ্চাদপদতার কারণে সৃষ্ট তাহার দুর্বল অবস্থান কর্তৃক প্রভাবিত হইবেনা;
 
 
(১৮) ‘‘সরকারি কর্মকর্তা’’ (public servant/official) অর্থ দণ্ডবিধি, ১৮৬০ ( ১৮৬০ সনের ৪৫ নং আইন) এর ধারা ২১ এ বর্ণিত কোনো জনসেবক বা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫২ এর সংজ্ঞানুসারে রাষ্ট্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি যিনি এই আইনের অধীন কোন আইনি দায়িত্ব পালন বা বহন করেন;
 
 
(১৯) ‘‘সার্ভিচিউট’’ (servitude) অর্থ কাজ বা সেবা প্রদান করিবার বাধ্যবাধকতা অথবা কাজ বা সেবার জবরদস্তিমূলক শর্তাবলী যাহা হইতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিষ্কৃতি মেলেনা বা যাহা তিনি ঠেকাইতে বা পরিবর্তন করিতে পারেন না।
 
 
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs