সম্পত্তির বাজেয়াপ্তকরণ
১৭। (১) এই আইনের অধীন কোন ব্যক্তি বা সত্তা মানিলন্ডারিং অপরাধে দোষী সাব্যস্থ হইলে আদালত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত দেশে বা দেশের বাহিরে অবস্থিত যে কোন সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন এই আইনের অধীন মানিলন্ডারিং অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন অনুসন্ধান ও তদন্ত বা বিচার কার্যক্রম চলাকালীন সংশ্লিষ্ট আদালত প্রয়োজনবোধে দেশে বা দেশের বাহিরে অবস্থিত যে কোন সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(৩) এই আইনের অধীন মানিলন্ডারিং অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্থ কোন ব্যক্তি পলাতক থাকিলে বা অভিযোগ দাখিলের পর মৃত্যুবরণ করিলে আদালত উক্ত ব্যক্তির অপরাধের সহিত সম্পৃক্ত সম্পত্তিও রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
ব্যাখ্যা।— যথাযথ কার্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা সত্ত্বেও গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করিতে ব্যর্থ হয় বা উক্ত সময়ের মধ্যে তাহাকে গ্রেফতার করা না যায় তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পলাতক বলিয়া গণ্য হইবেন।
(৪) এই ধারার অধীন আদালত কর্তৃক কোন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদানের পূর্বে কিংবা মামলা বা অভিযোগ দায়ের করিবার পূর্বে যদি কোন ব্যক্তি বা সত্তা সরল বিশ্বাসে এবং উপযুক্ত মূল্য প্রদান সাপেক্ষে বাজেয়াপ্তের জন্য আবেদনকৃত সম্পত্তি ক্রয় করিয়া থাকেন এবং আদালতকে তিনি বা উক্ত সত্তা এই মর্মে সন্তুষ্ট করিতে সক্ষম হন যে, তিনি বা উক্ত সত্তা উক্ত সম্পত্তিটি মানিলন্ডারিং এর সহিত সম্পৃক্ত বলিয়া জ্ঞাত ছিলেন না এবং তিনি বা উক্ত সত্তা সরল বিশ্বাসে সম্পত্তিটি ক্রয় করিয়াছিলেন, তাহা হইলে আদালত উক্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান না করিয়া উহার বিক্রয়লব্ধ অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে, আদালত কর্তৃক নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে, জমা দেওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্থ ব্যক্তি বা সত্তাকে নির্দেশ দিতে পারিবে।
(৫) আদালত যদি মানিলন্ডারিং বা সম্পৃক্ত অপরাধের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির অবস্থান নির্ধারণ বা বাজেয়াপ্ত করিতে না পারেন বা সম্পত্তি অন্য কোনভাবে ব্যবহারের ফলে অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়, তাহা হইলে—
(ক) অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত নয় অভিযুক্ত ব্যক্তির এমন সমমূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে;
(খ) অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যে পরিমাণ সম্পত্তি আদায় করা যাইবে না তাহার সমপরিমাণ আর্থিক দণ্ড প্রদান করিতে পারিবে।
(৬) এই ধারার অধীন কোন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হইলে বাজেয়াপ্ত আদেশের নোটিশ আদালত কর্তৃক যে ব্যক্তি বা সত্তার নিয়ন্ত্রণে সম্পত্তিটি রহিয়াছে সেই ব্যক্তি বা সত্তার সর্বশেষ জ্ঞাত ঠিকানায় রেজিস্টার্ড ডাকযোগে পাঠাইতে হইবে এবং সম্পত্তির তফসিলসহ সকল বিবরণ উল্লেখক্রমে সরকারি গেজেটে এবং অন্যূন ২ (দুই)টি বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় [১ (এক)টি বাংলা ও ১ (এক)টি ইংরেজী] বিজ্ঞপ্তি প্রচার করিতে হইবে।
(৭) এই ধারার অধীন আদালত কোন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করিলে উক্ত সম্পত্তির মালিকানা রাষ্ট্রের উপর ন্যস্ত হইবে এবং বাজেয়াপ্ত করিবার তারিখে সম্পত্তিটি যাহার জিম্মায় বা মালিকানায় থাকিবে তিনি বা সংশ্লিষ্ট সত্তা যথাশীঘ্র সম্ভব, উক্ত সম্পত্তির দখল রাষ্ট্রের বরাবরে হস্থান্তর করিবেন।
(৮) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অপরাধ লব্ধ সম্পত্তি যদি বৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ বা সম্পত্তির সহিত সংমিশ্রিত করা হইয়া থাকে তাহা হইলে উক্ত সম্পত্তিতে আদালত কর্তৃক নির্ধারিত অপরাধ লব্ধ অর্থ বা সম্পত্তির মূল্যের উপর অথবা অপরাধ লব্ধ বা সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণ করা সম্ভব না হইলে অর্জনের উপায় নির্বিশেষে সংমিশ্রিত সম্পূর্ণ অর্থ বা সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত আদেশ প্রদান করা যাইবে।