প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২

( ২০১২ সনের ১৯ নং আইন )

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ নামে অভিহিত হইবে।
 
(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে।
 
* এস, আর, ও নং ৪২-আইন/২০১৩, তারিখ: ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ইং দ্বারা ৩০ শে মাঘ, ১৪১৯ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ উক্ত আইন কার্যকর হইয়াছে।
 
(৩) ইহা সমগ্র বাংলাদেশে প্রয়োগ হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-
 
 
(১) ‘‘অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি (authorization holder) ’’ অর্থ কোন ব্যক্তি যাহাকে এই আইন বা তদধীন প্রণীত প্রবিধান দ্বারা সুনির্দিষ্ট কার্যাদি সম্পাদনের জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমতি প্রদান করা হইয়াছে;
 
 
(২) ‘‘অনুমোদিতমাত্রা’’ অর্থ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত স্বীকৃত মাত্রা;
 
 
(৩) ‘‘অন্তর্ঘাত (sabotage) ’’ অর্থ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন নিউক্লীয় স্থাপনা বা নিউক্লীয় পদার্থ, নির্দিষ্টকৃত যন্ত্রপাতি ও অনিউক্লীয় পদার্থের বিরুদ্ধে, অথবা তেজস্ক্রিয় বর্জ্য বা ব্যবহৃত জ্বালানির (spent fuel) ব্যবস্থাপনা বা পরিবহন কাজের বিরুদ্ধে পরিচালিত কোন কাজ যাহার দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তেজস্ক্রিয় পদার্থ নির্গত হওয়ার মাধ্যমে জীবন, স্বাস্থ্য বা সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করে অথবা পরিবেশ বিপন্ন হইতে পারে;
 
 
(৪) ‘‘আমদানি’’ ও ‘‘রপ্তানি’’ অর্থ Imports and Exports (Control) Act, 1950 (Act No. XXXIX of 1950) এর section 2(c) এ সংজ্ঞায়িত ”import” ও ”export” ;
 
 
(৫) ‘‘আয়নায়নকারী বিকিরণ (ionizing radiation) ’’ অর্থ এমন বিকিরণ যাহা কোন পদার্থে সঞ্চারণকালে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উক্ত পদার্থে আয়ন-জোড় উৎপন্ন করিতে সক্ষম;
 
 
(৬) ‘‘উপদেষ্টা পরিষদ’’ অর্থ এই আইনের ধারা ১৬ এর অধীন গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ;
 
 
(৭) ‘‘উৎস পদার্থ (source material) ’’ অর্থ-
 
 
(ক) প্রকৃতিতে প্রাপ্ত আইসোটোপের মিশ্রণ রহিয়াছে এইরূপ ইউরেনিয়াম; বা
 
 
(খ) নিঃশেষিত (depleted) ইউরেনিয়াম; বা
 
 
(গ) থোরিয়াম; বা
 
 
(ঘ) ধাতু, ধাতব সংকর, রাসায়নিক যৌগ বা গাঢ় দ্রবণ আকারে উপ-দফা (ক), (খ) ও (গ) এ উল্লিখিত যে কোন একটি পদার্থ; বা
 
 
(ঙ) অন্য কোন পদার্থ যাহাতে প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত গাঢ়ত্ব এবং পরিমাণ অপেক্ষা অধিক গাঢ়ত্ব বা পরিমাণে উপ-দফা (ক), (খ) ও (গ) এ উল্লিখিত এক বা একাধিক পদার্থ বিদ্যমান রহিয়াছে;
 
 
(৮) ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ এই আইনের ধারা ৪ এর অধীন গঠিত বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ;
 
 
(৯) ‘‘কমিশন’’ অর্থ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন আদেশ, ১৯৭৩ (১৯৭৩ সনের রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ১৫) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন;
 
 
(১০) ‘‘কর্মকাণ্ড’’ অর্থ মানব কর্তৃক সম্পাদিত কোন কার্য যাহার ফলে বিকিরণ সম্পাত সৃষ্টিকারী অতিরিক্ত উৎস বা বিভিন্নভাবে সম্পাত ঘটিবার পথ তৈরী হয়, অথবা অতিরিক্ত জনগণ বিকিরণ সম্পাতের আওতাভুক্ত হয় কিংবা বিদ্যমান উৎস হইতে সম্পাত ঘটিবার পথসমূহের নেটওয়ার্ক এমনভাবে পরিবর্তিত হয় যে, জনগণ কর্তৃক প্রাপ্ত সম্পাতের পরিমান বা সম্পাতপ্রাপ্ত জনগণের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় বা পাইবার সম্ভাবনা দেখা দেয়;
 
 
(১১) ‘‘কর্মচারী’’ অর্থ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারী;
 
 
(১২) ‘‘কোম্পানী’’ অর্থ কোন কোম্পানী, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা ব্যক্তিসংঘ;
 
 
(১৩) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান;
 
 
(১৪) ‘‘তেজস্ক্রিয়তা (radioactivity) ’’ অর্থ ভাঙ্গন অথবা বিভিন্ন নিউক্লীয় কণা বিচ্ছুরণের মাধ্যমে কোন অস্থিতিশীল নিউক্লিয়াস ক্ষয় প্রাপ্ত হওয়া;
 
 
(১৫) ‘‘তেজস্ক্রিয় পদার্থ (radioactive material) ’’ অর্থ অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে অধিক মাত্রার তেজস্ক্রিয়তা বিদ্যমান রহিয়াছে এমন পদার্থ;
 
 
(১৬) ‘‘তেজস্ক্রিয় বর্জ্য (radioactive waste) ’’ অর্থ এমন কোন পদার্থ, উহার ভৌত অবস্থা যাহাই হউক না কেন, বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বা হস্তক্ষেপ হইতে অবশিষ্টাংশ এবং যাহার পরবর্তী ব্যবহার পূর্বজ্ঞাত নয় এবং-
 
 
(ক) যাহা তেজস্ক্রিয় পদার্থ অথবা উহা দ্বারা দূষিত এবং যাহার সক্রিয়তা বা সক্রিয়তার গাঢ়ত্ব নিয়ন্ত্রণমূলক চাহিদায় ছাড়করণের মাত্রার চাইতে অধিক; এবং
 
 
(খ) যাহার বিকিরণ সম্পাত প্রযোজ্য প্রবিধানসমূহের আওতা বহির্ভূত নয়;
 
 
(১৭) ‘‘তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’’ অর্থ তেজস্ক্রিয় বর্জ্য হ্যান্ডলিং, পরিবহন, প্রি-ট্রিটমেন্ট, ট্রিটমেন্ট, কণ্ডিশনিং, স্টোরেজ এবং ডিসপোজাল সংশ্লিষ্ট সকল ধরনের কর্মকাণ্ড;
 
 
(১৮) ‘‘নিউক্লীয় ঘটনা (nuclear incident) ’’ অর্থ নিউক্লীয় ক্ষতিসাধন করে এমন উৎস হইতে সৃষ্ট কোন ঘটনা বা একই উৎস হইতে পর্যায়ক্রমে সৃষ্ট একাধিক ঘটনা অথবা নিবৃত্তিমূলক ব্যবস্থা অবলম্বন সত্ত্বেও ক্ষতিসাধনের ভয়াবহতা ও আসন্ন হুমকি প্রদান করে এমন কোন ঘটনা;
 
 
(১৯) ‘‘নিউক্লীয় জ্বালানি (nuclear fuel) ’’ অর্থ স্বঃঅব্যাহত নিউক্লীয় শৃঙ্খল বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপাদনে সক্ষম পদার্থ;
 
 
(২০) ‘‘নিউক্লীয় দুর্ঘটনা (nuclear accident) ’’ অর্থ এমন একটি দুর্ঘটনা যাহাতে নিউক্লীয় শৃংঙ্খল বিভাজন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বা এতদ্‌সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনা ভাঙ্গিয়া পড়া, ক্রিটিক্যালিটি এবং ইরেডিয়েটেড নিউক্লীয় পদার্থের তাপ অপসারণ ব্যবস্থা ভাঙ্গিয়া পড়া অথবা নিউক্লীয় জ্বালানিসহ কোন নিউক্লীয় পদার্থের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হওয়ার ফলে পরিবেশে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়াইয়া পড়া অথবা উক্তরূপ যেকোন দুর্ঘটনার দুর্ঘটনাস্থলে কর্মরত কর্মী বা জনগণ কর্তৃক সম্ভাব্য বিপজ্জনক মাত্রার বিকিরণ সম্পাত প্রাপ্তির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়;
 
 
(২১) ‘‘নিউক্লীয় নিরাপত্তা (nuclear safety) ’’ অর্থ নিউক্লীয় স্থাপনা যথাযথ চালনার অবস্থা অর্জন, দুর্ঘটনা প্রতিরোধ বা দুর্ঘটনার ফলাফল উপশম করিবার মাধ্যমে তেজস্ক্রিয়তার ঝুঁকি হইতে কর্মী, জীবন ও পরিবেশের সুরক্ষা বিধান;
 
 
(২২) ‘‘নিউক্লীয় পদার্থ (nuclear material) ’’ অর্থ ৮০% এর অধিক আইসোটোপিক কনসেন্ট্রেশনযুক্ত প্লুটোনিয়াম-২৩৮ ব্যতীত প্লুটোনিয়াম; ইউরেনিয়াম-২৩৩; ২৩৫ বা ২৩৩ আইসোটোপ দ্বারা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম; আকরিক বা আকরিকের অবশেষ রূপ ব্যতীত প্রকৃতিতে সৃষ্ট আইসোটোপের মিশ্রণ বিদ্যমান রহিয়াছে এইরূপ ইউরেনিয়াম অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিরূপিত অন্য কোন পদার্থ;
 
 
(২৩) ‘‘নিউক্লীয় ক্ষতি (nuclear damage) ’’ অর্থ-
 
 
(ক) জীবনহানি বা শারীরিক জখম বা মানসিক ক্ষতি;
 
 
(খ) সম্পত্তির ক্ষয়-ক্ষতি;
 
 
(গ) উপ-দফা (ক) ও (খ) এ উল্লিখিত ক্ষয়-ক্ষতি হইতে উদ্ভূত আর্থিক ক্ষতি, যতদূর সম্ভব, যা উক্ত উপ-দফাসমূহে অন্তর্ভুক্ত হয় নাই, যদি উক্ত ক্ষয়-ক্ষতির প্রেক্ষিতে দাবীদার ব্যক্তি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়;
 
 
(ঘ) ক্ষতিগ্রস্ত পরিবেশ পূর্বের অবস্থায় ফেরত আনিবার পদক্ষেপের ব্যয়, যদি উক্ত বিপর্যয় তেমন উল্লেখযোগ্য না হয়, এবং প্রকৃতপক্ষে যদি উক্তরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়, বা গ্রহণ করিবার সম্ভাবনা থাকে, এবং যতদূর সম্ভব, যাহা উক্ত উপ-দফা (খ) এ অন্তর্ভুক্ত হয় নাই;
 
 
(ঙ) পরিবেশ ব্যবহার বা উপভোগ সংক্রান্ত অর্থনৈতিক স্বার্থ হইতে উদ্ভূত আয়ের ক্ষতি, যাহা উক্ত পরিবেশের উল্লেখযোগ্য ক্ষতির ফলে সৃষ্ট, এবং যতদূর সম্ভব যাহা উক্ত উপ-দফা (খ) এ অন্তর্ভুক্ত হয় নাই;
 
 
(চ) নিউক্লীয় ঘটনা সংঘটিত হইবার পর কোন ব্যক্তি কর্তৃক উপ-দফা (ক), (খ), (গ), (ঘ) ও (ঙ) বা (ছ) এ বর্ণিত ক্ষতি প্রতিরোধ বা মাত্রা হ্রাসের জন্য, যে রাষ্ট্রে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইয়াছিল সেই রাষ্ট্রের আইনানুযায়ী উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে, যে কোন যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যয় এবং উক্তরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে পুনরায় সৃষ্ট ক্ষয়-ক্ষতি;
 
 
(ছ) পরিবেশ বিপর্যয় ব্যতীত অন্য কোনভাবে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতি, যদি উক্ত ক্ষতি উপযুক্ত আদালতের দেওয়ানী দায় সম্পর্কিত সাধারণ আইন দ্বারা অনুমোদিত হয়;
 
 
উপরি-উক্ত উপ-দফা (ক), (খ), (গ), (ঘ), (ঙ) এবং (ছ) এর ক্ষেত্রে, উক্ত ক্ষয়-ক্ষতি নিউক্লীয় ক্ষতির আওতায় পড়িবে যদি উহা কোন নিউক্লীয় স্থাপনার অভ্যন্তরের কোন বিকিরণ উৎস হইতে বা কোন নিউক্লীয় স্থাপনাস্থ নিউক্লীয় জ্বালানী বা তেজস্ক্রিয় উৎপাদ বা বর্জ্য হইতে বা নিউক্লীয় স্থাপনা হইতে আগত, উদ্ভূত বা প্রেরিত নিউক্লীয় পদার্থ হইতে নির্গত আয়নায়নকারী বিকিরণ হইতে উদ্ভূত বা সৃষ্ট হয়, উহা এইরূপ পদার্থের তেজস্ক্রিয় ধর্ম হইতেই উদ্ভূত হউক অথবা উক্ত পদার্থের বিষাক্ত, বিস্ফোরক বা অন্যান্য ক্ষতিকর ধর্মের সহিত তেজস্ক্রিয় ধর্মের সম্মিলনেই উদ্ভূত হউক;
 
 
ব্যাখ্যা।- (অ) ‘‘তেজস্ক্রিয় উৎপাদ বা বর্জ্য (radioactive products or waste) ’’ বলিতে নিউক্লীয় জ্বালানির উৎপাদন বা ব্যবহারকালে সৃষ্ট তেজস্ক্রিয় পদার্থ বা অন্য কোন পদার্থকে বুঝাইবে, যাহা বিকিরণ সম্পাতের দ্বারা তেজস্ক্রিয় করা হইয়াছে, তবে বৈজ্ঞানিক, চিকিৎসা, কৃষি, বাণিজ্য অথবা শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহারোপযোগী এমন রেডিওআইসোটোপ যা প্রস্ত্ততকরণের শেষ স্তরে পৌঁছাইয়াছে, ইহার অন্তর্ভূক্ত হইবেনা;
 
 
(আ) ‘‘প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা (preventive measures) ’’ বলিতে নিউক্লীয় ঘটনা সংঘটিত হইবার পর যে কোন ব্যক্তি কর্তৃক উপ-দফা (ক), (খ), (গ), (ঘ) ও (ঙ) বা (ছ) এ বর্ণিত ক্ষতি প্রতিরোধ বা মাত্রা হ্রাসের জন্য, যে কোন যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণকে বুঝাইবে;
 
 
(২৪) ‘‘নিউক্লীয় রিঅ্যাক্টর (nuclear reactor) ’’ অর্থ এমন কোন কাঠামো যাহাতে নিউক্লীয় জ্বালানীএইরূপে বিন্যস্ত থাকে যে, নিউট্রনের কোন অতিরিক্ত উৎস ব্যতিরেকে উহাতে স্ব-অব্যাহত নিউক্লীয় শৃঙ্খল বিভাজন প্রক্রিয়া ঘটিতে পারে;
 
 
(২৫) ‘‘নিউক্লীয় বা রেডিওলজিক্যাল জরুরী অবস্থা (nuclear or radiological emergency) অর্থ এইরূপ কোন জরুরী অবস্থা যাহাতে নিউক্লীয় শৃঙ্খল বিক্রিয়া অথবা শৃঙ্খল বিক্রিয়ার উৎপন্ন দ্রব্যের ক্ষয় হইতে সৃষ্ট শক্তি বা বিকিরণ সম্পাত (radiation exposure) হইতে বিপদ ঘটিয়াছে বা বিপদের আশঙ্কা দেখা দিয়াছে;
 
 
(২৬) ‘‘নিউক্লীয় শক্তি (nuclear energy) ’’ অর্থ বিভিন্ন ধরনের নিউক্লীয় মিথস্ক্রিয়া ও প্রক্রিয়া যেমন- বিভাজন (fission) , একীভবন (fusion) , ইত্যাদির কারণে পরমাণুর নিউক্লিয়াস হইতে বিমুক্ত সকল প্রকার শক্তি;
 
 
(২৭) ‘‘সিকিউরিটি (security) ’’ অর্থ নিউক্লীয় পদার্থ, অন্য কোন তেজস্ক্রিয় পদার্থের অথবা এতদ্‌সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় সংঘটিতব্য চুরি, অন্তর্ঘাত, অনধিকার প্রবেশ, অবৈধ হস্তান্তর অথবা অন্য কোন বিদ্বেষপূর্ণ কার্য প্রতিরোধ ও চিহ্নিতকরণ এবং তৎবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(২৮) ‘‘নিউক্লীয় স্থাপনা (nuclear installation) ’’ অর্থ কোন নিউক্লীয় জ্বালানী নির্মাণ কেন্দ্র, নিউক্লীয় রিঅ্যাক্টর (সাব-ক্রিটিক্যাল ও ক্রিটিক্যাল এ্যাসেম্বলিসহ), গবেষণা রিঅ্যাক্টর, নিউক্লীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ব্যবহৃত জ্বালানি গুদামজাতকরণ স্থাপনা, সমৃদ্ধকরণ কারখানা বা পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ স্থাপনা অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিরূপিত অন্য কোন স্থাপনা;
 
 
(২৯) ‘‘নিরাপত্তা (safety) ’’ অর্থ বিকিরণ ঝুঁকি হইতে মানুষ ও পরিবেশকে রক্ষা করা এবং নিউক্লীয় নিরাপত্তা, বিকিরণ নিরাপত্তা, তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থ পরিবহন নিরাপত্তাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, তবে বিকিরণ বহির্ভূত নিরাপত্তার বিষয়গুলি ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
 
 
(৩০) ‘‘নির্দিষ্টকৃত যন্ত্রপাতি (specified equipment) ’’ অর্থ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত যন্ত্রপাতি;
 
 
(৩১) ‘‘নির্দিষ্টকৃত অনিউক্লীয় পদার্থ (specified non-nuclear material) ’’ অর্থ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত অনিউক্লীয় পদার্থ;
 
 
(৩২) ‘‘পরমাণু শক্তি (atomic energy) ’’ অর্থ পরমাণু (atom) হইতে পারমাণবিক (atomic) ও নিউক্লীয় (nuclear) মিথস্ক্রিয়া ও প্রক্রিয়াসমূহের ফলে সকল ধরনের বিমুক্ত শক্তি;
 
 
(৩৩) ‘‘প্রাকৃতিক উৎস’’ অর্থ প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট আয়নায়নকারী মহাজাগতিক ও জাগতিক বিকিরণের উৎস;
 
 
(৩৪) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
 
(৩৫) ‘‘বিকিরণ (radiation) ’’ অর্থ পদার্থ বা স্থানের মধ্য দিয়া শক্তির এমন বিচ্ছুরণ বা সঞ্চারণ যাহা উক্ত পদার্থ বা স্থানে তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশ বা প্রভাব সৃষ্টি করিতে পারে;
 
 
(৩৬) ‘‘বিকিরণ উৎপাদনকারী যন্ত্রপাতি’’ অর্থ কোন উৎপাদিত পণ্য বা যন্ত্রপাতি, অথবা উক্তরূপ পণ্য বা যন্ত্রপাতির অংশবিশেষ, অথবা চালনা করিবার সময় আয়নায়নকারী বিকিরণ উৎপাদন বা নির্গত করিতে পারে এইরূপ কোন মেশিন বা সিস্টেম;
 
 
(৩৭) ‘‘বিকিরণ সুরক্ষা (radiation protection) ’’ অর্থ আয়নায়নকারী বিকিরণের প্রভাব হইতে জীবন এবং পরিবেশের সুরক্ষা;
 
 
(৩৮) ‘‘বিকিরণ সুরক্ষা কর্মকর্তা (radiation protection officer) ’’ অর্থ কোন বিশেষ কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট বিকিরণ নিরাপত্তা বিষয়ে উপযুক্ত কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন কোন ব্যক্তি যিনি অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি, অপারেটর বা বিদেশী অপারেটর কর্তৃক এই আইন, বিধি বা প্রবিধানে বর্ণিত শর্তাবলী পালন করা হইতেছে কিনা তাহা তত্ত্বাবধানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হইয়াছেন;
 
 
(৩৯) ‘‘বিকিরণ উৎস (radiation source) ’’ অর্থ কোন নির্দিষ্ট স্থাপনায় অথবা স্থানে আয়নায়নকারী বিকিরণ উৎপাদনকারী বা উৎপাদনে সক্ষম এইরূপ কোন পদার্থ বা যন্ত্রপাতি;
 
 
(৪০) ‘‘বিদেশী অপারেটর বা অপারেটর (overseas operator or operator) ’’ অর্থ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে বিদেশী অপারেটর বা অপারেটর হিসাবে অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা সংস্থা বা কোম্পানী;
 
 
(৪১) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(৪২) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থ স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন কোন ব্যক্তি, অংশীদারী প্রতিষ্ঠান, সমিতি, কোম্পানী, কর্পোরেশন, সমবায় সমিতি এবং বিধিবদ্ধ সংস্থা;
 
 
(৪৩) ‘‘ব্যবহৃত জ্বালানি (spent fuel) ’’ অর্থ এইরূপ কোন নিউক্লীয় জ্বালানি যাহা কোন রিঅ্যাক্টর কোরে ইরেডিয়েটেড হইবার পর উক্ত কোর হইতে স্থায়ীভাবে অপসারিত হইয়াছে এবং যাহা পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ না করা পর্যন্ত কোন নিউক্লীয় প্ল্যান্টে ব্যবহার করা হইবে না;
 
 
(৪৪) ‘‘ব্যবহৃত জ্বালানি ব্যবস্থাপনা’’ অর্থ ব্যবহৃত জ্বালানি নিউক্লীয় স্থাপনার অভ্যন্তরে স্থানান্তর বা স্টোরেজ সম্পর্কিত সকল ধরনের কার্যক্রম, তবে সাইটের বাহিরে পরিবহন সংক্রান্ত কোন কার্য ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
 
(৪৫) ‘‘ভৌত সুরক্ষা (physical protection) ’’ অর্থ নিউক্লীয় পদার্থ, নিউক্লীয় স্থাপনা এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থ অননুমোদিতভাবে পরিবর্তন বা হস্তক্ষেপ, বা অননুমোদিতভাবে অপসারণ কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা ও সময়মত উক্তরূপ কার্যাদি চিহ্নিত করা এবং অবৈধভাবে প্রাপ্ত নিউক্লীয় পদার্থ উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে গৃহীত সকল প্রকার কারিগরি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, উপায় ও পদ্ধতি;
 
 
(৪৬) ‘‘সদস্য’’ অর্থ কর্তৃপক্ষের কোন সদস্য এবং চেয়ারম্যানও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন;
 
 
(৪৭) ‘‘স্থাপনা (facility) ’’ অর্থ নিউক্লীয় স্থাপনা, ইরেডিয়েশন স্থাপনা, ইউরেনিয়াম ও থোরিয়াম আকরিকসহ সকল তেজস্ক্রিয় আকরিক এর খনন ও প্রক্রিয়াকরণ স্থাপনা, তেজস্ক্রিয়-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত স্থাপনা এবং অন্যান্য স্থান যেখানে তেজস্ক্রিয় পদার্থ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, ব্যবহার, হ্যাণ্ডলিং, গুদামজাত বা ডিসপোজ (dispose) করা হয় অথবা যেখানে এমন বিকিরণ উৎপাদক (radiation generator) স্থাপন করা হইয়াছে যাহার জন্য সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক হয়।
 
 
 
 
 
 
 
 
আইনের প্রাধান্য
৩। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs