প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩

( ২০১৩ সনের ১৪ নং আইন )

জাতীয় পানি সম্পদ পরিষদ
৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, জাতীয় পানি সম্পদ পরিষদ নামে একটি পরিষদ থাকিবে এবং এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে উক্ত পরিষদ গঠন করিবে, যথা:-
 
 
(ক) প্রধানমন্ত্রী, যিনি উহার চেয়ারপারসনও হইবেন;
 
 
(খ) অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(গ) কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঘ) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঙ) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(চ) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ছ) ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(জ) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঝ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঞ) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ট) নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ঠ) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
 
 
(ড) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিমন্ত্রী (যদি থাকে);
 
 
(ঢ) জাতীয় সংসদের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি;
 
 
(ণ) মন্ত্রিপরিষদ সচিব;
 
 
(ত) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব;
 
 
(থ) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত প্রশাসনিক বিভাগসমূহ হইতে একজন করিয়া সংসদ সদস্য;
 
 
(দ) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;
 
 
(ধ) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব বা সচিব;
 
 
(ন) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;
 
 
(প) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;
 
 
(ফ) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;
 
 
(ব) স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব বা সচিব;
 
 
(ভ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব;
 
 
(ম) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব বা সচিব;
 
 
(য) পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য;
 
 
(র) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক;
 
 
(ল) পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক;
 
 
(শ) যৌথ নদী কমিশনের সদস্য;
 
 
(ষ) ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট;
 
 
(স) ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স , বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট;
 
 
(হ) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত ৩ (তিন) জন পানি বিশেষজ্ঞ;
 
 
(ড়) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার (এনজিও) ১ (এক) জন প্রতিনিধি; এবং
 
 
(ঢ়) পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বা সচিব, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।
 
 
 
 
(২) পরিষদের মনোনীত সদস্যগণের মেয়াদ হইবে ২ (দুই) বৎসর, তবে মনোনীত কোন সদস্য, মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে যেকোন সময়, প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন এবং তদ্‌কর্তৃক পদত্যাগপত্র গৃহীত হইবার তারিখ হইতে সংশ্লিষ্ট পদটি শূন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(৩) সরকার, প্রয়োজনে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পরিষদের সদস্য সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
 
 
পরিষদের কার্যাবলি
৫। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এবং উহার বিধানাবলি সাপেক্ষে, পরিষদ হইবে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কর্তৃপক্ষ এবং তদুদ্দেশ্যে পরিষদের কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
 
 
(ক) পানি সম্পদের সমন্বিত উন্নয়ন, সুষ্ঠু ব্যবহার, নিরাপদ আহরণ, সুষম বণ্টন, সুরক্ষা ও সংরক্ষণ বিষয়ে নীতি নির্ধারণ ও দিক-নির্দেশনা প্রদান;
 
 
(খ) পানি সম্পদের সমন্বিত উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংক্রান্ত দিক-নির্দেশনা প্রদান;
 
 
(গ) জাতীয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা অনুমোদন ও উহার বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ; এবং
 
 
(ঘ) পরিষদ কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত অন্য যেকোন কার্যাবলি সম্পাদন করা।
 
 
পরিষদের সভা
৬। (১) উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, পরিষদ উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
 
(২) পরিষদের সকল সভা চেয়ারপারসন কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত স্থান ও সময়ে পরিষদের সদস্য-সচিব কর্তৃক আহূত হইবে ।
 
 
(৩) পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন উহার চেয়ারপারসন, বা তাহার অনুপস্থিতিতে পরিষদের জ্যেষ্ঠ সদস্য।
 
 
(৪) পরিষদের কোন সদস্যপদ শূন্য থাকিবার অথবা পরিষদ গঠনে কোন ত্রুটি থাকিবার কারণে পরিষদের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।
 
 
আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা আদান-প্রদান
৭। (১) এই আইন ও আপাততঃ বলবৎ অন্যান্য আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, পরিষদ, উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত সহযোগিতা কার্যকর করিবার লক্ষ্যে, যেকোন বিদেশী রাষ্ট্র, সরকার বা আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিক সংস্থার সহিত প্রয়োজনীয় সমঝোতা স্মারক, চুক্তি, কনভেনশন, ট্রিটি বা অনুরূপ কোন ইন্সট্রুমেন্ট (instrument) সম্পাদন করিতে সরকারকে পরামর্শ প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(২) সরকার, পরিষদের পরামর্শক্রমে, নিম্নবর্ণিত বিষয়ে যেকোন বিদেশী রাষ্ট্র, সরকার বা আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার সহযোগিতা আদান-প্রদান করিতে পারিবে, যথা:-
 
 
(ক) অভিন্ন পানি সম্পদ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিনিময় ও বিশ্লেষণ;
 
 
(খ) আন্তর্জাতিক নদীর উপর যৌথ জরিপ, সমীক্ষা ও গবেষণা এবং উহার রাসায়নিক এবং জৈব দূষণ প্রতিরোধে যৌথ কার্যক্রম;
 
 
(গ) আন্তর্জাতিক নদীসমূহের পানি সম্পদের উন্নয়ন, আহরণ ও বণ্টন কার্যক্রম; এবং
 
 
(ঘ) পানি সম্পদ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।
 
 
জাতীয় পানি নীতি প্রণয়নের ক্ষমতা
৮। (১) সরকার, উপ-ধারা (২) এর বিধানাবলি সাপেক্ষে, সময় সময়, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, পানি সম্পদ সংক্রান্ত জাতীয় পানি নীতি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন জাতীয় পানি নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকার পানি সম্পদের সহিত সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী ও সংগঠনের মতামত গ্রহণের জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে গণশুনানির আয়োজন করিবে এবং শুনানিতে প্রাপ্ত মতামত বিবেচনায় আনিয়া জাতীয় পানি নীতি চূড়ান্ত করিতে হইবে।
 
 
(৩) সরকার জাতীয় পানি নীতিতে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পানির মূল্য নির্ধারণের নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে এবং উহা অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সরকার নিম্নবর্ণিত বিষয়সহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করিবে, যথা:-
 
 
(ক) পানি ব্যবহারের উদ্দেশ্য বা ক্ষেত্র;
 
 
(খ) পানি সেবাভোগীর সামর্থ্য;
 
 
(গ) পানি আহরণ ও সরবরাহের প্রকৃত খরচ;
 
 
(ঘ) সেবাভোগী বা উহার শ্রেণী বিশেষের আর্থিক ক্ষমতা ও অনগ্রসরতা;
 
 
(ঙ) পানির চাহিদা ও সরবরাহ; এবং
 
 
(চ) সরকার কর্তৃক বিবেচিত অন্য কোন প্রাসঙ্গিক বিষয়।
 
 
(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন জাতীয় পানি নীতি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে সরকার কর্তৃক প্রণীত জাতীয় পানি নীতি, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, বলবৎ থাকিবে।
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs