প্রিন্ট ভিউ

ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৫

( ২০১৫ সনের ৫ নং আইন )

পঞ্চম অধ্যায়

অপরাধ ও দণ্ড

লাইসেন্স ব্যতীত ফরমালিনের আমদানি, উৎপাদন বা মজুদের দণ্ড।
২০। কোন ব্যক্তি যদি লাইসেন্স ব্যতীত ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন, বা মজুদ করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে এবং ইহার অতিরিক্ত অনধিক ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, তবে ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকার নিম্নে নহে, দণ্ডিত হইবেন।
লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করার দণ্ড
২১। কোন ব্যক্তি যদি এই আইনের অধীন প্রদত্ত লাইসেন্সের কোন শর্ত ভঙ্গ করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৭ (সাত) বৎসর কারাদণ্ড, তবে ৩ (তিন) বৎসরের নিম্নে নহে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, তবে ২ (দুই) লক্ষ টাকার নিম্নে নহে, বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
লাইসেন্স ব্যতীত ফরমালিন বিক্রয় বা ব্যবহারের দণ্ড
২২। কোন ব্যক্তি যদি লাইসেন্স ব্যতীত ফরমালিন বিক্রয় বা ব্যবহার করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড, তবে ৬ (ছয়) মাসের নিম্নে নহে, বা অনধিক ৪ (চার) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, তবে ১ (এক) লক্ষ টাকার নিম্নে নহে, বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
লাইসেন্স ব্যতীত ফরমালিন পরিবহন বা দখলে রাখার দণ্ড
২৩। কোন ব্যক্তি যদি লাইসেন্স ব্যতীত ফরমালিন পরিবহন করেন বা দখলে রাখেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২(দুই) বৎসর কারাদণ্ড, তবে ৬ (ছয়) মাসের নিম্নে নহে, বা অনধিক ৩ (তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, তবে ১(এক) লক্ষ টাকার নিম্নে নহে, বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
ফরমালিন উৎপাদনে ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রপাতি, ইত্যাদি রাখার দণ্ড
২৪। লাইসেন্সী ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির নিকট বা তাহার দখলে বা তাহার দখলভুক্ত কোন স্থানে যদি ফরমালিন উৎপাদনে ব্যবহারযোগ্য কোন যন্ত্রপাতি, সাজ-সরঞ্জাম বা উপকরণ পাওয়া যায়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড, তবে ৬ (ছয়) মাসের নিম্নে নহে, এবং ইহার অতিরিক্ত অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, তবে ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকার নিম্নে নহে, বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
অপরাধ সংঘটনে গৃহ বা যানবাহন, ইত্যাদি ব্যবহার করিতে দেওয়ার দণ্ড
২৫। কোন ব্যক্তি যদি জ্ঞাতসারে এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনের জন্য তাহার মালিকানাধীন বা দখলীয় কোন বাড়ি-ঘর, জায়গা-জমি, যানবাহন, যন্ত্রপাতি বা সাজ-সরঞ্জাম ব্যবহার করিতে অনুমতি দেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড, তবে ৬ (ছয়) মাসের নিম্নে নহে, বা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, তবে ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকার নিম্নে নহে, বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের দণ্ড
২৬। যদি কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের অধীন কোন অপরাধের বিষয়ে কোন মামলা দায়ের করেন এবং যদি তদন্তক্রমে বা সাক্ষ্য প্রমাণে ইহা প্রমাণিত হয় যে, উক্তরূপ অভিযোগটি মিথ্যা বা হয়রানিমূলক, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড, তবে ৩ (তিন) মাসের নিম্নে নহে, বা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, তবে ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকার নিম্নে নহে, বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
অপরাধ সংঘটনে সহায়তার দণ্ড
২৭। কোন ব্যক্তি যদি এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনে কাহাকেও সহায়তা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অপরাধ সংঘটনকারীর সমপরিমাণ দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
অপরাধ পুনঃসংঘটনের দণ্ড
২৮। এই আইনে উল্লিখিত কোন অপরাধের জন্য দণ্ডিত হইয়া দণ্ড ভোগ করিবার পর যদি কোন ব্যক্তি পুনরায় একই অপরাধ করেন, তাহা হইলে তিনি ধারা ২০ এর অধীন সংঘটিত অপরাধ ব্যতীত অন্যান্য অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ যে দণ্ড রহিয়াছে উহার দ্বিগুণ দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
অর্থ দণ্ড আদায়, ইত্যাদি
২৯। এই আইনের অধীন প্রদত্ত অর্থদণ্ডের অর্থ প্রচলিত আইনের বিধান অনুযায়ী দণ্ডিত ব্যক্তির নিকট হইতে বা তাহার বিদ্যমান সম্পদ বা তাহার মৃত্যু হইলে মৃত্যুর সময় রাখিয়া যাওয়া সম্পদ হইতে আদায় করা যাইবে।
কোম্পানী কর্তৃক অপরাধ সংঘটন
৩০। (১) এই আইনের অধীন কোন বিধান লঙ্ঘনকারী ব্যক্তি যদি কোম্পানী হয়, তাহা হইলে উক্ত কোম্পানীর, মালিক, অংশীদার, পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বা এজেন্ট বিধানটি লঙ্ঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত লঙ্ঘন তাঁহার জ্ঞাতসারে হয় নাই অথবা উক্ত লঙ্ঘন রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোম্পানী আইনগত ব্যক্তিসত্তা (body corporate) হইলে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট উক্ত কোম্পানীকে আলাদাভাবে একই কার্যধারায় অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে, তবে ফৌজদারী মামলায় উহার উপর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে শুধু অর্থদণ্ড আরোপ করা যাইবে।
 
 
ব্যাখ্যা- এই ধারায়-
 
 
(ক) ‘‘কোম্পানী’’ অর্থে কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ অনুযায়ী গঠিত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী, অংশীদারী ব্যবসা, কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও সমিতি বা সংগঠন, এবং দোকানও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(খ) বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ‘‘পরিচালক’’ অর্থ উহার কোন অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ডের সদস্য।
অপরাধ সম্পর্কে অনুমান
৩১। যদি কোন ব্যক্তির নিকট বা তাহার নিয়ন্ত্রণাধীন কোন স্থানে লাইসেন্সবিহীন কোন ফরমালিন প্রস্তুতে ব্যবহারযোগ্য সাজ-সরঞ্জাম বা যন্ত্রপাতি বা ফরমালিন প্রস্তুতের জন্য প্রয়োজনীয় কোন বস্তু বা উপাদান পাওয়া যায়, তাহা হইলে তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া আদালত অনুমান করিতে পারিবে, এবং তিনি যে উহা করেন নাই উহা প্রমাণের দায়িত্ব তাহার উপর বর্তাইবে।
রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন, পরীক্ষক নিয়োগ ও রিপোর্ট
৩২। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার ফরমালিনের প্রকার, পরিমাণ, মাত্রা বা ঐ প্রকার কোন উপাদানের রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগার স্থাপন করিতে পারিবে এবং উহার জন্য রাসায়নিক পরীক্ষক নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
 
(২) এই আইনের অধীন পরিচালিত কোন কার্যক্রমের কোন পর্যায়ে কোন বস্তুর রাসায়নিক পরীক্ষার প্রয়োজন দেখা দিলে উহা উপ-ধারা (১) এর অধীন স্থাপিত রাসায়নিক পরীক্ষাগারে প্রেরণ করিতে হইবে।
 
 
(৩) রাসায়নিক পরীক্ষকের স্বাক্ষরযুক্ত রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট এই আইনের অধীন কোন তদন্ত, বিচার বা অন্য কোন প্রকার কার্যক্রমে সাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহার করা যাইবে।
 
 
(৪) এই ধারার অধীন রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত এতদুদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত যে কোন পরীক্ষাগারে এই ধারায় উল্লিখিত রাসায়নিক পরীক্ষা করা যাইবে।
ক্ষতিপূরণ, ইত্যাদির দাবী অগ্রহণযোগ্য
৩৩। এই আইনের অধীন লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত কোন আদেশের ফলে কোন লাইসেন্সী ক্ষতিগ্রস্ত হইলে তজ্জন্য তিনি, অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ক্ষতিপূরণ দাবী করিতে পারিবেন না বা তৎকর্তৃক প্রদত্ত কোন ফিস ফেরত চাহিতে পারিবেন না।
অপরাধের বিচার
৩৪। Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, -
 
 
(ক) ধারা ২০ ও ২১ এর অধীন অপরাধসমূহ Special Powers Act, 1974 (Act XIV of 1974) এর অধীন গঠিত স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল, এবং
 
 
(খ) অন্যান্য অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, কর্তৃক বিচার্য হইবে।
মোবাইল কোর্টের এখতিয়ার
৩৫। এই আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ২০ ও ২১ এর অধীন অপরাধ ব্যতীত অন্যান্য অপরাধসমূহ, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর তফসিলভুক্ত করিয়া বিচার করা যাইবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs