পূর্বানুমোদন ব্যতীত জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত কার্যক্রম গ্রহণ ও গবেষণালব্ধ ফলাফল হস্তান্তরের দণ্ড
৩৯। যদি ধারা ৪ এ উল্লিখিত কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা, জাতীয় কমিটির পূর্বানুমোদন ব্যতীত, বাংলাদেশে পাওয়া যায় এমন কোনো জীববৈচিত্র্য বা জীবসম্পদ বা তদ্বিষয়ক দেশিয় জ্ঞান সংগ্রহ করেন বা অধিকারে নেন অথবা উহাদের বাণিজ্যিক ব্যবহার, জীব-সমীক্ষা বা জীব-পরীক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন, উহাদের আহরণ কার্যক্রমের সহিত যুক্ত হন অথবা বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য বা জীবসম্পদ হইতে গবেষণালব্ধ ফলাফল হস্তান্তর বা প্রদান করেন, তাহা হইলে এই আইনের অধীন উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন; তবে, জীববৈচিত্র্যের উপর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০ (দশ) লক্ষ টাকার অধিক হইলে অর্থদণ্ডের পরিমাণ সে মোতাবেক বর্ধিত হইবে।
অনুমোদন ব্যতীত জীববৈচিত্র্য বিষয়ক মেধাস্বত্বের অধিকারের জন্য আবেদনের দণ্ড
৪০। যদি কোনো ব্যক্তি, জাতীয় কমিটির পূর্বানুমোদন ব্যতীত, বাংলাদেশের জীবসম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে উদ্ভাবিত কোনো কিছুর মেধাস্বত্ব (Intelectual Property) অধিকারের জন্য বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের বাহিরে আবেদন করেন, তাহা হইলে এই আইনের অধীন তাহার উক্তরূপ কর্ম হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
বিপন্ন প্রাণী বা জীবসম্পদের উপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টিকারী কার্যক্রম গ্রহণের দণ্ড
৪১। যদি কোনো ব্যক্তি এইরূপ কোন কার্যক্রম গ্রহণ করেন, যাহা-
(ক) বিপন্ন প্রজাতির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বা ফেলিতে পারে;
(খ) সঙ্কটাপন্ন বা বিপন্ন বাস্তুসংস্থানিক সম্প্রদায়ের (ecological community) প্রতিবেশগত বৈশিষ্ট্যসমূহের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বা ফেলিতে পারে; অথবা
(গ) রামসার কনভেনশন অনুযায়ী জলাভূমি ঘোষিত এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশগত বৈশিষ্ট্যসমূহের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে বা ফেলিতে পারে,
তাহা হইলে এই আইনের অধীন তাহার উক্তরূপ কর্ম হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
সরকার বা কোনো কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত কোনো নির্দেশনা বা আদেশ লঙ্ঘন বা অমান্য করিবার দণ্ড
৪২। যদি কোনো ব্যক্তি সরকার বা কোনো কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত কোনো নির্দেশনা বা আদেশ লঙ্ঘন বা অমান্য করেন যাহার জন্য এই আইনে পৃথকভাবে শাস্তির বিধান করা হয় নাই, তাহা হইলে উক্তরূপ নির্দেশনা বা আদেশ লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং দ্বিতীয়বার বা পরবর্তীতে একই অপরাধ সংঘটনের জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন ।
অপরাধের আমলযোগ্যতা, জামিনযোগ্যতা ও আপোষ যোগ্যতা
৪৩। ধারা ৪২ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ অআমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও ক্ষতিপূরণ সাপেক্ষে আপোষযোগ্য হইবে এবং উক্ত ধারা ব্যতীত অন্যান্য ধারার অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য, অজামিনযোগ্য ও অআপোষযোগ্য হইবে।
মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের দণ্ড
৪৪। এই আইনের অধীন দায়েরকৃত কোন মামলায় আদালত শুনানী ও বিচারান্তে যদি কোন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খালাস প্রদান করে এবং আদালত তাহার রায়ে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, উক্ত অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক, তাহা হইলে মামলা দায়েরকারী ব্যক্তি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ১ (এক) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ, ইত্যাদি
৪৫। কোনো আদালত এই আইনের অধীন কৃত কোনো অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ করিবে না, যদি না-
(ক) সরকার বা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা মামলা দায়ের করেন; বা
(খ) কোনো প্রত্যক্ষ সুফল প্রত্যাশি ব্যক্তি (benefit claimer) মামলা দায়ের করেন:
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত ব্যক্তিকে অপরাধ সংঘটনের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অপরাধের বিষয়ে মামলা করিবার অভিপ্রায়ে সরকার বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর নোটিশ প্রদান করিতে হইবে।
ফৌজদারি কার্যবিধি (Act No. V of 1898) এর প্রয়োগ
৪৬। এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, এই আইনে বর্ণিত যে কোনো অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল ও আনুষঙ্গিক সকল বিষয়ে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) প্রযোজ্য হইবে।
সংস্থা কর্তৃক অপরাধ সংঘটন
৪৭। কোনো সংস্থা কর্তৃক এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে বা কোনো বিধান লঙ্ঘিত হইলে উক্ত অপরাধ বা লঙ্ঘনের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত সংস্থার এমন প্রত্যেক পরিচালক, নির্বাহী, ব্যবস্থাপক, সচিব বা অন্য কোনো কর্মকর্তা, কর্মচারী বা প্রতিনিধি, যে নামেই অভিহিত হউক, উক্ত অপরাধ বা লঙ্ঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ বা লঙ্ঘন তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ বা লঙ্ঘন রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়া অকৃতকার্য হইয়াছেন।
ব্যাখ্যা।- এই ধারায় ‘‘পরিচালক’’ অর্থে অংশীদারসহ পরিচালনা বোর্ডের সদস্যও অন্তর্ভুক্ত হইবে।