প্রিন্ট ভিউ

[সেকশন সূচি]

বেসামরিক বিমান চলাচল আইন, ২০১৭

( ২০১৭ সনের ১৮ নং আইন )

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
(১) ‘‘অপারেটর’’ অর্থ বেসামরিক বিমান পরিচালনার সহিত সম্পৃক্ত কোন ব্যক্তি;
 
(২) ‘‘অবতরণ এলাকা’’ অর্থ বিমানঘাঁটি বা বিমানবন্দরের যে অংশে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করে;
 
(৩) ‘‘আইসিএও’’ অর্থ International Civil Aviation Organization;
 
(৪)‘‘আকাশসীমা লঙ্ঘন’’ অর্থ বিমানের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার প্রয়োজন ব্যতীত, যথাযথ অনুমতি অথবা চেয়ারম্যানের অনুমোদন ব্যতিরেকে, বাংলাদেশের আকাশসীমায় কোন বিমানের ইচ্ছাকৃত প্রবেশ;
 
(৫) ‘‘আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি’’ বা ‘‘এ্যাপলায়েন্স’’ অর্থ প্যারাসুট ও যোগাযোগ সরঞ্জামাদি এবং অন্য কোন কৌশল বা বিমান উড্ডয়নের সময় উহার সহিত স্থাপিত বা সংযুক্ত কৌশলসহ বিমানের নেভিগেশন, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি, এ্যাপারেটাস, পার্টস, এ্যাপারটেন্যান্স বা একসেসরিজ, উহা যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, এবং বিমান, বিমানের ইঞ্জিন বা প্রপেলার ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
 
(৬) ‘‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন’’ অর্থ দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যে ভাড়া বা পারিতোষিকের বিনিময়ে বিমানে যাত্রী, পণ্য বা ডাক পরিবহন;
 
(৭) ‘‘এরিয়াল কার্য’’ অর্থ কৃষি, নির্মাণ কাজ, চিত্রগ্রহণ, জরিপ, পর্যবেক্ষণ ও টহল, তল্লাশি ও উদ্ধার বা এরিয়াল বিজ্ঞাপন, ইত্যাদি সম্পর্কিত কোন বিশেষ কাজের ক্ষেত্রে বিমানের ব্যবহার;
 
(৮) ‘‘এয়ারম্যান’’ অর্থ এমন কোন ব্যক্তি যিনি-
 
(ক) কোন বিমান চালনায় প্রধান ব্যক্তি, পাইলট, বিমান প্রকৌশলী বা মেকানিক, বা ক্রু সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন অথবা বিমান গন্তব্যে চলাকালীন অবস্থায় উহার অবস্থান নির্ণয়ের দায়িত্ব পালন করেন;
 
(খ) কোন বিমান, বিমান ইঞ্জিন, প্রপেলার বা সরঞ্জামাদি পরিদর্শন, রক্ষণাবেক্ষণ, ওভারহোলিং বা মেরামতের দায়িত্ব পালন করেন; বা
 
(গ) ফ্লাইট অপারেশন অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন;
 
(৯) ‘‘এয়ার অপারেটর’’ অর্থ এমন কোন ব্যক্তি বা সংস্থা যাহা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বা নিজের মাধ্যমে বা লীজ গ্রহণ করিয়া বা অন্য কোন ব্যবস্থাধীনে বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন ও পরিচালনার সহিত সম্পৃক্ত;
 
(১০) ‘‘এয়ার নেভিগেশন অর্ডার’’ বা ‘‘এএনও’’ অর্থ এই আইনের অধীন এ্যারোনটিক্যাল ও নন-এ্যারোনটিক্যাল বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জারীকৃত আদেশ:
 
(১১) ‘‘এয়ার নেভিগেশন সুবিধা’’ অর্থ এয়ার নেভিগেশনের জন্য ব্যবহৃত বা ব্যবহারের জন্য ডিজাইনকৃত কোন সুবিধাসহ বিমানবন্দর, অবতরণ এলাকা, লাইট অথবা আবহাওয়ার তথ্য সম্প্রচার, সিগন্যাল, বেতার নির্দেশনা সন্ধান বা বেতার ও অন্যান্য তড়িৎ-চৌম্বকীয় যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত কোন এ্যাপারেটাস বা যন্ত্রপাতি, এবং আকাশে কোন বিমান বা ফ্লাইটের অবতরণ ও উড্ডয়নের নির্দেশনা প্রদান বা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত অন্য কোন কাঠামো বা কৌশলও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(১২) ‘‘কর্তৃপক্ষ’’ অর্থ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৭ (২০১৭ সনের ৩নং আইন) এর ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ;
 
(১৩) ‘‘ক্রু সদস্য’’ অর্থ কোন অপারেটর কর্তৃক ফ্লাইটের সময় বা বিমান উড্ডয়নকালে বিমানের কোন দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি;
 
(১৪) ‘‘খুচরা যন্ত্রাংশ’’ বা ‘‘যন্ত্রাংশ’’ অর্থ বিমান, বিমান ইঞ্জিন, প্রপেলার ও এ্যাপলায়েন্স এর কোন অংশ, যাহা কোন বিমান, বিমান ইঞ্জিন, প্রপেলারে বা এ্যাপলায়েন্সে স্থাপন বা ব্যবহারের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, কিন্তু উহাদের মধ্যে স্থাপন বা সংযুক্ত করা হয় নাই;
 
(১৫) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান;
 
(১৬) ‘‘জেনারেল এভিয়েশন’’ বা ‘‘সাধারণ এভিয়েশন’’ অর্থ বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন বা এরিয়াল কার্য ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে সাধারণ বিমান পরিচালনা;
 
(১৭) ‘‘নির্ধারিত’’ অর্থ এএনও দ্বারা নির্ধারিত;
 
(১৮) ‘‘নেভিগেশনযোগ্য বা বিমান চলাচলযোগ্য আকাশসীমা’’ অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত সর্বনিম্ন ফ্লাইট উচ্চতার ঊর্ধ্বের (altitude) আকাশসীমা, এবং বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের জন্য সুরক্ষার নিশ্চয়তা আবশ্যক এইরূপ আকাশসীমাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(১৯) ‘‘প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য বেআইনি আচরণ’’ অর্থ বেসামরিক বিমান চলাচলের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিপন্ন করে এইরূপ কোন কার্য এবং নিম্নবর্ণিত কার্যসমূহও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা: -
 
(ক) বেআইনিভাবে বিমানের কর্তৃত্ব গ্রহণ;
 
(খ) বিমানের ক্ষতিসাধন;
 
(গ) বিমানঘাঁটিতে অথবা বিমানের অভ্যন্তরে কাউকে জিম্মি করা;
 
(ঘ) বিমানের অভ্যন্তরে, কোন বিমানবন্দরে অথবা এ্যারোনটিক্যাল স্থাপনায় বলপ্রয়োগপূর্বক অনধিকার প্রবেশ;
 
(ঙ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্যে বিমানের অভ্যন্তরে অথবা বিমানবন্দরে অস্ত্র অথবা বিপজ্জনক যন্ত্র বা পদার্থ ব্যবহার;
 
(চ) জীবননাশ, মারাত্মক শারীরিক আঘাত, সম্পদ বা পরিবেশের ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে কোন বিমান ব্যবহার;
 
(ছ) উড্ডয়নরত অথবা ভূমিতে অবস্থানরত বিমান, যাত্রী ও ক্রু পরিসেবার সহিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অথবা বিমানবন্দর বা বেসামরিক বিমান চলাচলের যে কোন স্থাপনায় অবস্থানরত জনসাধারণের নিরপত্তা বিপন্ন করিবার উদ্দেশ্যে মিথ্যা তথ্য প্রদান;
 
(২০) ‘‘প্রপেলার’’ অর্থে প্রপেলারের খুচরা যন্ত্রাংশ, আনুষঙ্গিক ও সহায়ক সরঞ্জামও ইহা অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(২১) ‘‘বিদেশি এয়ার অপারেটর’’ অর্থ এমন কোন এয়ার অপারেটর যিনি কোন রাষ্ট্র কর্তৃক অন্য কোন রাষ্ট্রের আকাশ সীমায় বিমান পরিচালনার জন্য এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত হইয়াছেন;
 
(২২) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
(২৩) ‘‘বিপজ্জনক পণ্য’’ অর্থ এমন কোন দ্রব্য বা বস্তু যাহা স্বাস্থ্য, সম্পত্তি বা পরিবেশের ক্ষতি করিতে পারে বা উহাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত করিতে পারে এবং যাহা আইসিএও এর টেকনিক্যাল নির্দেশনায় বিপজ্জনক পণ্যের তালিকার অন্তর্ভুক্ত বা শ্রেণিভুক্ত;
 
(২৪) ‘‘বিমান’’ অর্থে কোন যন্ত্র যাহা বাতাসের প্রতিঘাত, ভূ-পৃষ্ঠের বিপরীতে নহে, দ্বারা বায়ুমণ্ডলে ভর করিয়া ভাসিতে পারে, এবং বদ্ধ বা মুক্ত বেলুন, এয়ার শিপ, ঘুড়ি, ড্রোন, গ্লাইডার এবং উড্ডয়নরত যন্ত্রও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(২৫) ‘‘বিমান ইঞ্জিন’’ অর্থ এইরূপ কোন ইঞ্জিন যাহা বিমান চালনার জন্য বা বিমান চালনার অভিপ্রায়ে ব্যবহৃত হয়, এবং প্রপেলার ব্যতীত বিমানের সকল খুচরা যন্ত্রাংশ, আনুষঙ্গিক ও সহায়ক সরঞ্জামও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(২৬) ‘‘বিমানঘাঁটি’’ অর্থ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বিমান অবতরণ বা আগমন, উড্ডয়ন বা প্রস্থান এবং ভূমিতে চলাচলের জন্য ব্যবহৃত সুনির্দিষ্ট কোন স্থল বা জলভাগ এবং কোন ইমারত, স্থাপনা ও যন্ত্রপাতিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(২৭) ‘‘বিমান ছিনতাই’’ অর্থ বলপ্রয়োগ ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে বা যে কোন ধরনের ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে কোন বিমান আটক, নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ বা উহার উদ্যোগ গ্রহণ করা;
 
(২৮) ‘‘বিমান পরিবহন সেবা’’ অর্থ আকাশপথে যাত্রী, পণ্য, ডাক ও অন্যান্য সামগ্রী পরিবহনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত কোন সেবা;
 
(২৯) ‘‘বিমানবন্দর’’ অর্থ এমন কোন বিমানঘাঁটি, যেখানে বেসামরিক বিমান চলাচলের গুরুত্ব বিবেচনা করিয়া, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার উন্নয়ন করা হইয়াছে;
 
(৩০) ‘‘বিমানের নেভিগেশন’’ অর্থে বিমানের পাইলটিং বা চালনা কার্যও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(৩১) ‘‘বেসামরিক বিমান’’ অর্থ রাষ্ট্রীয় বিমান ব্যতীত অন্য কোন বিমান;
 
(৩২) ‘‘বেসামরিক বিমান চলাচল’’ অর্থ সাধারণ বা বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন অথবা এরিয়াল কার্যের উদ্দেশ্যে কোন বেসামরিক বিমান পরিচালনা;
 
(৩৩) ‘‘বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন’’ অর্থ বিমান কর্তৃক ভাড়া বা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে যাত্রী, পণ্য বা ডাক পরিবহনসহ অন্যান্য কার্যক্রম;
 
(৩৪) ‘‘ব্যক্তি’’ অর্থে কোন ফার্ম, অংশীদারি কারবার, কর্পোরেশন, কোম্পানি, সমিতি, সংঘ, জয়েন্ট-স্টক কোম্পানি, সংস্থা ও ট্রাস্টি এবং উহাদের প্রতিনিধিও অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(৩৫) ‘‘রাষ্ট্রীয় বিমান’’ অর্থ শৃঙ্খলা বাহিনী, কাস্টমস এবং বাংলাদেশ সরকারের জন্য ব্যবহৃত বিমান;
 
(৩৬) ‘‘শিকাগো কনভেনশন’’ অর্থ Convention on International Civil Aviation, 1944;
 
(৩৭) ‘‘শিকাগো কনভেনশনের পরিশিষ্ট’’ অর্থ আইসিএও কর্তৃক ইস্যুকৃত বেসামরিক বিমান পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মানদণ্ড ও সুপারিশ সংবলিত দলিল;
 
(৩৮) ‘‘সার্টিফিকেট’’, ‘‘লাইসেন্স’’ বা ‘‘পারমিট’’ অর্থ এই আইনের অধীন চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেট, লাইসেন্স বা পারমিট;
 
(৩৯) ‘‘সেবা প্রদানকারী সংস্থা’’ অর্থ বিমান চলাচলের পরিসেবা প্রদানকারী যে কোন প্রতিষ্ঠান;
 
(৪০) ‘‘স্ক্রিনিং’’ অর্থ এইরূপ কোন যন্ত্র বা যন্ত্রের ন্যায় কোন বস্তুর ব্যবহার, যাহা কোন অস্ত্র, বিস্ফোরক বা যন্ত্রপাতি, বস্তু বা সামগ্রী শনাক্ত বা সন্ধান করিতে পারে; এবং
 
(৪১) ‘‘হেলিপোর্ট’’ অর্থ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোন হেলিকপ্টার অবতরণ, উড্ডয়ন ও ভূ-পৃষ্ঠে চলাচল করিবার জন্য ব্যবহৃত বা ব্যবহারের উদ্দেশ্যে নিমিত্ত বিমানঘাঁটি বা কোন কাঠামোর উপর নির্ধারিত এলাকা।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs