প্রিন্ট ভিউ

[সেকশন সূচি]

স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন, ২০১৭

( ২০১৭ সনের ২১ নং আইন )

দ্বিতীয় অধ্যায়

অধিগ্রহণ

স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণের জন্য প্রাথমিক নোটিশ জারি
৪। (১) জেলা প্রশাসকের নিকট কোনো স্থাবর সম্পত্তি জনপ্রয়োজনে বা জনস্বার্থে আবশ্যক মর্মে প্রতীয়মান হইলে তিনি উক্ত সম্পত্তি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হইয়াছে উল্লেখ করিয়া উক্ত সম্পত্তির উপর বা সম্পত্তির নিকটবর্তী সুবিধাজনক স্থানে, নির্ধারিত ফরম ও পদ্ধতিতে, নোটিশ জারি করিবেন।
 
(২) বেসরকারি ব্যক্তি বা সংস্থার জন্য স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে, স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ যাহাই হউক না কেন, অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া আরম্ভের পূর্বে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
 
(৩) জেলা প্রশাসক, উপ-ধারা (১) এর অধীন -
 
(ক) নোটিশ জারির পূর্বে, নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে, অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবিত স্থাবর সম্পত্তির প্রকৃত অবস্থা ও প্রকৃতি এবং উপরিস্থিত অবকাঠামো, ফসল ও বৃক্ষরাজিসহ সকল কিছুর ভিডিও ও স্থিরচিত্র অথবা অন্য কোনো প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ধারণ করত উহাদের বিবরণী প্রস্তুত করিবেন; এবং
 
(খ) নোটিশ জারির পর, নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে, প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থা এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সহিত যৌথভাবে একটি যৌথ তালিকা প্রস্তুত করিবেন।
 
(৪) বাস্তবে কোনো জমির রেকর্ডিয় শ্রেণি পরিবর্তিত হইলে জেলা প্রশাসক, যৌথ তালিকা প্রস্তুতকালে, উক্ত শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন।
 
(৫) অবৈধভাবে লাভবান হইবার নিমিত্ত অধিগ্রহণাধীন বা অধিগ্রহণ হইতে পারে এমন ভূমির উপর জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্যে কোনো ঘরবাড়ি বা অবকাঠামো নির্মাণ করা হইয়াছে কিনা বা নির্মাণাধীন কিনা তাহা, জেলা প্রশাসক, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, যৌথ তালিকায় উল্লেখ করিবেন।
 
(৬) উপ-ধারা (৩) এর দফা (খ) এর অধীন প্রস্তুতকৃত যৌথ তালিকা স্থানীয় ভূমি অফিসের নোটিশ বোর্ডে এবং প্রকল্পের সুবিধাজনক স্থানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করিতে হইবে।
 
(৭) অধিগ্রহণাধীন বা অধিগ্রহণ হইতে পারে এমন ভূমির উপর, উপ-ধারা (৩) এর দফা (ক) এর অধীন কার্যক্রম গ্রহণের পর, অসদুদ্দেশ্যে নির্মিত বা নির্মাণাধীন ঘরবাড়ি বা অবকাঠামোর দ্বারা সংশ্লিষ্ট ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করা হইলে, উক্তরূপ পরিবর্তন জেলা প্রশাসক যৌথ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করিবেন না।
 
(৮) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (৭) এর অধীন জেলা প্রশাসক কর্তৃক গৃহীত কোনো সিদ্ধান্তের দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইলে, পরবর্তী ৭(সাত) কার্যদিবসের মধ্যে, কমিশনারের নিকট আপিল দায়ের করিতে পারিবেন।
 
(৯) কমিশনার, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উপ-ধারা (৮) এর অধীন প্রাপ্ত আপিল শুনানি করিবেন এবং পরবর্তী ১৫(পনের) কার্যদিবস অথবা, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে, ১০(দশ) কার্যদিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন।
 
(১০) উপ-ধারা (৯) এর অধীন কমিশনার কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
(১১) উপ-ধারা (৯) এর অধীন কোনো আপিল নিষ্পত্তি হইলে অথবা উপ-ধারা (৮) এ উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে আপিল করা না হইলে, পরবর্তী ২৪(চব্বিশ) ঘণ্টার মধ্যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবিত স্থাবর সম্পত্তি হইতে সকল অবৈধ ঘরবাড়ি বা অবকাঠামো নিজ খরচে অপসারণ করিবেন; অন্যথায় জেলা প্রশাসক প্রচলিত বিধি-বিধান মোতাবেক উহা উচ্ছেদের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
 
(১২) জেলা প্রশাসক, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থান নির্বাচনের পর, আদেশ দ্বারা, সংশ্লিষ্ট এলাকার জমি ক্রয় বিক্রয় ও জমিতে অবকাঠামো তৈরির বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করিতে পারিবেন।
 
(১৩) সাধারণভাবে ধর্মীয় উপাসনালয়, কবরস্থান এবং শ্মশান হিসাবে ব্যবহৃত কোনো ভূমি অধিগ্রহণ করা যাইবে না:
 
তবে শর্ত থাকে যে, জনপ্রয়োজনে বা জনস্বার্থে একান্ত অপরিহার্য হইলে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রত্যাশিত ব্যক্তি বা সংস্থার অর্থে স্থানান্তর ও পুনঃনির্মাণ সাপেক্ষে কেবল উক্ত সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা যাইবে।
 
ব্যাখ্যা।- এই ধারায় ‘‘জনস্বার্থ বিরোধী উদ্দেশ্য’’ বলিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা প্রদান, বিঘ্ন সৃষ্টি বা বিলম্বিত করিবার লক্ষ্যে কোনো কাজ বা ব্যবস্থা গ্রহণক্রমে ক্ষতিপূরণ হিসাবে বা অন্য কোনোভাবে আর্থিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যকে বুঝাইবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs