প্রিন্ট

27/12/2024
ক্যান্টনমেন্ট আইন, ২০১৮

ক্যান্টনমেন্ট আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ২৭ নং আইন )

অধ্যায়-১৫

অপরাধ, বিচার, সাধারণ আইনের প্রয়োগ, ইত্যাদি

আইনের অধীন অপরাধ
১৯৬। (১)এই আইন বা তদধীন প্রণীত কোন বিধি বা উপ-আইনের অধীন কোনো ব্যক্তিকে এক্সিকিউটিভ অফিসার কর্তৃক প্রশাসনিক এখতিয়ারে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হইলে, উক্ত অর্থদণ্ড কার্যকর বা, ক্ষেত্রমত, আপিলের পর চূড়ান্তভাবে কার্যকর হইবার পর, এক্সিকিউটিভ অফিসার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, উক্ত দণ্ডিত ব্যক্তি, উক্ত অর্থদণ্ড পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিবেন।
 
(২) উপধারা (১) এর বিধানমতে দণ্ডিত ব্যক্তি, নিজ হইতে অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ না করিলে অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন, অথবা অর্থদণ্ডের অতিরিক্ত আরো সমপরিমাণ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
অপরাধ বিচারার্থ আমলে গ্রহণের শর্ত
১৯৭। এই আইনে স্পষ্টভাবে ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে, সংশ্লিষ্ট বোর্ডের নিকট হইতে বা এতদবিষয়ে বোর্ডের, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির নিকট হইতে অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত, কোনো আদালত এই আইন দ্বারা বা তদধীন প্রণীত বিধি বা উপ-আইন দ্বারা শাস্তিযোগ্য কোনো অপরাধ বিচারার্থ আমলে গ্রহণ করিবে না।
অপরাধের আমল-অযোগ্যতা, জামিন যোগ্যতা এবং আপোষযোগ্যতা
১৯৮। (১) এই আইনের অধীন সকল অপরাধ অপরাধ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No V of 1898) এর অর্থে আমল-অযোগ্য (non-cognizable), জামিনযোগ্য (bailable) এবং আপোষযোগ্য (compoundable) হইবে।
 
(২) বোর্ড বা এতদুদ্দেশ্যে তৎকর্তৃক, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, অভিযোগ দায়েরের পূর্বে বা পরে, এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য যে কোনো অপরাধের বিষয়ে আপোষ করিতে পারিবে :
 
তবে শর্ত থাকে যে, বোর্ড দ্বারা বা উহার পক্ষে জারিকৃত কোনো নোটিশ, আদেশ বা লিখিত দাবি মান্য করিবার ব্যর্থতাজনিত কোনো অপরাধে আপোষ করা যাইবে না, যদি না এবং, যতক্ষণ পর্যন্ত না, যতদূর সম্ভব, উহা মান্য করা হয়।
 
(৩) যেক্ষেত্রে কোনো অপরাধের আপোষ করা হয়, সেইক্ষেত্রে অপরাধীকে, যদি হেফাজতে থাকে, মুক্তি দেওয়া হইবে এবং এইরূপ আপোষকৃত অপরাধের জন্য তাহার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে না।
 
(৪) কোনো অপরাধ অর্থের বিনিময়ে আপোষের মাধ্যমে মীমাংসা করা হইলে, তদ্দ্বারা আদায়কৃত অর্থ বোর্ডের আয় হিসাবে বোর্ডের তহবিলে জমা হইবে।
অবশিষ্ট অন্যায়কার্য সম্পর্কিত শাস্তির বিধান
১৯৯। যেক্ষেত্রে এই আইনের কোনো বিধান অনুসারে জারিকৃত কোনো নোটিশ, আদেশ বা লিখিত দাবি মান্য করিতে ব্যর্থ হইবার জন্য এই আইনের অধীন স্পষ্টভাবে কোনো শাস্তির বিধান করা না থাকে, সেইক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি যদি অনুরূপ কোনো নোটিশ, আদেশ বা লিখিত দাবি মান্য করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে তিনি অন্যূন ২ (দুই) হাজার এবং অনধিক ২০ (বিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
সম্পত্তি বিনষ্টকরণের ক্ষেত্রে অর্থ আদায়
২০০। যেক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিকে বোর্ডের কোনো সম্পত্তি বিনষ্ট করিবার কারণে দণ্ডিত করা হয়, সেইক্ষেত্রে তিনি উক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য থাকিবেন এবং উক্ত ক্ষতির কারণে প্রদেয় অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে মতানৈক্য হইলে, এরিয়া কমান্ডার কর্তৃক উক্ত অর্থের পরিমাণ নির্ধারিত হইবে এবং পুনঃনির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করা না হইলে, উহা উক্ত ব্যক্তির অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও বিক্রয়ের মাধ্যমে, যতদূর সম্ভব, আদায় করা হইবে।
অন্যায়কার্য ও অপরাধ
২০১। (১) এই আইন বা তদধীন প্রণীত কোনো বিধি, উপ-আইন, প্রদত্ত কোনো আদেশ, নির্দেশ, বিজ্ঞপ্তি বা প্রজ্ঞাপনের ব্যত্যয়ে কৃত কোনো কার্য বা, করণীয় কোনো কার্য হইতে ইচ্ছাকৃতভাবে বিরত থাকা, কেবল আর্থিক জরিমানা দ্বারা শাস্তিযোগ্য হইয়া থাকিলে উহা, অন্যায়কার্য হিসাবে গণ্য হইবে এবং উক্ত কারণে আরোপিত জরিমানা প্রশাসনিক এখতিয়ারে প্রদত্ত আদেশ হিসাবে গণ্য হইবে।
 
(২) ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় প্রযোজ্য কোনো সাধারণ আইন বা এই আইন বা তদধীন প্রণীত কোনো বিধি, উপ-আইন, প্রদত্ত কোনো আদেশ, নির্দেশ, বিজ্ঞপ্তি বা প্রজ্ঞাপনের ব্যত্যয়ে কৃত কোনো কার্য বা, করণীয় কোনো কার্য হইতে ইচ্ছাকৃতভাবে বিরত থাকা, কারাদণ্ড বা কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দ্বারা শাস্তিযোগ্য হইয়া থাকিলে উহা, অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে এবং উক্ত কারণে আরোপিত অর্থদণ্ড, কারাদণ্ড বা কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড বিচারিক এখতিয়ারে প্রদত্ত বিচারিক আদেশ হিসাবে গণ্য হইবে।
জরিমানা ও অর্থদণ্ডের অর্থ বণ্টন
২০২। (১) কোনো অন্যায় কার্যের জন্য বোর্ড কর্তৃক বা বোর্ডের পক্ষে প্রশাসনিক এখতিয়ারে আরোপিত জরিমানার অর্থ আদায় হইয়া থাকিলে উহা বোর্ডের আয় গণ্যে বোর্ডের তহবিলে জমা হইবে।
 
(২) কোনো অপরাধের জন্য কোনো আদালত কর্তৃক বিচারিক এখতিয়ারে আরোপিত অর্থদণ্ডের অর্থ আদায় হইয়া থাকিলে উহা আদালত যেইভাবে নির্ধারণ করিবে সেইভাবে বণ্টিত বা ব্যবহৃত হইবে।
অভিযুক্তকরণের সীমাবদ্ধতা
২০৩। (১) এই আইন বা উহার অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইবার ৬ (ছয়) মাস অতিক্রান্ত হইবার পর তৎসম্পর্কে কোনো অভিযোগ বা মামলা বোর্ডের পক্ষে সরাসরি কোনো আদালতে দরখাস্তের মাধ্যমে করা হইলে আদালত উক্ত অভিযোগ বা মামলা বিচারার্থ আমলে গ্রহণ করিবে না।
 
(২) এই আইন বা উহার অধীন প্রণীত কোনো বিধি বা উপ-আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইবার ৩ (তিন) মাস অতিক্রান্ত হইবার পর তৎসম্পর্কে কোনো অভিযোগ বা মামলার বিষয়ে বোর্ডের পক্ষে কোনো থানায় এজাহার দায়ের করা হইলে উক্ত থানা উক্ত এজহারের বিষয়ে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করিবে না।
মামলার নোটিশ প্রদান
২০৪। (১) কোনো ব্যক্তি বোর্ডের কোনো আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইয়া কোনো দেওয়ানি মামলা দায়ের করিতে চাহিলে, তিনি তামাদির মেয়াদের মধ্যে বোর্ডের অফিসে লিখিত নোটিশ প্রেরণ করিবেন এবং উক্ত নোটিশে সুনির্দিষ্টভাবে গৃহীত পদক্ষেপের কারণ, প্রার্থিত প্রতিকার, দাবিকৃত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ এবং উদ্দিষ্ট বাদির নাম ও বাসস্থানের ঠিকানা উল্লেখ করিবেন এবং উক্ত নোটিশ জারি হইবার পর ২ (দুই) মাস অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত মামলা দায়ের করিবেন না।
 
(২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত ২ (দুই) মাস সময়ের মধ্যে বোর্ড এবং নোটিশ প্রদানকারী পক্ষ বিষয়টি আইন, বিধি-বিধান ও ন্যায়নীতির ভিত্তিতে মীমাংসার মাধ্যমে নিষ্পন্ন করিবার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করিবেন।
 
(৩) উপধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো মামলা কার্যকারণ উদ্ভূত হইবার তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাস সময় অতিক্রান্তের পর দায়ের করা যাইবে না, যদি না উহা স্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের কোনো পদক্ষেপ হয় বা উহার স্বত্ব ঘোষণার জন্য হয়।
প্রশাসনিক আদেশ সংক্রান্ত আপিল
২০৫। (১) কোনো ব্যক্তি যদি এই আইন বা তদধীন প্রণীত কোনো বিধি, প্রবিধি, উপ-আইন বা অন্য কোনো আদেশের অধীন বোর্ড কর্তৃক বা বোর্ডের পক্ষে প্রদত্ত কোনো আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হন, তাহা হইলে তিনি, এই আইন দ্বারা বা তদধীন ভিন্নতর কোনো বিকল্প পদ্ধতি বিধৃত করা না হইয়া থাকিলে, এরিয়া কমান্ডারের নিকট আপিল করিতে পারিবেন।
 
(২) এই ধারার অধীন আপিল, কার্যকারণ উদ্ভূত হইবার ৯০ (নব্বই) দিবসের মধ্যে দায়ের করা না হইলে, তামাদিতে বারিত হইবে।
আপিলের দরখাস্ত
২০৬। (১) প্রত্যেক আপিল লিখিত দরখাস্তের মাধ্যমে, যে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হইয়াছে উহার একটি কপিসহ, করিতে হইবে।
 
(২) উপধারা (১) এর অধীন যে কোনো দরখাস্ত যে কর্তৃপক্ষ আপিলযোগ্য আদেশ প্রদান করিয়াছেন, উহার নিকট উপস্থাপন করা যাইতে পারে এবং উক্ত কর্তৃপক্ষ উহা আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট অগ্রবর্তী করিতে বাধ্য থাকিবে এবং ইচ্ছা করিলে ব্যাখ্যা স্বরূপ উহার সহিত একটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করিতে পারিবে।
 
(৩) কোনো আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল গৃহীত হইবার পর, উক্ত আদেশ কার্যকর করিবার জন্য সকল কার্যধারা এবং উহা লঙ্ঘন করিবার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ আপিলের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে স্থগিত রাখা যাইবে।
 
(৪) আপিল কর্তৃপক্ষের আদেশ চূড়ান্ত হইবে।
 
(৫) এই ধারার অধীন কোনো আপিলের নিষ্পত্তি হইবে না, যদি না আপিলকারীর শুনানি গ্রহণ করা হয় বা তাহাকে ব্যক্তিগতভাবে বা কোনো আইনজীবীর মাধ্যমে শুনানির যুক্তিযুক্ত সুযোগ প্রদান করা হয় |

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs