প্রিন্ট ভিউ

ক্যান্টনমেন্ট আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ২৭ নং আইন )

অধ্যায়-১৩

যৌন অনৈতিকতা দমন এবং অবাঞ্ছিত ব্যক্তিগণকে বহিষ্কার

পতিতালয় এবং পতিতাদের অপসারণের ক্ষমতা
১৭৩। (১) যদি স্টেশন কমান্ডার, এই মর্মে সংবাদ প্রাপ্ত হন যে, ক্যান্টনমেন্টের কোনো ইমারত পতিতালয় হিসাবে বা পতিতাবৃত্তির উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হইতেছে, তাহা হইলে তিনি, প্রাপ্ত সংবাদের সারসংক্ষেপ উল্লেখ করিয়া লিখিত আদেশ দ্বারা, উক্ত ইমারতের মালিক, ইজারাদার, ভাড়াটিয়া বা দখলদারকে তাহার সম্মুখে, ব্যক্তিগতভাবে বা কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে, হাজির হইবার জন্য তলব করিতে পারিবেন এবং যদি স্টেশন কমান্ডার উক্ত সংবাদের সত্যতা সম্পর্কে সন্তুষ্ট হন, তাহা হইলে তিনি, লিখিত আদেশক্রমে, উক্ত মালিক, ইজারাদার, ভাড়াটিয়া বা, ক্ষেত্রমত, দখলদারকে, আদেশে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে, ইমারতের এইরূপ ব্যবহার বন্ধ করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।
 
(২) কোনো ব্যক্তি ক্যান্টনমেন্টের অভ্যন্তরে পতিতাবৃত্তি করিবে না বা তদুদ্দেশ্যে ইতস্তত চলাফেরা করিয়া বেড়াইবে না বা যৌন অনৈতিকতা সংঘটিত করিবার জন্য অংগভংগি করিয়া কাউকে উত্যক্ত করিবে না।
 
(৩) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর নির্দেশ অমান্য করেন, তাহা হইলে তিনি অন্যূন ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা এবং অনধিক ২০ (বিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং উপধারা (২) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে অন্যূন ১ (এক) হাজার টাকা এবং অনধিক ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
অসংযত ব্যক্তিগণকে বহিষ্কার
১৭৪। (১) ক্যান্টনমেন্টে বসবাসকারী বা ঘনঘন যাতায়াতকারী কোনো ব্যক্তি যদি এমন একজন অসংযত ব্যক্তি হন যিনি-
 
(ক) একাধিকবার জুয়া খেলার অপরাধে শাস্তি প্রাপ্ত হইয়াছেন বা যিনি একটি সাধারণ জুয়াখানা চালান বা ঘনঘন জুয়াখানায়, কোনো অসংযত মদের দোকান বা যে কোনো ধরনের অসংযত বাড়িতে যাতায়াত করেন; বা
 
(খ) একাধিকবার কোনো আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য অপরাধে শাস্তি প্রাপ্ত হইয়াছেন;
 
তাহা হইলে এক্সিকিউটিভ অফিসার প্রাপ্ত সংবাদের সার-সংক্ষেপ লিখিতভাবে রেকর্ড করিবেন এবং এইরূপ ব্যাক্তিকে হাজির হইবার জন্য এবং এই মর্মে কারণ দর্শানোর জন্য সমন জারি করিবেন যে কেন তাহাকে ক্যান্টনমেন্ট হইতে অপসারণ করা হইবে না এবং উহাতে পুনরায় প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হইবে না।
 
(২) উপধারা (১) এর অধীন জারিকৃত সমনের সহিত পূর্বে বর্ণিত রেকর্ডের একটি কপি যুক্ত থাকিবে এবং এক কপি সমনসহ যেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে উহা জারি করা হইয়াছে তাহাকে প্রদান করা হইবে।
 
(৩) উপধারা (১) এর অধীন জারিকৃত সমনের প্রেক্ষিতে সমন প্রাপ্ত ব্যক্তি এক্সিকিউটিভ অফিসারের সামনে হাজির হওয়ার পর তিনি প্রাপ্ত সংবাদের সত্যতা যাচাই শুরু করিবেন এবং তিনি যেরূপ সঠিক মনে করেন সেইরূপ অধিকতর সাক্ষ্য গ্রহণ করিবেন এবং এইরূপ তদন্তের পর, যদি তাহার নিকট প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত ব্যক্তি উপধারা (১) এ বর্ণিত যে কোনো ধরনের একজন ব্যক্তি এবং ক্যান্টনমেন্টে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখিবার স্বার্থে উক্ত ব্যক্তিকে উহা হইতে অপসারণ করা এবং ক্যান্টনমেন্টে পুনঃ প্রবেশ করা হইতে নিষেধ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে এক্সিকিউটিভ অফিসার বিষয়টি স্টেশন কমান্ডারের নিকট রিপোর্ট করিবেন এবং যদি স্টেশন কমান্ডার সেইরূপ নির্দেশ প্রদান করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উপর লিখিতভাবে একটি আদেশ প্রদান করিবার ব্যবস্থা করিবেন যাহাতে তাহাকে নোটিশে বর্ণিত সময়ের মধ্যে ক্যান্টনমেন্ট ত্যাগ করিতে হইবে এবং স্টেশন কমান্ডারের লিখিত অনুমতি ব্যতিরেকে পুনরায় উহাতে প্রবেশ করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হইবে।
অন্তর্ঘাতি ব্যক্তিগণের বহিষ্কার
১৭৫। (১) যদি ক্যান্টনমেন্টের অভ্যন্তরে অবস্থান বা বসবাস করিয়া কোনো ব্যক্তি এইরূপ কোনো কিছু ঘটান বা ঘটানোর চেষ্টা করেন বা এমন কোনো কাজ করেন যাহা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কোনো অংশের মধ্যে আনুগত্যহীনতা, সৌন্দর্যহানি বা শৃঙ্খলা ভংগ করিতে পারে বলিয়া স্টেশন কমান্ডার জ্ঞাত থাকেন বা তিনি এইরূপ ব্যক্তি যিনি এইরূপ করিতে পারেন বলিয়া তাহার বিশ্বাস করিবার কারণ রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি লিখিতভাবে কারণসমূহ বিধৃত করিয়া একটি আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং আদেশে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উক্ত ব্যক্তিকে ক্যান্টনমেন্ট হইতে অপসারিত হওয়া এবং স্টেশন কমান্ডারের লিখিত অনুমতি ব্যতিরেকে পুনরায় উহাতে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা বর্ণিত থাকিবে:
 
তবে শর্ত থাকে যে, এই ধারার অধীন কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো আদেশ প্রদান করা হইবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তাহাকে প্রস্তাবিত আদেশের কারণসমূহ সম্পর্কে জ্ঞাত হইবার যুক্তিযু্ক্ত সুযোগ প্রদান করা হয় এবং কেন উক্ত আদেশ করা হইবে না তাহার কারণ দর্শাইতে বলা হয়।
 
(২) উপধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত প্রত্যেক আদেশ জেলা পুলিশ প্রধান বা, ক্ষেত্রমত, মহানগর পুলিশ প্রধানের নিকট প্রেরণ করা হইবে, যিনি উহার একটি কপি সংশ্লি¬ষ্ট ব্যক্তির নিকট পৌঁছানোর ব্যবস্থা করিবেন।
 
(৩) উপধারা (১) এর অধীন কোনো আদেশ প্রদানের পর স্টেশন কমান্ডার তাৎক্ষণিকভাবে উহার একটি কপি এরিয়া কমান্ডারের নিকট প্রেরণ করিবেন।
 
(৪) ক্যান্টনমেন্টের অভ্যন্তরে অবস্থান বা বসবাস করে না এইরুপ কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো কিছু ঘটনা ঘটান বা ঘটানোর চেষ্টা করেন বা এমন কোনো কাজ করেন যাহা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কোনো অংশের মধ্যে আনুগত্যহীনতা, সৌন্দর্যহানি বা শৃঙ্খলা ভংগ করিতে পারে বলিয়া স্টেশন কমান্ডার জ্ঞাত থাকেন বা এইরূপ করিতে পারেন বলিয়া তাহার বিশ্বাস করিবার কারণ রহিয়াছে,তাহা হইলে স্টেশন কমান্ডার একটি আদেশ প্রদানের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তিকে স্টেশন কমান্ডারের লিখিত অনুমতি ব্যতিরেকে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবেন।
উপ-আইন ভঙ্গ করার ক্ষেত্রে দণ্ড
১৭৬। (১) যদি কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীনে প্রণীত কোনো উপ-আইন লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে, তিনি-
 
(ক) অনধিক ১ (এক) হাজার টাকাঅর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন; বা
 
(খ) অনধিক ১ (এক) হাজার টাকার অর্থদন্ড এবং বারংবার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে উপরোক্তরুপ অর্থদন্ডের অতিরিক্ত প্রতিদিন ১ (এক) শত টাকা হারে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 
(২) কোনো ব্যক্তি কর্তৃক কোনো উপ-আইন লঙ্ঘন করার কারনে বোর্ড কর্তৃক নোটিশ প্রদান সত্ত্বেও তদ্রুপ লঙ্ঘন অব্যাহত থাকিলে সেইক্ষেত্রে প্রতিদিন ১ (এক) শত টাকা হারে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs