প্রিন্ট ভিউ

[সেকশন সূচি]

ক্যান্টনমেন্ট আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ২৭ নং আইন )

অধ্যায়-১

প্রারম্ভিক

সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-
 
(১) “অফিসার” অর্থ জাতীয় বেতন স্কেলের প্রথম হইতে নবম গ্রেডভুক্ত কোনো সরকারি কর্মচারী;
 
(২) “ইমারত” অর্থ Building Construction Act, 1952 (Act No. II of 1953) এর section 2 (b) এ সংজ্ঞায়িত building;
 
(৩) “‍‍‍‍‍‍‍উপদ্রব” অর্থ কোনো কার্য, কার্য-বিরতি, স্থান বা বিষয় যাহা দৃষ্টি, ঘ্রাণ বা শ্রবণের জন্য ক্ষতি, বিপদ, বিরক্তি বা অসন্তোষ সৃষ্টি করে বা করিতে পারে বা জীবনের জন্য বিপজ্জনক বা স্বাস্থ্য বা সম্পত্তির জন্য ক্ষতিকারক;
 
(৪) ‘‘উপ-আইন’’ অর্থ বোর্ড কর্তৃক এই আইনের অধীন প্রণীত উপ-আইন;
 
(৫) ‘‘এরিয়া কমান্ডার” অর্থ সেনাবাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ সামরিক অফিসার যিনি সামরিক উদ্দেশ্যে সময় সময় বিভক্ত বাংলাদেশের কোনো একটি সামরিক এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং এরিয়া কমান্ডার হিসাবে নিযুক্ত; এবং নৌ অঞ্চলের ক্ষেত্রে নৌ অঞ্চল প্রধান, বা বিমান বাহিনী ঘাঁটির ক্ষেত্রে বিমান বাহিনী ঘাঁটি অধিনায়ক;
 
(৬) “এক্সিকিউটিভ অফিসার’’ অর্থ এই আইনের অধীন কোনো ক্যান্টনমেন্টে এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসাবে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি;
 
(৭) “এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার” অর্থ সামরিক প্রকৌশল সার্ভিসের সমপর্যায়ের কোনো অফিসার যিনি কোনো ক্যান্টনমেন্টে সামরিক পূর্তকাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং ক্যান্টনমেন্ট নির্বাহী প্রকৌশল কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত যে কোনো পর্যায়ের অফিসারও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন;
 
(৮) “ওয়াটার ওয়ার্কস” অর্থে ক্যান্টনমেন্টে পানি সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত বা ব্যবহারের উদ্দেশ্যে রক্ষিত সকল হ্রদ, পুকুর, জলপ্রবাহ, জলাধার, ঝর্ণা, পাম্প, কূপ, সংরক্ষিত জলাধার, জলনল, জলট্রাক, জলকপাট, মূলনল, সড়কের পার্শ্ববর্তী জলকল,পাইপ এবং পানি সরবরাহ বা ব্যবহারের জন্য ব্যবহৃত অন্যান্য যন্ত্রপাতিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(৯) ‘‘কসাইখানা’’ অর্থ এমন কোনো স্থান যেখানে মানুষের খাদ্য হিসাবে মাংস বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোনো পশু জবাই করা হয়;
 
(১০) “কুঁড়েঘর” অর্থ এমন কোনো গৃহ বা অবকাঠামো, যাহার ভিত্তি সমতলের (plinth level)-এর উপরের কাঠামোর কোনো অংশ রাজমিস্ত্রির কাজ নহে, বা বর্গাকৃতি কাঠের কাঠামো বা লোহার কাঠামো দ্বারা নির্মিত নহে;
 
(১১) “ক্যান্টনমেন্ট” অর্থ কোনো এক বা একাধিক বাহিনী কর্তৃক ব্যবহারের উদ্দেশ্যে কোনো এক বা একাধিক নির্দিষ্ট এলাকা যাহা এই আইনের অধীন, সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ক্যান্টনমেন্ট হিসাবে ঘোষিত হইয়াছে বা ঘোষিত হইতে পারে এবং যেখানে সর্বসাধারণের অবাধ প্রবেশাধিকার ও বিচরণ নিষিদ্ধ, সীমিত বা নিয়ন্ত্রিত করা যাইতে পারে;
 
(১২) ‍‍‍‍‘‘গণস্থান’’ অর্থ কোনো ভবন, আঙ্গিনা অথবা স্থান যেখানে সাধারণ জনগণের প্রবেশাধিকার রহিয়াছে;
 
(১৩) ‘‘গোয়ালা’’ অর্থ এমন কোনো ব্যক্তি যিনি, মানুষের খাদ্য হিসাবে দুগ্ধ বিক্রয় করা বা বিক্রয় করিবার উদ্দেশ্যে গরু, মহিষ, ছাগল বা অন্য কোনো জন্তু পালন করেন, এবং কোনো দুগ্ধ সরবরাহকারী বা কোনো দুগ্ধ খামারের মালিক বা দখলদারও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(১৪) ‘‘ছাউনি’’ অর্থ ছায়া বা আশ্রয়ের জন্য স্থায়ী বা অস্থায়ী কাঠামো;
 
(১৫) ‘‘জেলা ম্যাজিস্ট্রেট’’ অর্থ কোনো ক্যান্টনমেন্ট যে প্রশাসনিক জেলার অন্তর্ভুক্ত সেই জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং কোনো ক্যান্টনমেন্ট একাধিক প্রশাসনিক জেলার অন্তর্ভুক্ত হইলে অনুরূপ একাধিক যে কোনো জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট;
 
(১৬) “দখলদার” অর্থ এক জন মালিক যিনি নিজের জমি বা ইমারতের প্রকৃত দখলে আছেন এবং এমন ব্যক্তি যিনি সাময়িকভাবে জমি বা ইমারত বা ইহার অংশের জন্য ইহার মালিককে ভাড়া প্রদান করেন বা তাহা প্রদানের জন্য দায়ী থাকেন বা অন্য ভাবে উক্ত ভূমি বা ইমারত ব্যবহার করে;
 
(১৭) “দুগ্ধখামার” অর্থ কোনো খামার, গরুর ছাউনি, গোয়ালঘর, দুধ সংরক্ষণাগার, দুধের দোকান বা এমন কোনো স্থান যে স্থান হইতে দুধ অথবা দুগ্ধজাত দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য সরবরাহ করা হয়;
 
(১৮) ‘‘প্রাধিকারী ভোক্তা’’ অর্থ ক্যান্টনমেন্ট এলাকার কোনো ব্যক্তি যিনি প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ খাত হইতে বেতনপ্রাপ্ত এবং সরকারের সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, উক্ত আদেশে উল্লিখিত শর্তে, গৃহস্থালিতে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সামরিক প্রকৌশল সার্ভিস বা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর হইতে বা সরকার স্বীকৃত কোনো পানি সরবরাহ কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে পানি সরবরাহ প্রাপ্ত হইবার অধিকারী;
 
(১৯) ‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‌‌‌‌‌‌‌‌‌‘‘বৎসর” অর্থ জুলাই মাসের প্রথম দিবসে যে বৎসরের আরম্ভ;
 
(২০) ‍‍‍‌‘‘বাসিন্দা” অর্থ কোনো ক্যান্টনমেন্ট বা স্থানীয় এলাকা সংশ্লেষে, কোনো ব্যক্তি যিনি সাধারণভাবে সেখানে বসবাস করেন বা ব্যবসা পরিচালনা করেন, বা উহার অভ্যন্তরে স্থাবর সম্পত্তির মালিক বা দখলদার হন এবং, কোনো বিরোধের ক্ষেত্রে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বাসিন্দা হিসেবে ঘোষিত ব্যক্তি;
 
(২১) “বাজার” অর্থে এমন কোনো স্থান যেখানে জনগণ কর্তৃক মাছ, মাংস, ফল-মূল, শাক সবজি বা যে কোনো খাদ্য-দ্রব্যসহ বা অন্যান্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি বিক্রয় ও ক্রয়ের জন্য জড়ো করা হয় এবং বিক্রয় ও ক্রয় হয় অথবা গরু-ছাগল ও অন্যান্য পশু-পক্ষী ক্রয়-বিক্রয় করা হয় এবং এমন কোনো স্থান যাহা বিধি মোতাবেক বাজার হিসাবে ঘোষণা করা হইয়াছে;
 
(২২) ‘‘বাহিনী” অর্থ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বা ইহাদের যে কোনো এক বা একাধিক বাহিনী;
 
(২৩) ‘‘বিভাজক প্রাচীর’’ অর্থ কোনো ইমারতের অংশরূপ প্রাচীর এবং যাহা বিভিন্ন মালিকের মালিকানাধীন সংলগ্ন ইমারতসমূহের আলম্বন বা পৃথককরণের জন্য নির্মিত বা ব্যবহৃত হয় বা বিভিন্ন ব্যক্তির দ্বারা দখলের জন্য নির্মিত হইয়াছে বা উপযোগী করা হইয়াছে;
 
(২৪) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
(২৫) ‘‘বেসরকারি বাজার’’ অর্থ এমন কোনো বাজার যাহা এই আইনের অধীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত, তবে বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত নহে;
 
(২৬) ‘‘বেসরকারি কসাইখানা’’ অর্থ এমন কোনো কসাইখানা যাহা এই আইনের অধীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত, তবে বোর্ড কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না;
 
(২৭) ‘‘বোর্ড’’ অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড;
 
(২৮) “মালিক” অর্থে আপাতত জমি ও ইমারতের ভাড়া অথবা উহাদের যে কোনো একটির ভাড়া নিজ দায়িত্বে অথবা কোনো ব্যক্তির অথবা সমাজের অথবা কোনো ধর্মীয় অথবা দাতব্য কাজের প্রতিনিধি অথবা ট্রাস্টি হিসাবে সংগ্রহ করেন অথবা যদি জমি অথবা ইমারত ভাড়াটিয়ার নিকট ভাড়া প্রদান করিলে যিনি তাহা সংগ্রহ করিতেন বা করেন এইরূপ ব্যক্তিও অন্তর্ভুক্ত হইবেন;
 
(২৯) ‘‘যান’’ অর্থ সড়কে ব্যবহারের উপযোগী চাকাযুক্ত যে কোনো বর্ণনার বাহন এবং মোটরগাড়ি, মোটরলরি, মোটর ও মিনিবাস, ঠেলাগাড়ি, ভ্রমণগাড়ি, হস্তচালিত গাড়ি, ট্রাক, মোটর সাইকেল, দ্বিচক্রযান, ত্রিচক্রযান এবং রিক্সাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(৩০) ‘‘সরকারি কসাইখানা’’ অর্থ বোর্ড কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় এইরূপ কোনো কসাইখানা;
 
(৩১) ‘‘সরকারি বাজার” অর্থ বোর্ড কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় এইরূপ কোনো বাজার;
 
(৩২) ‘‘সশস্ত্র বাহিনী” অর্থ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বা ইহাদের যে কোনো এক বা একাধিক বাহিনী;
 
(৩৩) “সড়ক” অর্থে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার জনসাধারণের চলাচলের অধিকার রহিয়াছে এমন কোনো পথ, রাস্তা, গলি, চক (square), অঙ্গন, সরু গলি বা সরু পথ, যাহাতে জনসাধারণ চলাচল করুক বা নাই করুক, এবং ইহা পাকা হউক বা না হউক, এবং কোনো পুল বা বাঁধের উপর পায়ে চলার রাস্তাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(৩৪) ‘‘সামরিক ভূমি’’ অর্থে প্রতিরক্ষা বিভাগীয় ভূমির অন্তর্গত ঐ সকল ভূমি যাহা প্রধানত কোনো ক্যান্টনমেন্টের সীমানার মধ্যে অবস্থিত এবং যাহা প্রধানত সামরিক উদ্দেশ্যে বা সামরিক উদ্দেশ্যের সহিত সম্পর্কিত উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, এবং সামরিক ভূমির উপরিস্থিত ভবনসহ সকল স্থায়ী স্থাপনাও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(৩৫) ‘‘সামরিক ভূ-সম্পত্তি প্রশাসক’’ অর্থ এই আইনের অধীন সামরিক ভূ-সম্পত্তি প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত অফিসার;
 
(৩৬) ‘‘সামরিক অফিসার’’ অর্থ এইরূপ কোনো ব্যক্তি, যিনি সংশ্লিষ্ট সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কিত আইনে সংজ্ঞায়িত অর্থে একজন অফিসার;
 
(৩৭) ‘‘স্টেশন কমান্ডার” অর্থ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ সামরিক অফিসার যিনি সেনাবাহিনীতে স্টেশন কমান্ডার হিসাবে নিযুক্ত এবং নৌ অঞ্চলের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠ নৌ ঘাঁটি অধিনায়ক বা বিমান বাহিনী ঘাঁটির ক্ষেত্রে অধিনায়ক প্রশাসনিক শাখা;
 
(৩৮) ‘‘সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ’’ অর্থে এমন কোনো রোগ যাহা এক ব্যক্তি হইতে অন্য ব্যক্তিকে সংক্রামিত করে এবং সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপনে প্রকাশিত অন্য রোগও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(৩৯) ‘‘সংলগ্ন এলাকা’’ অর্থ ক্যান্টনমেন্টের অভ্যন্তর, সন্নিহিত বা বাহিরের কোনো অসামরিক এলাকা যেখানে বোর্ড পৌর সেবা প্রদান করিয়া থাকে বা যেখানে সামরিক কর্তৃপক্ষ পর্যবেক্ষণের অধিকার সংরক্ষণ করে;
 
(৪০) ‘‘সৈন্য” অর্থ এইরূপ ব্যক্তি যিনি সংশ্লিষ্ট বাহিনী সম্পর্কিত আইনের অধীনে তালিকাভূক্ত এবং ঐ সকল আইনে সংজ্ঞায়িত জুনিয়র কমিশন্ড অফিসারও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং
 
(৪১) “হেলথ অফিসার” অর্থ সশস্ত্র বাহিনীর কর্মরত একজন সামরিক চিকিৎসক যিনি কোনো ক্যান্টনমেন্টে এরিয়া কমান্ডার কর্তৃক স্বাস্থ্য অফিসার হিসাবে নিয়োজিত।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs