প্রিন্ট ভিউ

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ৩২ নং আইন )

পঞ্চম অধ্যায়

আর্থিক বিষয়াদি

তহবিল
৩২। (১) কর্তৃপক্ষের নিম্নরূপ দুইটি তহবিল থাকিবে, যথা :-
 
(ক) মূলধনী তহবিল; এবং
 
(খ) রাজস্ব তহবিল।
 
(২) নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ মূলধনী তহবিলে জমা হইবে, যথা :-
 
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত মঞ্জুরি;
 
(খ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কোনো বিদেশি সরকার, সংস্থা বা আন্তর্জাতিক সংস্থা হইতে প্রাপ্ত অনুদান;
 
(গ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত ঋণ;
 
(ঘ) উন্নয়ন কর হইতে প্রাপ্ত অর্থ;
 
(ঙ) কর্তৃপক্ষের সম্পত্তি বিক্রয়লব্ধ অর্থ;
 
(চ) নিজস্ব আয়;
 
(ছ) বিনিয়োগ হইতে প্রাপ্ত আয়; এবং
 
(জ) অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
 
(৩) নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ রাজস্ব তহবিলে জমা হইবে, যথা :-
 
(ক) স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে প্রাপ্ত চাঁদা;
 
(খ) ক্ষতিপূরণ হইতে প্রাপ্ত অর্থ;
 
(গ) সরকারের নিকট হইতে প্রাপ্ত অনুদান;
 
(ঘ) কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্তকৃত ভূমি বা ইমারত হইতে ভাড়া বা ইজারা বাবদ প্রাপ্ত অর্থ;
 
(ঙ) অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
 
(৪) মূলধনী তহবিল হইতে নিম্নবর্ণিত ব্যয় নির্বাহ করা হইবে, যথা :-
 
(ক) উন্নয়ন প্রকল্প এবং পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ব্যয়;
 
(খ) ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয়;
 
(গ) ইমারত নির্মাণ ব্যয়;
 
(ঘ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যয়;
 
(ঙ) জরিপ কার্য পরিচালনার জন্য ব্যয়; এবং
 
(চ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত অন্যান্য ব্যয়।
 
(৫) রাজস্ব তহবিল হইতে নিম্নবর্ণিত ব্যয় নির্বাহ করা হইবে, যথা :-
 
(ক) কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, সার্বক্ষণিক সদস্য, সচিব, অন্যান্য সদস্য, কর্মচারী, পরামর্শক, বিশেষজ্ঞ ও নিরীক্ষকদের বেতন, ভাতা, সম্মানী, পারিতোষিক, ইত্যাদি বাবদ খরচ;
 
(খ) কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্তকৃত ভূমির উপর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রাপ্য কর ও রেট পরিশোধ;
 
(গ) কর্তৃপক্ষের সংস্থাপন ব্যয়;
 
(ঘ) নাগরিক সুযোগ-সুবিধার জন্য নির্মিত কোনো পূর্ত কাজের রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত ব্যয়; এবং
 
(ঙ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত অন্যান্য ব্যয়।
 
(৬) মূলধনী তহবিল এবং রাজস্ব তহবিলের অর্থ কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে।
 
ব্যাখ্যা।- এই উপ-ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘তপশিলি ব্যাংক’ বলিতে Bangladesh Bank Order, 1972 (President Order No. 127 of 1972) এর Article 2(j) তে সংজ্ঞায়িত ‘Scheduled Bank’ কে বুঝাইবে।
 
(৭) মূলধনী তহবিল এবং রাজস্ব তহবিল বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হইবে।
 
(৮) কোনো অর্থ বৎসরে রাজস্ব তহবিল এবং মূলধনী তহবিল হইতে, ক্ষেত্রমত, উহাদের জন্য নির্দিষ্টকৃত ব্যয় এবং চলমান প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রাখিবার পর কোনো অর্থ উদ্বৃত্ত থাকিলে সরকারের নির্দেশ অনুসারে উহাদের সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ সরকারি কোষাগারে জমা করিতে হইবে।
রাজস্ব তহবিল হইতে মূলধনী তহবিলে এবং মূলধনী তহবিল হইতে রাজস্ব তহবিলে অর্থ স্থানান্তর
৩৩। (১) কর্তৃপক্ষ, উন্নয়নমূলক কাজের জন্য, প্রয়োজনে, রাজস্ব তহবিল হইতে মূলধনী তহবিলে অর্থ স্থানান্তর করিতে পারিবে।
 
(২) কোনো অর্থ বৎসর শেষে রাজস্ব তহবিলে কোনো ঘাটতি দেখা দিলে উহা মূলধনী তহবিল হইতে অগ্রিম গ্রহণ করিয়া মিটানো যাইবে এবং এইরূপ অগ্রিম গৃহীত অর্থ পরবর্তী অর্থ বৎসরে মূলধনী তহবিলে জমা করিতে হইবে।
সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার নিকট হইতে প্রাপ্ত অনুদান
৩৪। কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত এলাকায় খুলনা সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভাসমূহ ইমারতের বার্ষিক মূল্যায়নের উপর ১.৫% হারে অনুদান কর্তৃপক্ষকে প্রদান করিবে।
বার্ষিক বাজেট
৩৫। কর্তৃপক্ষ কোনো অর্থ বৎসর শুরুর ১২০ (একশত বিশ) দিন পূর্বে অথবা সরকার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়ের মধ্যে সম্ভাব্য আয়-ব্যয়সহ পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত বৎসরে সরকারের নিকট হইতে কর্তৃপক্ষের কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহারও উল্লেখ থাকিবে।
হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা
৩৬। (১) কর্তৃপক্ষ, যথাযথভাবে উহার হিসাব রক্ষণ এবং হিসাব বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
 
(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বলিয়া অভিহিত, প্রতি বৎসর কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের অনুলিপি কর্তৃপক্ষ ও সরকারের নিকট পেশ করিবেন।
 
(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা প্রতিবেদনের উপর কোনো আপত্তি উত্থাপিত হইলে উহা নিষ্পত্তির জন্য কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
 
(৪) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (President’s Order No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b) এ সংজ্ঞায়িত চার্টার্ড একাউনটেন্ট দ্বারা কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিতে হইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ এক বা একাধিক চার্টার্ড একাউনটেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
(৫) কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা উপ-ধারা (৪) এর অধীন নিয়োগকৃত চার্টার্ড একাউনটেন্ট কর্তৃপক্ষের সকল রেকর্ড, দলিলাদি, বার্ষিক ব্যালেন্স সিট, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার বা অন্যবিধ সম্পত্তি, ইত্যাদি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান, সদস্য বা কর্তৃপক্ষের যে কোনো কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
 
(৬) এই ধারার বিধানাবলি প্রয়োগের ক্ষেত্রে ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন, ২০১৫ (২০১৫ সনের ১৬ নং আইন) এর বিধানাবলি, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, অনুসরণ করিতে হইবে।
বকেয়া আদায়
৩৭। এই আইনের অধীন কোনো ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে কর্তৃপক্ষের কোনো অর্থ পাওনা থাকিলে উহা সরকারি দাবি হিসাবে Public Demands Recovery Act, 1913 (Act No. III of 1913) এর বিধান অনুসারে আদায়যোগ্য হইবে।
প্রতিবেদন
৩৮। (১) কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক অর্থ বৎসর সমাপ্ত হইবার পরবর্তী ৯০ (নববই) দিনের মধ্যে উহার আয়, ব্যয় ও স্থিতির আর্থিক বিবরণসহ উক্ত বৎসরে সম্পাদিত কার্যাবলির উপর একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট দাখিল করিবে।
 
(২) সরকার, প্রয়োজনে, কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে যে কোনো সময় কর্তৃপক্ষের যে কোনো বিষয়ের উপর প্রতিবেদন ও বিবরণী আহবান করিতে পারিবে এবং কর্তৃপক্ষ উহা সরকারের নিকট সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা
৩৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে এবং উহা পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs