প্রিন্ট ভিউ

সড়ক পরিবহণ আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ৪৭ নং আইন )

ষষ্ঠ অধ্যায়

যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, ইত্যাদি

সড়ক পরিবহণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের ক্ষমতা
৩২। (১) সরকার বা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কর্তৃপক্ষ বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী, জনস্বার্থে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা এবং প্রয়োজনে নির্ধারিত পদ্ধতিতে স্থানীয়ভাবে প্রচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের সর্বত্র বা নির্দিষ্ট কোনো এলাকায়, কোনো সড়ক, মহাসড়ক, সেতু, এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার বা টানেলে যে কোনো মেয়াদের জন্য সকল বা যে কোনো শ্রেণির মোটরযান চলাচল নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে।
 
(২) কোনো মোটরযান দ্বারা চালক, যাত্রী, সড়ক ব্যবহারকারী বা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকিলে, সরকার বা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কর্তৃপক্ষ, উক্ত মোটরযান বা কোনো শ্রেণির মোটরযানকে সড়ক হইতে প্রত্যাহার বা সড়কে চলাচল বন্ধের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
মোটরযানের সংখ্যা নির্ধারণ
৩৩। (১) সরকার বা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কর্তৃপক্ষ, জনস্বার্থে, সমগ্র বাংলাদেশ বা যে কোনো এলাকার জন্য যে কোনো ধরনের মোটরযানের সংখ্যা নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
(২) কোনো এলাকার মোটরযানের সংখ্যা উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত সংখ্যার অধিক হইলে, অতিরিক্ত মোটরযানকে চাহিদা অনুযায়ী অন্যান্য এলাকায় চলাচলের অনুমতি প্রদান করা যাইবে।
গণপরিবহনের আসন সংখ্যা ও ভাড়া নির্ধারণ
৩৪। (১) কর্তৃপক্ষ বা যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ কমিটি গণপরিবহণের নারী, শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুদের জন্য আসন সংখ্যা নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
(২) কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, গণপরিবহণের জন্য ভাড়ার হার ও সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ বা পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে :
 
তবে শর্ত থাকে যে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিলাসবহুল ও বিশেষ সুবিধাসম্বলিত গণপরিবহণের ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে উহা প্রযোজ্য হইবে না :
 
তবে আরও শর্ত থাকে যে, সরকার বা কর্তৃপক্ষ, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিলাসবহুল ও বিশেষ সুবিধাসম্বলিত গণপরিবহণের ভাড়া যুক্তিসংগতভাবে নির্ধারণের যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
 
(৩) কোনো গণপরিবহণ, সহজে দৃশ্যমান স্থানে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন ব্যতীত, যাত্রী পরিবহণ করিতে পারিবে না।
 
(৪) কোনো গণপরিবহণের মালিক, চালক, কন্ডাক্টর, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায় করিতে পারিবে না।
কন্ট্রাক্ট ক্যারিজের মিটার, ভাড়া, ইত্যাদি
৩৫। (১) কোনো কন্ট্রাক্ট ক্যারিজের মালিক বা তাহার প্রতিনিধি বা প্রতিষ্ঠান সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দিন ভিত্তিক জমার অতিরিক্ত অর্থ দাবি বা আদায় করিতে পারিবে না।
 
(২) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কন্ট্রাক্ট ক্যারিজের ভাড়া সংক্রান্ত মিটার সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ায় ক্রমাঙ্কন (calibration) করিবার পর উহাতে অবৈধভাবে কোনো ধরনের পরিবর্তন করিতে বা উক্তরূপ পরিবর্তনে কোনো সহায়তা করিতে পারিবে না।
 
(৩) কোনো কন্ট্রাক্ট ক্যারিজের মালিক বা চালক রুট পারমিটে বর্ণিত এলাকার মধ্যে যেকোনো গন্তব্যে মিটারে যাইতে বাধ্য থাকিবেন এবং মিটারে প্রদর্শিত ভাড়ার অতিরিক্ত অর্থ দাবি বা আদায় করিতে পারিবেন না।
ইকনোমিক লাইফ নির্ধারণ
৩৬। সরকার, বা সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কর্তৃপক্ষ, যে কোনো ধরনের মোটরযানের ইকনোমিক লাইফ, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারণ করিতে পারিবে।
মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী অবৈধ স্থাপনা অপসারণ
৩৭। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোনো ব্যক্তি, ব্যবসায়িক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে, মহাসড়কের মালিকানাধীন জায়গায় বা ক্ষেত্রমত, মহাসড়কের ঢাল (slope) হইতে উভয় পার্শ্বে ১০ (দশ) মিটারের মধ্যে অবৈধভাবে কোনো স্থায়ী বা অস্থায়ী স্থাপনা (যেমন: হাট-বাজার, দোকান, ইত্যাদি) নির্মাণ করিতে পারিবেন না।
 
(২) মহাসড়কের মালিকানাধীন জায়গায় বা ক্ষেত্রমত, মহাসড়কের ঢাল (slope) হইতে উভয় পার্শ্বে ১০ (দশ) মিটারের মধ্যে অবৈধভাবে নির্মিত কোনো স্থায়ী বা অস্থায়ী স্থাপনা মহাসড়কে নিরাপদে মোটরযান চলাচল নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পুলিশ বা কর্তৃপক্ষ বা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর বা তৎকর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি তাৎক্ষণিকভাবে উহা অপসারণ করিতে পারিবে।
টার্মিনাল উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা এবং চাঁদাবাজি নিষিদ্ধকরণ
৩৮। (১) সরকার বা, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কর্তৃপক্ষ, বা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সুষ্ঠুভাবে যাত্রী বা পণ্য উঠা-নামা করিবার নিমিত্ত পরিবহণযান টার্মিনাল উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, তদারকি, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা করিতে পারিবে।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে টার্মিনাল উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, তদারকি, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার ব্যয় নির্বাহের জন্য কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান টার্মিনাল চার্জ নির্ধারণ করিতে পারিবেন।
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্ধারিত টার্মিনাল চার্জ ব্যতীত টার্মিনালে কোনো পরিবহণযান বা মোটরযান প্রবেশ বা বাহির হইবার সময়, বা সড়ক, মহাসড়ক বা পাবলিক প্লেসে চলাচলের সময় উহার নিকট হইতে কোনোরূপ অর্থ অবৈধভাবে আদায় করা যাইবে না।
কর্মঘণ্টা নির্ধারণ
৩৯। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৪২ নং আইন) এর সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া পরিবহণ যানের চালক, কন্ডাক্টর, হেলপার-কাম-ক্লিনারগণের কর্মঘণ্টা ও বিরতিকাল নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
(২) নিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা পরিবহন যানের চালক, কন্ডাক্টর, হেলপার-কাম-ক্লিনার, উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত কর্মঘণ্টা ও বিরতিকাল মানিয়া চলিবেন।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs