প্রিন্ট ভিউ

সড়ক পরিবহণ আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ৪৭ নং আইন )

নবম অধ্যায়

দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা এবং বীমা

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তাহার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান
৫২। কোনো মোটরযান হইতে উদ্ভূত দুর্ঘটনার ফলে কোনো ব্যক্তি আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা আঘাতপ্রাপ্ত হইয়া মৃত্যুবরণ করিলে, উক্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা, ক্ষেত্রমত, তাহার উত্তরাধিকারীগণের পক্ষে মনোনীত ব্যক্তি ধারা ৫৩ এর অধীন গঠিত আর্থিক সহায়তা তহবিল হইতে ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, চিকিৎসার খরচ প্রাপ্য হইবেন।
আর্থিক সহায়তা তহবিল
৫৩। (১) ধারা ৫২ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অনুকূলে বা, ক্ষেত্রমত, মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের লক্ষ্যে আর্থিক সহায়তা তহবিল নামে একটি তহবিল গঠিত হইবে।
 
(২) কর্তৃপক্ষ বিধি দ্বারা নির্ধারিত হারে ও পদ্ধতিতে মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে মোটরযানের শ্রেণি বিন্যাস বিবেচনাক্রমে প্রত্যেক মোটরযানের বিপরীতে আর্থিক সহায়তা তহবিলের জন্য বাৎসরিক বা এককালীন চাঁদা (contribution) আদায় করিবে।
 
(৩) মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান উপ-ধারা (২) এর অধীন আর্থিক সহায়তা তহবিলের জন্য বাৎসরিক বা এককালীন চাঁদা (contribution) প্রদানে বাধ্য থাকিবে।
 
(৪) আর্থিক সহায়তা তহবিল ও ট্রাস্টি বোর্ডের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ট্রাস্টি বোর্ড সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
(৫) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত প্রবিধান দ্বারা কর্মচারীগণের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলি নির্ধারিত হইবে।
ট্রাস্টি বোর্ড গঠন
৫৪। (১) ধারা ৫৩ তে উল্লিখিত আর্থিক সহায়তা তহবিল পরিচালনার উদ্দেশ্যে সরকার একজন চেয়ারম্যানসহ নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করিবে, যথা:-
 
(ক) কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান;
 
(খ) সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের অন্যূন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
 
(গ) জননিরাপত্তা বিভাগের অন্যূন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
 
(ঘ) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের অন্যূন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
 
(ঙ) স্থানীয় সরকার বিভাগের অন্যূন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
 
(চ) সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক মনোনীত অন্যূন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
 
(ছ) হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি;
 
(জ) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক মনোনীত অন্যূন পরিচালক পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;
 
(ঝ) সরকার কর্তৃক মনোনীত সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির একজন প্রতিনিধি;
 
(ঞ) সরকার কর্তৃক মনোনীত সড়ক পরিবহন শ্রমিক সংগঠন বা ফেডারেশনের একজন প্রতিনিধি;
 
(ট) সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি;
 
(ঠ) সরকার কর্তৃক নিয়োজিত ট্রাস্টি বোর্ডের সচিব, যিনি উহার সদস্য সচিব হইবেন।
 
(২) সরকার, প্রয়োজনে যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।
 
(৩) সরকার কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বা অন্য কোনো সরকারি কর্মচারীকে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করিতে পারিবে।
 
(৪) ট্রাস্টি বোর্ড একটি স্ব-শাসিত সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
ট্রাস্টি বোর্ডের কার্যালয়
৫৫। (১) ট্রাস্টি বোর্ডের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে।
 
(২) ট্রাস্টি বোর্ড, প্রয়োজনে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে উহার অধস্তন বা শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
ট্রাস্টি বোর্ডের কার্যাবলি ও ক্ষমতা
৫৬। (১) ট্রাস্টি বোর্ডের কার্যাবলি ও ক্ষমতা হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
 
(ক) আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা, ক্ষেত্রমত, মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীকে প্রদেয় আর্থিক সহায়তার পরিমাণ নির্ধারণ ও মঞ্জুর;
 
(খ) আর্থিক সহায়তা তহবিলের অর্থ বা সম্পত্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে সম্পাদিত হইতেছে কিনা উহা তদারকি ও প্রয়োজনে সম্পাদনের ব্যবস্থাকরণ; এবং
 
(গ) আর্থিক সহায়তা তহবিলের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার সহিত সংশ্লিষ্ট ব্যয় মঞ্জুর বা অনুমোদন:
 
তবে শর্ত থাকে থাকে যে, এই ব্যয় অনুমোদনের ক্ষেত্রে সরকারের এতদ্সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান অনুসরণ করিতে হইবে;
 
(ঘ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদন ও প্রতিপালন।
 
(২) ট্রাস্টি বোর্ড উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কার্যাবলি সুষ্টুভাবে সম্পাদনের জন্য এক বা একাধিক কমিটি গঠন ও উহার কার্যপরিধি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠন, হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা, ইত্যাদি
৫৭। (১) নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠিত হইবে, যথা :-
 
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
(খ) মোটরযানের মালিকের নিকট হইতে আদায়কৃত চাঁদা;
 
(গ) এই আইনের অধীন আদায়কৃত জরিমানার অর্থ;
 
(ঘ) মালিক সমিতি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
 
(ঙ) মোটর শ্রমিক সংগঠন বা ফেডারেশন কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান; এবং
 
(চ) অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
 
(২) তহবিলের অর্থ কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে।
 
(৩) ট্রাস্টি বোর্ড, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উহার তহবিল পরিচালনা ও হিসাব সংরক্ষণ করিবে:
 
তবে শর্ত থাকে যে, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ বা নির্দেশনা অনুযায়ী তহবিল পরিচালনা করা যাইবে।
 
(৪) তহবিল হইতে ট্রাস্টি বোর্ডের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।
 
(৫) প্রতি অর্থ বৎসরের সমাপ্তিতে ট্রাস্টি বোর্ড আর্থিক সহায়তা তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ এতদুদ্দেশ্যে সরকারের নির্দেশনা (যদি থাকে) সাপেক্ষে, সরকারি তহবিলে জমা প্রদান করিবে।
 
(৬) ট্রাস্টি বোর্ড যথাযথভাবে তহবিলের হিসাবরক্ষণ এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
 
(৭) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর “মহা হিসাব-নিরীক্ষক” নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর আর্থিক সহায়তা তহবিলের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও ট্রাস্টি বোর্ডের নিকট পেশ করিবেন।
 
(৮) উপ-ধারা (৭) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O. No 2 of 1973) এর Article 2(1) (b)-তে সংজ্ঞায়িত “চার্টার্ড একাউন্টেন্ট” দ্বারা তহবিলের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে ট্রাস্টি বোর্ড এক বা একাধিক চার্টার্ড একাউন্টেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
(৯) উপ-ধারা (৮) এর অধীন নিয়োগকৃত চার্টার্ড একাউন্টেন্ট সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পারিতোষিক প্রাপ্ত হইবেন।
 
(১০) উপ-ধারা (৭) বা (৮) এর বিধান অনুসারে হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তদ্‌কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি অথবা, ক্ষেত্রমত, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট, ট্রাস্টি বোর্ডের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে রক্ষিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং ট্রাস্টি বোর্ডের যে কোনো সদস্য বা এতদ্‌সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
ট্রাস্টি বোর্ডের সভা
৫৮। এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ট্রাস্টি বোর্ডের সভা, ব্যবস্থাপনা ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
আর্থিক সহায়তার আবেদন
৫৯। (১) আর্থিক সহায়তা তহবিল হইতে সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যে আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা, ক্ষেত্রমত, মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারী বা বৈধ প্রতিনিধি নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ফরমে ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তসহ ক্ষতিপূরণ দাবি করিয়া ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করিতে পারিবে।
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর বা অন্য কোনোভাবে জ্ঞাত হইয়া চেয়ারম্যান, স্বীয় বিবেচনায়, তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসার বা আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অনুকূলে আর্থিক সহায়তা তহবিল হইতে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা করিতে পারিবেন, যাহা পরবর্তী বোর্ড সভায় অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
 
(৩) ট্রাস্টি বোর্ড ক্ষতিপূরণ দাবির বিষয়ে যথাযথ অনুসন্ধানের ব্যবস্থা করিবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অনুকূলে আর্থিক সহায়তা তহবিল হইতে ন্যায়ানুগ ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা করিবে।
 
(৪) আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারী বা বৈধ প্রতিনিধির নিকট উপ-ধারা (৩) এর অধীন ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক ধার্যকৃত ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত নয় মর্মে প্রতীয়মান হইলে, তিনি-
 
(ক) ট্রাস্টি বোর্ডের উক্তরূপ সিদ্ধান্তের সহিত ভিন্নমত পোষণ করিয়া ধারা ৬১ এর উপ-ধারা (১) অনুযায়ী উহা পুনর্বিবেচনার জন্য ট্রাস্ট্রি বোর্ডের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন; এবং
 
(খ) ট্রাস্টি বোর্ডের পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্তের সহিত একমত পোষণ না করিলে ধারা ৬১ এর উপ-ধারা (২) অনুযায়ী সরকারের নিকট আপিল করিতে পারিবেন।
 
(৫) ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণের মানদণ্ড, পদ্ধতি, ক্ষতিপূরণ প্রদানের সময়সীমা, ক্ষতিপূরণের আবেদন মঞ্জুর, দাবি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতির অনুসন্ধান এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
যাত্রী বা মোটরযানের বীমা
৬০। (১) কোনো মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান ইচ্ছা করিলে তাহার মালিকানাধীন যে কোনো মোটরযানের জন্য যে সংখ্যক যাত্রী পরিবহনের জন্য নির্দিষ্টকৃত তাহাদের জীবন ও সম্পদের বীমা করিতে পারিবে।
 
(২) মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান উহার অধীন পরিচালিত মোটরযানের জন্য যথানিয়মে বীমা করিবেন এবং মোটরযানের ক্ষতি বা নষ্ট হওয়ার বিষয়টি বীমার আওতাভুক্ত থাকিবে এবং বীমাকারী কর্তৃক উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পাইবার অধিকারী হইবেন।
 
(৩) মোটরযান দুর্ঘটনায় পতিত হইলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা নষ্ট হইলে উক্ত মোটরযানের জন্য ধারা ৫৩ এর অধীন গঠিত আর্থিক সহায়তা তহবিল হইতে কোনো ক্ষতিপূরণ দাবি করা যাইবে না।
 
(৪) বীমার শর্ত, বীমার দায়-দায়িত্বের সীমা, বীমার দেউলিয়াত্ব, বীমা-দাবী পরিশোধ, বিরোধ-নিষ্পত্তি, বীমা সনদের কার্যকারিতা ও উহা হস্তান্তর, এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
পুনর্বিবেচনা, আপিল ও সালিশ
৬১। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধানে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তি এই অধ্যায়ের অধীন প্রদত্ত কোনো সিদ্ধান্ত দ্বারা সংক্ষুদ্ধ হইলে, তিনি সিদ্ধান্ত প্রাপ্তির অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ট্রাস্টি বোর্ডের নিকট উক্ত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করিতে পারিবেন।
 
(২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত দ্বারা সন্তুষ্ট না হইলে, তিনি উক্ত সিদ্ধান্ত প্রাপ্তির অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সরকারের নিকট আপিল করিতে পারিবেন।
 
(৩) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) বা, (২) এর অধীন ক্ষেত্রমত, পুনর্বিবেচনা বা আপিলের সিদ্ধান্ত দ্বারা সন্তুষ্ঠ না হইলে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিযুক্ত সালিশ নিষ্পত্তিকারীর (Arbitrator) নিকট আবেদন করিতে পারিবেন এবং সালিশ নিষ্পত্তিকারী কর্তৃক প্রদত্ত এতদ্‌সংক্রান্ত রোয়েদাদ (award) ট্রাস্টি বোর্ডের উপর চূড়ান্তভাবে বাধ্যকর হইবে এবং উক্তরূপ রোয়েদাদ দেওয়ানি আদালতের ডিক্রির ন্যায় জারিযোগ্য হইবে।
 
(৪) এই আইনের অধীন ক্ষতিপূরণ দাবি সংক্রান্ত প্রশ্ন জড়িত রহিয়াছে, এইরূপ কোনো মামলা দেওয়ানি আদালত বিচারের জন্য গ্রহণ করিবে না এবং কোনো দেওয়ানি আদালত, ক্ষতিপূরণ দাবি সালিশ নিষ্পত্তিকারী কর্তৃক গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা কার্যধারার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবে না।
 
(৫) সালিশকারী নিয়োগ, সালিশের কার্যপদ্ধতি এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির চিকিৎসা
৬২। (১) কোনো সড়ক দুর্ঘটনা ঘটিলে সংশ্লিষ্ট মোটরযান চালক, কন্ডাক্টর বা তাহাদের প্রতিনিধি তাৎক্ষণিকভাবে দুর্ঘটনা সম্পর্কে নিকটস্থ থানা এবং, ক্ষেত্রমত, ফায়ার সার্ভিস, চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বা হাসপাতালকে অবহিত করিবেন এবং আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির জীবন রক্ষার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিকটস্থ চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বা হাসপাতালে প্রেরণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
 
(২) বাংলাদেশ পুলিশ দেশব্যাপী টোল ফ্রি টেলিফোন নম্বর প্রবর্তন করিবে, যাহার মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা কবলিত মোটরযানের চালক, কন্ডাক্টর, মালিক, প্রতিষ্ঠান বা পরিচালনাকারী বা তাহাদের প্রতিনিধি বা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি বা যাত্রী বা সড়ক দুর্ঘটনা প্রত্যক্ষকারী কোনো ব্যক্তি দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নম্বরে টেলিফোন করিয়া জরুরি উদ্ধার, চিকিৎসা ইত্যাদির জন্য তাৎক্ষণিক সহায়তা চাহিতে পারিবেন।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs