প্রিন্ট ভিউ

[সেকশন সূচি]

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ৫১ নং আইন )

সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
(১) ‘‘খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা’’ অর্থ স্বাধীনতাযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের কারণে বীরশ্রেষ্ঠ, বীরউত্তম, বীরবিক্রম বা বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা;
 
(২) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান;
 
(৩) ‘‘ট্রাস্ট’’ অর্থ বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট;
 
(৪) ‘‘ট্রাস্টি’’ অর্থ ট্রাস্টি বোর্ডের একজন সদস্য;
 
(৫) ‘‘ট্রাস্টি বোর্ড’’ অর্থ ধারা ৮ এর অধীন গঠিত ট্রাস্টি বোর্ড;
 
(৬) ‘‘তহবিল’’ অর্থ ধারা ১৭ এর অধীন গঠিত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিল;
 
(৭) ‘‘নির্বাহী কমিটি’’ অর্থ ধারা ১৩ এর অধীন গঠিত নির্বাহী কমিটি;
 
(৮) ‘‘পরিবার’’ অর্থ বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার;
 
(৯) ‘‘পঙ্গুত্ব’’ অর্থ যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধার আহত হওয়ার মাত্রা;
 
(১০) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
(১১) ‘‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’’ অর্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়া যাঁহারা দেশের অভ্যন্তরে গ্রামে-গঞ্জে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করিয়াছেন এবং ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ মার্চ হইতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও জামায়াতে ইসলামী এবং তাহাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করিয়াছেন এইরূপ সকল বেসামরিক নাগরিক এবং সশস্ত্র বাহিনী, মুজিব বাহিনী, মুক্তি বাহিনী ও অন্যান্য স্বীকৃত বাহিনী, পুলিশ বাহিনী, ই. পি. আর. নৌ কমান্ডো, কিলো ফ্লাইট আনসার বাহিনীর সদস্য এবং নিম্নবর্ণিত বাংলাদেশের নাগরিকগণ, উক্ত সময়ে যাহাদের বয়স সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বয়সসীমার মধ্যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে গণ্য হইবেন, যথা :-
 
(ক) যে সকল ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করিয়া ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তাহাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করিয়াছিলেন;
 
(খ) যে সকল বাংলাদেশি পেশাজীবী মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশে অবস্থানকালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশেষ অবদান রাখিয়াছিলেন এবং যে সকল বাংলাদেশি নাগরিক বিশ্বজনমত গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করিয়াছিলেন;
 
(গ) যাঁহারা মুক্তিযুদ্ধকালীন গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) অধীন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা দূত হিসাবে দায়িত্ব পালন করিয়াছিলেন;
 
(ঘ) মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের (মুজিবনগর সরকার) সহিত সম্পৃক্ত সকল এম. এন. এ (Member of National Assembly) বা এম. পি. এ (Member of Provincial Assembly), যাঁহারা পরবর্তীকালে গণপরিষদের সদস্য (Member of Constituent Assembly) হিসাবে গণ্য হইয়াছিলেন;
 
(ঙ) পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাহাদের সহযোগী কর্তৃক নির্যাতিতা সকল নারী (বীরাঙ্গনা); তবে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত নির্যাতিতা নারী বা বীরাঙ্গনার ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বয়সসীমা প্রযোজ্য হইবে না;
 
(চ) স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের সকল শিল্পী ও কলা-কুশলী এবং দেশ ও দেশের বাহিরে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে দায়িত্ব পালনকারী সকল বাংলাদেশি সাংবাদিক;
 
(ছ) স্বাধীনবাংলা ফুটবল দলের সকল খেলোয়াড়; এবং
 
(জ) মুক্তিযুদ্ধকালে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী মেডিক্যাল টিমের সকল ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসা-সহকারী;
 
(১২) ‘‘ব্যবস্থাপনা পরিচালক’’ অর্থ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক;
 
(১৩) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
(১৪) ‘‘মুক্তিযুদ্ধ’’ অর্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়া পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও জামায়াতে ইসলামী এবং তাহাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর বিরুদ্ধে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ মার্চ হইতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংঘটিত যুদ্ধ;
 
(১৫) ‘‘যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা’’ অর্থ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধে আহত হইয়াছেন এইরূপ বীর মুক্তিযোদ্ধা, যাঁহার শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ বা গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে;
 
(১৬) ‘‘শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা’’ অর্থ এইরূপ বীর মুক্তিযোদ্ধা যিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করিয়া শহিদ হইয়াছেন;
 
(১৭) ‘‘সুবিধাভোগী’’ অর্থ-
 
(ক) বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের ক্ষেত্রে-
 
(অ) বীর মুক্তিযোদ্ধা; বা
 
(আ) বীর মুক্তিযোদ্ধার অবর্তমানে তাঁহার স্ত্রী বা স্বামী; বা
 
(ই) বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁহার স্ত্রী বা স্বামীর অবর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধার পিতা-মাতা; বা
 
(ঈ) বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাঁহার স্ত্রী বা স্বামী এবং পিতা-মাতার অবর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান; বা
 
(উ) (অ)-(ঈ) পর্যন্ত বর্ণিত ব্যক্তিগণের অবর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাই-বোন;
 
(খ) যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের ক্ষেত্রে-
 
(অ) যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা; বা
 
(আ) যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধার অবর্তমানে তাঁহার স্ত্রী বা স্বামী; বা
 
(ই) যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁহার স্ত্রী বা স্বামীর অবর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধার পিতা-মাতা; বা
 
(ঈ) যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাঁহার স্ত্রী বা স্বামী এবং পিতা-মাতার অবর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান; বা
 
(উ) (অ)-(ঈ) পর্যন্ত বর্ণিত ব্যক্তিগণের অবর্তমানে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাই- বোন;
 
(গ) খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের ক্ষেত্রে-
 
(অ) খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা; বা
 
(আ) খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার অবর্তমানে তাঁহার স্ত্রী বা স্বামী; বা
 
(ই) খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁহার স্ত্রী বা স্বামীর অবর্তমানে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার পিতা-মাতা; বা
 
(ঈ) খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাঁহার স্ত্রী বা স্বামী এবং পিতা-মাতার অবর্তমানে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান; বা
 
(উ) (অ)-(ঈ) পর্যন্ত বর্ণিত ব্যক্তিগণের অবর্তমানে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাই-বোন;
 
(ঘ) শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের ক্ষেত্রে-
 
(অ) শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী বা স্বামী; বা
 
(আ) শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী বা স্বামীর অবর্তমানে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার পিতা-মাতা; বা
 
(ই) শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী বা স্বামী এবং পিতা-মাতার অবর্তমানে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান; বা
 
(ঈ) (অ)-(ই) পর্যন্ত বর্ণিত ব্যক্তিগণের অবর্তমানে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাই-বোন।
 
(ঙ) (ক)-(ঘ) এ যাহা কিছু থাকুক না কেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা বা যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা বা খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার উত্তরাধিকারীগণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী না হইলে এই আইনের আওতায় সুবিধাভোগী হিসাবে গণ্য হইবেন না।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs