প্রিন্ট ভিউ

সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ৫৭ নং আইন )

প্রথম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন

১। (১) এই আইন সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ নামে অভিহিত হইবে।

 
 
 

(২) উপ-ধারা (৩) এর বিধান সাপেক্ষে, এই আইন প্রজাতন্ত্রের কর্ম ও উহাতে নিয়োজিত কর্মচারীগণের জন্য প্রযোজ্য হইবে।

 
 
 

(৩) অন্য কোনো আইন, চুক্তি বা সমজাতীয় দলিলে ভিন্নরূপ কোনো বিধান না থাকিলে, 1[এই আইনের বিধানাবলি, উপ-ধারা (৪ক) সাপেক্ষে,] নিম্নবর্ণিত কর্ম বা কর্ম বিভাগ বা উহাতে নিয়োজিত ব্যক্তিগণের জন্য প্রযোজ্য হইবে না, যথা:-

 
 
 

(ক) সংবিধান দ্বারা সৃষ্ট কোনো 2[***] পদ;

 
 
 

(খ) বিচার-কর্ম বিভাগ;

 
 
 

(গ) প্রতিরক্ষা-কর্ম বিভাগ;

 
 
 

(ঘ) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়;

 
 
 

(ঙ) জাতীয় সংসদ সচিবালয়;

 
 
 

(চ) বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট;

 
 
 

(ছ) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়;

 
 
 

(জ) স্ব-শাসিত সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান;

 
 
 

(ঝ) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান;

 
 
 

(ঞ) সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প, কর্মসূচি বা অনুরূপ কোনো কার্যক্রমের আওতাধীন চাকরি; এবং

 
 
 

(ট) এ্যাপ্রেনটিস, চুক্তি বা এডহক ভিত্তিক অথবা অন্য কোনো প্রকার অস্থায়ী, সাময়িক বা খণ্ডকালীন চাকরি।

 
 
 

(৪) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত যে সকল কর্ম বা কর্মবিভাগ বা উহাতে নিয়োজিত ব্যক্তিগণের জন্য ধারা ৬১ এর অধীন রহিতকৃত যে কোনো আইনের বিধান যেভাবে প্রযোজ্য ছিল, সেই সকল বিধানের বিষয়বস্তুর প্রতিফলনে যে সকল বিধান এই আইনে সংযোজিত হইয়াছে উহা প্রযোজ্য থাকিবে।

 

3[(৪ক) উপ-ধারা (৪) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, এই আইনের ধারা ১৫, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪ ও ৪৫ এর বিধানসমূহ স্ব-শাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মচারীগণের জন্যও প্রযোজ্য হইবে।]

 
 
 

*(৫) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে।

 

 

 

* এস, আর, ও নং ৩০৫-আইন/২০১৯, তারিখঃ ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ইং দ্বারা ১০ আশ্বিন, ১৪২৬ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১ অক্টোম্বর, ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ তারিখ হইতে আইনটি কার্যকর হইয়াছে ।

 
 
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
(১) “আইন” অর্থ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫২ এ সংজ্ঞায়িত আইন;
 
(২) ‘‘উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারী’’ অর্থ কোনো সরকারি কর্মচারী, যাহার পদ প্রশাসনিক পুনর্গঠন, জনবল যৌক্তিকীকরণ বা অন্য কোনো কারণে সরকার কর্তৃক বিলুপ্ত করা হইয়াছে;
 
(৩) “উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ” অর্থ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অথবা আপাতত বলবৎ কোনো আইন বা সরকারি আদেশ দ্বারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দায়িত্ব পালন বা ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ; এবং এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারীও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(৪) “‌‌এ্যাপ্রেনটিস” অর্থ প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ প্রাপ্ত নহেন, তবে অনুরূপ নিয়োগের উদ্দেশ্যে কোনো বৃত্তি বা পেশা সম্পর্কে প্রশিক্ষণরত কোনো ব্যক্তি যিনি উক্ত প্রশিক্ষণকালে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাতা প্রাপ্ত হন;
 
(৫) “কমিশন” অর্থ বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন;
 
(৬) “প্রজাতন্ত্রের কর্মবিভাগ” অর্থ প্রজাতন্ত্রের কর্মের অন্তর্ভুক্ত যে কোনো কর্মবিভাগ, সার্ভিস, ক্যাডার বা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোনো স্বতন্ত্র ইউনিট;
 
(৭) “প্রেষণ” অর্থ কোনো সরকারি কর্মচারীকে তাহার নিজস্ব অথবা নিয়মিতভাবে নিয়োগযোগ্য কর্ম, পদ বা কর্মবিভাগ হইতে ভিন্নতর কোনো কর্ম, পদ বা কর্মবিভাগে অস্থায়ীভাবে প্রেরণ;
 
(৮) “‌‌বেতন” অর্থ একজন কর্মচারী প্রতি মাসে বেতন, ওভারসিজ পে, বিশেষ বেতন, ব্যক্তিগত বেতন বা সরকার কর্তৃক বেতন হিসাবে বিশেষভাবে শ্রেণিভুক্ত অন্য যে কোনো প্রকার আয় বাবদ যে অর্থ প্রাপ্য হন; তবে কোনো পদে স্থায়ীভাবে বা অফিসিয়েটিং হিসাবে অধিষ্ঠিত থাকিবার কারণে বা কোনো কর্মবিভাগে তাহার অবস্থানের কারণে বিশেষ বেতন বা তাহার ব্যক্তিগত যোগ্যতার কারণে মঞ্জুরিকৃত বেতন ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
 
(৯) “বৈদেশিক বা বেসরকারি চাকরি” অর্থ কোনো বিদেশি রাষ্ট্র অথবা কোনো স্বীকৃত আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক, বহুজাতিক বা বেসরকারি সংস্থার অধীন চাকরি;
 
(১০) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি; এবং অনুরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত প্রজাতন্ত্রের কর্ম ও উহাতে কর্মচারীগণের নিয়োগ এবং কর্মের শর্তাবলি সম্পর্কিত আপাতত বলবৎ অন্যান্য বিধিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
(১১) “রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান” অর্থ সরকার অথবা কোনো স্ব-শাসিত সংস্থার মালিকানাধীন বা উহাতে ন্যস্ত অথবা শতকরা ৫০ (পঞ্চাশ) ভাগের অধিক সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত কোনো ব্যবসায়-উদ্যোগ, কোম্পানি, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা শিল্প-বাণিজ্য সম্পর্কিত বা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান;
 
(১২) “লিয়েন” অর্থ প্রজাতন্ত্রের কর্মের কোনো স্থায়ী পদে স্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তির উক্ত পদে স্থায়ীভাবে অধিষ্ঠিত থাকিবার অধিকার;
 
(১৩) “‌‌শিক্ষানবিস (Probationer)” অর্থ প্রজাতন্ত্রের কর্মের কোনো স্থায়ী পদের বিপরীতে সরাসরি বা পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগকৃত কোনো কর্মচারী, যাহার চাকরি এখনও স্থায়ীকরণ করা হয় নাই;
 
(১৪) ‘‘সরকার’’ অর্থ এই আইনে বর্ণিত কোনো কার্য সম্পাদনের জন্য Rules of Business, 1996 এর Schedule-I (Allocation of Business Among the Different Ministries and Divisions) অনুসারে ক্ষমতা বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ;
 
(১৫) ‘‘সরকারি আদেশ’’ অর্থ Rules of Business, 1996 এর অধীন বা উহাতে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত আদেশ, নির্দেশ, প্রজ্ঞাপন বা পরিপত্র;
 
(১৬) “সরকারি কর্মচারী” অর্থ এই আইনের আওতাভুক্ত প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি;
 
(১৭) “সংবিধান” অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান;
 
(১৮) “স্ব-শাসিত সংস্থা” অর্থ আপাতত বলবৎ কোনো আইনের বিধান দ্বারা অথবা উহার অধীন প্রতিষ্ঠিত বা গঠিত এবং স্ব-শাসনে পরিচালিত দফা (৫) এ উল্লিখিত কমিশন ব্যতীত অন্য কোনো কমিশন অথবা কোনো কর্তৃপক্ষ, কর্পোরেশন, ইন্সটিটিউশন বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, যাহার স্বতন্ত্র আইনগত সত্তা রহিয়াছে;
 
(১৯) “স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান” অর্থ সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, আইন দ্বারা বা উহার অধীন প্রতিষ্ঠিত বা গঠিত কোনো কর্তৃপক্ষ;
 
(২০) “স্থায়ী পদ” অর্থ একটি নির্দিষ্ট বেতন-গ্রেডে অসীমিত সময়ের জন্য মঞ্জুরিকৃত প্রজাতন্ত্রের কর্মের কোনো পদ; এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শর্ত পূরণ সাপেক্ষে, নির্দিষ্ট সময় অন্তে স্থায়ী করিবার উদ্দেশ্যে রাজস্বখাতে অস্থায়ীভাবে সৃজিত পদও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
আইনের প্রাধান্য
৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে:
 
তবে শর্ত থাকে যে, প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্ম বা উহার আওতাভুক্ত কোনো বিশেষ শ্রেণির জন্য আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন অথবা অনুরূপ আইনের অধীন প্রণীত বিধি, প্রবিধি বা আদেশে কোনো বিশেষ বিধান থাকিলে, অনুরূপ বিশেষ বিধান প্রাধান্য পাইবে।
চাকরি সম্পর্কিত অন্যান্য বিধানের শর্তসাপেক্ষ কার্যকারিতা
৪। প্রজাতন্ত্রের কর্ম বা উহাতে নিয়োজিত কর্মচারীগণের নিয়োগ এবং কর্মের শর্ত সম্পর্কিত আপাতত বলবৎ কোনো আইন ও আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন দলিলের বিধান এবং এতদসংক্রান্ত সরকারি আদেশসমূহ, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, কার্যকর থাকিবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs