প্রিন্ট ভিউ
দশম অধ্যায়
সরকারি কর্মচারীর অনুসরণীয় নীতি, আচরণ, শৃঙ্খলা, ইত্যাদি
1[2[৩৭ক। (১) এই আইন বা এই আইনের অধীন প্রণীত বিধিমালায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোনো সরকারি কর্মচারী-
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য করেন, আইনসংগত কারণ ব্যতিরেকে সরকারের কোনো আদেশ, পরিপত্র এবং নির্দেশ অমান্য করেন বা উহার বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করেন বা এই সকল কার্যে অন্য কোনো সরকারি কর্মচারীকে প্ররোচিত করেন, অথবা
(খ) ছুটি বা যুক্তিসংগত কোনো কারণ ব্যতীত অন্যান্য কর্মচারীদের সহিত সমবেতভাবে নিজ কর্ম হইতে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন, অথবা
(গ) যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তাহার কর্মে উপস্থিত হইতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন,
তাহা হইলে উহা হইবে সরকারি কর্মে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী অসদাচরণ এবং তজ্জন্য তিনি উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত যেকোনো দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো কর্মের জন্য কোনো সরকারি কর্মচারীকে নিম্নবর্ণিত যেকোনো দণ্ড প্রদান করা যাইবে, যথা:-
(ক) নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ;
(খ) বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান; এবং
(গ) চাকরি হইতে বরখাস্ত।
(৩) যেক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোনো অসদাচরণের জন্য কার্যধারা গ্রহণ করা হয়, সেইক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অথবা এতদুদ্দেশ্যে তৎকর্তৃক, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি, অভিযোগ গঠন করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীকে, অতঃপর অভিযুক্ত ব্যক্তি বলিয়া অভিহিত, কেন এই ধারার অধীন দোষী সাব্যস্তপূর্বক দণ্ড আরোপ করা হইবে না এই মর্মে ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে যথাযথভাবে কারণ দর্শাইবার নোটিশ প্রদান করিবেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হইয়া শুনানি করিতে ইচ্ছুক কি না ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি তাহাও উক্ত নোটিশে উল্লেখ করিবেন।
(৪) অভিযুক্ত কারণ দর্শাইলে উহা বিবেচনার পর এবং, ক্ষেত্রমত, তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে উপস্থিত হইলে শুনানি গ্রহণের পর, যদি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা অভিযোগ গঠনকারী ব্যক্তির নিকট প্রতীয়মান হয় যে, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কার্যধারা গ্রহণ করিবার মতো পর্যাপ্ত ভিত্তি রহিয়াছে, অথবা যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত কারণ না দর্শাইয়া থাকেন, তাহা হইলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা অভিযোগ গঠনকারী ব্যক্তি তদন্তের জন্য ৩ (তিন) দিনের মধ্যে ৩ (তিন) সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করিবেন।
(৫) তদন্ত কমিটির সদস্যগণকে অভিযুক্ত ব্যক্তি অপেক্ষা কর্মে জ্যেষ্ঠ হইতে হইবে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি নারী হইলে তদন্ত কমিটিতে আবশ্যিকভাবে একজন নারী সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে।
(৬) তদন্তের আদেশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে পরবর্তী ১৪ (চৌদ্দ) কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করিয়া প্রতিবেদন দাখিল করিতে হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, যুক্তিসংগত কোনো কারণে উক্ত সময়সীমা বৃদ্ধির প্রয়োজন হইলে উহা কেবল একবারের জন্য অনধিক ৭ (সাত) কার্যদিবস পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যাইবে।
(৭) তদন্ত কমিটি উপ-ধারা ৬ এ বর্ণিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করিতে না পারিলে নূতন তদন্ত কমিটি গঠন করিতে হইবে এবং উক্ত নূতন তদন্ত কমিটি উপ-ধারা ৬ এ বর্ণিত সময়সীমা অনুযায়ী তদন্ত সম্পন্ন করিবে।
(৮) তদন্ত কমিটি যুক্তিসংগত কারণ ব্যতিরেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিতে ব্যর্থ হইলে উহা তদন্ত কমিটির সদস্যদের অদক্ষতা হিসেবে বিবেচিত হইবে এবং এইরূপ অদক্ষতার বিষয়টি, ক্ষেত্রমত, তাহাদের সরকারি কর্মচারী বাতায়ন (GEMS) এর Personnel Management Information System (PMIS) এবং ডোসিয়ারে লিপিবদ্ধ ও সংরক্ষিত হইবে এবং চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী তাহাদের বিরুদ্ধে দণ্ডমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।
(৯) তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা অভিযোগ গঠনকারী ব্যক্তি উহা বিবেচনা করিবে, অভিযোগ, ও ক্ষেত্রমত, দণ্ডের বিষয়ে উহার সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করিবে এবং উক্ত সিদ্ধান্ত, তদন্ত প্রতিবেদনের কপিসহ, অভিযুক্তকে যথাযথভাবে প্রেরণ করিবে।
(১০) উপ-ধারা (৯) এর অধীন কোনো সরকারি কর্মচারীকে দণ্ড প্রদান করা হইলে, তিনি দণ্ড আরোপের আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে ধারা ৩৪ এর অধীন আপিল করিতে পারিবেন এবং আপিল কর্তৃপক্ষ উক্ত আদেশ বহাল রাখিতে, বাতিল করিতে বা পরিবর্তন করিতে পারিবে।
(১১) রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাইবে না, তবে এইরূপ ক্ষেত্রে দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী দণ্ড আরোপের আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে ধারা ৩৬ অনুযায়ী উক্ত আদেশ পুনর্বিবেচনার (review) জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট আবেদন করিতে পারিবেন এবং রাষ্ট্রপতি যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন, সেইরূপ আদেশ প্রদান করিবেন।
(১২) উপ-ধারা (১০) ও (১১) এর অধীন, যথাক্রমে, আপিল ও রিভিউ এ প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।]