প্রিন্ট ভিউ

[সেকশন সূচি]

সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ৫৭ নং আইন )

দশম অধ্যায়

সরকারি কর্মচারীর অনুসরণীয় নীতি, আচরণ, শৃঙ্খলা, ইত্যাদি

সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ড সংক্রান্ত বিশেষ বিধান

1[৩৭ক।  (১) এই আইন বা এই আইনের অধীন প্রণীত বিধিমালায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোনো সরকারি কর্মচারী-

(ক) এমন কোনো কার্যে লিপ্ত হন, যাহা অনানুগত্যের (insubordination) শামিল বা যাহা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে, অথবা

(খ) অন্যান্য কর্মচারীদের সহিত সমবেতভাবে বা এককভাবে, ছুটি ব্যতীত বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ব্যতীত, নিজ কর্ম হইতে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন, অথবা

(গ) অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তাহার কর্ম হইতে অনুপস্থিত থাকিতে বা বিরত থাকিতে বা তাহার কর্তব্য পালন না করিবার নিমিত্ত উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন, অথবা

(ঘ) যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তাহার কর্মে উপস্থিত হইতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন,

তাহা হইলে উহা হইবে একটি অসদাচরণ এবং তজ্জন্য তিনি উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত যেকোনো দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো কর্মের জন্য কোনো সরকারি কর্মচারীকে নিম্নবর্ণিত যেকোনো দণ্ড প্রদান করা যাইবে, যথা:-

(ক) নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ;

(খ) চাকরি হইতে অপসারণ; এবং

(গ) চাকরি হইতে বরখাস্ত।

(৩) যেক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোনো অপরাধের জন্য কার্যধারা গ্রহণ করা হয়, সেইক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অথবা এতদুদ্দেশ্যে তৎকর্তৃক, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি, অভিযোগ গঠন করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীকে, অতঃপর অভিযুক্ত বলিয়া অভিহিত, কেন এই ধারার অধীন দণ্ড আরোপ করা হইবে না এই মর্মে নোটিশ জারির ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাইবার নোটিশ প্রদান করিবেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হইয়া শুনানি করিতে ইচ্ছুক কি না ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি তাহাও উক্ত নোটিশে উল্লেখ করিবেন।

(৪) অভিযুক্ত কারণ দর্শাইলে উহা বিবেচনার পর এবং, ক্ষেত্রমত, তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে উপস্থিত হইলে শুনানি গ্রহণের পর, যদি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা অভিযোগ গঠনকারী ব্যক্তি অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন, অথবা যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত কারণ না দর্শাইয়া থাকেন, তাহা হইলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা অভিযোগ গঠনকারী ব্যক্তি নোটিশের মাধ্যমে নোটিশে বর্ণিত প্রস্তাবিত দণ্ড কেন আরোপ করা হইবে না, নোটিশ জারির ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে উহার কারণ দর্শাইবার নোটিশ প্রদান করিবেন।

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত কারণ দর্শাইলে উহা বিবেচনার পর অথবা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারণ না দর্শাইলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (৪) এর অধীন নোটিশে বর্ণিত যেকোনো দণ্ড অভিযুক্তের উপর আরোপ করিতে পারিবেন।

(৬) যদি অভিযুক্তের নিকট নোটিশ জারি করা হয় কিংবা তাহার সর্বশেষ জ্ঞাত বাসস্থানের কোনো দৃষ্টিগোচর স্থানে লটকাইয়া জারি করা হয়, অথবা অন্যূন ২ (দুই) টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়, অথবা তাহার ই-মেইলে নোটিশ প্রেরণ করা হয়, তাহা হইলে এই ধারার অধীন নোটিশ যথাযথভাবে জারি হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(৭) এই ধারার অধীন কোনো সরকারি কর্মচারীকে দণ্ড প্রদান করা হইলে, তিনি দণ্ড আরোপের আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে ধারা ৩৪ এর অধীন আপিল করিতে পারিবেন এবং আপিল কর্তৃপক্ষ উক্ত আদেশ বহাল রাখিতে, বাতিল করিতে বা পরিবর্তন করিতে পারিবে।

(৮) উপ-ধারা (৭) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারার অধীন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাইবে না, তবে এইক্ষেত্রে দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী দণ্ড আরোপের আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে ধারা ৩৬ এর অধীন উক্ত আদেশ পুনর্বিবেচনার (Review) জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট আবেদন করিতে পারিবেন এবং রাষ্ট্রপতি যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন, সেইরূপ আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন।

(৯) উপ-ধারা (৭) এর অধীন আপিল বা, ক্ষেত্রমত, উপ-ধারা (৮) এর অধীন পুনর্বিবেচনায় (Review) প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।]


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs