প্রিন্ট ভিউ

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮

( ২০১৮ সনের ৬৩ নং আইন )

ষষ্ঠ অধ্যায়

1[মাদকদ্রব্য অপরাধের বিচার]

  

অপরাধের বিচার, ইত্যাদি

2[৪৪।  (১) এই আইনের অধীন মাদকদ্রব্য অপরাধসমূহ অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে।

 

         (২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সংশ্লিষ্ট দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, উহার এখতিয়ারাধীন এলাকার জন্য, কেবল মাদকদ্রব্য অপরাধ বিচারের নিমিত্ত, প্রয়োজনে, এক বা একাধিক এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত নির্দিষ্ট করিবেন।]

3[***]
মাদকদ্রব্য অপরাধ আমলযোগ্যতা
৪৬। মাদকদ্রব্য অপরাধসমূহ আমলযোগ্য অপরাধ হইবে।
জামিন সংক্রান্ত বিধান

৪৭৷ (১) এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি প্রদান করা হইবে না, যদি-

 

(ক) তাহাকে মুক্তি প্রদানের আবেদনের উপর রাষ্ট্র বা, ক্ষেত্রমত, অভিযোগকারী পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান করা না হয়; এবং

 

(খ) তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার যুক্তিসংগত কারণ রহিয়াছে মর্মে 4[এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত] সন্তুষ্ট হন; অথবা

 

(গ) তিনি নারী বা শিশু অথবা শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ না হন এবং তাহাকে জামিনে মুক্তি প্রদানের কারণে ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হইবে না মর্মে 5[এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত] সন্তুষ্ট না হয়।

 

(২) কোনো মাদকদ্রব্য অপরাধের তদন্ত সমাপ্তির পর, তদন্ত প্রতিবেদন বা সেই সূত্রে প্রাপ্ত অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে যদি 6[এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত] বা, ক্ষেত্রমত, আপিল আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো ব্যক্তি উক্ত অপরাধের সহিত জড়িত নহেন বলিয়া বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ রহিয়াছে, তাহা হইলে 7[এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত] বা আপিল আদালত সংশ্লিষ্ট তথ্য ও কারণ উল্লেখপূর্বক উক্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তির আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

বিচারের বিশেষ পদ্ধতি

8[৪৮।  এই আইনের অধীন মাদকদ্রব্য অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ৫ (পাঁচ) বৎসরের অধিক কারাদণ্ড না হইলে, সংশ্লিষ্ট মামলার বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে নিষ্পন্ন হইবে এবং এইরূপ ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির অধ্যায় ২২ এর বিধানাবলি, যতদূর সম্ভব, অনুসরণ করিতে হইবে।]

বিচারকার্য মুলতবি

৪৯৷ 9[এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতে] মামলার বিচারকার্য আরম্ভ হইলে উহা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অবিরাম চলিবে, তবে 10[উক্ত আদালত] যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিচারকার্য মুলতবি করা একান্ত প্রয়োজন, তাহা হইলে স্বল্পকালীন সময়ের জন্য, যাহা তিন কার্য দিবসের অধিক হইবে না, বিচারকার্য মুলতবি করা যাইবে।

বিচারাধীন মাদকদ্রব্য অপরাধের সহিত জড়িত অন্য অপরাধের বিচার

11[৫০।  এই আইনের অন্য কোনো বিধান অথবা অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতে বিচারাধীন কোনো মামলার মাদকদ্রব্য অপরাধের সহিত অন্য কোনো অপরাধ যদি এমনভাবে জড়িত থাকে যে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে উক্ত অন্য অপরাধের বিচার বিচারাধীন মাদকদ্রব্য অপরাধের সহিত একই সঙ্গে হওয়া উচিত, তাহা হইলে উক্ত অন্য অপরাধটি বিচারাধীন মাদকদ্রব্য অপরাধের সহিত, যতদূর সম্ভব, এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতে একই সঙ্গে বিচার্য হইবে।]

বিচার সমাপ্তির মেয়াদ

৫১৷ 12[(১) বিচারের জন্য মামলা প্রাপ্তির তারিখ হইতে ৯০ (নববই) কার্যদিবসের মধ্যে এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত কর্তৃক মাদকদ্রব্য অপরাধের বিচার সমাপ্ত করিতে হইবে।]

 

(২) কোনো অনিবার্য কারণে উক্ত মেয়াদের মধ্যে কোনো বিচার সমাপ্ত করা সম্ভব না হইলে, 13[এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত] কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া অতিরিক্ত ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে বিচার সমাপ্ত করিতে পারিবে এবং তৎসম্পর্কে সুপ্রীম কোর্টকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে, যাহার একটি অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে ৷

 

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত বর্ধিত সময়ের মধ্যেও যদি যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণে কোনো বিচার কার্য সমাপ্ত করা সম্ভব না হয়, তাহা হইলে 14[এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত] উহার কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া বিচার কার্য সমাপ্তির জন্য সর্বশেষ আরও ১৫ (পনেরো) কার্যদিবস সময় বর্ধিত করিতে পারিবে এবং এইরূপ সময় বর্ধিতকরণ সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে, যাহার একটি অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।

 

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন বর্ধিত সময়ের মধ্যে আবশ্যিকভাবে বিচার কার্য সমাপ্ত করিতে হইবে।

অভিযুক্ত শিশুর বিচার পদ্ধতি
৫২৷ কোনো শিশু মাদকদ্রব্য অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে অভিযুক্ত হইলে তাহার ক্ষেত্রে শিশু আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ২৪ নং আইন) এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে ৷
আপিল

15[৫৩। এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে, রায় প্রদানের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে, আপিল করা যাইবে :

 

        তবে শর্ত থাকে যে, রায়ের জাবেদা নকল পাওয়ার জন্য যে সময় অতিবাহিত হইবে উহা উক্ত সময় হইতে কর্তন করিতে হইবে।]

ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োগ

৫৪। এই আইনে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে মাদকদ্রব্য অপরাধের অভিযোগ (এফ আই আর) দায়ের, তদন্ত, অনুসন্ধান, বিচার ও  16[আপিল] নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।

মাদকদ্রব্য অপরাধ সংঘটনে আইনানুগ অনুমান (presumption)

17[৫৫। যদি কোনো ব্যক্তির নিকট অথবা তাহার দখলকৃত বা নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো স্থানে কোনো মাদকদ্রব্য সেবন, অন্য কোনোভাবে মাদকদ্রব্য ব্যবহার বা প্রয়োগ অথবা মাদকদ্রব্য প্রস্তুতে ব্যবহারযোগ্য সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি অথবা মাদকদ্রব্য প্রস্তুতের জন্য প্রয়োজনীয় বস্তু বা উপাদান পাওয়া যায়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি, ভিন্নতর প্রমাণ করিতে ব্যর্থ হইলে, এই আইন লঙ্ঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।]

ক্যামেরায় গৃহীত ছবি, রেকর্ডকৃত কথাবার্তা, ইত্যাদির সাক্ষ্য মূল্য
৫৬। Evidence Act, 1872 (Act No.I of 1872) তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তি বা তদন্তকারী সংস্থার কোনো সদস্য বা অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো মাদকদ্রব্য অপরাধ বা ক্ষতি সংঘটন বা সংঘটনের প্রস্তুতি গ্রহণ বা উহা সংঘটনে সহায়তা সংক্রান্ত কোনো ঘটনার ভিডিও বা স্থিরচিত্র ধারণ বা গ্রহণ করিলে বা কোনো কথাবার্তা বা আলাপ-আলোচনা টেপ রেকর্ড বা ডিস্কে ধারণ করিলে উক্ত ভিডিও, স্থিরচিত্র, টেপ বা ডিস্ক উক্ত অপরাধ বা ক্ষতি সংশ্লিষ্ট মামলা বিচারের সময় সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হইবে।
মোবাইল কোর্ট আইনের প্রয়োগ
৫৭। এই আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, মাদকদ্রব্য অপরাধসমূহ মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর অধীন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করিয়া বিচারকার্য সম্পাদন করা যাইবে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs