প্রিন্ট

14/05/2025
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯

বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯

( ২০১৯ সনের ২ নং আইন )

দ্বিতীয় অধ্যায়

নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলি

চাকরির শর্তাবলি

৪।  (১) প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকগণের নিয়োগ ও তৎসংক্রান্ত আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াদি এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিচালিত হইবে :

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক নিয়োগ সংক্রান্ত নিজস্ব চাকরি বিধি থাকিতে পারিবে, কিন্তু এই প্রকার কোনো বিধি কোনো শ্রমিকের জন্য এই আইনের কোনো বিধান হইতে কম অনুকূল হইতে পারিবে না।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর শর্তাংশে উল্লিখিত চাকরি বিধি অনুমোদনের জন্য প্রতিষ্ঠানের মালিক কর্তৃক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের নিকট পেশ করিতে হইবে, এবং মহাপরিদর্শক উহা প্রাপ্তির ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে অনুমোদন করিবেন অথবা কারণ উল্লেখপূর্বক অননুমোদন করিতে পারিবেন।

 

(৩) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের অনুমোদন ব্যতীত উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত কোনো চাকরি বিধি কার্যকর করা যাইবে না।

 

(৪) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের আদেশে সংক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নির্বাহী চেয়ারম্যানের নিকট আপিল করিতে পারিবেন এবং আপিল প্রাপ্তির ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে নির্বাহী চেয়ারম্যান উহা নিষ্পত্তি করিবেন এবং এক্ষেত্রে নির্বাহী চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

শ্রমিকগণের শ্রেণি বিভাগ এবং শিক্ষানবিশিকাল

৫।  (১) কাজের ধরন ও প্রকৃতির ভিত্তিতে কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিকগণকে নিম্নলিখিত শ্রেণিতে বিভক্ত করা যাইবে, যথা :-

 

(ক)   শিক্ষাধীন;

 

(খ)   সাময়িক;

 

(গ)    অস্থায়ী;

 

(ঘ)    শিক্ষানবিশ;ও

 

(ঙ)   স্থায়ী।

 

(২) কোনো শ্রমিককে শিক্ষাধীন শ্রমিক বলা হইবে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে তাহার নিয়োগ প্রশিক্ষণার্থী হিসাবে হয়; এবং প্রশিক্ষণকালে তাহাকে ভাতা প্রদান করা হয়।

 

(৩) কোনো শ্রমিককে সাময়িক শ্রমিক বলা হইবে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে সাময়িক ধরনের কাজে সাময়িকভাবে তাহাকে নিয়োগ করা হয়।

 

(৪) কোনো শ্রমিককে অস্থায়ী শ্রমিক বলা হইবে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে তাহার নিয়োগ এমন কোনো কাজের জন্য হয় যাহা একান্তভাবে অস্থায়ী ধরনের এবং যাহা সীমিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হইবার সম্ভাবনা থাকে।

 

(৫) কোনো শ্রমিককে শিক্ষানবিশ শ্রমিক বলা হইবে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো স্থায়ী পদে তাহাকে শিক্ষানবিশ হিসাবে নিয়োগ করা হয় এবং তাহার শিক্ষানবিশিকাল সমাপ্ত না হইয়া থাকে।

 

(৬) কোনো শ্রমিককে স্থায়ী শ্রমিক বলা হইবে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো স্থায়ী পদে তাহাকে স্থায়ীভাবে নিযুক্ত করা হয় অথবা উপ-ধারা (৫) এর অধীন শিক্ষানবিশ হিসাবে নিয়োগ করা হয় এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানে তিনি তাহার শিক্ষানবিশিকাল সন্তোষজনকভাবে সমাপ্ত করিয়া থাকেন।

 

(৭) করণিক কাজে নিযুক্ত কোনো শ্রমিকের শিক্ষানবিশিকাল হইবে ৬ (ছয়) মাস এবং অন্যান্য শ্রমিকের জন্য এই সময় হইবে ৩ (তিন) মাস :

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো শ্রমিকের শিক্ষানবিশিকাল আরো ৩ (তিন) মাস বৃদ্ধি করা যাইবে যদি কোনো কারণে তিনি তাহার শিক্ষানবিশিকাল সন্তোষজনকভাবে সমাপ্ত না করেন।

নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র

6। কোনো মালিক নিয়োগপত্র প্রদান না করিয়া কোনো শ্রমিককে নিয়োগ করিতে পারিবেন না, এবং নিয়োজিত প্রত্যেক শ্রমিককে ছবিসহ পরিচয়পত্র প্রদান করিতে হইবে।

সার্ভিস বহি, সার্ভিস বইয়ের ফরম, ইত্যাদি

৭।   প্রত্যেক মালিক তাহার নিজস্ব খরচে তৎকর্তৃক নিযুক্ত প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য একটি করিয়া সার্ভিস বইয়ের ব্যবস্থা করিবেন এবং সার্ভিস বই কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত মাপে, ফরমে ও পদ্ধতিতে সংরক্ষিত হইবে।

শ্রমিক রেজিস্টার, টিকেট, কার্ড, ইত্যাদি

 ৮।  (১) মালিক তাহার প্রতিষ্ঠানের সকল শ্রমিকের জন্য একটি শ্রমিক রেজিস্টার রাখিবেন এবং ইহা সকল কর্মসময়ে পরিদর্শনের কাজে নিযুক্ত কর্মকর্তা বা কাউন্সিলর-কাম-পরিদর্শক কর্তৃক পরিদর্শনের জন্য প্রস্ত্তত রাখিতে হইবে।

 

(২) কর্তৃপক্ষ শ্রমিক রেজিস্টারের ফরম, উহা রক্ষণাবেক্ষণের পন্থা, সংরক্ষণের মেয়াদ এবং পরিদর্শনের পদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

 

(৩) মালিক প্রত্যেক শ্রমিককে ১ (এক) টি টিকেট বা কার্ড সরবরাহ করিবেন।

ছুটির পদ্ধতি

৯।   (১) কোনো শ্রমিক তাহার প্রাপ্য ছুটি ভোগ করিতে পারিবেন এবং ছুটির প্রাপ্যতা ইংরেজি পঞ্জিকা বৎসর অনুযায়ী হিসাব করা হইবে।

 

(২) কোনো শ্রমিক তাহার প্রাপ্য ছুটির অতিরিক্ত সরকার ঘোষিত কোনো সাধারণ বা বিশেষ ছুটি ভোগ করিতে পারিবেন।

 

(৩) কর্তৃপক্ষ ছুটির পদ্ধতি ও এতৎসংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়াদি নির্ধারণ করিবে।

 

(৪) কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময়ে কোনো জোনের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে বা একইসঙ্গে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে অথবা সকল জোনের সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করিতে পারিবে :

 

তবে শর্ত থাকে যে, উল্লিখিত ছুটি সাধারণ কর্মদিবস হিসাবে গণ্য হইবে এবং মালিক কর্তৃক উক্ত ছুটির দিনের জন্য শ্রমিকগণকে তাহার প্রাপ্য মজুরি প্রদেয় হইবে।

অব্যয়িত ছুটি মজুরি প্রদান

১০।   যদি কোনো শ্রমিকের চাকরি ছাঁটাই, ডিসচার্জ, অপসারণ, বরখাস্ত, অবসর গ্রহণ, পদত্যাগ বা অন্য কোনো কারণে অবসান হয় এবং যদি তাহার কোনো বাৎসরিক ছুটি পাওনা থাকে, তাহা হইলে মালিক ঐ পাওনা ছুটির পরিবর্তে এই আইনের বিধান অনুযায়ী ছুটিকালীন উক্ত শ্রমিক যে মজুরি প্রাপ্য হইতেন তাহা প্রদান করিবেন।

কাজ বন্ধ রাখা

১১।  (১) অগ্নিকাণ্ড, মারাত্নক দৈব দুর্ঘটনা, মহামারি, ব্যাপক দাঙ্গা-হাঙ্গামা এর জন্য প্রয়োজন হইলে কোনো মালিক যে কোনো সময় তাহার প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা বা শাখাসমূহ আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করিয়া দিতে পারিবেন এবং যে কারণে উক্তরূপ বন্ধের আদেশ দেওয়া হইবে তাহা বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত এই বন্ধের আদেশ বহাল রাখিতে পারিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ বন্ধের আদেশ প্রদানের পর অনতিবিলম্বে তাহা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিতে হইবে এবং এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে :

 

আরো শর্ত থাকে যে, কোনো আকস্মিক বিপত্তি, যন্ত্রপাতি বিকল, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ অথবা মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত অন্য কোনো কারণে প্রয়োজন হইলে, কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতিক্রমে, কোনো মালিক যে কোনো সময় তাহার প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা বা শাখাসমূহ আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করিয়া দিতে পারিবেন এবং যে কারণে উক্তরূপ বন্ধের আদেশ দেওয়া হইবে তাহা বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত এই বন্ধের আদেশ বহাল রাখিতে পারিবেন।

 

(২) যদি উক্তরূপ বন্ধের আদেশ কর্মসময়ের পরে দেওয়া হয়, তাহা হইলে পরবর্তী কর্মসময় শুরু হইবার আগে মালিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট শাখার নোটিশ বোর্ডে বা কোনো প্রকাশ্য স্থানে নোটিশ সাঁটিয়া বা লটকাইয়া দিয়া উক্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণকে অবহিত করিবেন।

 

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নোটিশে বন্ধ পরবর্তী কাজ কখন শুরু হইবে এবং সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণকে কাজ পুনরায় শুরু হইবার পূর্বে কোনো সময় তাহাদের কর্মস্থলে অবস্থান করিতে হইবে তৎসম্পর্কে নির্দেশ থাকিবে।

 

(৪) যদি উক্তরূপ বন্ধ কর্মসময়ের মধ্যেই সংঘটিত হয়, তাহা হইলে মালিক উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত পন্থায় নোটিশ মারফত শ্রমিকগণকে যথাশীঘ্র সম্ভব তৎসম্পর্কে অবহিত করিবেন, এবং এই নোটিশে পরবর্তী কাজ কখন শুরু হইবে এবং শ্রমিকগণ কর্মস্থলে অবস্থান করিবেন কি না তৎসম্পর্কে নির্দেশ থাকিবে।

 

(৫) উক্তরূপ কাজ বন্ধের পর যে সকল শ্রমিককে কর্মস্থলে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হইবে, তাহাদের এই অবস্থানের সময় ১ (এক) ঘণ্টার কম হইলে তাহারা কোনো মজুরি নাও পাইতে পারেন, এবং এই অবস্থানের সময় ইহার অধিক হইলে তাহারা অবস্থানকালীন সম্পূর্ণ সময়ের জন্য মজুরি পাইবেন।

 

(৬) যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ১ (এক) কর্ম দিবসের চেয়ে বেশী না হয়, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট কোনো শ্রমিক, উপ-ধারা (৫) এর ক্ষেত্র ব্যতীত, কোনো মজুরি নাও পাইতে পারেন।

 

(৭) যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ১ (এক) কর্ম দিবসের অধিক হয় তাহা হইলে, সাময়িক শ্রমিক ব্যতীত, প্রত্যেক শ্রমিককে ১ (এক) দিনের অতিরিক্ত সকল বন্ধ কর্মদিবসের জন্য মজুরি প্রদান করা হইবে।

 

(৮) যদি কাজ বন্ধের মেয়াদ ৩ (তিন) কর্মদিবসের অধিক হয়, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণকে ধারা ১৫ এর বিধান অনুযায়ী লে-অফ করা হইবে।

 

(৯) উপ-ধারা (৮) এ উল্লিখিত লে-অফ কাজ বন্ধ হইবার প্রথম দিন হইতেই বলবৎ হইবে, এবং প্রথম ৩ (তিন) দিনের জন্য প্রদত্ত কোনো মজুরি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে প্রদেয় লে-অফকালীন ক্ষতিপূরণের সহিত সমন্বিত করা হইবে।

প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা

১২।  (১) কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা বা বিভাগে বে-আইনী ধর্মঘটের কারণে, কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদনক্রমে, মালিক উক্ত শাখা বা প্রতিষ্ঠান আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করিয়া দিতে পারিবেন, এবং এইরূপ বন্ধের ক্ষেত্রে ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকগণ কোনো মজুরি পাইবেন না।

 

(২) যদি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো শাখা বা বিভাগ বন্ধের কারণে প্রতিষ্ঠানের অন্য কোনো শাখা বা বিভাগ এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে উহা চালু রাখা সম্ভব নহে, তাহা হইলে উক্ত শাখা বা বিভাগও বন্ধ করিয়া দেওয়া যাইবে, কিন্তু সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণকে ৩ (তিন) দিন পর্যন্ত লে-অফ এর ক্ষেত্রে প্রদেয় ক্ষতিপূরণের সমপরিমাণ মজুরি প্রদান করিতে হইবে, তবে এই মেয়াদের অতিরিক্ত সময়ের জন্য তাহারা আর কোনো মজুরি নাও পাইতে পারেন।

 

(৩) উক্তরূপ বন্ধের বিষয়টি মালিক যথাশীঘ্র সম্ভব সংশ্লিষ্ট শাখা বা বিভাগের নোটিশ বোর্ডে বা প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রকাশ্য স্থানে নোটিশ সাঁটিয়া বা লটকাইয়া দিয়া সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করিবেন এবং কাজ পুনরায় শুরু হইবার বিষয়ও উক্তরূপে বিজ্ঞাপিত করিবেন।

কতিপয় ক্ষেত্রে ‘‘এক বৎসর’’, ‘‘ছয় মাস’’ এবং ‘‘মজুরি’’ গণনা

১৩।  (১) এই অধ্যায়ের প্রয়োজনে, কোনো শ্রমিক কোনো প্রতিষ্ঠানে পূর্ববর্তী ১২ (বারো) পঞ্জিকা মাসে বাস্তবে অন্তত ২৪০ (দুইশত চল্লিশ) দিন বা ১২০ (একশত বিশ) দিন কাজ করিয়া থাকেন, তাহা হইলে তিনি যথাক্রমে ‘‘১ (এক) বৎসর’’ বা ‘‘৬ (ছয়) মাস’’ প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো শ্রমিকের বাস্তবে কাজ করিবার দিন গণনার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত দিনগুলিও গণনায় আনা হইবে, যথা :-

 

(ক)   তাহার লে-অফের দিনগুলি;

 

(খ)   অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার কারণে মজুরিসহ বা বিনা মজুরিতে ছুটির দিনগুলি;

 

(গ)    বৈধ ধর্মঘট অথবা অবৈধ লক-আউটের কারণে কর্মহীন দিনগুলি;

 

(ঘ)    মহিলা শ্রমিকগণের ক্ষেত্রে, অনধিক ১৬ (ষোলো) সপ্তাহ পর্যন্ত প্রসূতি ছুটি।

 

(৩) ধারা ১৮, ১৯, অথবা ২১ এর অধীন ক্ষতিপূরণ অথবা ধারা ২০, ২১, ২২ অথবা ২৩ এর অধীন মজুরি হিসাবের প্রয়োজনে ‘‘মজুরি’’ বলিতে কোনো শ্রমিকের ছাঁটাই, বরখাস্ত, অপসারণ, ডিসচার্জ, অবসর গ্রহণ বা চাকরির অবসানের অব্যবহিত পূর্বের ১২ (বারো) মাসে প্রদত্ত তাহার মূল মজুরি, এবং মহার্ঘ ভাতা এবং এড-হক বা অন্তবর্তী মজুরি, যদি থাকে, এর গড় বুঝাইবে।

ধারা ১১, ১৫, ১৬ এবং ১৭ প্রয়োগের ক্ষেত্রে বাধা-নিষেধ

১৪।  এই অধ্যায়ের অন্যত্র যাহা কিছুই থাকুক না কেন, অন্তত ৫ (পাঁচ) জন শ্রমিক নিযুক্ত নাই বা পূর্ববর্তী ১২ (বারো) মাসে নিযুক্ত ছিলেন না, এইরূপ কোনো প্রতিষ্ঠানে ধারা ১১, ১৫, ১৬ এবং ১৭ এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে না।

লে-অফকৃত শ্রমিকগণের ক্ষতিপূরণের অধিকার

১৫।  (১) যেক্ষেত্রে সাময়িক শ্রমিক নহেন এইরূপ কোনো শ্রমিককে, যাহার নাম কোনো প্রতিষ্ঠানের মাস্টার রোলে অন্তর্ভুক্ত আছে এবং যিনি মালিকের অধীন অন্তত ১ (এক) বৎসর চাকরি সম্পূর্ণ করিয়াছেন, লে-অফ করা হয়, তাহা হইলে মালিক তাহাকে, সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যতীত তাহার লে-অফের সকল দিনের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হইবে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মোট মূল মজুরি, মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তর্বর্তী মজুরি, যদি থাকে, এর অর্ধেক এবং তাহাকে লে-অফ করা না হইলে তিনি যে আবাসিক ভাতা পাইতেন, উহার সম্পূর্ণের সমান।

 

(৩) যে শ্রমিকের নাম কোনো প্রতিষ্ঠানের মাস্টার রোলে অন্তর্ভুক্ত আছে, তিনি এই ধারার প্রয়োজনে সাময়িক বা অন্য শ্রমিক বলিয়া গণ্য হইবেন না যদি তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছিন্নভাবে

 
 
 ১ (এক) বছর চাকরি সম্পূর্ণ করিয়া থাকেন।

 

    (৪) মালিক এবং শ্রমিকের মধ্যে ভিন্নরূপ কোনো চুক্তি না থাকিলে, কোনো শ্রমিক এই ধারার অধীন কোনো পঞ্জিকা বৎসরে ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের অধিক সময়ের জন্য ক্ষতিপূরণ পাইবেন না।

 

(৫) উপ-ধারা (৪) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোনো পঞ্জিকা বৎসরে কোনো শ্রমিককে অবিচ্ছিন্নভাবে বা বিচ্ছিন্নভাবে ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের অধিক সময়ের জন্য লে-অফ করা হয়, এবং উক্ত ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের পর লে-অফের সময় যদি আরোও ১৫ (পনেরো) দিন বা তদূর্ধ্ব হয়, তাহা হইলে উক্ত শ্রমিককে, শ্রমিক এবং মালিকের মধ্যে ভিন্নরূপে কোনো চুক্তি না থাকিলে, পরবর্তী প্রত্যেক ১৫ (পনেরো) বা তদূর্ধ্ব দিনসমূহের লে-অফের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে।

 

(৬) উপ-ধারা (৫) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হইবে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মোট মূল মজুরি, এবং মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তর্বর্তী মজুরি, যদি থাকে, এর এক-চতুর্থাংশ এবং যদি আবাসিক ভাতা থাকে, উহার সম্পূর্ণের সমান।

 

(৭) কোনো ক্ষেত্রে যদি কোনো শ্রমিককে কোনো পঞ্জিকা বৎসরে উপরে উল্লিখিত প্রথম

 
 
৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিন লে-অফের পর কোনো অবিচ্ছিন্ন ১৫ (পনেরো) দিন বা তদূর্ধ্ব সময়ের জন্য লে-অফ করিতে হয়, তাহা হইলে মালিক উক্ত শ্রমিককে লে-অফের পরিবর্তে ধারা ১৯ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন ছাঁটাই করিতে পারিবেন।

লে-অফকৃত শ্রমিকগণের মাস্টার রোল

১৬।   কোনো প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকগণকে লে-অফ করা সত্ত্বেও মালিককে তাহাদের জন্য মাস্টার রোল সংরক্ষণ করিতে হইবে, এবং স্বাভাবিক কর্মসময়ে লে-অফকৃত শ্রমিকগণের মধ্যে যাহারা কাজের জন্য হাজিরা দিবেন, তাহাদের নাম উহাতে লিপিবদ্ধ করিবার ব্যবস্থা করিবেন।

কতিপয় ক্ষেত্রে লে-অফকৃত শ্রমিকগণ ক্ষতিপূরণ পাইবার অধিকারী হইবেন না

১৭।  (১) এই অধ্যায়ের অন্যত্র যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো লে-অফকৃত শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ প্রদেয় হইবে না, যদি-

 

(ক)   তিনি একই প্রতিষ্ঠানে বা একই মালিকের অধীন একই শহরে বা গ্রামে অথবা

 
 
৮ (আট) কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে অবস্থিত ইপিজেডস্থ ভিন্ন কোনো প্রতিষ্ঠানে দক্ষতা বা পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নাই এইরূপ কোনো বিকল্প পদে একই মজুরিতে কাজ গ্রহণ করিতে অস্বীকার করেন;

 

(খ)   তিনি মালিকের নির্দেশ সত্ত্বেও দিনে ১ (এক) বার প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কর্মসময়ের মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কাজের জন্য হাজিরা না দেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর উদ্দেশ্যে যদি লে-অফকৃত কোনো শ্রমিক কোনো দিনে স্বাভাবিক কর্ম সময়ের মধ্যে নির্ধারিত কোনো সময়ে কাজের জন্য হাজিরা দেন, এবং হাজিরার

 
 
২ (দুই) ঘণ্টার মধ্যে যদি তাহাকে কোনো কাজ দেওয়া না হয়, তাহা হইলে তিনি সেই দিনের জন্য এই ধারার অর্থ মোতাবেক লে-অফকৃত হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।

 

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিতরূপে যদি কোনো লে-অফকৃত শ্রমিক কাজের জন্য হাজিরা দেন, এবং তাহাকে কোনো দিনের কোনো পালায় উহা শুরু হইবার প্রাক্কালে কাজ দেওয়ার পরিবর্তে তাহাকে একই দিনে পালার দ্বিতীয়ার্ধে কাজে হাজির হইবার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় এবং তিনি তদনুযায়ী কাজের জন্য হাজিরা দেন, তাহা হইলে তিনি ঐ দিনের অর্ধেক কর্মসময়ের জন্য লে-অফ হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং অবশিষ্ট অর্ধেক কর্মসময়ে, তাহাকে কোনো কাজ দেওয়া হউক বা না হউক, তিনি চাকরিতে ছিলেন বলিয়া বিবেচিত হইবেন।

মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ

১৮। যদি কোনো শ্রমিক কোনো মালিকের অধীন অবিচ্ছিন্নভাবে অন্তত ১ (এক) বৎসরের অধিককাল চাকরিরত থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন, তাহা হইলে মালিক মৃত শ্রমিকের কোনো মনোনীত ব্যক্তি বা মনোনীত ব্যক্তির অবর্তমানে তাহার কোনো পোষ্যকে তাহার প্রত্যেক পূর্ণ বৎসর বা উহার ৬ (ছয়) মাসের অধিক সময় চাকরির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৩০ (ত্রিশ) দিনের এবং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায় অথবা কর্মকালীন দুর্ঘটনার কারণে পরবর্তীতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে

 
 
৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মজুরি প্রদান করিবেন, এবং এই অর্থ মৃত শ্রমিক চাকরি হইতে অবসর গ্রহণ করিলে যে সুবিধা প্রাপ্ত হইতেন, তাহার অতিরিক্ত হিসাবে প্রদেয় হইবে।

ছাঁটাই ও ছাঁটাইকৃত শ্রমিকের পুনঃনিয়োগ

১৯।  (১) কোনো শ্রমিককে প্রয়োজনের অতিরিক্ততার কারণে কোনো প্রতিষ্ঠান হইতে ছাঁটাই করা যাইবে এবং উক্ত বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিতে হইবে।

 

(২) কোনো শ্রমিক যদি কোনো মালিকের অধীনে অবিচ্ছিন্নভাবে অন্যূন ১ (এক) বৎসর চাকরিতে নিয়োজিত থাকেন, তাহা হইলে তাহার ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে মালিককে-

 

(ক)   তাহার ছাঁটাইয়ের কারণ উল্লেখ করিয়া ১ (এক) মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হইবে, অথবা নোটিশ মেয়াদের জন্য নোটিশের পরিবর্তে মজুরি প্রদান করিতে হইবে; এবং

 

(খ)   তাহাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ তাহার প্রত্যেক বৎসর চাকরির জন্য ৩০ (ত্রিশ) দিনের মজুরি প্রদান করিতে হইবে।

 

(৩) যেক্ষেত্রে কোনো শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয় এবং ছাঁটাইয়ের ১ (এক) বৎসরের মধ্যে মালিক পুনরায় কোনো শ্রমিক নিয়োগ করিতে ইচ্ছুক হন সেই ক্ষেত্রে মালিক ছাঁটাইকৃত শ্রমিকের সর্বশেষ জানা ঠিকানায় নোটিশ প্রেরণ করিয়া তাহাকে চাকরির জন্য আবেদন করিতে আহ্বান জানাইবেন, এবং এই আহ্বানে সাড়া দিয়া কোনো শ্রমিক পুনরায় চাকরি পাইবার জন্য আবেদন করিলে তাহাকে নিয়োগের ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হইবে, এবং এ রকম একাধিক ছাঁটাইকৃত শ্রমিক প্রার্থী হইলে তাহাদের মধ্যে পূর্বের চাকরির জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হইবে।

ডিসচার্জ

২০।   (১) কোনো শ্রমিককে, জোনের চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসক অথবা কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক প্রত্যায়িত, শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতা বা অব্যাহত ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে চাকরি হইতে ডিসচার্জ করা যাইবে।

 

(২) ডিসচার্জকৃত কোনো শ্রমিক অন্যূন ১ (এক) বৎসর অবিচ্ছিন্ন চাকরি সম্পূর্ণ করিলে মালিককে তাহাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বৎসরের চাকরির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মূল মজুরি প্রদান করিতে হইবে।

অসদাচরণ এবং দণ্ড প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শাস্তি

২১।   (১) এই আইনে লে-অফ, ছাঁটাই, ডিসচার্জ এবং চাকরির অবসান সম্পর্কে অন্যত্র যাহা কিছুই বলা হউক না কেন, কোনো শ্রমিককে বিনা নোটিশে বা নোটিশের পরিবর্তে বিনা মজুরিতে চাকরি হইতে বরখাস্ত করা যাইবে, যদি তিনি-

 

(ক)   কোনো ফৌজদারি অপরাধের জন্য দণ্ড প্রাপ্ত হন; অথবা

 

(খ)   প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত অসদাচরণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন।

 

(২) অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত কোনো শ্রমিককে তদন্তকালীন সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা যাইবে, এবং যদি না বিষয়টি ইপিজেড শ্রম আদালতে বিচারাধীন থাকে, এই সাময়িক বরখাস্তের মোট মেয়াদ ৬০ (ষাট) দিনের অধিক হইবে না :

 

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ সাময়িক বরখাস্তকালে মালিক তাহাকে তাহার গড় মজুরি, মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তর্বর্তী মজুরি, যদি থাকে, এর অর্ধেক খোরাকী ভাতা হিসাবে প্রদান করিবেন এবং অন্যান্য ভাতা পূর্ণ হারে প্রদান করিবেন।

 

(৩) এই ধারার অধীন অন্যান্য অসদাচরণ ও তৎসংশ্লিষ্ট শাস্তি, শাস্তির আদেশ, তদন্তের পদ্ধতি, ইত্যাদি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

বরখাস্ত, ইত্যাদি ব্যতীত অন্যভাবে মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকরির অবসান

২২।   (১) এই অধ্যায়ের অন্যত্র বিধৃত কোনো পন্থা ছাড়াও মালিক-

 

(ক)   কোনো স্থায়ী শ্রমিকের ক্ষেত্রে ১২০ (একশত বিশ) দিনের,

 

(খ)   অন্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৬০ (ষাট) দিনের,

 

লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া শ্রমিকের চাকরির অবসান করিতে পারিবেন।

 

(২) যেক্ষেত্রে মালিক বিনা নোটিশে কোনো শ্রমিকের চাকরির অবসান করিতে চাহেন সেক্ষেত্রে, তিনি উপ-ধারা (১) এর অধীন, প্রদেয় নোটিশের পরিবর্তে নোটিশ মেয়াদের জন্য মজুরি প্রদান করিয়া ইহা করিতে পারিবেন।

 

 (৩) যেক্ষেত্রে এই ধারার অধীন কোনো স্থায়ী শ্রমিকের চাকরির অবসান করা হয় সেই ক্ষেত্রে, মালিক শ্রমিককে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বৎসরের চাকরির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মজুরি প্রদান করিবেন এবং এই ক্ষতিপূরণ এই আইনের অধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হইবে।

 

(৪) এই ধারার অধীন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসহ জোনের সার্বিক নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে, ১০ (দশ) বা ততোধিক শ্রমিকের একসাথে চাকরি অবসানের ক্ষেত্রে মালিককে জোনের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক এর সাথে পরামর্শ করিতে হইবে।

শ্রমিক কর্তৃক চাকরির ইস্তফা

২৩।   (১) কোনো স্থায়ী শ্রমিক মালিককে ৩০ (ত্রিশ) দিনের লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া চাকরি হইতে ইস্তফা দিতে পারিবেন।

 

(২) অস্থায়ী বা অন্য কোনো শ্রমিক ১৫ (পনেরো) দিনের লিখিত নোটিশ মালিকের নিকট প্রদান করিয়া চাকরি হইতে ইস্তফা দিতে পারিবেন।

 

(৩) যেক্ষেত্রে শ্রমিক বিনা নোটিশে চাকরি হইতে ইস্তফা দিতে চাহেন সেক্ষেত্রে, তিনি উপ-ধারা (১) অথবা (২) এর অধীন প্রদেয় নোটিশের পরিবর্তে নোটিশ মেয়াদের জন্য মজুরির সমপরিমাণ অর্থ মালিককে প্রদান করিয়া ইহা করিতে পারিবেন।

 

() যেক্ষেত্রে এই ধারার অধীন কোন স্থায়ী শ্রমিক চাকরি হইতে ইস্তফা দেন সেক্ষেত্রে, মালিক উক্ত শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ হিসাবে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বৎসরের চাকরির জন্য-

 

()   যদি তিনি পাঁচ বৎসর বা তদূর্ধ্ব, কিন্তু দশ বৎসরের কম মেয়াদে অবিচ্ছিন্নভাবে মালিকের অধীন চাকরি করিয়া থাকেন তাহা হইলে, ১৫ (পনেরো) দিনের মজুরি;

 

()   যদি তিনি দশ বৎসর বা তদূর্ধ্ব সময় কিন্তু পঁচিশ বছরের কম সময় মালিকের অধীনে অবিচ্ছিন্নভাবে চাকরি করিয়া থাকেন তাহা ইলে, ৩০ (ত্রিশ) দিনের মজুরি

 

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন ক্ষতিপূরণ এই আইনেরধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হইবে

চাকরি হইতে অবসর গ্রহণ

২৪।   (১) এই অধ্যায়ের অন্যত্র যাহা কিছুই উল্লে­খ থাকুক না কেন, কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোনো শ্রমিকের বয়স ৬০ (ষাট) বৎসর পূর্ণ হইলে তিনি চাকরি হইতে স্বাভাবিক অবসর গ্রহণ করিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো শ্রমিক ২৫ (পঁচিশ) বছর চাকরি পূর্ণ করিবার পর, যেকোনো সময়, তাহার সম্ভাব্য অবসর গ্রহণের ৩০ (ত্রিশ) দিন পূর্বে, লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া চাকরি হইতে অবসর গ্রহণ করিতে পারিবেন।

 

(২) এই ধারার উদ্দেশ্যে বয়স যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লি­ষ্ট শ্রমিকের সার্ভিস বইয়ে লিপিবদ্ধ জন্ম তারিখ উপযুক্ত প্রমাণ হিসাবে গণ্য হইবে।

 

(৩) এই ধারার অধীন কোনো স্থায়  শ্রমিক চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করিলে, মালিক, অবসর গ্রহণকারী শ্রমিককে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বৎসরের চাকরির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে 45 (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মূল মজুরি প্রদান করিবেন এবং এই ক্ষতিপূরণ এই আইনের অধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হইবে অথবা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব চাকরি বিধি অনুযায়ী অবসর গ্রহণকারী শ্রমিকের প্রাপ্ত পাওনাদি পরিশোধ করিতে হইবে।

ভবিষ্য তহবিল পরিশোধ

২৫।  যদি কোনো শ্রমিক কোনো ভবিষ্য তহবিলের সদস্য হন এবং প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী তিনি মালিকের চাঁদাসহ উক্ত তহবিল হইতে কোনো সুবিধা প্রাপ্য হন, তাহা হইলে তাহার ছাঁটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত, অবসর গ্রহণ, অপসারণ বা চাকরির অবসান হইবার বা মৃত্যুজনিত কারণে উক্ত সুবিধা হইতে তাহাকে বঞ্চিত করা যাইবে না।

শ্রমিকের মজুরিকাল ও মজুরি পরিশোধের মেয়াদ

২৬।  (১) কোনো শ্রমিকের মজুরিকাল ১ (এক) মাসের ঊর্ধ্বে হইবে না।

 

(২) কোনো শ্রমিকের যে মজুরিকাল সম্পর্কে তাহার মজুরি প্রদেয় হয় সেই কাল শেষ হইবার পরবর্তী ৭ (সাত) কর্মদিবসের মধ্যে তাহার মজুরি পরিশোধ করিতে হইবে।

চাকরি সম্পর্কিত প্রত্যয়নপত্র

২৭।   সাময়িক শ্রমিক ব্যতীত, অন্য কোনো শ্রমিক তাহার ছাঁটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত, অপসারণ, অবসর গ্রহণ বা চাকরির অবসানের সময় মালিকের নিকট হইতে চাকরি সম্পর্কিত একটি প্রত্যয়নপত্র পাইবার অধিকারী হইবেন।

অভিযোগ পদ্ধতি

২৮।  (১) লে-অফ, ছাঁটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত, অপসারণ অথবা অন্য যে কোনো কারণে চাকরির অবসান হইয়াছে এইরূপ শ্রমিকসহ যে কোনো শ্রমিকের, এই অধ্যায়ের অধীন কোনো বিষয় সম্পর্কে যদি কোনো অভিযোগ থাকে এবং যদি তিনি তৎসম্পর্কে এই ধারার অধীন প্রতিকার পাইতে ইচ্ছুক হন তাহা হইলে তিনি, অভিযোগের কারণ অবহিত হইবার তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে অভিযোগটি লিখিত আকারে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে মালিকের নিকট প্রেরণ করিবেন :

 

তবে শর্ত থাকে যে, যদি মালিক বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অভিযোগটি সরাসরি গ্রহণ করিয়া লিখিতভাবে প্রাপ্তিস্বীকার করেন, সেই ক্ষেত্রে উক্ত অভিযোগটি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে না পাঠাইলেও চলিবে।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অভিযোগ তদন্ত, নিষ্পত্তি ও তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াদি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs