প্রিন্ট

16/05/2025
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯

বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯

( ২০১৯ সনের ২ নং আইন )

দ্বাদশ অধ্যায়

দণ্ড ও বিচার

অন্যায় আচরণের জন্য দণ্ড

১৫১।   (১) কোনো ব্যক্তি ধারা ১১৫ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোনো কাজ করিলে, তিনি ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

 

 

(২) কোনো শ্রমিক ধারা ১১৬ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোনো কাজ করিলে, তিনি ২ (দুই) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

 

 

(৩) কোনো শ্রমিক কল্যাণ সমিতি, অথবা শ্রমিক ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি, ধারা ১১৬ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোনো কাজ করিলে, তিনি ২০ (বিশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

মীমাংসা ভঙ্গ করিবার জন্য দণ্ড

১৫২।  কোনো ব্যক্তি মীমাংসার কোনো শর্ত, রোয়েদাদ অথবা তাহার উপর বাধ্যকর কোনো সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করিলে, তিনি-

 

 

 

(ক)   প্রথমবার অনুরূপ অপরাধ করিবার জন্য ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন;

 

 

 

(খ)   পরবর্তীতে প্রতিটি অনুরূপ অপরাধের জন্য ১০ (দশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

মীমাংসার শর্ত, রোয়েদাদ বা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করিবার দণ্ড

১৫৩।   কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন তাহার উপর বাধ্যকর মীমাংসার কোনো শর্ত, রোয়েদাদ বা সিদ্ধান্ত ইচ্ছাকৃতভাবে বাস্তবায়ন না করিলে, তিনি ২০ (বিশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

 

মিথ্যা বিবৃতি প্রদানের দণ্ড, ইত্যাদি

১৫৪।  কোনো ব্যক্তি এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের অধীন দাখিলকৃত কোনো আবেদনপত্রে বা অন্য কোনো দলিলপত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কোনো বিবৃতি প্রদান করিয়া বা করাইয়া থাকেন, যাহা অসত্য বলিয়া তিনি জানেন অথবা বিশ্বাস করিবার কারণ রহিয়াছে; অথবা এই আইন, বিধি বা প্রবিধানের অধীন কোনো দলিল সংরক্ষণ বা পেশ করিতে ইচ্ছাকৃতভাবে গাফিলতি করিলে বা ব্যর্থ হইলে, সেক্ষেত্রে-

 

 

 

(ক)   মালিক হইলে সর্বোচ্চ (পাঁচ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে (তিন) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন;

 

 

 

(খ)       শ্রমিক হইলে ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অনাদায়ে (তিন) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন

বেআইনী ধর্মঘট বা লক-আউটের জন্য দণ্ড

১৫৫।  (১) কোনো শ্রমিক কোনো বেআইনী ধর্মঘট আরম্ভ করিলে, অব্যাহত রাখিলে অথবা উহার সমর্থনে অন্য কোনোভাবে কোনো কার্য করিলে, তিনি ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড, অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। 

 

 

 

(২) কোনো মালিক বেআইনীভাবে কোনো লক-আউট আরম্ভ করিলে, চালাইলে অথবা উহার সমর্থনে অন্য কোনোভাবে কোনো কার্য করিয়া থাকিলে, তিনি ২০ (বিশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং উক্তরূপ অপরাধের পুনরাবৃত্তি করিবার ক্ষেত্রে প্রথম অপরাধের পর অনুরূপ অপরাধ অব্যাহত থাকাকালীন সময়ে প্রতিদিনের জন্য অতিরিক্ত ২ (দুই) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

বেআইনী ধর্মঘট বা লক-আউট করিতে প্ররোচনা দানের দণ্ড

১৫৬।  কোনো ব্যক্তি বেআইনী ধর্মঘট বা বেআইনী লক-আউটে অংশগ্রহণ করিবার জন্য কোনো ব্যক্তিকে প্ররোচিত বা উত্তেজিত করিলে কিংবা উক্ত উদ্দেশ্যে অর্থ সরবরাহ করিলে অথবা অন্য কোনোভাবে সহায়তা করিলে, তিনি ১০ (দশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ধারা ১৪৬ এর বিধান লংঘন করিবার দণ্ড

১৫৭।   কোনো মালিক বা কোম্পানি ধারা ১৪৬ এর বিধান লংঘন করিলে তিনি ১০ (দশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ভবিষ্য তহবিল এবং শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের তসরুফ বা অর্থ আত্মসাতের দণ্ড

১৫৮।   (১) কোনো ব্যক্তি শ্রমিকগণের কোনো ভবিষ্য তহবিলের অর্থ আত্মসাত করিলে, তসরুফ করিলে অথবা অসৎ উদ্দেশ্যে নিজের কাজে ব্যয় করিলে, তিনি ১ (এক) বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

 

 

ব্যাখ্যা: কোনো মালিক তাহার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকগণের ভবিষ্য তহবিলে তাহার প্রদেয় চাঁদা অথবা তৎকর্তৃক শ্রমিকগণের মজুরি হইতে কর্তীত উক্ত তহবিলের চাঁদা ০৩ (তিন) মাসের অধিক সময় পর্যন্ত নির্বাহী চেয়ারম্যানের সন্তোষমত কোনো যুক্তিসংগত কারণ ব্যতিত, যথাসময়ে উক্ত তহবিলে জমা করিতে ব্যর্থ হইলে তিনি উক্ত তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।

 

 

 

(২) কোনো নিবন্ধিত শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিষদের কোনো প্রতিনিধি উক্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এর তহবিল তসরুফ বা আত্মসাৎ এর জন্য দোষী সাব্যস্ত হইলে, তিনি ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ডে, এবং তদুপরি যে পরিমাণ অর্থ তসরুফ বা আত্মসাৎ হইয়াছে মর্মে ইপিজেড শ্রম আদালতের নিকট প্রমাণিত হয়, অন্যূন সেই পরিমাণ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

 

 

(৩) এই ধারার অধীন আরোপিত অর্থদণ্ড, যে পরিমাণ অর্থ অভিযুক্ত ব্যক্তি আত্মসাত বা তসরুফ বা নিজ কাজে ব্যয় করিয়াছেন বলিয়া আদালত প্রমাণ পাইবে, সেই পরিমাণ হইতে পারিবে এবং অর্থদণ্ডের টাকা আদায় হইবার পর আদালত উহা সংশ্লিষ্ট তহবিলে প্রত্যর্পণ করিবে। 

অন্যান্য অপরাধের দণ্ড

১৫৯। (১) কোনো ব্যক্তি কর্তৃক এই আইনের কোনো বিধান লংঘন করিবার, অথবা প্রতিপালন করিতে ব্যর্থ হইবার ক্ষেত্রে অনুরূপ লংঘন বা ব্যর্থতার জন্য এই আইনের অন্য কোনো বিধানে কোনো শাস্তির বিধান না থাকিলে, উক্ত ব্যক্তি ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

 

 

(২) কোনো বিধি বা প্রবিধানের কোনো বিধান ভঙ্গ বা লংঘনের জন্য অনধিক ১ (এক হাজার) টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা অনধিক ৩ (তিন) মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা যাইবে।

ধারা ১২৯ এর বিধান লংঘন করিবার দণ্ড

১৬০। কোনো ব্যক্তি, সন্তোষজনক কারণ ব্যতিরেকে, ধারা ১২৯ এর উপ-ধারা (২) এর বিধান লংঘন করিয়া মীমাংসাকারীর নিকট হাজির না হইলে বা প্রতিনিধি প্রেরণ না করিলে, তিনি ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, এবং অনাদায়ে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন

১৬১। কোনো কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে কোম্পানির এমন প্রত্যেক পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব, অংশীদার, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উক্ত অপরাধ সংঘটিত করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ প্রতিরোধের জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।

 

 

 

ব্যাখ্যা । -  এই ধারায়-

 

 

 

(ক)   ‘‘কোম্পানি’’ বলিতে কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি সংঘ এবং সংগঠনও অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং

 

 

 

(খ)   বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ‘‘পরিচালক’’ বলিতে উহার কোনো অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ডের সদস্যকেও বুঝাইবে।

অপরাধের বিচার

১৬২।  (১) এই আইনের অধীন দণ্ডনীয় কোনো অপরাধ, এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত ইপিজেড শ্রম আদালত ব্যতীত অন্য কোনো আদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে না।

 

 

 

(২) এই আইনের অধীন সকল অপরাধ আমল অযোগ্য (non-cognizable) এবং জামিনযোগ্য (bailable) হইবে।

অভিযুক্তি তামাদি

১৬৩ এই আইন বা তদধীন কোনো বিধি বা প্রবিধানে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, ইহাদের অধীন কোনো অপরাধ কোনো শ্রম আদালত বিচারার্থে গ্রহণ করিবে না যদি না তৎসম্পর্কে অভিযোগ সংঘটিত হইবার ০৬ (ছয়) মাসের মধ্যে তা পেশ করা হয়।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs