প্রিন্ট ভিউ
ষষ্ঠ অধ্যায়
মজুরি, মজুরি পরিশোধ, ইত্যাদি
৫৪। বিষয় অথবা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই অধ্যায়ে ‘‘মজুরি’’ বলিতে ধারা ২ এর দফা (৩৪) এ সংজ্ঞায়িত মজুরিসহ নিম্নলিখিত পাওনাগুলিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা :-
(ক) নিয়োগের শর্ত মোতাবেক প্রদেয় কোনো বোনাস অথবা অন্য কোনো অতিরিক্ত পারিশ্রমিক;
(খ) ছুটি, বন্ধ অথবা অধিকাল কর্মের জন্য প্রদেয় কোনো পারিশ্রমিক;
(গ) কোনো আদালতের আদেশ অথবা পক্ষদ্বয়ের মধ্যে কোনো রোয়েদাদ বা নিষ্পত্তির অধীন প্রদেয় কোনো পারিশ্রমিক;
(ঘ) চাকরির অবসান, ছাঁটাই, ডিসচার্জ, অপসারণ, পদত্যাগ, অবসর গ্রহণ, বরখাস্ত অথবা অন্য যেভাবেই হউক না কেন, এর কারণে কোনো চুক্তি বা এই আইনের অধীন প্রদেয় কোনো অর্থ; এবং
(ঙ) লে-অফ অথবা সাময়িক বরখাস্তের কারণে প্রদেয় কোনো অর্থ।
৫৫। প্রত্যেক মালিক তৎকর্তৃক নিযুক্ত প্রত্যেক শ্রমিককে সকল মজুরি পরিশোধ করিবার জন্য দায়ী থাকিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা মালিক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অথবা উহার তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মালিকের নিকট দায়ী অন্য কোনো ব্যক্তিও উক্তরূপ পরিশোধের জন্য দায়ী থাকিবেন।
৫৬। অবসর গ্রহণ, ছাঁটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত বা চাকরির অবসান, ইত্যাদি যে কোনো কারণে শ্রমিকের চাকরির অবসান ঘটিবার পরবর্তী ১৫ (পনেরো) কর্মদিবসের মধ্যে উক্ত শ্রমিকের সকল পাওনা পরিশোধ করিতে হইবে।
৫৭। (১) প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে মালিক কর্তৃক শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করিতে হইবে।
(২) মালিককে শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এতদুদ্দেশ্যে সময় সময় জারিকৃত আদেশ বা সার্কুলার অনুসরণ করিতে হইবে।
৫৮। (১) এই আইন দ্বারা অনুমোদিত কর্তনের ক্ষেত্র ব্যতীত অন্য কোনো ক্ষেত্রে কোনো শ্রমিকের মূল মজুরি হইতে কিছুই কর্তন করা যাইবে না।
(২) কেবলমাত্র এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোনো শ্রমিকের মজুরি হইতে নিম্নলিখিত প্রকারের কর্তন করা যাইবে যথা :-
(ক) ভবিষ্য তহবিলের জন্য চাঁদা কর্তন অথবা উহা হইতে প্রদত্ত অগ্রিম আদায়ের জন্য কর্তন;
(খ) চেক-অফ পদ্ধতিতে শ্রমিক কল্যাণ সমিতির জন্য চাঁদা কর্তন;
(গ) কর্তব্য কাজে অননুমোদিত অনুপস্থিতির জন্য কর্তন।
(৩) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্তে কোনো শ্রমিকের উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত মজুরি কর্তন করা যাইবে।
৫৯। (১) এই অধ্যায়ের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, কোনো শ্রমিককে মজুরি হিসাবে প্রদেয় সকল অর্থ তাহার মৃত্যুজনিত কারণে অথবা তাহার কোনো খোঁজ না পাইবার কারণে যদি পরিশোধ করা না যায়, তাহা হইলে-
(ক) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী এতদুদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কর্তৃক মনোনীত কোনো ব্যক্তিকে প্রদান করা হইবে;
(খ) উক্তরূপ কোনো মনোনীত ব্যক্তি না থাকিলে অথবা কোনো কারণে উক্তরূপ কোনো মনোনীত ব্যক্তিকে উহা প্রদান করা না গেলে ইপিজেড শ্রম আদালতে জমা দিতে হইবে, এবং উক্ত আদালত বিধি অনুযায়ী তৎসম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
(২) যেক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুযায়ী কোনো শ্রমিককে মজুরি হিসাবে প্রদেয় সকল অর্থ মালিক কর্তৃক সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের মনোনীত ব্যক্তিকে প্রদান করা হইয়াছে অথবা ইপিজেড শ্রম আদালতে জমা দেওয়া হইয়াছে সেক্ষেত্রে উক্ত মজুরি প্রদান সম্পর্কে মালিক তাহার দায়িত্ব হইতে মুক্ত হইবেন।
৬০। (১) যেক্ষেত্রে এই আইনের বিধানের খেলাপের জন্য কোনো শ্রমিকের মজুরি হইতে কোনো কর্তন করা হয় অথবা কোনো শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করা না হয় অথবা তাহার মজুরি কিংবা প্রবিধানের আওতায় প্রদেয় ভবিষ্য তহবিলের প্রাপ্য পরিশোধে বিলম্ব ঘটে সেক্ষেত্রে তিনি, অথবা তাহার মৃত্যু হইলে তাহার কোনো উত্তরাধিকারী অথবা কোনো আইনসঙ্গত প্রতিনিধি কর্তৃক মজুরি ফেরত পাইবার জন্য অথবা বকেয়া বা বিলম্বিত মজুরি ও অন্যান্য পাওনা আদায়ের জন্য ইপিজেড শ্রম আদালতে দরখাস্ত করিতে পারিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দরখাস্ত পেশের সময়, স্থান ও ইপিজেড শ্রম আদালত কর্তৃক ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত আদেশ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
৬১। (১) মজুরি প্রাপ্ত হন নাই অথবা মজুরি কর্তিত হইয়াছে এইরূপ শ্রমিকগণের পক্ষে অন্তর্ভুক্ত সকল অথবা একাধিক শ্রমিকের পক্ষে ধারা ৬০ এর অধীন মাত্র একটি দরখাস্ত দাখিল করা যাইবে, এবং এইরূপ ক্ষেত্রে ধারা ৬০ এর অধীন ক্ষতিপূরণ প্রদেয় হইবে।
(২) ইপিজেড শ্রম আদালত ধারা ৬০ এর অধীন দাখিলকৃত মজুরি প্রাপ্ত হন নাই এইরূপ শ্রমিক দলভুক্ত একাধিক শ্রমিক কর্তৃক দাখিলকৃত স্বতন্ত্র দরখাস্তসমূহকে একটি দরখাস্ত হিসাবে গণ্য করিতে পারিবে, এবং তদনুযায়ী উহা নিষ্পত্তি করিতে পারিবে এবং এই ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর বিধান প্রযোজ্য হইবে।
(৩) এই ধারার প্রয়োজনে ‘‘মজুরি প্রাপ্ত হন নাই এইরূপ শ্রমিক দল’’ এর অন্তর্ভুক্ত বলিয়া ঐ সকল শ্রমিককে বুঝাইবে যাহারা একই প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত আছেন, এবং যাহাদের অনাদায়ী মজুরি অথবা বিলম্বিত মজুরি একই মজুরিকালের জন্য হইয়া থাকে।
৬২। (১) ধারা ৬০ এর অধীন প্রদত্ত ইপিজেড শ্রম আদালতের কোনো আদেশের বিরুদ্ধে উহা প্রদানের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যাইবে।
(২) আপিল সংক্রান্ত অন্যান্য বিধান বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
৬৩। (১) যেক্ষেত্রে যে কোনো সময়-
(ক) ধারা ৬০ এর অধীন কোনো দরখাস্ত পেশ করিবার পর, ইপিজেড শ্রম আদালত; অথবা
(খ) ধারা ৬২ এর অধীন কোনো শ্রমিক কর্তৃক আপিল পেশ করিবার পর, ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল;
এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, মালিকের অথবা ধারা ৫৫ এর অধীন মজুরি পরিশোধের জন্য দায়ী অন্য কোনো ব্যক্তির ধারা ৬০ বা ধারা ৬২ এর অধীন প্রদানের জন্য আদেশকৃত কোনো অর্থ পরিশোধ এড়াইবার সম্ভাবনা আছে, তাহা হইলে উক্ত ইপিজেড শ্রম আদালত বা, ক্ষেত্রমত, ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল উক্ত মালিক বা ব্যক্তিকে শুনানির সুযোগ দান করিয়া উক্ত আদেশকৃত অর্থ পরিশোধের জন্য তাহার সম্পত্তি ক্রোক করিতে পারিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, বিলম্বের কারণে উদ্দেশ্য ব্যর্থ হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, উক্ত ইপিজেড শ্রম আদালত বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল শুনানির সুযোগ দেওয়ার পূর্বেও উক্তরূপ ক্রোকের আদেশ দিতে পারিবে :
আরো শর্ত থাকে যে, উক্ত ইপিজেড শ্রম আদালত বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের বিবেচনায় যে পরিমাণ সম্পত্তি আদেশকৃত অর্থ আদায়ের জন্য যথেষ্ট হইবে, সেই পরিমাণ সম্পত্তিই ক্রোক করা হইবে।
(২) বিচারের পূর্বে সম্পত্তি ক্রোক সম্পর্কীয় দেওয়ানী কার্যবিধি এর সকল বিধান উপ-ধারা (১) এর অধীন ক্রোকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।
৬৪। যেক্ষেত্রে ধারা ৫৫ এর অধীন মজুরি পরিশোধের জন্য দায়ী কোনো ব্যক্তির নিকট হইতে ইপিজেড শ্রম আদালত বা ইপিজেড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল তৎকর্তৃক আদেশকৃত কোনো অর্থ আদায় করিতে অক্ষম হয় সেই ক্ষেত্রে উক্ত আদালত উহা মালিকের নিকট হইতে আদায় করিতে পারিবে।