প্রিন্ট ভিউ

[সেকশন সূচি]

প্রাণিকল্যাণ আইন, ২০১৯

( ২০১৯ সনের ১২ নং আইন )

প্রাণির প্রতি অপ্রয়োজনীয় নিষ্ঠুর আচরণ

৬।  (১) কোনো ব্যক্তির নিম্নবর্ণিত আচরণ বা কার্য প্রাণির জন্য অকল্যাণকর এবং উহা এই আইনের অধীন প্রাণির প্রতি অপ্রয়োজনীয় নিষ্ঠুর আচরণ হিসাবে গণ্য হইবে, যদি -

 

                (ক) কোনো কার্য বা কার্য হইতে বিরত থাকা প্রাণির অসুস্থতার কারণ হয়;

 

                (খ)  প্রাণিকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করানো বা অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রহার করা হয়;

 

               (গ)  প্রাণিকে প্রয়োজনীয় পরিমাণে খাদ্য ও পানি প্রদান না করা হয়  অথবা অতিরিক্ত খাদ্য এবং পানি গ্রহণে জবরদস্তি করা হয়;

 

              (ঘ)  প্রাণিকে এইরূপভাবে বাধিয়া রাখা হয় বা এমন অবকাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ রাখা হয় বা বহন করা হয় যাহার কারণে সংশ্লিষ্ট প্রাণি তাহার প্রকৃতি অনুযায়ী স্বাভাবিকভাবে দাঁড়াইতে, বসিতে বা শায়িত অবস্থায় থাকিতে পারে না;

 

                (ঙ)  নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে প্রাণিকে ধারালো ধাতব বস্তু দ্বারা প্রহার বা আঘাত করা হয়;

 

                (চ)   অসুস্থ অবস্থায় বা মৃত্যু ঘটানোর জন্য কোনো প্রাণিকে লোকালয়ে মুক্ত করিয়া দেওয়া হয়;

 

                (ছ)  কোনো প্রাণিকে লড়াই  করিবার জন্য প্ররোচিত করা বা টোপ হিসাবে ব্যবহার করা বা উত্যক্ত করা হয়;

 

             (জ)  ইচছাকৃতভাবে এবং অকারণে প্রাণির জন্য ক্ষতিকর বা প্রয়োগযোগ্য নহে এমন কোনো ঔষধ বা পদার্থ সেবন করানো হয় বা ইনজেকশনের মাধ্যমে বা পায়ুপথ বা জননাংগের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করানো বা করানোর চেষ্টা হয়;

 

                ঝ)  কুকুরকে শরীরচর্চার জন্য কোনো প্রকার চলাফেরার সুযোগ প্রদান না করিয়া একটানা চব্বিশ ঘণ্টা বা ততোধিক সময় বাঁধিয়া রাখা বা আটকাইয়া রাখা হয়;

 

               (ঞ) রাইফেল শ্যুটিং বা তীর ছোড়া প্রতিযোগিতায় কোনো প্রাণিকে লক্ষ্যবস্তু হিসাবে ব্যবহার করা হয় বা করিবার উদ্দেশ্যে ছাড়িয়া দেওয়া হয়;

 

                (ট)  অঙ্গহানিজনিত অথবা ক্ষুধা, তৃষ্ণা বা অন্য কোনো নিষ্ঠুরতার কারণে ব্যথাভোগকারী প্রাণিকে চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ না করিয়া বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অর্পণ করা হয়;

 

                (ঠ)  কোনো প্রাণিকে গৃহে আটক রাখিয়া এবং অন্য কাহারো তত্ত্বাবধানে না রাখিয়া উক্ত প্রাণির মালিক বা তত্ত্বাবধানকারীর অপ্রয়োজনীয় সময়কাল গৃহের বাহিরে অবস্থান;

 

                (ড)  ভেটেরিনারী সার্জন কর্তৃক কোনো প্রাণিকে প্রজননের জন্য শারীরিকভাবে অযোগ্য ঘোষণা করিবার পর উক্ত প্রাণিকে প্রজনন কাজে ব্যবহার করা হয়;

 

                (ঢ)   কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র ব্যতিরেকে কোনো প্রাণিকে বিনোদন বা  ক্রীড়া ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

 

(২) উপ-ধারায় (১) এ উল্লিখিত আচরণ বা কার্য ছাড়াও সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো ব্যক্তি কর্তৃক প্রাণির প্রতি অন্য কোনো আচরণ বা কার্যকেও প্রাণির প্রতি অপ্রয়োজনীয় নিষ্ঠুর আচরণ হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে।

 

(৩) উপ-ধারা (৪) এর বিধান সাপেক্ষে কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) ও (২) এ বর্ণিত কোনো অপ্রয়োজনীয় নিষ্ঠুর আচরণ সংঘটন করিলে বা সংঘটনে সহযোগিতা করিলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে।

 

(৪) এই ধারার ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, প্রাণির প্রতি নিম্নবর্ণিত আচরণ বা কার্য অপ্রয়োজনীয় নিষ্ঠুর আচরণ হিসাবে গণ্য হইবে না, যদি-

 

(ক)  নিষ্ঠুরতাটি যৌক্তিকভাবে পরিহার বা হ্রাস করিবার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়;

 

(খ)  নিষ্ঠুরতাটি সৎ উদ্দেশ্যে, যেমন- উক্ত প্রাণি বা অন্য কোনো প্রাণির উপকার অথবা অন্য কোনো ব্যক্তি বা অন্য কোনো প্রাণির প্রাণ সংশয়ের হুমকি নিরসনের জন্য করা হয়;

 

(গ) সংশ্লিষ্ট কার্য, ভেটেরিনারি সার্জনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নিকট, যুক্তিসঙ্গতভাবে উপযুক্ত এবং মানবিক প্রতীয়মান হয়;

 

(ঘ)   কোনো নিশ্চিত জলাতঙ্কগ্রস্থ প্রাণি বা অন্য কোনো অনিরাময়যোগ্য সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়, যাহা মানুষ বা অন্য প্রাণিতে সংক্রমণ ঘটাইতে পারে, অথবা যাহা মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হইতে পারে বলিয়া সরকারের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক ঘোষিত হয়, এবং নিয়ন্ত্রণে বা নির্মূলে সরকার বা সরকারের অনুমোদিত কোনো কর্তৃপক্ষ, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ব্যথাহীন কোনো মানবিক উপায়ে এবং OIE (World Organization for Animal Health) Standards অনুসরণ করিয়া জনকল্যাণার্থে উক্ত অনিরাময়যোগ্য অসুস্থ প্রাণিকে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়;

 

(ঙ)  নিষ্ঠুরতাটি কোনো সরকার স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা বা গবেষণার উদ্দেশ্যে হইয়া থাকে;

 

(চ)  খাদ্য হিসাবে ব্যবহারের জন্য প্রাণি জবাইকালে ও ধর্মীয় উদ্দেশ্যে উৎসর্গকালে যে কোনো ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি কর্তৃক তাহার নিজস্ব ধর্মীয় আচার অনুযায়ী কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়;

 

(ছ)  চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চিড়িয়াখানা পরিচালনার জন্য প্রযোজ্য আইন, বিধি বা নীতিমালার অধীন চিড়িয়াখানায় রক্ষিত প্রাণির ক্ষেত্রে কোনো কার্যক্রম বা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়; এবং

 

(জ) বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৩০ নং আইন) এর অধীন কোনো কার্যক্রম বা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs