প্রিন্ট ভিউ
পঞ্চম অধ্যায়
বিদেশি মৎস্য নৌযান কর্তৃক মৎস্য আহরণ কার্যক্রম
২২। সরকার, কারণ উল্লেখপূর্বক বা উপযুক্ত বিবেচনায় কারণ উল্লেখ ব্যতিরেকে, বিদেশি মৎস্য নৌযান বরাবরে ধারা ৮ এর অধীন লাইসেন্স ইস্যু করিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিতে পারিবে।
২৩। (১) কোনো বিদেশি মৎস্য নৌযান লাইসেন্স ব্যতীত বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য জলসীমায় প্রবেশ করিতে পারিবে না।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উপ-ধারা (৩) ও (৪) এর বিধান সাপেক্ষে, কোনো বিদেশি মৎস্য নৌযান কেবল নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য জলসীমায় প্রবেশ এবং যুক্তিসঙ্গত সময়ের জন্য অবস্থান করিতে পারিবে, যথা :-
(ক) বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য জলসীমার বাহিরের কোনো স্থানে গমণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য জলসীমার উপর দিয়া অতিক্রমণের উদ্দেশ্যে;
(খ) যেক্ষেত্রে নৌযান ও উহার নাবিকের নিরাপত্তা বিপদাপন্ন, সেক্ষেত্রে আসন্ন বিপদ এড়াইবার জন্য;
(গ) বিপদগ্রস্ত ও সংকটাপন্ন ব্যক্তি, নৌযান অথবা উড়োজাহাজকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে;
(ঘ) কোনো নাবিকের জরুরি চিকিৎসা গ্রহণের প্রয়োজনে;
(ঙ) আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে, যাহা নির্দোষ অতিক্রমণ (Innocent Passage) এর আওতাভুক্ত।
(৩) উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত যে কোনো উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য জলসীমায় প্রবেশকারী বিদেশি মৎস্য নৌযান-
(ক) এই আইনসহ দেশে বলবৎ অন্য আইন প্রতিপালন করিতে বাধ্য থাকিবে; এবং
(খ) যে উদ্দেশ্যে প্রবেশ করিয়াছে উহা পূরণ হইবার পর যথাশীঘ্র সম্ভব উক্ত জলসীমার বাহিরে চলিয়া যাইবে।
(৪) উপ-ধারা (২) বর্ণিত উদ্দেশ্যে কোনো বিদেশি মৎস্য নৌযানকে বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য জলসীমায় আগমন এবং বহির্গমন সম্পর্কে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সরকার বা, ক্ষেত্রমত, পরিচালককে অবহিত করিতে হইবে।
ব্যাখ্যা- এই ধারায় ‘‘নির্দোষ অতিক্রমণ’’ অর্থ United Nations Convention on the Law of the Sea, 1982 তে বর্ণিত নির্দোষ অতিক্রমণ।
২৪। যদি কোনো বিদেশি মৎস্য নৌযান লাইসেন্স ব্যতীত-
(ক) বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য জলসীমায় প্রবেশ করে;
(খ) মৎস্য আহরণ করে বা আহরণের উদ্যোগ গ্রহণ করে;
(গ) মৎস্য বোঝাই (load), খালাশ (unload) বা এক নৌযান হইতে অন্য নৌযানে মৎস্য স্থানান্তর (tranship) বা ক্রয়-বিক্রয় করে;
(ঘ) বেআইনিভাবে মৎস্য পরিবহন, পাচার বা অন্য কোনোভাবে মৎস্য সম্পদ বা পরিবেশের কোনো ক্ষতিসাধন করে বা ক্ষতিসাধন হইতে পারে এমন কোনো কাজ করে বা কাজ করিবার উদ্যোগ গ্রহণ করে বা উক্ত কাজে সহায়তা করে; বা
(ঙ) জ্বালানি সরবরাহ বোঝাই বা খালাশ করে;
তাহা হইলে উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ।
২৫। (১) যদি কোনো বিদেশি মৎস্য নৌযান কর্তৃক ধারা ২৪ এ বর্ণিত অপরাধ সংঘটিত হয়, তাহা হইলে উক্ত নৌযানের মালিক, স্কিপার এবং নৌযানে অবস্থানরত অপরাধ সংঘটনকারী অন্য কোনো ব্যক্তি উক্ত অপরাধের জন্য অনধিক ৩ (তিন) বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ (পাঁচ) কোটি টাকা অর্থদণ্ড তবে এই ধারায় বর্ণিত অর্থদণ্ডের এক তৃতীয়াংশের কম নহে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডণীয় হইবেন।
(২) ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কোনো শৃঙ্খলা বাহিনী ধারা ২৪ এ উল্লিখিত অপরাধ সংঘটনের দায়ে কোনো বিদেশি মৎস্য নৌযান, উহার মালিক, স্কিপার এবং নৌযানে আরোহণকৃত অপরাধ সংঘটনকারী অন্য কোনো ব্যক্তিকে আটক করিতে পারিবে এবং আটকের পর উক্ত নৌযানকে কোনো নিকটবর্তী বন্দরে নোঙরপূর্বক ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং আটক ব্যক্তি এবং মৎস্য নৌযানে রক্ষিত মালামালের বর্ণনাসহ একটি প্রতিবেদন পরিচালকের নিকট দাখিল করিবেন।
(৩) পরিচালক উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আটককৃত মৎস্য নৌযান এবং অভিযুক্ত মালিক, স্কিপার এবং মৎস্য নৌযানে অবস্থানরত অপরাধ সংঘটনকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
(৪) পরিচালক উপ-ধারা (২) এর অধীন আটককৃত মৎস্য নৌযান, মৎস্য আহরণের সরঞ্জাম এবং আহরিত মৎস্য বাজেয়াপ্ত করিবেন।
(৫) পরিচালক উপ-ধারা (৪) এর অধীন বাজেয়াপ্ত মৎস্য নৌযান, মৎস্য আহরণের সরঞ্জাম এবং আহরিত মৎস্য, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নিলামে বিক্রয় করিয়া বিক্রয়লব্ধ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা রাখিবেন।
(৬) পরিচালক উপ-ধারা (২) ও (৩) এ উল্লিখিত তথ্য এবং গৃহীত ব্যবস্থাদি তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেদন আকারে মহাপরিচালকের মাধ্যমে সরকারকে অবহিত করিবেন।
২৬। সরকার লাইসেন্স দ্বারা কোনো বিদেশি মৎস্য নৌযানকে শুল্ক, কর, ইমিগ্রেশন, স্বাস্থ্য, সমুদ্রোপযোগিতা এবং নিরাপত্তা সনদ সম্পর্কিত আইন দ্বারা আরোপিত বাধ্যবাধকতা বা অবশ্য পালনীয় শর্ত প্রতিপালন হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে না :
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার কারণ উল্লেখপূর্বক লিখিত আদেশ দ্বারা বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য জলসীমায় জরীপ বা গবেষণা কাজে ব্যবহৃত বিদেশি কোনো মৎস্য নৌযানকে উক্তরূপ বাধ্যবাধকতা হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।