প্রিন্ট ভিউ

মৎস্য ও মৎস্যপণ্য (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০২০

( ২০২০ সনের ২০ নং আইন )

সপ্তম অধ্যায়

মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি, রপ্তানি, ইত্যাদি

আমদানি নিষিদ্ধ

২২। (১) এই আইনের কোনো বিধান বা অন্য কোনো আইন, আদেশ বা বিধি দ্বারা নিষিদ্ধ মৎস্য ও মৎস্যপণ্য বা পঁচা, দূষিত, ভেজাল ও অপদ্রব্য মিশ্রিত, ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থযুক্ত কোনো মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি করা যাইবে না।

 

(২) কেন্দ্রীয় উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতিতে মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিকস, অনুজীব, হেভী মেটাল, কীটনাশক, রঞ্জক পদার্থ, এডিটিভস, স্টেরয়েডস, হরমোন এবং অন্য কোনো ক্ষতিকারক পদার্থ এর অনুমোদিত মাত্রা নির্ধারণ করিতে পারিবে।

আমদানির ক্ষেত্রে অনাপত্তিপত্র

২৩। (১) কোনো আমদানিকারক কেন্দ্রীয় বা আঞ্চলিক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে অনাপত্তিপত্র গ্রহণ ব্যতিরেকে মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি কারিতে পারিবে না।

 

(২) আমদানিকারককে অনাপত্তিপত্রের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে আমদানিতব্য মৎস্য ও মৎস্যপণ্যের বিবরণসহ উহা আমদানির অন্যূন ১৫ (পনের) দিন পূর্বে কেন্দ্রীয় বা আঞ্চলিক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে হইবে।

 

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর কেন্দ্রীয় বা আঞ্চলিক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতিতে এই আইনসহ প্রযোজ্য অন্যান্য আইন, বিধি বা আদেশের বিধান সাপেক্ষে অনাপত্তিপত্র ইস্যু করিতে পারিবে।

মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানির শর্তাবলি

২৪। (১) আমদানিকারককে আঞ্চলিক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানির প্রতিটি কনসাইনমেন্টের সহিত রপ্তানিকারক দেশের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ, ট্রেসিবিলিটি ও হালাল সনদ দাখিল করিতে হইবে।

 

(২) আমদানিকৃত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশের পূর্বে আমদানিকারককে কেন্দ্রীয় বা আঞ্চলিক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতিতে মৎস্য ও মৎস্যপণ্য সম্পর্কে ঘোষণা প্রদান করিতে হইবে।

 

(৩) হিমায়িত ও কিউরড মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানির প্রতিটি কনসাইনমেন্টের সহিত রপ্তানিকারক দেশের ইস্যুকৃত স্বাস্থ্যকরত্ব সনদের সহিত আমদানিকারক দেশের বা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো অ্যাক্রিডিটেড ল্যাবরেটরি কর্তৃক নির্ধারিত ক্ষতিকারক এন্টিবায়োটিক, প্যাথোজেনিক ও নন-প্যাথোজেনিক অনুজীব, কীটনাশক, হেভী মেটাল, রঞ্জক পদার্থ, এডিটিভস, স্টেরয়েডস, হরমোন এবং অন্য কোনো ক্ষতিকারক পদার্থ পরীক্ষণের প্রতিবেদন দাখিল করিতে হইবে।

আমদানিকৃত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য পরিদর্শন

২৫। (১) পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আমদানিকৃত বরফায়িত, হিমায়িত, কিউরড বা অন্য কোনো উপায়ে প্রক্রিয়াজাত মৎস্য ও মৎস্যপণ্যের কনসাইনমেন্ট পরিদর্শন, বন্দর হইতে ছাড়করণ, ভৌত গুণাগুণ পরীক্ষা করিবেন এবং অণুজীব, এন্টিবায়োটিক, হেভি মেটাল, কীটনাশক, হরমোন, রঞ্জক পদার্থ ও অন্যান্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি পরীক্ষার উদ্দেশ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরীক্ষিত মৎস্য ও মৎস্যপণ্যের নির্ধারিত মাত্রা অপেক্ষা অধিক অণুজীব পাওয়া গেলে অথবা নিষিদ্ধ এন্টিবায়োটিক ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ সনাক্ত হইলে অথবা অনুমোদিত এন্টিবায়োটিক ও রাসায়নিক পদার্থ নির্ধারিত মাত্রা অপেক্ষা অধিক পরিমাণে উপস্থিত থাকিলে, পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আমদানিকৃত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য বিনষ্ট করিতে বা রপ্তানিকারকের নিকট ফেরত প্রদানের আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন।

 

(৩) কেন্দ্রীয় উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে উপ-ধারা (২) এর উল্লিখিত ক্ষেত্র বিবেচনা করিয়া সংশ্লিষ্ট দেশ হইতে মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করিতে পারিবে।

 

অনাপত্তিপত্র বাতিল

২৬।  কোনো আমদানিকারক এই আইন বা বিধি বা অনাপত্তিপত্রে উল্লিখিত কোনো শর্ত লঙ্ঘন করিলে সংশ্লিষ্ট উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কারণ দর্শানোর সুযোগ প্রদান করিয়া তাহাকে প্রদত্ত অনাপত্তিপত্র বাতিল করিতে পারিবেন।

মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানি

২৭। (১) কোনো রপ্তানিকারক এখতিয়ারসম্পন্ন আঞ্চলিক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অনাপত্তিপত্র গ্রহণপূর্বক এবং এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানি করিতে পারিবে।

 

(২) উপধারা (১) এ যাহাই উল্লেখ থাকুক না কেন, স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ গ্রহণ ব্যতীত কোনো ব্যক্তি মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানি করিতে পারিবে না।

স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ প্রদান

 ২৮। (১) আঞ্চলিক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্ধারিত পরীক্ষণ, উপ-ধারা (২) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদন এবং এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে মৎস্য ও মৎস্যপণ্যের স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ প্রদান করিতে পারিবেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ গ্রহণের জন্য রপ্তানিকারককে নির্ধারিত পদ্ধতিতে আঞ্চলিক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করিতে হইবে।

 

(৩) এই ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, আঞ্চলিক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিমায়িত মৎস্য ও মৎস্যপণ্যের ক্ষেত্রে মান নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষা ব্যতিরেকে যে কোনো বন্দরে কেবল ভৌত গুণাগুণ পরীক্ষা সাপেক্ষে ১০(দশ) কেজি পর্যন্ত বাণিজ্যিক নমুনার (Trade sample) স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ প্রদান করিতে পারিবে।

স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ প্রদানের বিধি-নিষেধ

২৯। (১) আঞ্চলিক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ প্রদান করিবেন না, যথা :-

 

(ক)  ধারা ৮, ১২(২), ১২(৫), ১৫, ১৬, ১৮, ২০ এবং ৪৩ এর ব্যত্যয় ঘটিলে;

 

(খ)  উৎপাদিত অথবা প্রক্রিয়াজাতকৃত মৎস্য ও মৎস্যপণ্যের ট্রেসিবিলিটি, আমদানিকারকের ইনভয়েস না থাকিলে;

 

(গ)  আমদানিকারক দেশের চাহিদা অনুযায়ী নমুনা পরীক্ষণ প্রতিবেদন এবং সঠিক লেবিলিং না থাকিলে;

 

(ঘ)  নির্ধারিত অন্য কোনো কারণে।

 

(২) কোনো ব্যক্তি এই আইনের কোনো বিধান বা বিধি লঙ্ঘন করিলে তাহার স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ বাতিল হইবে।

 


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs