প্রিন্ট ভিউ

মৎস্য ও মৎস্যপণ্য (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০২০

( ২০২০ সনের ২০ নং আইন )

অষ্টম অধ্যায়

অপরাধ, তদন্ত, গ্রেফতার, বিচার, দণ্ড, ইত্যাদি

ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের দণ্ড

৩০। কোনো ব্যক্তি মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানি বা অভ্যন্তরীণ বাজারে বাজারজাত করিবার জন্য উহাতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করিলে উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনধিক ৭(সাত) বৎসরের, কিন্তু ৫(পাঁচ) বৎসরের নিম্ন নহে, কারাদণ্ড এবং অন্যূন ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

ভেজাল মিশ্রণ, অপদ্রব্য অনুপ্রবেশ এবং নিষিদ্ধ ঔষধ ও রাসায়নিক ক্ষতিকারক পদার্থ ব্যবহারের দণ্ড

৩১। (১) কোনো ব্যক্তি রপ্তানি বা অভ্যন্তরীণ বাজারে বাজারজাত করিবার উদ্দেশ্যে মৎস্য বা মৎস্যপণ্যে ভেজাল মিশ্রণ বা অপদ্রব্য অনুপ্রবেশ করাইলে বা নির্ধারিত পরিবেশ এবং পাত্র ব্যতীত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য প্রক্রিয়াজাত, সংরক্ষণ বা পরিবহণ করিলে বা নির্ধারিত মানের পানি ব্যবহার ব্যতীত বরফ তৈরি, সংরক্ষণ বা ব্যবহার করিলে; বা

 

(২) কোনো ব্যক্তি মৎস্য খামারে নিষিদ্ধ ঔষধ এবং রাসায়নিক ও ক্ষতিকারক পদার্থ ব্যবহার করিলে বা মৎস্য খামারে উত্তম মৎস্য চাষ পদ্ধতি অনুসরণ না করিলে-

 

উহা হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ২(দুই) বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৮ (আট) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ ব্যতীত রপ্তানি বা মিথ্যা বা জাল স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ ব্যবহারের দণ্ড

৩২। কোনো ব্যক্তি স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ গ্রহণ ব্যতীত বা মিথ্যা স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ ব্যবহার করিয়া বা স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ জালিয়াতি করিয়া মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানি করিলে বা রপ্তানির উদ্যোগ গ্রহণ করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

পঁচা বা দূষিত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি, রপ্তানি, বিক্রয়, ইত্যাদি করিবার জরিমানা

৩৩। কোনো ব্যক্তি পঁচা বা দূষিত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি, রপ্তানি ও বিক্রয় করিলে তাহার উপর অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ করা যাইবে এবং উক্ত মৎস্য বাজেয়াপ্ত হইবে।

লাইসেন্স ব্যতীত কারখানা বা স্থাপনা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার দণ্ড

 

৩৪। কোনো ব্যক্তি লাইসেন্স ব্যতীত কারখানা বা স্থাপনা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করিলে উক্ত কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি অন্যূন ১(এক) বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৪(চার) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

অপরাধ পুনঃসংঘটনের দণ্ড

৩৫।  কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হইবার পর পুনরায় একটি অপরাধ সংঘটন করিলে তিনি উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের দ্বিগুণ দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন

৩৬। (১) কোনো কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে, উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে উক্ত কোম্পানির এইরূপ মালিক, পরিচালক, নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, সচিব, অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে এবং উহা রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোম্পানি আইনগত সত্ত্বা হইলে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা ছাড়াও উক্ত কোম্পানিকে পৃথকভাবে একটি কার্যধারায় অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে, তবে উহার উপর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে শুধু অর্থদণ্ড আরোপ করা যাইবে।

 

ব্যাখ্যা- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ‘‘কোম্পানি’’ অর্থ কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এর ধারা ২ এর দফা (ঘ) তে সংজ্ঞায়িত কোম্পানি এবং যে কোনো সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা এক বা একাধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন বা সংস্থাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।

অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ ও বিচার

৩৭। (১) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের তদন্ত, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার বা আটকের ক্ষেত্রে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) অনুসরণ করিতে হইবে।

 

(২) Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা, ক্ষেত্রমত, স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।

অপরাধের আমলযোগ্যতা ও জামিনযোগ্যতা

৩৮।  এই আইনের অধীন সংঘটিত সকল অপরাধ আমলযোগ্য (Cognizable)  কিন্তু জামিনযোগ্য (Bailable) হইবে :

 

তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ৩০ এবং ৩২ এর অধীন সংঘটিত অপরাধের প্রকৃত ও ক্ষেত্র বিবেচনা করিয়া আদালত জামিন প্রদানের অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিতে পারিবে।

মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর প্রয়োগ

৩৯। এই আইন বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছু থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর তপশিলভুক্ত হওয়া সাপেক্ষে, মোবাইল কোর্ট দণ্ড আরোপ করিতে পারিবে।

বাজেয়াপ্তযোগ্য মৎস্য, মৎস্যপণ্য ও সাজসরঞ্জাম, ইত্যাদি

৪০।  এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে যে মৎস্য, মৎস্যপণ্য, কারখানা বা স্থাপনার যন্ত্রপাতি, উপকরণ, আধার, পাত্র, মোড়ক সহযোগে উক্ত অপরাধ সংঘটিত হইয়াছে সেইগুলি নির্ধারিত পদ্ধতিতে বাজেয়াপ্তযোগ্য হইবে।

পঁচনশীল মৎস্য ও মৎস্যপণ্যের নিষ্পত্তি

৪১। এই আইনের অধীন আটককৃত কোনো মৎস্য ও মৎস্যপণ্য দ্রুত পঁচনশীল হইয়া থাকিলে উহা সংরক্ষণ না করিয়া নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহার ব্যবহার, হস্তান্তর, ধ্বংস বা অন্য কোনো প্রকারে বিলি বন্দোবস্ত করা যাইবে।

দায় হইতে অব্যাহতি

৪২। কাঁচা মৎস্য এবং দ্রুত পঁচনশীল কোনো মৎস্যপণ্য কোনো খুচরা মৎস্য বিক্রেতা, হকার বা ফেরিওয়ালার নিকট বা কোনো দোকানে স্বাভাবিক প্রাকৃতিক কারণে পঁচিয়া যাওয়া অবস্থায় পাওয়া গেলে উক্ত কারণে উক্ত খুচরা মৎস্য বিক্রেতা, হকার, ফেরিওয়ালা বা দোকানদারকে দায়ী করিয়া কোনো ফৌজদারি বা  প্রশাসনিক কার্যক্রম বা ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যদি না ইহা সহজেই বোধগম্য হয় যে, পঁচিয়া গিয়াছে জানিয়াও তিনি উক্ত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য বিক্রয়ের জন্য রাখিয়াছেন বা বিক্রয়ের চেষ্টা করিয়াছেন।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs