প্রিন্ট ভিউ

আয়োডিনযুক্ত লবণ আইন, ২০২১

( ২০২১ সনের ০৮ নং আইন )

একাদশ অধ্যায়

অপরাধ ও দণ্ড

নিবন্ধন ব্যতীত লবণ আমদানি, গুদামজাত, ভোক্তা পর্যায়ে পাইকারী সরবরাহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিশোধন বা আয়োডিনযুক্তকরণ কারখানা পরিচালনার দণ্ড

৩৩।  (১) এই আইনের অধীন নিবন্ধন গ্রহণ না করিয়া কোনো ব্যক্তি-

(ক) কোনো প্রকার লবণ আমদানি; বা

(খ) লবণ গুদামজাত, ভোক্তা পর্যায়ে পাইকারি সরবরাহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিশোধন বা আয়োডিনযুক্তকরণ কারখানা পরিচালনা করিবেন না।

(২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২(দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, কিন্তু ২০(বিশ) হাজার টাকার নিম্নে নহে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

গুণগতমান নিশ্চিত না করিয়া লবণ পরিশোধন করিবার দণ্ড

৩৪।  (১) এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির বিধান অনুযায়ী নির্ধারিত গুণগতমান নিশ্চিত না করিয়া কোনো ব্যক্তি লবণ পরিশোধন করিবেন না।

(২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২(দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, কিন্তু ২০(বিশ) হাজার টাকার নিম্নে নহে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ভোজ্য লবণে আয়োডিনযুক্ত না করিবার দণ্ড

৩৫।(১) এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির বিধান অনুযায়ী নির্ধারিত মাত্রার আয়োডিনযুক্ত না করিয়া কোনো ব্যক্তি ভোজ্য লবণ বিক্রয় করিবেন না।

(২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩(তিন) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১৫(পনেরো) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, কিন্তু ২৫(পঁচিশ) হাজার টাকার নিম্নে নহে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন :

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো এজেন্ট, ডিলার বা সরবরাহকারীর নিকট হইতে লবণ ক্রয় করিয়া কেবল মুদি দোকানে খুচরা বিক্রয় করেন, এইরূপ কোনো খুচরা লবণ বিক্রেতার ক্ষেত্রে এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না :

আরও শর্ত থাকে যে, কোনো এজেন্ট, ডিলার বা সরবরাহকারীর যদি ইহা প্রমাণ করিতে সক্ষম হন যে, তিনি কেবল আয়োডিনযুক্ত বা প্যাকেটযুক্ত বা লেবেলযুক্ত লবণ সরবরাহের কাজে নিযুক্ত ছিলেন, কোনো পরিশোধন বা আয়োডিনযুক্তকরণ কারখানার লবণ উৎপাদনের সহিত জড়িত ছিলেন না, তাহা হইলে তাহার ক্ষেত্রেও এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না।

প্যাকেট বা লেবেলবিহীন ভোজ্য লবণ পরিবহণ, বিক্রয়, বিতরণ, প্রদর্শন, ইত্যাদির দণ্ড

৩৬। (১) কোনো ব্যক্তি-

(ক) কোনো লবণ, প্যাকেটবিহীন বা লেবেলবিহীন অবস্থায়, কোনো এজেন্ট, ডিলার, সংরক্ষণকারী বা খুচরা বিক্রেতার নিকট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে পরিবহণ বা সংরক্ষণ করিবেন না;

(খ) এই আইন বা বিধি অনুযায়ী নির্ধারিত প্যাকেট বা লেবেল ব্যতীত কোনো ভোজ্য লবণ বিক্রয় করিবেন না বা বিক্রয়ের জন্য গুদামজাত, সরবরাহ, বিতরণ বা প্রদর্শন করিবেন না; বা

(গ) এই আইন বা বিধি অনুযায়ী প্রস্তুতকৃত প্যাকেট বা লেবেল ব্যতীত কোনো অ-ভোজ্য বা শিল্প লবণ বিক্রয় করিবেন না বা বিক্রয়ের জন্য গুদামজাত, সরবরাহ, বিতরণ বা প্রদর্শন করিবেন না।

(২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২(দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, কিন্তু ২০(বিশ) হাজার টাকার নিম্নে নহে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

লবণের প্যাকেটে নির্ধারিত তথ্য, ইত্যাদি উল্লেখ না করিবার দণ্ড

৩৭।  (১) কোনো ব্যক্তি লবণের প্যাকেটের উপর এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত তথ্য, যেমন- সংশ্লিষ্ট পণ্যের ওজন, পরিমাণ, উপাদান, ব্যবহার-বিধি, ব্যাচ নম্বর, সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্য, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেটজাতকরণের তারিখ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, স্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করিবেন।

(২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১(এক) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, কিন্তু ২০(বিশ) হাজার টাকার নিম্নে নহে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

লবণের আয়োডিনযুক্ত না করিবার ফলে অন্যের জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার দণ্ড

৩৮।  (১) কোনো ব্যক্তি ভোজ্য লবণ হিসাবে আয়োডিনবিহীন লবণ উৎপাদন, বিক্রয়, বিতরণ, মজুত বা সরবরাহ করিবেন না বা আয়োডিনবিহীন লবণ ব্যবহার করিয়া বাণিজ্যিকভাবে কোনো খাদ্য প্রস্তুত করিবেন না বা এমন কোনো সরঞ্জামাদি ব্যবহারে জন্য তৈরি করিবেন না যাহাতে উক্তরূপ লবণ বা খাদ্য গ্রহণ কিংবা সরঞ্জামাদি ব্যবহারের ফলে অন্য কোনো ব্যক্তির জীবন বা স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিপন্ন হয়।

(২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ২০(বিশ) লক্ষ টাকা, কিন্তু ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকার নিম্নে নহে, অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন গৃহীত অর্থদন্ড ক্ষতিপূরণ হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির পরিবারকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রদান করা যাইবে।

ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে লবণ বিক্রয় বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতাসাধারণকে প্রতারিত করিবার দণ্ড

৩৯।  (১) কোনো ব্যক্তি-

(ক) এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির অধীন নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে কোনো ভোজ্য লবণ বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করিবেন না; বা

(খ) ভোজ্য লবণ বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অসত্য বা মিথ্যা তথ্যসম্বলিত বিজ্ঞাপন তৈরি বা প্রচার করিবেন না।

(২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১(এক) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০,০০০(পঞ্চাশ হাজার) টাকা, কিন্তু ৫,০০০(পাঁচ হাজার) টাকার নিম্নে নহে, অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

লবণ রেজিস্টার সংরক্ষণ না করিবার দণ্ড

৪০। (১) প্রত্যেক লবণ পরিশোধনাগার বা কারখানা লবণ চাষীগণের নিকট হইতে অপরিশোধিত লবণ ক্রয় এবং উহা পরিশোধন ও আয়োডিনযুক্তকরণ, বিক্রয়, বিতরণ, মজুত, সরবরাহ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করিয়া উহা সংরক্ষণ করিবেন।

(২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য উক্ত লবণ পরিশোধনাগার বা কারখানা পরিচালনাকারী ব্যক্তি অনধিক ১(এক) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ২(দুই) লক্ষ টাকা, কিন্তু ২০(বিশ) হাজার টাকার নিম্নে নহে, অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

অপরাধপুনঃ সংঘটনের দণ্ড

৪১। এই আইনে উল্লিখিত কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত কোনো ব্যক্তি দ্বিতীয় বার কিংবা পৌনঃপুনিক অপরাধ সংঘটন করিলে তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে উক্ত দণ্ডের দ্বিগুণ দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

দন্ডের ব্যবস্থা করা হয় নাই এইরূপ অপরাধের দণ্ড

৪২।  যদি কোনো ব্যক্তি এমন কোনো কার্য করেন বা করা হইতে বিরত থাকেন যাহা এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির কোনো বিধানের অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশ অমান্য করিবার সামিল, কিন্তু তজ্জন্য এই আইনে কোনো স্বতন্ত্র দণ্ডের বিধান রাখা হয় নাই, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থ দণ্ডে কিন্তু ১০(দশ) হাজার টাকার নিম্নে নহে, দণ্ডিত হইবেন।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs