প্রিন্ট

26/12/2024
[বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, ২০২২

1[বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, ২০২২

( ২০২২ সনের ০৫ নং আইন )

চতুর্থ অধ্যায়

পেটেন্ট অধিকার, লাইসেন্স, মালিকানা

পেটেন্টের মাধ্যমে অর্পিত অধিকারসমূহ

১৯। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পুরণকল্পে, পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী, তাহার অনুমোদন ব্যতিরেকে, তদনামে পেটেন্টকৃত উদ্ভাবন বাংলাদেশে তৃতীয় পক্ষের ব্যবহার নিবৃত্ত করিবার অধিকার থাকিবে।

(২) পেটেন্টকৃত কোনো উদ্ভাবনের ব্যবহার বলিতে নিম্নবর্ণিত যে কোনো কার্য করা বুঝাইবে, যথা :¾

(ক)   পেটেন্টকৃত উদ্ভাবনটি যখন কোনো পণ্য হয়, তখন¾

(অ)   উক্ত পণ্য উৎপাদন বা তৈরি, আমদানি, বিক্রয়ের জন্য প্রস্তাব, বিক্রয় ও ব্যবহার;

(আ)   বিক্রয়ের জন্য প্রস্তাব করিবার উদ্দেশ্যে উক্ত পণ্য মজুদ, বিক্রয় বা ব্যবহার;

(খ)    পেটেন্টকৃত উদ্ভাবনটি যখন কোনো প্রক্রিয়া হয়, তখন¾

(অ)   উক্ত প্রক্রিয়া প্রয়োগ;

(আ)   উক্ত প্রক্রিয়া প্রয়োগের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে উৎপাদিত পণ্য সম্পর্কে দফা (ক) তে উল্লিখিত যে কোনো কার্য।

পেটেন্টের মেয়াদ, বার্ষিক ফি, পেটেন্ট পুনরুদ্ধার, ইত্যাদি

২০। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, যে কোনো পেটেন্টের মেয়াদ পেটেন্ট আবেদন দাখিলের তারিখ বা, ক্ষেত্রমত, অগ্রাধিকার তারিখ হইতে ২০ (বিশ) বৎসর পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে।

(২) পেটেন্ট সংরক্ষণ করিবার জন্য পেটেন্ট আবেদনের তারিখ বা, ক্ষেত্রমত, অগ্রাধিকার তারিখ হইতে ষষ্ঠ বৎসরের শুরু হইতে বার্ষিক ফি প্রযোজ্য হইবে এবং পেটেন্টের ৫ (পাঁচ) বৎসর মেয়াদান্তের পূর্বেই নির্ধারিত ফি পরিশোধসহ নবায়নের জন্য আবেদন করিতে হইবে।

(৩) পূর্ববর্তী বৎসরের বার্ষিক ফি পরিশোধ করত পরবর্তী বৎসরের জন্য পেটেন্ট নবায়ন করা যাইবে।

(৪) বার্ষিক ফি প্রদানে বিলম্ব হইলে, বিলম্ব ফি পরিশোধ সাপেক্ষে, বার্ষিক ফি প্রদানের সময়সীমা ৩ (তিন) মাস করিয়া সর্বোচ্চ ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত  বর্ধিত করা যাইবে।

(৫) উপ-ধারা (২), (৩) ও (৪) এর বিধান মোতাবেক যদি ফি পরিশোধ করা না হয়, তাহা হইলে পেটেন্ট তামাদি হইবে।

(৬) ফি পরিশোধের জন্য নির্ধারিত তারিখের ১ (এক) বৎসরের মধ্যে যে কোনো সময় পেটেন্ট পুনরুদ্ধারের আবেদনের প্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রার তামাদি পেটেন্ট পুনরুদ্ধার করিতে পারিবেন, যদি তিনি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, যুক্তিসঙ্গত কারণে উক্ত সময়ের মধ্যে ফি পরিশোধ করা সম্ভব হয় নাই।

বাধ্যতামূলক লাইসেন্স

২১। (১) যে ক্ষেত্রে¾

(ক)   জনস্বার্থ, বিশেষত জাতীয় নিরাপত্তা, পুষ্টি, স্বাস্থ্য বা জাতীয় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ কোনো খাতের উন্নয়নের জন্য আবশ্যক হয়,

(খ)    কোনো আদালত বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে যে, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী বা লাইসেন্সি কর্তৃক উদ্ভাবন ব্যবহারের পদ্ধতি অসম প্রতিযোগিতামূলক এবং সরকার এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, এই উপ-ধারা অনুসারে উক্ত উদ্ভাবন ব্যবহার করা হইলে উহার প্রতিকার সম্ভব,

(গ)    পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী তাহার একচেটিয়া অধিকারের অপব্যবহার করিতেছেন বা লাইসেন্সি কর্তৃক একচেটিয়া অধিকারের অপব্যবহার রোধে অবহেলা করিতেছেন,

(ঘ)    পেটেন্টকৃত উদ্ভাবন বাংলাদেশে উৎপাদন বা আমদানির মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমাণে বা মানসম্পন্নভাবে বা পূর্বনির্ধারিত সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য সহজলভ্য হইতেছে না,

(ঙ)    কোনো দ্বিতীয় পেটেন্ট আবেদনে এইরূপ কোনো উদ্ভাবনের দাবি করা হয়, যাহা প্রথম পেটেন্টে দাবিকৃত উদ্ভাবনের সহিত সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ উন্নত কারিগরি জ্ঞান বিষয়ক, এবং প্রথম পেটেন্ট লঙ্ঘন না করিয়া দ্বিতীয় পেটেন্ট কাজে লাগানো সম্ভব নহে,¾

সেইক্ষেত্রে সরকার, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর সহিত কোনোরূপ সমঝোতা বা চুক্তি ব্যতীত, কোনো সরকারি সংস্থা বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোনো ব্যক্তিকে উক্ত উদ্ভাবন ব্যবহার করিবার জন্য বাধ্যতামূলক লাইসেন্স প্রদান করিতে পারিবে।

(২) সরকার বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের প্রতিটি আবেদন পৃথকভাবে বিবেচনা করিবে এবং উদ্ভাবন কেবল যে উদ্দেশ্যে লাইসেন্স প্রদত্ত হইয়াছে সেই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাইবে এবং ইহার জন্য পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীকে সরকার কর্তৃক, বিধি দ্বারা নির্ধারিত, পারিতোষিক পরিশোধ করিতে হইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর অধীন কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হইলে লাইসেন্সি কর্তৃক পেটেন্ট এর অসম প্রতিযোগিতামূলক ব্যবহার সংশোধনের আবেদন বিবেচনা করিতে হইবে।

(৪) পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষ শুনানি করিতে চাহিলে, শুনানি গ্রহণের পর সরকার বিরোধীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।

(৫) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঘ) অধীন পেটেন্টকৃত পণ্যের অপর্যাপ্ততার কারণে বা পেটেন্টকৃত পদ্ধতিতে পণ্য উৎপাদনের কারণে পেটেন্ট আবেদন দাখিলের তারিখ হইতে ৪ (চার) বৎসর বা পেটেন্ট মঞ্জুরের তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর, যে সময়কাল পরে অতিক্রান্ত হয়, কোনো বাধ্যতামূলক লাইসেন্স প্রযোজ্য হইবে না এবং বাধ্যতামূলক লাইসেন্স প্রদান অস্বীকার করা হইবে, যদি না পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী এইরূপ নিস্ক্রিয়তা বা অপর্যাপ্ত পদক্ষেপের যুক্তিসঙ্গত কারণ উপস্থাপন করিতে সক্ষম হন।

(৬) পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী, বা কোনো সরকারি সংস্থা বা পেটেন্টপ্রাপ্ত উদ্ভাবন ব্যবহারের জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত অন্য কোনো ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে, সরকার, কোনো পক্ষ বা উভয় পক্ষ শুনানির ইচ্ছা প্রকাশ করিলে, পক্ষগণকে শুনানির সুযোগ প্রদানপূর্বক, পেটেন্টপ্রাপ্ত উদ্ভাবন ব্যবহারের শর্তাবলি পরিবর্তন করিতে পারিবে।

(৭) পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে, কোনো পক্ষ বা উভয় পক্ষ শুনানির ইচ্ছা প্রকাশ করিলে, পক্ষগণকে শুনানির সুযোগ প্রদানপূর্বক, সরকার, যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, উহার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখিবার জন্য উপযুক্ত কারণ বিদ্যমান রহিয়াছে বা উহার পুনরাবৃত্তি অসম্ভব বা সরকারি সংস্থা বা তৎকর্তৃক মনোনীত অন্য কোনো ব্যক্তি উক্ত সিদ্ধান্তের শর্তাবলি পালনে ব্যর্থ হইয়াছেন, তাহা হইলে সরকার বাধ্যতামূলক লাইসেন্স বাতিল করিতে পারিবে।

(৮) উপ-ধারা (৭) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো সরকারি সংস্থা বা তৎকর্তৃক মনোনীত কোনো ব্যক্তির আইনগত স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য সিদ্ধান্ত বহাল রাখিবার উপযুক্ত পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে বা যদি উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এর অধীন অসম প্রতিযোগিতার প্রতিকার লাভের জন্য বাধ্যতামূলক লাইসেন্স মঞ্জুর করা হয় এবং বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের শর্তাবলির পুনরাবৃত্তি সম্ভবপর হয়, তাহা হইলে সরকার বাধ্যতামূলক লাইসেন্স বাতিল করিবে না।

(৯) পেটেন্টপ্রাপ্ত উদ্ভাবন যে ব্যক্তির উদ্যোগ বা ব্যবসার স্বার্থে ব্যবহৃত হইতেছে, উহা কেবল উক্ত ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসার নামে বা প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসার অংশের নামে হস্তান্তর করা যাইবে।

(১০) বাধ্যতামূলক লাইসেন্স একচেটিয়া হইবে না, এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথা :¾

(ক)   উৎপাদনের বা আমদানির মাধ্যমে বা উভয়বিধভাবে, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী কর্তৃক বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উদ্ভাবনের ব্যবহার;

(খ)    পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী কর্তৃক লাইসেন্স চুক্তির সমাপ্তি; এবং

(গ)    এই আইনের ধারা ২৪ এর অধীন, পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী কর্তৃক অধিকারের অব্যাহত ব্যবহার।

(১১) বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের আবেদন সরকারের নিকট দাখিল করিতে হইবে এবং আবেদনের সহিত এই মর্মে সাক্ষ্য-প্রমাণ দাখিল করিতে হইবে যে, বাধ্যতামূলক লাইসেন্স প্রত্যাশী ব্যক্তি পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর নিকট চুক্তিভিত্তিক লাইসেন্সের আবেদন করিয়াছিলেন, তবে তাহাকে যুক্তিসংগত বাণিজ্যিক শর্তে এবং সময়ের মধ্যে উক্তরূপ লাইসেন্স প্রদান করা হয় নাই এবং উক্ত পরিস্থিতিতে, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী আবেদনকারীর নিকট হইতে আবেদন গ্রহণের পর এবং পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী কর্তৃক স্বেচ্ছাধীন লাইসেন্সের প্রস্তাব অস্বীকারের সিদ্ধান্ত অবহিত হইবার পর অনূর্ধ্ব ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে সরকারের নিকট আবেদন করিতে হইবে।

(১২) উপ-ধারা (১১) এর অধীন স্বেচ্ছাধীন লাইসেন্স অর্জনের পূর্ববর্তী প্রচেষ্টা সংশ্লিষ্ট সাক্ষ্যাদি, জাতীয় জরুরি অবস্থা বা অন্যান্য চরম জরুরি পরিস্থিতি বা সরকার কর্তৃক অবাণিজ্যিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বা বিচারিক বা প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় অসম প্রতিযোগিতা প্রতিকারের বিষয়ে লাইসেন্স মঞ্জুরির প্রয়োজন হইবে না এবং উক্তরূপ পরিস্থিতিতে পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীকে, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারের সিদ্ধান্ত অবহিত করিতে হইবে।

(১৩) কোনো সরকারি সংস্থা বা সরকার কর্তৃক লাইসেন্সপ্রাপ্ত অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক, ঔষধ পণ্য বা ঔষধ পণ্য প্রস্ত্ততের প্রক্রিয়ায় পেটেন্টের দাবি সংশ্লিষ্ট বাধ্যতামূলক লাইসেন্স ব্যতীত, উদ্ভাবনের ব্যবহার প্রধানত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে, যদি না উক্ত সমজাতীয় পণ্য প্রস্ত্ততের বিকল্প প্রক্রিয়া অজ্ঞাত হয় বা সহজলভ্য না হয়, এবং পেটেন্টেপ্রাপ্ত পণ্য বা ধারা ৩৮ এর অধীন অব্যাহতিপ্রাপ্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদেশি ভূখণ্ডে বা, উৎপাদন-সামর্থহীন বা অপর্যাপ্ত উৎপাদন-সামর্থ, কোনো দেশে রপ্তানি করাই লাইসেন্সের উদ্দেশ্য হয়।

(১৪) সেমি-কন্ডাক্টর প্রযুক্তির ক্ষেত্রে, উদ্ভাবনের বাধ্যতামূলক লাইসেন্স কেবল সরকার কর্তৃক অবাণিজ্যিক ব্যবহারের উদ্দেশ্যে মঞ্জুর করা হইবে বা যেক্ষেত্রে কোনো আদালত বা সংস্থা কর্তৃক স্থিরীকৃত হয় যে, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী বা লাইসেন্সি কর্তৃক, পেটেন্টভুক্ত উদ্ভাবনের ব্যবহারের প্রক্রিয়া অসম প্রতিযোগিতামূলক এবং সরকার এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, স্বেচ্ছাধীন নয় এমন কোনো লাইসেন্সের মঞ্জুরি উক্ত প্রচলিত রীতিতে যথাযথ প্রতিকার হইতে পারে সেইক্ষেত্রে এইরূপ ব্যবহারের জন্য মঞ্জুর করা হইবে।

(১৫) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঙ) এর অধীন বাধ্যতামূলক লাইসেন্স মঞ্জুর করা হইলে¾

(ক)   প্রথম পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী দ্বিতীয় পেটেন্টের দাবিকৃত উদ্ভাবন ব্যবহারের জন্য যুক্তিসঙ্গত শর্তে লাইসেন্স প্রাপ্তির অধিকারী হইবেন; এবং

(খ)    দ্বিতীয় পেটেন্টের স্বত্ব প্রদান ব্যতীত প্রথম পেটেন্টের লাইসেন্সের স্বত্ব প্রদানযোগ্য হইবে না।

(১৬) এই ধারার বিধানাবলি, ক্ষেত্রমত, প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও পরিবর্ধনসহ, পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্যের অপর্যাপ্ততা বা পেটেন্টপ্রাপ্ত প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত পণ্যের ক্ষেত্র ব্যতীত, অনিষ্পন্ন পেটেন্ট আবেদনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হইবে।

(১৭) যদি বাধ্যতামূলক লাইসেন্স মঞ্জুরি লাভের পর, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদার প্রতি যথাযথভাবে মনোযোগ প্রদান করা না হয়, তাহা হইলে যে কোনো ব্যক্তি পেটেন্ট বাজেয়াপ্তির জন্য আদালতের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন :

তবে শর্ত থাকে যে, প্রথম বাধ্যতামূলক লাইসেন্স মঞ্জুরের পর ২ (দুই) বৎসর অতিক্রান্ত হইবার পূর্বে পেটেন্ট বাজেয়াপ্তির আবেদন করা যাইবে না।

(১৮)  নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য রপ্তানির জন্য বাধ্যতামূলক লাইসেন্স প্রদান করা যাইবে, যথা :¾

(ক)   যে সকল দেশে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যায় ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের ব্যবস্থা গৃহীত হইয়াছে এবং যে সকল দেশে ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য অপর্যাপ্ত বা উক্ত পণ্য তৈরি করিবার সামর্থ নাই, সেই সকল দেশে পেটেন্টেড ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য তৈরি এবং রপ্তানি;

(খ)    রেজিস্ট্রার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আবেদন প্রাপ্তির পর কেবল সংশ্লিষ্ট ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য উৎপাদনের জন্য বাধ্যতামূলক লাইসেন্স মঞ্জুরের প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া গ্রহণ করিবেন এবং উক্ত পণ্য, বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্তাবলি সাপেক্ষে, অন্য কোনো দেশে রপ্তানির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবার জন্য আবেদনের কপি সরকারের নিকট প্রেরণ;

(গ)    দফা (ক) এবং (খ) এর বিধান মোতাবেক বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের মাধ্যমে যে সকল ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য তৈরি করা হইয়াছে উহা এই আইনের প্রযোজ্য অন্য কোনো বিধান অনুযায়ী রপ্তানি করা যাইবে।

ব্যাখ্যা।¾এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘‘ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য’’ বলিতে কোনো পেটেন্টকৃত ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, বা পেটেন্টকৃত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরিকৃত কোনো ফার্মাসিউটিক্যাল দ্রব্য যাহা জনস্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় এবং উক্ত পণ্য তৈরির উপাদান এবং রোগ নির্ণয়ক কিটও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।

জেনেটেক রিসোর্স এর অবৈধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে পেটেন্ট হস্তান্তর

২২। (১) দাখিলকৃত বা গৃহীত পেটেন্টের ক্ষেত্রে এই আইনের ধারা ৬ এর উপ-ধারা (৯) এর বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পেটেন্টের মালিকানার অংশ দাবি করিতে পারিবে।

(২) পেটেন্টের মালিকানার অংশ হস্তান্তরের জন্য সংশ্লিষ্ট এজেন্সি বা সত্তা’র নাম উল্লেখপূর্বক রেজিস্ট্রারের নিকট আবেদন করিতে হইবে।

(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পেটেন্টের মালিকানার অংশ ২০ (বিশ) শতাংশের কম হইবে না।

(৪) জেনেটিক রিসোর্স এর  পেটেন্টের ক্ষেত্রে এই আইনের ধারা ৬ এর উপ-ধারা (১০) এর বিধান লঙ্ঘনের কারণে যদি জনশৃঙ্খলা এবং নৈতিকতার প্রশ্ন জোরালোভাবে উত্থাপিত হয় সেইক্ষেত্রে রেজিস্ট্রার, আবেদনের বা মঞ্জুরকৃত পেটেন্ট এর মালিকানা ন্যস্ত হইয়া থাকিলে, উহা প্রত্যাহার করিতে পারিবেন বা পেটেন্ট পরিত্যক্ত ঘোষণা করিতে পারিবেন।

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রত্যাহারকৃত বা পরিত্যক্ত ঘোষিত পেটেন্ট পাবলিক ডোমেইনের অন্তর্ভুক্ত হইবে।

(৬) এই ধারার বিধানাবলি, ধারা ২৪ এর উপ-ধারা (৪) এর দফা (ক) এবং উপ-ধারা (৫) এর বিধান ক্ষুণ্ন না হওয়া সাপেক্ষে প্রয়োগযোগ্য হইবে।

পেটেন্ট বাতিলকরণ

২৩। (১) স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি কোনো পেটেন্ট বাতিল করিবার উদ্দেশ্য আদালতে আবেদন করিতে পারিবেন।

(২) পেটেন্ট বাতিলের জন্য আবেদনকারী ব্যক্তি যদি প্রমাণ করিতে সক্ষম হন যে, এই আইনের ধারা ৩, ৪, ৫ এবং ধারা ৬ এর উপ-ধারা (৪), (৫), (৯) ও (১০) এর অধীন কোনো প্রয়োজনীয় শর্তাবলি পূরণ করা হয় নাই বা  পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী উহার উদ্ভাবক বা উহার স্বত্বের উত্তরাধিকারী না হন, তাহা হইলে উপযুক্ত আদালত উক্ত  পেটেন্ট বাতিল করিতে পারিবে।

(৩) যেক্ষেতে উদ্ভাবনের অংশবিশেষ বাতিলের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়, কেবল সেইক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দাবি বা দাবিসমূহ বাতিল হইবে।

(৪) বাতিল ঘোষিত যে কোনো  পেটেন্ট বা কোনো দাবি বা দাবির অংশবিশেষ, পেটেন্ট মঞ্জুরের তারিখ হইতে বাতিল হইবে এবং উহা কখনও মঞ্জুর করা হয় নাই মর্মে গণ্য হইবে।

(৫) পেটেন্ট অধিকার সংক্রান্ত বিরোধের ক্ষেত্রে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি  পেটেন্ট বাতিল করিবার পরিবর্তে  পেটেন্টের স্বত্বাধিকার তাহাকে হস্তান্তর করিবার জন্য উপযুক্ত আদালতের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন।

(৬) আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রেজিস্ট্রারকে অবহিত করা হইবে এবং অবহিত হইবার পর তিনি উহা রেকর্ড করিবেন ও বিধি মোতাবেক উহার স্মারক প্রকাশ করিবেন।

(৭) রেজিস্ট্রারের নিকট  পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী কর্তৃক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে  পেটেন্ট সংক্রান্ত বিদ্যমান বিধি-বিধান মোতাবেক  পেটেন্ট বাতিল করা যাইবে।

(৮) রেজিস্ট্রারের নিকট  পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী কর্তৃক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে  পেটেন্ট সংক্রান্ত বিদ্যমান বিধি-বিধান মোতাবেক  পেটেন্ট এর স্বত্বত্যাগ ও  পেটেন্ট প্রত্যাহার করা যাইবে।

পেটেন্ট অধিকার কার্যকরকরণ

২৪। (১) কোনো ব্যক্তি ধারা ১৯ ও ২১ এর বিধান সাপেক্ষে, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর সহিত চুক্তি সম্পাদন ব্যতিরেকে, ধারা ১৯ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন কোনো কার্য সম্পাদন করিলে উক্ত ব্যক্তি পেটেন্ট এর বিধান লঙ্ঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।

(২) যদি¾

(ক)   কোনো পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী একচেটিয়া লাইসেন্সি, বাধ্যতামূলক লাইসেন্সি বা একচেটিয়া লাইসেন্সি নয় এইরূপ কোনো লাইসেন্সিকে প্রদত্ত লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করেন, তাহা হইলে সংক্ষুব্ধ কোনো লাইসেন্সি সুনির্দিষ্ট প্রতিকার লাভের জন্য পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর বিরুদ্ধে আদালতে কার্যধারা দায়ের করিতে পারিবেন;

(খ)    কোনো একচেটিয়া লাইসেন্সি, বাধ্যতামূলক লাইসেন্সি বা একচেটিয়া লাইসেন্সি নয় এইরূপ কোনো লাইসেন্সি লাইসেন্সে প্রদত্ত শর্ত ভঙ্গ করেন, তাহা হইলে উক্তরূপ কোনো লাইসেন্সির বিরুদ্ধে পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর সুনির্দিষ্ট প্রতিকার লাভের জন্য আদালতে কার্যধারা দায়ের করিতে পারিবেন;

(গ)    দফা (ক) ও (খ) তে উল্লিখিত শর্ত ভঙ্গ দ্বারা লাইসেন্সি বা পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর অধিকার সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় বলিয়া বিবেচিত হয়, তাহা হইলে আদালত নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করিতে পারিবে;

(ঘ)    আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো পক্ষ লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করিয়াছে এবং উক্তরূপ শর্ত ভঙ্গ দ্বারা অপরপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন, তাহা হইলে আদালত শর্ত ভঙ্গকারী কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারিবে;

(ঙ)    লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ হইবার পর ৫ (পাঁচ) বৎসর সময় অতিক্রান্ত হয়, তাহা হইলে দফা (ক) ও (খ) তে উল্লিখিত শর্ত ভঙ্গের জন্য আদালতে কোনো কার্যধারা দায়ের করা যাইবে না।

(৩) আদালত, দেওয়ানি কার্যবিধি বা বিষয় সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো আইন অনুসারে, উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্য সংরক্ষণের আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(৪) আদালত, আবেদনকারী কর্তৃক সরবরাহকৃত তথ্যাদির ভিত্তিতে নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করিতে পারিবে, যথা :¾

(ক)   আবেদনকারী নিজেই অধিকার গ্রহীতা হইলে এবং আবেদনকারীর অধিকার লঙ্ঘিত হইলে বা লঙ্ঘিত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে; এবং

(খ)    বিরোধীয় অপর পক্ষের অধিকার রক্ষার্থে জামানত বা সমপরিমাণ নিশ্চয়তা প্রদানের আদেশ প্রদান সত্ত্বেও উক্ত আদেশ প্রতিপালন না করিলে বা করিতে ব্যর্থ হইলে :

তবে শর্ত থাকে যে, আদালত, কালক্ষেপণের কারণে কোনো পক্ষের অপূরণীয় ক্ষতি বা সাক্ষ্য-প্রমাণ বিনষ্ট হইবার আশংকা থাকিলে, অপর পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান ব্যতিরেকে, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করিতে পারিবে।

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন কোনো অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা হইলে আদালত, যথাশীঘ্র সম্ভব, অপর পক্ষকে উক্তরূপ অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে অবহিত করিবে।

(৬) কোনো পক্ষ কর্তৃক দাখিলকৃত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন, ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ব্যতীত, ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করিতে হইবে।

(৭) সংক্ষুব্ধ পক্ষ, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির ১৪ (চৌদ্দ) দিনের মধ্যে, উহা পুনর্বিবেচনার আবেদন দাখিল করিতে পারিবেন।

(৮) সংক্ষুব্ধ পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে এবং আবেদনকারী পক্ষ যুক্তিসঙ্গত কারণ উপস্থাপনে ব্যর্থ হইলে আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উহা প্রত্যাহার করিতে পারিবে।

(৯) অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির পর আদালত যদি এইরূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, বিরোধীয় পক্ষ দ্বারা পেটেন্টের কোনো শর্ত লঙ্ঘিত হয় নাই এবং উহা লঙ্ঘিত হইবার আশংকা নাই, তাহা হইলে আদালত বিরোধীয় পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে সংঘটিত ক্ষতির জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে আবেদনকারী পক্ষকেআদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(১০) আদালত, প্রয়োজনে, অনিষ্পন্ন নিবন্ধন মঞ্জুরের পূর্বে এই ধারার অধীন প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্য সংরক্ষণের আদেশ দিতে পারিবে এবং এইরূপ ক্ষেত্রে অনিষ্পন্ন নিবন্ধনের মঞ্জুরি প্রকাশের পর আবেদনকারীকে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে আইনগত কার্যধারা সূচনা করিতে হইবে।

(১১) আদালত নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে, ক্ষতিপূরণ আদেশের হানি না ঘটাইয়া, উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত শর্ত ভঙ্গের কারণে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বা সুনির্দিষ্ট প্রতিকার মঞ্জুর করিবে না, যথা :¾     

(ক)   আদালতে পেটেন্টের আবেদন দাখিলের তারিখ হইতে ৪ (চার) বৎসর অতিক্রান্ত হইবার পর বা পেটেন্ট মঞ্জুরির তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর অতিক্রান্ত হইবার পর, বাদী বা তদ্‌কর্তৃক অনুমতিপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি যদি¾

(অ)   প্রয়োজনীয় প্রস্ত্ততি গ্রহণ না করেন; বা

(আ)   বাণিজ্যিকভাবে উদ্ভাবন ব্যবহার না করেন; বা

(ই)    এমনভাবে উদ্ভাবন ব্যবহার করেন যাহা মানসম্মতভাবে বাজারের চাহিদা পূরণে অক্ষম।

(খ)    জনস্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইবার আশংকা থাকিলে;

(গ)    যেক্ষেত্রে¾

(অ)   পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বা পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতিতে উৎপাদিত পণ্য বাদী বা বাদীর সম্মতিতে অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ভোক্তার গড় ক্রয় ক্ষমতার অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় হয়;

(আ)   ভোক্তার সুনির্দিষ্ট চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়;

(ই) বাজারে কোনো প্রতিযোগিতামূলক পণ্যের বিদ্যমানতা বা অবিদ্যমানতার কারণে উক্ত পণ্য অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় হয়;

(ঘ)    যদি বাদী এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘনক্রমে পেটেন্ট অর্জন করেন।

(১২) পেটেন্টগ্রহীতা যে কোনো সময় আদালতে পেটেন্ট অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আইনগত কার্যধারার সূচনা করিতে পারিবেন :

তবে শর্ত থাকে যে, পেটেন্ট গ্রহীতার পূর্বেই তৃতীয় কোনো পক্ষ আইনগত কার্যধারার সূচনা করিলে তিনি উক্ত বিষয়ে নূতন করিয়া কোনো আইনগত কার্যধারা সূচনা করিবার অধিকার হইবেন না।

(১৩) যদি সরকারি কোনো সংস্থা কর্তৃক বা সরকারি সেবা প্রদানের কারণে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘিত হয়, তাহা হইলে আদালত, ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের বিষয়টি ক্ষুণ্ন না করিয়া, পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারীর নিয়ন্ত্রণাধীন সাক্ষ্য লাভের জন্য আবশ্যকতা ব্যতীত, কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করিবে না।

(১৪) ক্ষতিপূরণের আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে আদালত¾

(ক)   পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারীকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ প্রদান করিবে;

(খ)    পেটেন্ট এর স্বত্বাধিকারী কর্তৃক ব্যয়িত অর্থ পরিশোধের জন্য পেটেন্টের বিধান লঙ্ঘনকারীকে নির্দেশ প্রদান করিবে; এবং

(গ)    ব্যয়িত অর্থ হিসাবে আদালতের ব্যয়, স্ট্যাম্প ফি এবং আইনজীবীর ফি অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে।

(১৫) উপ-ধারা (১৪) এর বিধান সাপেক্ষে, আদালত স্বীয় বিবেচনায় অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করিবে।

(১৬) পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনের জন্য ক্ষতিপূরণের আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে আদালত নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি বিবেচনা করিতে পারিবে, যথা :¾

(ক)   কোন্ তারিখে নিবন্ধন সরকারি নোটিশে, ওয়েবসাইটে বা প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপনে প্রকাশ করা হইয়াছিল;

(খ)    নিবন্ধনের জন্য কোন্ তারিখে আবেদনকারী আবেদনের বিষয়ে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারীকে নোটিশ প্রদান করিয়াছিলেন;

(গ)    কোন্ তারিখে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারী আবেদনের বিষয়বস্ত্ত সম্পর্কে জ্ঞাত হইয়াছিলেন।

(১৭) ক্ষতিপূরণের আবেদন কেবল পেটেন্ট অধিকার মঞ্জুরের পর আদালতের নিকট দাখিল করা যাইবে।

(১৮) যদি পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়বস্ত্ত কোনো পণ্য লাভের পদ্ধতি হয়, তাহা হইলে আদালত স্বত্বাধিকার লঙ্ঘনকারীকে তদ্‌কর্তৃক উদ্ভাবিত অভিন্ন পণ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতি পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতি হইতে পৃথক উহা প্রমাণ করিবার জন্য আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(১৯) যদি কোনো অভিন্ন পণ্য পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর সম্মতি ব্যতীত উৎপাদন করা হয়, সেইক্ষেত্রে ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত উহা পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতি দ্বারা অর্জিত হইয়াছে মর্মে গণ্য হইবে, যদি না পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতির দ্বারা অর্জিত উক্তরূপ পণ্য নূতন হয়।

(২০) ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, আদালত অন্যান্য ব্যবস্থার মধ্যে পেটেন্টের স্বত্বাধিকার লংঙ্ঘনকারীর কোনো বৈধ স্বার্থ, পণ্য উৎপাদন এবং ব্যবসার গোপনীয়তা বিবেচনা করিবে, তবে উহা পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীকে গোপনীয়তার সুবিধা প্রদান করিবে না।

(২১) যদি কোনো পণ্য সংক্রান্ত বিধানের লঙ্ঘন হয়, তাহা হইলে আদালত উক্তরূপ বিধান লঙ্ঘনের পুনরাবৃত্তি রোধের জন্য উহার গুরুত্ব ও প্রতিকার এবং তৃতীয় পক্ষের স্বার্থ বিবেচনাক্রমে উক্ত পণ্যসমূহ, কোনরূপ ক্ষতিপূরণ ব্যতীত, ধ্বংস করিবার বা অধিকার গ্রহীতার ক্ষতি না করিয়া
অ-বাণিজ্যিকভাবে নিষ্পত্তির আদেশ প্রদান করিবে।

(২২) আদালত, প্রয়োজনে, উপ-ধারা (২১) এ উল্লিখিত বিষয়াদি বিবেচনাক্রমে, যে সকল উপাদান বা উপকরণের সর্বোচ্চ ব্যবহারের  ফলে উক্ত বিধানের লঙ্ঘন হইয়াছে, উক্তরূপ উপাদান বা উপকরণের অধিকতর ব্যবহার লঙ্ঘনের আশংকা ন্যূনতম পর্যায়ে রাখিবার জন্য কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ ব্যতীত অ-বাণিজ্যিকভাবে নিষ্পত্তির আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(২৩) এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘনপূর্বক পণ্য উৎপাদন, সরবরাহ, সেবা প্রদান এবং সরবরাহ চ্যানেলের সহিত জড়িত তৃতীয় পক্ষকে শনাক্তকরণের জন্য পেটেন্টের অধিকার গ্রহীতাকে অবহিত করিবার জন্য আদালত উক্তরূপ বিধান লঙ্ঘনকারীকে উহার গুরুত্ব অনুপাতে আদেশ প্রদান করিবে।

(২৪) ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ সত্ত্বেও পেটেন্টের বিধান লঙ্ঘনকারী ক্ষতিপূরণ প্রদান না করিলে আবেদনকারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত আদেশ অমান্যের গুরুত্ব বিবেচনা করিয়া তাহাকে আইনজীবী ফি’সহ অন্যান্য খরচ পরিশোধের জন্য আদেশ প্রদান করিতে পরিবে।

মালিকানা পরিবর্তন বা স্বত্বনিয়োগ, লাইসেন্স চুক্তি, ইত্যাদি

২৫। (১) পেটেন্টের মালিকানা বা উহার আবেদনে উল্লিখিত যে কোনো পরিবর্তন লিখিত হইতে হইবে এবং পেটেন্ট স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবেদনের ভিত্তিতে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে রেকর্ড করিতে হইবে এবং কোনো আবেদন করা না হইলে, রেজিস্ট্রার কর্তৃক উক্ত পরিবর্তন ওয়েবসাইটে বা প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রকাশিত হইবে এবং উক্তরূপ পরিবর্তন রেকর্ডভুক্তির পূর্বে তৃতীয় কোনো পক্ষের বিরুদ্ধে কার্যকর হইবে না।

(২) পেটেন্ট সংক্রান্ত যে কোনো লাইসেন্সের চুক্তি বা তদ্‌সম্পর্কিত আবেদন রেজিস্ট্রারের নিকট দাখিল করিতে হইবে।

(৩) রেজিস্ট্রার, উক্ত আবেদন রেকর্ডভুক্ত করিবেন, তবে উহার বিষয়বস্তু গোপন রাখিতে হইবে এবং তদ্‌সম্পর্কিত মন্তব্য প্রকাশ করিবেন এবং রেকর্ডভুক্ত হইবার পূর্বে তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে লাইসেন্সের চুক্তি কার্যকর হইবে না।

(৪) যদি রেজিস্ট্রার এই মর্মে নিশ্চিত হন যে, অধিকার সংক্রান্ত চুক্তির বিষয়ে এইরূপ এক বা একাধিক দফা রহিয়াছে যাহা চুক্তির অপব্যবহার বা অসম প্রতিযোগিতামূলক বা উহাতে এমন কোনো ত্রুটি রহিয়াছে যাহা ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিবে বা উক্তরূপ কোনো প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি পেটেন্টের মালিকানা পরিবর্তন বা লাইসেন্সের চুক্তি রেকর্ড করিতে অস্বীকার করিতে পরিবেন এবং কোনো পক্ষ বা উভয় পক্ষ শুনানি গ্রহণের অনুরোধ করিলে, তিনি চুক্তির সংশ্লিষ্ট পক্ষগণের শুনানি গ্রহণ করিবেন, তবে এইরূপ ক্ষেত্রে চুক্তির পক্ষগণকে চুক্তি সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্যপ্রমাণ দাখিল করিতে হইবে।

(৫)  কোনো পক্ষ বা উভয় পক্ষ, রেজিস্ট্রার কর্তৃক, চুক্তি রেকর্ড করিতে অস্বীকার করিবার সিদ্ধান্ত প্রজ্ঞাপিত হইবার তারিখ হইতে ২(দুই) মাসের মধ্যে উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরকারের নিকট আপিল করিতে পারিবেন।

(৬) স্বত্বগ্রহীতা বা লাইসেন্স গ্রহীতার উপর আরোপিত যে কোনো সীমাবদ্ধতা, যাহা লাইসেন্সকৃত অধিকারের নিবন্ধন দ্বারা উদ্ভূত নহে বা অধিকারের রক্ষাকবচের জন্য প্রয়োজনীয় নহে, তাহা অপব্যবহারমূলক বা অসম প্রতিযোগিতামূলক প্রভাবসম্পন্ন বা অসম প্রতিযোগিতামূলক বলিয়া গণ্য হইবে।

(৭) ভিন্নরূপ বিধান করা না হইলে, প্রয়োগের পরিস্থিতি, কারণ বা যৌক্তিকতা যাচাই বাছাইয়ের প্রয়োজন না থাকিলে নিম্নবর্ণিত শর্তাবলি বা দফার প্রয়োগ আইন বহির্ভূত মর্মে গণ্য হইবে, যথা:¾

(ক)   লাইসেন্স গ্রহীতা কর্তৃক লাইসেন্সকৃত উদ্ভাবনের যে কোনো উন্নয়ন বা সংস্কার ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স দাতাকে ক্ষমতার্পণ, যদি না উক্ত ক্ষমতার্পণ লাইসেন্সের চুক্তি অধীন একই শর্তে হইয়া থাকে;

(খ)   লাইসেন্স দাতার অন্যান্য অদৃশ্যমান সম্পদ যাহা অন্যান্য মেধাসম্পন্ন পেটেন্ট, ট্রেডমার্কস বা ব্যবসার গোপনীয়তার দ্বারা অর্জিত হয়, উহার অতিরিক্ত পারিতোষিক বা উহা অর্জনের জন্য লাইসেন্স গ্রহীতা বা স্বত্বনিয়োগের বাধ্যবাধকতা;

(গ)    লাইসেন্সকৃত অধিকার বা হস্তান্তরিত অধিকারের বৈধতার আপত্তির ক্ষেত্রে লাইসেন্সগ্রহীতা বা স্বত্ব গ্রহীতার প্রতিষেধ;

(ঘ)    লাইসেন্সকৃত বা হস্তান্তরিত উদ্ভাবন সংরক্ষণের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পর ব্যবহার বা পেটেন্ট দ্বারা অর্জিত হয় নাই এইরূপ বিষয়বস্তুর ব্যবহারের পারিতোষিকের ক্ষেত্রে লাইসেন্সগ্রহীতার বাধ্যবাধকতা;

(ঙ)   লাইসেন্সগ্রহীতা বা স্বত্বনিয়োগী কর্তৃক লাইসেন্সদাতা বা স্বত্বনিয়োগকর্তা, বা লাইসেন্সদাতা বা স্বত্বনিয়োগকর্তা কর্তৃক নির্ধারিত অন্য যে কোনো ব্যক্তি হইতে উপাদান, কাঁচামাল বা অন্য যে কোনো দ্রব্য বা সেবা যাহা উদ্ভাবনটি ব্যবহার করিবার জন্য প্রয়োজন এবং যাহা লাইসেন্সকৃত উদ্ভাবনে দাবি দ্বারা সমর্থিত নহে, তাহা অর্জন করিবার বাধ্যবাধকতা;

(চ)    মেধা সম্পদের অধিকারের আওতাভুক্ত হউক বা না হউক অন্য যে কোনো প্রযুক্তির উন্নয়ন বা ব্যবহার সীমিতকারী অথবা বারণকারী সংক্রান্ত যে কোনো শর্ত।

(৮)  এই ধারায় অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, স্বত্বনিয়োগ এবং লাইসেন্স প্রদানের চুক্তিতে নিম্নবর্ণিত বিধান থাকিতে পারিবে, যথা:¾

(ক)   পরিধি, ভৌগোলিক এলাকা এবং ব্যবহারের মেয়াদ;

(খ)    পণ্য এবং সেবার মানের পর্যাপ্ততা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলি;

(গ)    অধিকারের মালিকানা বা অধিকারের বিষয়বস্তুর সুনামের প্রতি হানিকর সকল কার্য হইতে বিরত থাকিবার ক্ষেত্রে লাইসেন্সগ্রহীতার বাধ্যবাধকতা।

(৯)  যেক্ষেত্রে স্বত্বনিয়োগ বা কোনো লাইসেন্স প্রদান সংক্রান্ত চুক্তির বিষয়বস্তু চুক্তি কার্যকর হইবার পর বাতিল হয়, সেইক্ষেত্রে চুক্তিটি তাৎক্ষণিকভাবে সমাপ্ত হইবে এবং পক্ষগণ চুক্তির অধীন যে পরিমাণ অর্থ বা সুযোগ-সুবিধা পরস্পরকে প্রদান করিয়াছে উক্ত অর্থ বা সুযোগ-সুবিধার সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ পুনরুদ্ধার করিতে পারিবেন, যদি না উক্ত অর্থ বা সুযোগ-সুবিধা যে পক্ষের অনুকূলে প্রদত্ত হইয়াছিল, উক্ত পক্ষ, চুক্তির কারণে, সরল বিশ্বাসে উহার দ্বারা লাভবান হইয়া থাকে এবং চুক্তি বাতিলের কারণে উক্ত সুযোগ-সুবিধা বাতিল করিয়া না থাকে।

(১০) উপ-ধারা (৯) এর বিধানাবলি, প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও পরিবর্ধনসহ, লাইসেন্স প্রদান এবং অনিষ্পন্ন পেটেন্ট আবেদন হস্তান্তরের চুক্তির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হইবে।

প্রশাসনিক আদেশের বিরুদ্ধে আপিল, ইত্যাদি

২৬। (১) এই আইনের অধীন, রেজিস্ট্রার কর্তৃক, প্রদত্ত যে কোনো সিদ্ধান্ত, বিশেষত বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের মঞ্জুরি এবং বাধ্যতামূলক লাইসেন্স এর জন্য পারিতোষিক প্রদান সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, সিদ্ধান্ত প্রদানের তারিখ হইতে ২(দুই) মাসের মধ্যে, সরকারের নিকট আপিল দায়ের করিতে হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দায়েরকৃত আপিলের সিদ্ধান্তে কোনো পক্ষ সংক্ষুব্ধ হইলে উক্তরূপ সিদ্ধান্ত প্রদানের তারিখ হইতে ২(দুই) মাসের মধ্যে বিশেষ আদালত বা, ক্ষেত্রমত, উপযুক্ত আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করিতে হইবে।


  • 1
    এ আইনের সকল স্থানে “মহাপরিচালক” শব্দটি “রেজিস্ট্রার" শব্দটির পরিবর্তে বাংলাদেশ শিল্প-নকশা আইন, ২০২৩ (২০২৩ সনের ২২ নং আইন) এর ৩৮ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs