প্রিন্ট ভিউ

[সেকশন সূচি]

1[বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, ২০২২

( ২০২২ সনের ০৫ নং আইন )

চতুর্থ অধ্যায়

পেটেন্ট অধিকার, লাইসেন্স, মালিকানা

পেটেন্ট অধিকার কার্যকরকরণ

২৪। (১) কোনো ব্যক্তি ধারা ১৯ ও ২১ এর বিধান সাপেক্ষে, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর সহিত চুক্তি সম্পাদন ব্যতিরেকে, ধারা ১৯ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন কোনো কার্য সম্পাদন করিলে উক্ত ব্যক্তি পেটেন্ট এর বিধান লঙ্ঘন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।

(২) যদি¾

(ক)   কোনো পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী একচেটিয়া লাইসেন্সি, বাধ্যতামূলক লাইসেন্সি বা একচেটিয়া লাইসেন্সি নয় এইরূপ কোনো লাইসেন্সিকে প্রদত্ত লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করেন, তাহা হইলে সংক্ষুব্ধ কোনো লাইসেন্সি সুনির্দিষ্ট প্রতিকার লাভের জন্য পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর বিরুদ্ধে আদালতে কার্যধারা দায়ের করিতে পারিবেন;

(খ)    কোনো একচেটিয়া লাইসেন্সি, বাধ্যতামূলক লাইসেন্সি বা একচেটিয়া লাইসেন্সি নয় এইরূপ কোনো লাইসেন্সি লাইসেন্সে প্রদত্ত শর্ত ভঙ্গ করেন, তাহা হইলে উক্তরূপ কোনো লাইসেন্সির বিরুদ্ধে পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর সুনির্দিষ্ট প্রতিকার লাভের জন্য আদালতে কার্যধারা দায়ের করিতে পারিবেন;

(গ)    দফা (ক) ও (খ) তে উল্লিখিত শর্ত ভঙ্গ দ্বারা লাইসেন্সি বা পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর অধিকার সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় বলিয়া বিবেচিত হয়, তাহা হইলে আদালত নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করিতে পারিবে;

(ঘ)    আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো পক্ষ লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করিয়াছে এবং উক্তরূপ শর্ত ভঙ্গ দ্বারা অপরপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন, তাহা হইলে আদালত শর্ত ভঙ্গকারী কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারিবে;

(ঙ)    লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ হইবার পর ৫ (পাঁচ) বৎসর সময় অতিক্রান্ত হয়, তাহা হইলে দফা (ক) ও (খ) তে উল্লিখিত শর্ত ভঙ্গের জন্য আদালতে কোনো কার্যধারা দায়ের করা যাইবে না।

(৩) আদালত, দেওয়ানি কার্যবিধি বা বিষয় সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো আইন অনুসারে, উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্য সংরক্ষণের আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(৪) আদালত, আবেদনকারী কর্তৃক সরবরাহকৃত তথ্যাদির ভিত্তিতে নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করিতে পারিবে, যথা :¾

(ক)   আবেদনকারী নিজেই অধিকার গ্রহীতা হইলে এবং আবেদনকারীর অধিকার লঙ্ঘিত হইলে বা লঙ্ঘিত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে; এবং

(খ)    বিরোধীয় অপর পক্ষের অধিকার রক্ষার্থে জামানত বা সমপরিমাণ নিশ্চয়তা প্রদানের আদেশ প্রদান সত্ত্বেও উক্ত আদেশ প্রতিপালন না করিলে বা করিতে ব্যর্থ হইলে :

তবে শর্ত থাকে যে, আদালত, কালক্ষেপণের কারণে কোনো পক্ষের অপূরণীয় ক্ষতি বা সাক্ষ্য-প্রমাণ বিনষ্ট হইবার আশংকা থাকিলে, অপর পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান ব্যতিরেকে, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করিতে পারিবে।

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন কোনো অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করা হইলে আদালত, যথাশীঘ্র সম্ভব, অপর পক্ষকে উক্তরূপ অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে অবহিত করিবে।

(৬) কোনো পক্ষ কর্তৃক দাখিলকৃত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন, ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ব্যতীত, ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করিতে হইবে।

(৭) সংক্ষুব্ধ পক্ষ, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির ১৪ (চৌদ্দ) দিনের মধ্যে, উহা পুনর্বিবেচনার আবেদন দাখিল করিতে পারিবেন।

(৮) সংক্ষুব্ধ পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে এবং আবেদনকারী পক্ষ যুক্তিসঙ্গত কারণ উপস্থাপনে ব্যর্থ হইলে আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উহা প্রত্যাহার করিতে পারিবে।

(৯) অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির পর আদালত যদি এইরূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, বিরোধীয় পক্ষ দ্বারা পেটেন্টের কোনো শর্ত লঙ্ঘিত হয় নাই এবং উহা লঙ্ঘিত হইবার আশংকা নাই, তাহা হইলে আদালত বিরোধীয় পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে সংঘটিত ক্ষতির জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে আবেদনকারী পক্ষকেআদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(১০) আদালত, প্রয়োজনে, অনিষ্পন্ন নিবন্ধন মঞ্জুরের পূর্বে এই ধারার অধীন প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্য সংরক্ষণের আদেশ দিতে পারিবে এবং এইরূপ ক্ষেত্রে অনিষ্পন্ন নিবন্ধনের মঞ্জুরি প্রকাশের পর আবেদনকারীকে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে আইনগত কার্যধারা সূচনা করিতে হইবে।

(১১) আদালত নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে, ক্ষতিপূরণ আদেশের হানি না ঘটাইয়া, উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত শর্ত ভঙ্গের কারণে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বা সুনির্দিষ্ট প্রতিকার মঞ্জুর করিবে না, যথা :¾     

(ক)   আদালতে পেটেন্টের আবেদন দাখিলের তারিখ হইতে ৪ (চার) বৎসর অতিক্রান্ত হইবার পর বা পেটেন্ট মঞ্জুরির তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর অতিক্রান্ত হইবার পর, বাদী বা তদ্‌কর্তৃক অনুমতিপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি যদি¾

(অ)   প্রয়োজনীয় প্রস্ত্ততি গ্রহণ না করেন; বা

(আ)   বাণিজ্যিকভাবে উদ্ভাবন ব্যবহার না করেন; বা

(ই)    এমনভাবে উদ্ভাবন ব্যবহার করেন যাহা মানসম্মতভাবে বাজারের চাহিদা পূরণে অক্ষম।

(খ)    জনস্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইবার আশংকা থাকিলে;

(গ)    যেক্ষেত্রে¾

(অ)   পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বা পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতিতে উৎপাদিত পণ্য বাদী বা বাদীর সম্মতিতে অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ভোক্তার গড় ক্রয় ক্ষমতার অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় হয়;

(আ)   ভোক্তার সুনির্দিষ্ট চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়;

(ই) বাজারে কোনো প্রতিযোগিতামূলক পণ্যের বিদ্যমানতা বা অবিদ্যমানতার কারণে উক্ত পণ্য অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় হয়;

(ঘ)    যদি বাদী এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘনক্রমে পেটেন্ট অর্জন করেন।

(১২) পেটেন্টগ্রহীতা যে কোনো সময় আদালতে পেটেন্ট অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আইনগত কার্যধারার সূচনা করিতে পারিবেন :

তবে শর্ত থাকে যে, পেটেন্ট গ্রহীতার পূর্বেই তৃতীয় কোনো পক্ষ আইনগত কার্যধারার সূচনা করিলে তিনি উক্ত বিষয়ে নূতন করিয়া কোনো আইনগত কার্যধারা সূচনা করিবার অধিকার হইবেন না।

(১৩) যদি সরকারি কোনো সংস্থা কর্তৃক বা সরকারি সেবা প্রদানের কারণে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘিত হয়, তাহা হইলে আদালত, ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের বিষয়টি ক্ষুণ্ন না করিয়া, পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারীর নিয়ন্ত্রণাধীন সাক্ষ্য লাভের জন্য আবশ্যকতা ব্যতীত, কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করিবে না।

(১৪) ক্ষতিপূরণের আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে আদালত¾

(ক)   পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারীকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ প্রদান করিবে;

(খ)    পেটেন্ট এর স্বত্বাধিকারী কর্তৃক ব্যয়িত অর্থ পরিশোধের জন্য পেটেন্টের বিধান লঙ্ঘনকারীকে নির্দেশ প্রদান করিবে; এবং

(গ)    ব্যয়িত অর্থ হিসাবে আদালতের ব্যয়, স্ট্যাম্প ফি এবং আইনজীবীর ফি অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে।

(১৫) উপ-ধারা (১৪) এর বিধান সাপেক্ষে, আদালত স্বীয় বিবেচনায় অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করিবে।

(১৬) পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনের জন্য ক্ষতিপূরণের আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে আদালত নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি বিবেচনা করিতে পারিবে, যথা :¾

(ক)   কোন্ তারিখে নিবন্ধন সরকারি নোটিশে, ওয়েবসাইটে বা প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপনে প্রকাশ করা হইয়াছিল;

(খ)    নিবন্ধনের জন্য কোন্ তারিখে আবেদনকারী আবেদনের বিষয়ে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারীকে নোটিশ প্রদান করিয়াছিলেন;

(গ)    কোন্ তারিখে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারী আবেদনের বিষয়বস্ত্ত সম্পর্কে জ্ঞাত হইয়াছিলেন।

(১৭) ক্ষতিপূরণের আবেদন কেবল পেটেন্ট অধিকার মঞ্জুরের পর আদালতের নিকট দাখিল করা যাইবে।

(১৮) যদি পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়বস্ত্ত কোনো পণ্য লাভের পদ্ধতি হয়, তাহা হইলে আদালত স্বত্বাধিকার লঙ্ঘনকারীকে তদ্‌কর্তৃক উদ্ভাবিত অভিন্ন পণ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতি পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতি হইতে পৃথক উহা প্রমাণ করিবার জন্য আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(১৯) যদি কোনো অভিন্ন পণ্য পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর সম্মতি ব্যতীত উৎপাদন করা হয়, সেইক্ষেত্রে ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত উহা পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতি দ্বারা অর্জিত হইয়াছে মর্মে গণ্য হইবে, যদি না পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতির দ্বারা অর্জিত উক্তরূপ পণ্য নূতন হয়।

(২০) ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, আদালত অন্যান্য ব্যবস্থার মধ্যে পেটেন্টের স্বত্বাধিকার লংঙ্ঘনকারীর কোনো বৈধ স্বার্থ, পণ্য উৎপাদন এবং ব্যবসার গোপনীয়তা বিবেচনা করিবে, তবে উহা পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীকে গোপনীয়তার সুবিধা প্রদান করিবে না।

(২১) যদি কোনো পণ্য সংক্রান্ত বিধানের লঙ্ঘন হয়, তাহা হইলে আদালত উক্তরূপ বিধান লঙ্ঘনের পুনরাবৃত্তি রোধের জন্য উহার গুরুত্ব ও প্রতিকার এবং তৃতীয় পক্ষের স্বার্থ বিবেচনাক্রমে উক্ত পণ্যসমূহ, কোনরূপ ক্ষতিপূরণ ব্যতীত, ধ্বংস করিবার বা অধিকার গ্রহীতার ক্ষতি না করিয়া
অ-বাণিজ্যিকভাবে নিষ্পত্তির আদেশ প্রদান করিবে।

(২২) আদালত, প্রয়োজনে, উপ-ধারা (২১) এ উল্লিখিত বিষয়াদি বিবেচনাক্রমে, যে সকল উপাদান বা উপকরণের সর্বোচ্চ ব্যবহারের  ফলে উক্ত বিধানের লঙ্ঘন হইয়াছে, উক্তরূপ উপাদান বা উপকরণের অধিকতর ব্যবহার লঙ্ঘনের আশংকা ন্যূনতম পর্যায়ে রাখিবার জন্য কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ ব্যতীত অ-বাণিজ্যিকভাবে নিষ্পত্তির আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(২৩) এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘনপূর্বক পণ্য উৎপাদন, সরবরাহ, সেবা প্রদান এবং সরবরাহ চ্যানেলের সহিত জড়িত তৃতীয় পক্ষকে শনাক্তকরণের জন্য পেটেন্টের অধিকার গ্রহীতাকে অবহিত করিবার জন্য আদালত উক্তরূপ বিধান লঙ্ঘনকারীকে উহার গুরুত্ব অনুপাতে আদেশ প্রদান করিবে।

(২৪) ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ সত্ত্বেও পেটেন্টের বিধান লঙ্ঘনকারী ক্ষতিপূরণ প্রদান না করিলে আবেদনকারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত আদেশ অমান্যের গুরুত্ব বিবেচনা করিয়া তাহাকে আইনজীবী ফি’সহ অন্যান্য খরচ পরিশোধের জন্য আদেশ প্রদান করিতে পরিবে।


  • 1
    এ আইনের সকল স্থানে “মহাপরিচালক” শব্দটি “রেজিস্ট্রার" শব্দটির পরিবর্তে বাংলাদেশ শিল্প-নকশা আইন, ২০২৩ (২০২৩ সনের ২২ নং আইন) এর ৩৮ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs