প্রিন্ট ভিউ

[সেকশন সূচি]

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩

( ২০২৩ সনের ০৪ নং আইন )

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা

১৪।  (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকার, অবিলম্বে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নিম্নবর্ণিত বৈশিষ্ট্য-সংবলিত বা শর্তে বা পদ্ধতিতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন করিবে, যথা :-

(ক) জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরিয়া সবর্জনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতায় ১৮ (আঠারো) বৎসর বা তদূর্ধ্ব বয়স হইতে ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর বয়সি সকল বাংলাদেশি নাগরিক সর্বজনীন পেনশন স্কীমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, বিশেষ বিবেচনায় ৫০ (পঞ্চাশ) বৎসর ঊর্ধ্ব বয়সের নাগরিকগণও সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন এবং সেইক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ হইতে নিরবচ্ছিন্ন ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হইবেন সেই বয়স হইতে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হইবেন;

(খ) সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্তির পর একজন চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান-সাপেক্ষে মাসিক পেনশন পাইবার যোগ্যতা অর্জন করিবেন এবং চাঁদাদাতার বয়স ৬০ (ষাট) বৎসর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন প্রদান করা হইবে;

(গ) বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীগণ এই কর্মসূচিতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত হইতে পারিবেন;

(ঘ) সরকার কর্তৃক বাধ্যতামূলক করিয়া সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত, প্রাথমিকভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি স্বেচ্ছাধীন থাকিবে;

(ঙ) প্রত্যেক চাঁদাদাতার জন্য একটি পৃথক ও স্বতন্ত্র পেনশন হিসাব থাকিবে, যাহা বিধি দ্বারা পরিচালিত হইবে;

(চ) চাকরিরত চাঁদা দাতাগণ চাকরি পরিবর্তন করিলেও পূর্ববর্তী হিসাব নূতন কর্মস্থলের বিপরীতে স্থানান্তরিত হইবে, নূতনভাবে হিসাব খোলার প্রয়োজন হইবে না;

(ছ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মাসিক সর্বনিম্ন চাঁদার হার নির্ধারিত হইবে;

(জ) মাসিক অথবা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চাঁদা প্রদান করা যাইবে এবং অগ্রিম ও কিস্তিতে জমা প্রদানের সুযোগ থাকিবে;

(ঝ) মাসিক চাঁদা প্রদানে বিলম্ব হইলে, বিলম্ব ফিসহ বকেয়া চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে পেনশন হিসাব সচল রাখা যাইবে এবং উক্ত বিলম্ব ফি চাঁদাদাতার নিজ হিসাবে জমা হইবে;

(ঞ) পেনশনারগণ আজীবন অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পেনশন সুবিধা ভোগ করিবেন;

(ট) পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ (পঁচাত্তর) বৎসর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করিলে পেনশনারের নমিনি অবশিষ্ট সময়কালের (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ (পঁচাত্তর) বৎসর পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন প্রাপ্য হইবেন;

(ঠ) চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ (দশ) বৎসর চাঁদা প্রদান করিবার পূর্বে মৃত্যুবরণ করিলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তাহার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হইবে;

(ড) পেনশন তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন উত্তোলনের প্রয়োজন হইলে, চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমাকৃত অর্থের সর্ব্বোচ্চ ৫০ (পঞ্চাশ) শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করা যাইবে, যাহা ধার্যকৃত ফিসহ পরিশোধ করিতে হইবে এবং ফিসহ পরিশোধিত অর্থ চাঁদাদাতার নিজ হিসাবে জমা হইবে;

(ঢ) পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য করিয়া কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হইবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকিবে;

(ণ) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রজ্ঞাপন জারি হওয়া সাপেক্ষে, নিম্ন আয়সীমার নিচের নাগরিকগণের অথবা অস্বচ্ছল চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসাবে প্রদান করিতে পারিবে।

(২) সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি অথবা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করিতে পারিবে এবং এইক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে;

তবে শর্ত থাকে যে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত, সরকারি ও আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীগণ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতা-বহির্ভূত থাকিবে।

(৩) এই ধারার উদ্দেশ্যেপূরণকল্পে, প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs