প্রিন্ট ভিউ
চতুর্থ অধ্যায়
কৃষি হইতে আয়
৪০। (১) কোনো ব্যক্তির কৃষি সম্পর্কিত কার্যাবলি হইতে অর্জিত আয় কৃষি হইতে আয় হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ হইবে।
(২) কোনো ব্যক্তি কর্তৃক উৎপাদিত ও প্রক্রিয়াকৃত চা এবং রাবার এর বিক্রয়লব্ধ অর্থের ৪০% (চল্লিশ শতাংশ) ব্যবসা আয় এবং ৬০% (ষাট শতাংশ) কৃষি হইতে আয় বলিয়া গণ্য হইবে।
(৩) কৃষি অর্থে যেকোনো প্রকার উদ্যান পালন, পশু-পাখি পালন, ভূমির প্রাকৃতিক ব্যবহার, হাস-মুরগি ও মাছের খামার, সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীর খামার, নার্সারি, ভূমিতে বা জলে যেকোনো প্রকারের চাষাবাদ, ডিম-দুধ উৎপাদন, কাঠ, তৃণ ও গুল্ম উৎপাদন, ফল, ফুল ও মধু উৎপাদন এবং বীজ উৎপাদন অন্তর্ভুক্ত হইবে।
৪১। (১) ধারা ৪০ এর সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, বিশেষ কৃষি আয় গণনার ক্ষেত্রে এই ধারার বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।
(২) কোনো পরিসম্পদ করদাতার ধারা ৪০ এর কৃষিকাজে ব্যবহৃত হইবার পর কোনো আয়বর্ষে বিক্রয় করা হইলে তাহা নিম্নবর্ণিতভাবে পরিগণিত হইবে, যথা:-
ক্রমিক নং |
বিক্রয়লব্ধ অর্থ |
আয় হিসাবে বিবেচিত অর্থের পরিমাণ |
(১) |
(২) |
(৩) |
১। |
বিক্রয়লব্ধ অর্থ যদি পরিসম্পদের অর্জন মূল্য হইতে অধিক হয় |
ক-খ এর সমপরিমাণ অর্থ উক্ত আয়বর্ষে সংশ্লিষ্ট করদাতার ‘মূলধনি আয়’ শ্রেণির আয় হিসাবে গণ্য হইবে; খ-গ এর সমপরিমাণ অর্থ উক্ত আয়বর্ষে সংশ্লিষ্ট করদাতার “কৃষি হইতে আয়” শ্রেণির আয় হিসাবে গণ্য হইবে। |
২। |
বিক্রয়লব্ধ অর্থ যদি পরিসম্পদের অর্জন মূল্য হইতে অধিক না হয়, তবে অবলোপিত মূল্য হইতে অধিক হয় |
ক-গ এর সমপরিমাণ অর্থ উক্ত আয়বর্ষে সংশ্লিষ্ট করদাতার “কৃষি হইতে আয়” শ্রেণির আয় হিসাবে গণ্য হইবে। |
(৩) কোনো আয়বর্ষে করদাতা কর্তৃক তাহার কৃষিকাজে ব্যবহৃত কোনো পরিসম্পদ পরিত্যক্ত, নিশ্চিহ্ন বা ধ্বংস হইবার কারণে কোনো বিমা, স্যালভেজ বা ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রাপ্ত অর্থ উক্ত পরিসম্পদের অবলোপিত মূল্যের অধিক হইলে উক্ত অর্থ নিম্নবর্ণিতভাবে কৃষি হইতে আয় খাতে অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা:-
ক্রমিক নং |
বিক্রয়লব্ধ অর্থ |
আয় হিসাবে বিবেচিত অর্থের পরিমাণ |
(১) |
(২) |
(৩) |
১। |
বিমা, স্যালভেজ বা ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ যদি পরিসম্পদের অর্জন মূল্য হইতে অধিক হয় |
ক-খ এর সমপরিমাণ অর্থ উক্ত আয়বর্ষে সংশ্লিষ্ট করদাতার ‘মূলধনি আয়’ শ্রেণির আয় হিসাবে গণ্য হইবে; খ-গ এর সমপরিমাণ অর্থ উক্ত আয়বর্ষে সংশ্লিষ্ট করদাতার ‘কৃষি হইতে আয়’ শ্রেণির আয় হিসাবে গণ্য হইবে। |
(১) |
(২) |
(৩) |
২। |
বিমা, স্যালভেজ বা ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ যদি পরিসম্পদের অর্জন মূল্য হইতে অধিক না হয়, তবে অবলোপিত মূল্য হইতে অধিক হয় |
ক-গ এর সমপরিমাণ অর্থ উক্ত আয়বর্ষে সংশ্লিষ্ট করদাতার ‘কৃষি হইতে আয়’ শ্রেণির আয় হিসাবে গণ্য হইবে। |
(৪) এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে,-
ক = পরিসম্পদের বিক্রয়লব্ধ অর্থ বা, ক্ষেত্রমত, পরিসম্পদের বিপরীতে বিমা, স্যালভেজ বা ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ,
খ= পরিসম্পদের অর্জন মূল্য, এবং
গ= তৃতীয় তফসিলের অধীন অবচয় অনুমোদনের পর পরিসম্পদের গণনাকৃত অবলোপিত মূল্য,
-কে বুঝাইবে।
(৫) উপ-ধারা (২) এবং (৩) এর সারণির কলাম (২) অনুসারে বিক্রয়লব্ধ অর্থ বা, ক্ষেত্রমত, পরিসম্পদের বিপরীতে বিমা, স্যালভেজ বা ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ এবং অবলোপিত মূল্যের পার্থক্য ঋণাত্মক হইলে ফলাফল ‘কৃষি হইতে আয়’ খাতে ব্যয়িত বলিয়া গণ্য হইবে এবং অনুমোদিত সাধারণ বিয়োজনের অন্তর্ভুক্ত হইবে।
৪২। (১) এই আইনের অধীন, কোনো আয়বর্ষে কোনো ব্যক্তির কৃষি হইতে আয় খাতে করযোগ্য আয় গণনার ক্ষেত্রে, উক্ত বৎসরে করদাতা কর্তৃক, মূলধনি ব্যয় বা ব্যক্তিগত ব্যয় ব্যতীত, সর্ম্পূণরূপে এবং কেবল কৃষির উদ্দেশ্যে ব্যয়িত অর্থ বিয়োজন হিসাবে অনুমোদনযোগ্য হইবে এবং নিম্নবর্ণিত বিয়োজনসমূহ সাধারণ বিয়োজন হিসাবে গণ্য হইবে, যথা:-
(ক) কৃষির উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত ভূমি বা আঙ্গিনার উপর পরিশোধিত যেকোনো প্রকার কর, ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা;
(খ) কৃষির উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত ভূমি বা আঙ্গিনার জন্য পরিশোধযোগ্য ভাড়া, উন্নয়ন ও সংরক্ষণ ব্যয় এবং চাষাবাদ ব্যয়;
(গ) কৃষির উদ্দেশ্যে গৃহীত ঋণের পরিশোধযোগ্য সুদ বা মুনাফা;
(ঘ) কৃষিকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত এবং চাষাবাদের জন্য পালিত গবাদিপশুর লালন-পালন, তৎসংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়াকরণ বা পরিবহণ সংক্রান্ত ব্যয়;
(ঙ) ভূমির বা আঙ্গিনার ক্ষতিপূরণে অথবা ভূমি বা আঙ্গিনা হইতে উৎপাদিত ফসল বা পণ্যের ক্ষতিপূরণে অথবা গবাদিপশু পালনে নিরাপত্তার লক্ষ্যে পরিশোধযোগ্য বিমার প্রিমিয়াম;
(চ) প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা অন্য কোনো প্রকার ক্ষতিসাধন হইতে কৃষিকে রক্ষার নিমিত্ত ব্যয়িত অর্থ;
(ছ) তৃতীয় তফসিলে বর্ণিত অনুমোদিত সীমা অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত খরচসমূহ-
(অ) করদাতা কর্তৃক সংশ্লিষ্ট কৃষিতে ব্যবহৃত সম্পদের অবচয়;
(আ)সংশ্লিষ্ট কৃষিকাজে ব্যবহৃত স্পর্শাতীত সম্পদের অ্যামোর্টাইজেশন;
(জ) যেইক্ষেত্রে করদাতার কৃষিকাজে ব্যবহৃত পশুর মৃত্যু হইয়াছে বা স্থায়ীভাবে অক্ষম হইয়া গিয়াছে সেইক্ষেত্রে উক্ত পশুর প্রকৃত ক্রয়মূল্য এবং, ক্ষেত্রমত, সেই পশু বিক্রয় বা তাহার মাংস বিক্রয় হইতে প্রাপ্ত অর্থ, এই দুইয়ের পার্থক্যের সমপরিমাণ অঙ্ক;
(ঝ) সরকার কর্তৃক স্পন্সরকৃত কৃষি সম্পর্কিত কোনো ডেলিগেশনের সদস্য হিসাবে বিদেশে সফর সম্পর্কিত কোনো নির্বাহকৃত ব্যয়, যাহা মূলধনি প্রকৃতির নহে;
(ঞ) বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হইয়াছে এইরূপ কোনো স্কিমের সহিত সম্পর্কিত বিষয়ের উপর বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রশিক্ষণ প্রদানে নির্বাহকৃত কোনো ব্যয়;
(ট) কোনো কৃষি সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনা খাতে নির্বাহকৃত ব্যয় বা এইরূপ কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনায় নির্বাহকৃত ব্যয় যাহার দ্বারা গবেষণাটি সম্পূর্ণ ও একান্তভাবে করদাতার কৃষির উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশে পরিচালিত হইয়াছে।
(২) এই ধারার অধীন কোনো ব্যয়ের যতটুকু অংশ কৃষি হইতে আয় এর সহিত সম্পর্কিত কেবল ততটুকু অংশই অনুমোদনযোগ্য ব্যয় হিসাবে গণ্য হইবে।
৪৩। (১) যদি ইহা প্রতীয়মান হয় যে,–
(ক) করদাতা নিয়মিত হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি প্রয়োগ করিতেছেন না;
(খ) করদাতা এইরূপ কোনো পদ্ধতি প্রয়োগ করিতেছেন যাহার ভিত্তিতে করদাতার আয় বিষয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব নহে বলিয়া উপকর কমিশনারের নিকট প্রতীয়মান হইতেছে;
(গ) করদাতা হিসাব বা লেনদেনের রেকর্ডসমূহ সংরক্ষণ করিতে ব্যর্থ হইয়াছেন; বা
(ঘ) করদাতা যে হিসাব বা লেনদেনের রেকর্ডসমূহ সংরক্ষণ করিয়াছেন তাহা যাচাইযোগ্য নহে,
তাহা হইলে, অন্য ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উক্তরূপে উৎপাদিত কৃষি পণ্যের বাজার মূল্যের ৬০% (ষাট শতাংশ) অনুমোদিত ব্যয় হিসাবে গণ্য হইবে।
(২) যেইক্ষেত্রে ভূমি বা আঙ্গিনার মালিক আধি, বর্গা, ভাগা বা অংশহারে কৃষি হইতে আয় প্রাপ্ত হইবেন সেইক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হইবে না।
৪৪। (১) উৎসে কর কর্তন বা সংগ্রহ প্রযোজ্য হয় এইরূপ সকল ক্ষেত্রে অংশ ৭ এর বিধানাবলির পরিপালন না হইলে এই অধ্যায়ের অধীন দাবিকৃত বিয়োজন অনুমোদিত হইবে না।
(২) ধারা ৫৫ এ বর্ণিত বিধানাবলি এইরূপভাবে প্রযোজ্য হইবে যেন বিধানাবলি এই অধ্যায়ের সহিত সম্পর্কিত।