প্রিন্ট ভিউ

আয়কর আইন, ২০২৩

( ২০২৩ সনের ১২ নং আইন )

প্রথম অধ্যায়

রিটার্ন এবং বিবরণী

রিটার্ন

১৬৫।  (১) বোর্ড, করদাতাদের জন্য শ্রেণিভিত্তিক এবং যেইরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবে সেইরূপ রিটার্ন নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) স্বাভাবিক করদাতার রিটার্ন করদাতার সকল প্রকার আয়ের বিবরণী, বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থিত সকল প্রকার পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী এবং, ক্ষেত্রমত, জীবনযাপন সংশ্লিষ্ট সকল প্রকার ব্যয়ের বিবরণী সংবলিত হইবে।

রিটার্ন দাখিল

১৬৬।  (১) প্রত্যেক ব্যক্তি উপকর কমিশনারের নিকট সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষের জন্য রিটার্ন দাখিল করিবেন, যদি-

(ক) সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে তাহার আয় এই আইনের অধীন করমুক্ত আয়ের সীমা অতিক্রম করে;

(খ) সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষের অব্যবহিত পূর্ববর্তী ৩ (তিন) বৎসরের মধ্যে কোনো বৎসর তাহার কর নির্ধারণ করা হয়;

(গ) উক্ত ব্যক্তি একটি কোম্পানি, কোনো শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বা কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার কর্মচারী, কোনো ফার্ম, কোনো ফার্মের অংশীদার, কোনো ব্যক্তিসংঘ, কোনো ব্যবসায় নির্বাহী বা ব্যবস্থাপকের পদধারী কোনো কর্মচারী, কোনো গণকর্মচারী হন বা কোনো অনিবাসী হন যাহার বাংলাদেশে স্থায়ী স্থাপনা রহিয়াছে;

(ঘ) উক্ত ব্যক্তি, কেবল দাতব্য উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যতীত, সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে এইরূপ কোনো আয় প্রাপ্ত হন, যাহা অংশ ৬ এর প্রথম অধ্যায়ের অধীন কর অব্যাহতি বা হ্রাসকৃত করহার সুবিধাপ্রাপ্ত;

(ঙ) ধারা ২৬১ অনুসারে করদাতা হিসাবে নিবন্ধনযোগ্য কোনো ব্যক্তি; বা

(চ) উক্ত ব্যক্তির ধারা ২৬৪ অনুযায়ী রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দাখিলের বাধ্যবাধকতা রহিয়াছে।

(২) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রসমূহে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক হইবে না, যথা:-

(ক) কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-

(অ) যাহা বাংলা ভাষায় পাঠদানকারী প্রাথমিক বা প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় বা সরকারি মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বা যাহা মাসিক পেমেন্ট আদেশভুক্ত (এমপিও) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান; এবং

(আ) যাহার ইংরেজি ভার্সন কারিকুলাম নাই;

(খ) সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়;

(গ) বাংলাদেশ ব্যাংক;

(ঘ) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ;

(ঙ) সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ বা সায়ত্বশাসিত সংস্থা, যাহার সরকারের নিকট হইতে প্রাপ্ত তহবিল ও সুদ আয় ব্যতীত অন্য কোনো আয় নাই;

(চ) আপাতত বলবৎ কোনো আইন দ্বারা বা আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত বা গঠিত যেকোনো সত্তা যাহাদের সরকারের নিকট হইতে প্রাপ্ত তহবিল ব্যতীত অন্য কোনো আয় নাই;

(ছ) সরকারি ভবিষ্য তহবিল এবং সরকারি পেনশন তহবিল;

(জ) কোনো অনিবাসী স্বাভাবিক ব্যক্তি যাহার বাংলাদেশে কোনো নির্দিষ্ট ভিত্তি (fixed base) নাই; বা

(ঝ) বোর্ড কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, রিটার্ন দাখিল করা হইতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ।

পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল

১৬৭। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, প্রত্যেক স্বাভাবিক করদাতা আবশ্যিকভাবে পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করিবেন, যদি উক্ত ব্যক্তি-

(ক) আয়বর্ষের শেষ তারিখে ৪০ (চল্লিশ) লক্ষ টাকার অধিক মোট সম্পত্তির মালিক হন; বা

(খ) আয়বর্ষের যেকোনো সময় কোনো মোটরযানের মালিক হন; বা

(গ) সিটি কর্পোরেশন এলাকার মধ্যে সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে গৃহ সম্পত্তি বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ করেন; বা

(ঘ) আয়বর্ষের কোনো সময়ে বিদেশে কোনো পরিসম্পদের মালিক হন; বা

(ঙ) কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হন:

তবে শর্ত থাকে যে, এই উপ-ধারার শর্তাবলি পালন সাপেক্ষে সকল গণকর্মচারী আবশ্যিকভাবে পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করিবেন।

(২) প্রত্যেক নিবাসী বাংলাদেশি স্বাভাবিক করদাতা তাহার রিটার্নে বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থিত সকল প্রকার পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করিবেন।

(৩) প্রত্যেক অনিবাসী বাংলাদেশি স্বাভাবিক করদাতা তাহার রিটার্নে বাংলাদেশে অবস্থিত সকল প্রকার পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করিবেন।

(৪) এইরূপ প্রত্যেক বিদেশি স্বাভাবিক করদাতা যিনি বাংলাদেশি নহেন তাহার রিটার্নে বাংলাদেশে অবস্থিত সকল প্রকার পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করিবেন।

(৫) কোনো স্বাভাবিক করদাতার জন্য উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী পূরণ বাধ্যতামূলক না হইলেও, তিনি স্বেচ্ছায় পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করিতে পারিবেন।

(৬) কোনো স্বাভাবিক করদাতার পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণীতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রী বা নাবালক সন্তানের পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণীও দাখিল করিতে হইবে যদি তাহাদের পৃথক টিআইএন না থাকে।

(৭) উপকর কমিশনার, লিখিত নোটিশ দ্বারা, কোনো ব্যক্তিকে যেকোনো আয়বর্ষের জন্য পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করিতে বলিতে পারিবেন, যদি-

(ক) উক্ত ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল না করিয়া থাকেন; বা

(খ) উক্ত করদাতার সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষের করদায় নির্ধারণের জন্য উক্ত পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী আবশ্যক বলিয়া প্রতীয়মান হইয়া থাকে।

জীবনযাপন সংশ্লিষ্ট ব্যয় বিবরণী দাখিল

১৬৮  () প্রত্যেক স্বাভাবিক করদাতাকে রিটার্নে আবশ্যিকভাবে জীবনযাপন সংশ্লিষ্ট ব্যয় বিবরণী দাখিল করিতে হইবে, যদি-

(ক) সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে উক্ত ব্যক্তির আয় (পাঁচ) লক্ষ টাকার অধিক হয়;

(খ) সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষের কোনো সময় উক্ত ব্যক্তি মোটরযানের মালিকানা লাভ করেন;

(গ) উক্ত ব্যক্তি ব্যবসা হইতে কোনো আয় করেন;

(ঘ) উক্ত ব্যক্তি কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হন; বা

(ঙ) উক্ত ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে সিটি কর্পোরেশন এলাকার মধ্যে গৃহ সম্পত্তি বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ করেন

() উপকর কমিশনার, লিখিত নোটিশ দ্বারা, কোনো ব্যক্তিকে কোনো আয়বর্ষে জীবনযাপন সংশ্লিষ্ট ব্যয় বিবরণী দাখিল করিতে বলিতে পারিবেন, যদি-

(ক) উক্ত ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে উক্ত ব্যয় বিবরণী দাখিল না করিয়া থাকেন; বা

(খ) উক্ত করদাতার সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষের করদায় নির্ধারণের জন্য উক্ত ব্যয় বিবরণী আবশ্যক বলিয়া প্রতীয়মান হইয়া থাকে

রিটার্ন দাখিলের সাধারণ নিয়মাবলি

১৬৯। (১) বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে প্রয়োজনীয় বিবরণ ও তথ্যাদি প্রদান করিয়া নির্ধারিত তফসিলসমূহ, বিবৃতি, হিসাব, পরিশিষ্ট বা দলিলাদিসহ রিটার্ন দাখিল করিতে হইবে।

(২) কোম্পানি বা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সম্পাদন হইতে আয়প্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির রিটার্নের সহিত নিম্নবর্ণিত দলিলাদি সংযুক্ত করিতে হইবে, যথা:-

(ক) নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী;

(খ) যাচাইয়ের নিমিত্ত বোর্ড কর্তৃক, সময় সময়, নির্ধারিত মানদণ্ড অনুসরণের প্রমাণ; এবং

(গ) আর্থিক বিবরণীতে প্রদর্শিত লাভ-ক্ষতি এবং রিটার্নে প্রদর্শিত আয়ের মধ্যকার পার্থক্যের ব্যাখ্যাসহ একটি পৃথক পরিগণনা পত্র।

(৩) কোনো আয়বর্ষে আন্তর্জাতিক লেনদেন রহিয়াছে এইরূপ কোনো সত্তার ক্ষেত্রে, ধারা ২৩৮ এর অধীন আন্তর্জাতিক লেনদেন সম্পর্কিত একটি বিবরণী রিটার্নের সহিত দাখিল করিতে হইবে।

(৪) কোনো অনিবাসী বাংলাদেশি তাহার রিটার্নের ভিত্তিতে করদায়ের পরিশোধের প্রমাণাদিসহ রিটার্ন নিকটস্থ বাংলাদেশ মিশনে দাখিল করিতে পারিবেন এবং মিশন উহার দাপ্তরিক সিলসহ উক্ত রিটার্নের একটি প্রাপ্তি স্বীকার পত্র প্রদান করিবে এবং রিটার্নটি বোর্ডের নিকট প্রেরণ করিবে।

(৫) রিটার্ন নিম্নবর্ণিত ব্যক্তি কর্তৃক স্বাক্ষরিত ও প্রতিপাদিত হইতে হইবে, যথা:-

(ক) কোনো স্বাভাবিক করদাতার ক্ষেত্রে, করদাতা স্বয়ং; তিনি বাংলাদেশে না থাকিলে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি কর্তৃক বা এতদুদ্দেশ্যে তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি কর্তৃক, এবং তিনি মানসিক অপ্রকৃতিস্থতার কারণে স্বাভাবিক কার্য করিতে অপারগ হইলে, তাহার অভিভাবক কর্তৃক বা তাহার পক্ষে স্বাক্ষর করিতে আইনগতভাবে উপযুক্ত কোনো ব্যক্তি;

(খ) কোনো হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের ক্ষেত্রে, পরিবারের কর্তা কর্তৃক, এবং কর্তা বাংলাদেশে অবস্থান না করিলে বা মানসিক অক্ষমতার কারণে স্বাভাবিক কার্য করিতে অপারগ হইলে, উক্ত পরিবারের কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি;

গ) কোনো কোম্পানি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ক্ষেত্রে, প্রধান কর্মকর্তা;

(ঘ) কোনো ফার্মের ক্ষেত্রে, কোনো নাবালক অংশীদার ব্যতীত, উহার যেকোনো অংশীদার;

(ঙ) অন্য কোনো সংঘের ক্ষেত্রে, সংঘের কোনো সদস্য বা মুখ্য কর্মকর্তা; এবং

(চ) অন্যান্য ব্যক্তির ক্ষেত্রে, উক্ত ব্যক্তি কর্তৃক বা তাহার পক্ষে স্বাক্ষর করিতে আইনগতভাবে উপযুক্ত কোনো ব্যক্তি।

স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা

১৭০।  (১) ধারা ১৬৬ এর অধীন রিটার্ন দাখিলের আইনানুগ বাধ্যবাধকতা রহিয়াছে এইরূপ সকল ব্যক্তি ধার ১৮০ এর অধীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিল করিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, এক ব্যক্তি কোম্পানি, ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্যান্য কোম্পানি এবং বাংলাদেশ ত্যাগকারী ব্যক্তি সাধারণ রিটার্ন দাখিল করিতে পারিবেন।

(২) এই অংশের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, “সাধারণ রিটার্ন” অর্থ ধারা ১৮৩ বা ১৮৪ এর অধীন কর নির্ধারণের জন্য দাখিলকৃত রিটার্ন বুঝাইবে।

রিটার্ন দাখিলের সময়

১৭১।  প্রত্যেক করদাতাকে করদিবসের মধ্যে বা ইহার পূর্বে রিটার্ন দাখিল করিতে হইবে।

রিটার্ন দাখিলের জন্য নোটিশ

১৭২।  (১) উপকর কমিশনার ধারা ১৭১ এ উল্লিখিত মেয়াদ উত্তীর্ণের পর যেকোনো সময়, কোনো ব্যক্তিকে, লিখিত নোটিশ দ্বারা, তাহার আয়ের রিটার্ন দাখিল করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন, যদি-

(ক) ধারা ১৬৬ এর অধীন উক্ত ব্যক্তির রিটার্ন দাখিল করা আবশ্যক হয়; বা

(খ) উক্ত ব্যক্তির মোট আয় সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে কর আরোপযোগ্য হয়।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন, নোটিশে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে, যাহা ২১ (একুশ) দিনের কম হইবে না, অথবা উপকর কমিশনার যেইরূপ অনুমোদন করিবে সেইরূপ বর্ধিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করিতে হইবে।

রিটার্ন দাখিলের তারিখে বা ইহার পূর্বে আয়কর ও সারচার্জ পরিশোধ সংক্রান্ত

৩।  (১) ধারা ১৬৬, ১৭২, ১৭৫, ১৯১, ১৯৩ বা ২১২ ইহার অধীন রিটার্ন দাখিল করা আবশ্যক এইরূপ প্রত্যেক ব্যক্তিকে রিটার্ন দাখিলের তারিখে বা তৎপূর্বে পরিশোধযোগ্য কর পরিশোধ করিতে হইবে।

(২) পরিশোধযোগ্য কর ক-খ নিয়মে পরিগণনা করিতে হইবে, যেখানে-

ক = রিটার্নের ভিত্তিতে বা ধারা ১৬৩ এর উপ-ধারা (৫) এর বিধানাবলি অনুসারে করদাতা কর্তৃক প্রদেয় কর, যাহা অধিক হয়;

খ = অংশ ৭ এর বিধানাবলি অনুসারে উৎসে পরিশোধিত কর বা অগ্রিম কর।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিশোধকৃত অর্থ নিয়মিত কর নির্ধারণের পর করদাতা কর্তৃক প্রদেয় কর হিসাবে পরিশোধ করা হইয়াছে মর্মে গণ্য হইবে।

(৪) কোনো ব্যক্তি, যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদেয় কর পরিশোধ করিতে ব্যর্থ হইলে, তিনি খেলাপি করদাতা হিসাবে গণ্য হইবেন।

করদিবস পরবর্তী সময়ে রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে কর পরিগণনা

১৭৪।  ধারা ১৬৬ অনুযায়ী রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা রহিয়াছে এইরূপ কোনো করদাতা করদিবসের মধ্যে রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হইলে, এই আইনের অন্যান্য বিধানের অধীন উদ্ভূত দায় অক্ষুণ্ন রাখিয়া নিম্নবর্ণিত নিয়মে করদাতার কর নির্ধারিত ও পরিশোধিত হইবে, যথা:-

গ = ক × (১ + ০.০৪ × খ), যেখানে,-

গ = মোট প্রদেয় করের পরিমাণ, যেইক্ষেত্রে-

(অ) করদাতা করদিবস পরবর্তী কোনো দিনে রিটার্ন দাখিল করেন; বা

(আ) কর কর্তৃপক্ষ করদিবস পরবর্তী কোনো দিনে করদাতার কর নির্ধারণ করেন,

ক = করদাতা করদিবসের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করিলে মোট যেই পরিমাণ কর পরিশোধ করিতেন সেই অঙ্ক, তবে এইক্ষেত্রে-

(অ) কর অব্যাহতি প্রাপ্ত আয় মোট আয়ের অন্তর্ভুক্ত হইবে এবং নিয়মিত হারে কর পরিগণনা করিতে হইবে; এবং

(আ) ন্যূনতম কর, সারচার্জ ও সরল সুদ ব্যতীত এই আইনের অধীন প্রযোজ্য বা ধার্যকৃত কোনো জরিমানা বা কর ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না,

খ = নিম্নবর্ণিতরূপে নির্ধারিত মাসের সংখ্যা, যথা:-

(অ) করদিবস অতিক্রান্ত হইবার পর মাসের সংখ্যা যাহা অনধিক ২৪ (চব্বিশ) হইবে; এবং

(আ) কোনো মাসের ভগ্নাংশও ১ (এক) মাস হিসাবে পরিগণিত হইবে।

“সাধারণ রিটার্ন” এর ক্ষেত্রে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল

১৭৫। (১) ধারা ১৬৬ বা ২১২ অনুসারে “সাধারণ রিটার্ন” দাখিলের পর রিটার্নে কোনো উপেক্ষিত বা অশুদ্ধ বিবৃতি পরিলক্ষিত হইলে, কোনো প্রকার করদায় হ্রাস না করিয়া, সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করা যাইবে।

(২) যেইক্ষেত্রে কর নির্ধারণ সম্পন্ন হয় নাই সেইক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট করবর্ষের কর নির্ধারণী আদেশ প্রণয়নের সর্বশেষ তারিখের অন্যূন ৬ (ছয়) মাস পূর্বে অথবা প্রথমবার ধার্যকৃত শুনানির তারিখের পূর্বে, যাহা আগে ঘটে, সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করিতে হইবে।

অসম্পূর্ণ রিটার্ন দাখিলের ফলাফল

১৭৬। (১) কোনো রিটার্ন বা সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে ধারা ১৬৯ এর বিধান বা বোর্ড কর্তৃক জারীকৃত কোনো নির্দেশনা অনুসরণ না করিলে উক্ত রিটার্ন বা সংশোধিত রিটার্ন অসম্পূর্ণ বলিয়া বিবেচিত হইবে।

(২) রিটার্ন বা সংশোধিত রিটার্নটি অসম্পূর্ণ বলিয়া বিবেচনা করা হইলে, উপকর কমিশনার, কারণ উল্লেখপূর্বক, করদাতার নিকট সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি, যাচাইকরণ, বিবৃতি বা দলিলাদি নোটিশে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে দাখিল করিবার জন্য নোটিশ প্রেরণ করিবেন।

(৩) কোনো করদাতা উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রদত্ত নোটিশ সম্পুর্ণরূপে অনুসরণ করিতে ব্যর্থ হইলে, রিটার্ন বা সংশোধিত রিটার্ন, যাহা অসম্পূর্ণ বলিয়া বিবেচিত হইয়াছিল তাহা এইরূপভাবে বাতিল বা অকার্যকর বলিয়া বিবেচনা করা হইবে যেন উহা দাখিল করা হয় নাই।

(৪) কোনো করদাতা উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রদত্ত নোটিশের বিষয়বস্তু সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করিলে রিটার্ন বা সংশোধিত রিটার্ন তাহা দাখিলের তারিখে সম্পূর্ণ হইয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইবে।

(৫) কেবল প্রাপ্তি স্বীকারের কারণে রিটার্নটি সম্পূর্ণ বলিয়া বিবেচিত হইবে না।

উৎসে করের রিটার্ন

১৭৭।  (১) নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণ বোর্ড কর্তৃক যেইরূপ উপযুক্ত সেইরূপ নির্ধারিত ফরমে অংশ ৭ এর বিধানাবলির অধীন কর্তনকৃত বা সংগ্রহকৃত করের রিটার্ন দাখিল করিবেন:

(ক) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ, বাংলা ভাষায় পাঠদানকারী প্রাথমিক বা প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বা মাসিক পেমেন্ট আদেশভুক্ত (এমপিও) কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্যান্য কোম্পানি;

(খ) ফার্ম;

(গ) ব্যক্তিসংঘ;

(ঘ) বেসরকারি হাসপাতাল;

(ঙ) ক্লিনিক;

(চ) ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রিটার্ন-

(ক) করদাতা যে উপকর কমিশনারের অধিক্ষেত্রের আওতাধীন তাহার নিকট দাখিল করিতে হইবে;

(খ) নির্ধারিত ফরমে সংশ্লিষ্ট বিবরণ ও তথ্যাদি এবং তফসিল, বিবৃতি, হিসাব, পরিশিষ্ট বা দলিলাদি সহযোগে দাখিল করিতে হইবে;

(গ) ধারা ১৬৯ এর উপ-ধারা (৫) এ বর্ণিত পদ্ধতিতে স্বাক্ষরিত ও প্রতিপাদন করিতে হইবে;

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন রিটার্ন নিম্নবর্ণিত সময়ে দাখিল করিতে হইবে, যথা:-

(ক) প্রতি মাসের ১৫ (পনেরো) তারিখের মধ্যে পূর্ববর্তী মাসের জন্য প্রযোজ্য রিটার্ন দাখিল করিতে হইবে; এবং

(খ) যেইক্ষেত্রে কোনো মাসের ১৫ (পনেরো) তারিখ সাপ্তাহিক বা সরকারি কোনো ছুটির দিন সেইক্ষেত্রে পরবতী অফিস খোলার দিন;

(৪) উপকর কমিশনার এই ধারার অধীন রিটার্ন দাখিলের সময় নির্ধারিত তারিখ হইতে অনধিক ১৫ (পনেরো) দিন বা উক্ত মাসের শেষ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।

(৫) বোর্ড, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ইলেকট্রনিক, যন্ত্রে পাঠযোগ্য বা কম্পিউটারে পাঠযোগ্য মাধ্যমে রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্র, ফরম ও পদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs