প্রিন্ট ভিউ

আয়কর আইন, ২০২৩

( ২০২৩ সনের ১২ নং আইন )

প্রথম অধ্যায়

বকেয়া কর আদায়

দাবির নোটিশ

২১৪। (১) এই আইনের অধীন কোনো আদেশ বা কার্যক্রমের ফলে কোনো পরিমাণ কর প্রদেয় হইলে উপকর কমিশনার, উক্ত করদাতার বরাবর (কর পরিশোধের জন্য দায়ী অন্য কোনো ব্যক্তিও ইহার অর্ন্তভুক্ত হইবে) কর নির্ধারণী আদেশের একটি কপিসহ উক্ত প্রদেয় করের পরিমাণ, পরিশোধের সময়সীমা এবং পদ্ধতি উল্লেখপূর্বক নির্ধারিত ফরমে একটি দাবির নোটিশ জারি করিবেন।

(২) এই আইনের অধীন কোনো আদেশ বা কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর ফেরতযোগ্য হইলে উপকর কমিশনার উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত নোটিশে করদাতার নিকট ফেরতযোগ্য অর্থের পরিমাণ এবং তাহাকে উক্ত অর্থ ফেরত প্রদানের ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত করিবেন, যদি না ধারা ২২৫ এর বিধান অনুসারে এইরূপ ফেরৎ বকেয়া করের বিপরীতে সমন্বয় হয়।

(৩) করদাতাকে শুনানির সুযোগ প্রদান না করিয়া উপকর কমিশনার কোনো প্রত্যর্পণ সমন্বয় করিবেন না।

(৪) যে করদাতার উপর উপ-ধারা (১) এর অধীন দাবির নোটিশ জারি করা হইয়াছে, তিনি নোটিশে বর্ণিত পরিশোধের সময় অতিবাহিত হইবার পূর্বে এবিষয়ে উপকর কমিশনারের নিকট আবেদন করিলে, উপকর কমিশনার মামলার পরিস্থিতি বিবেচনাপূর্বক যেইরূপ প্রয়োজন বিবেচনা করিবেন সেইরূপে পরিশোধের সময়সীমা বর্ধিত করিতে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, বিলম্ব সুদ পরিশোধের শর্তসহ কিস্তিতে পরিশোধের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন।

(৫) উপ-ধারা (১) এর অধীন জারীকৃত দাবির নোটিশে বর্ণিত সময়ের মধ্যে অথবা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, উপ-ধারা (৪) এর অধীন বর্ধিত সময়ের মধ্যে পরিশোধযোগ্য অর্থ পরিশোধ করা না হইলে করদাতাকে খেলাপি করদাতা হিসাবে গণ্য করা হইবে।

(৬) করদাতা আরোপিত কর নির্ধারণী আদেশের বিরুদ্ধে অথবা উল্লিখিত করের পরিমাণের বিরুদ্ধে এই আইনের অধীন আপিল পেশ করিলে, আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উপকর কমিশনার করদাতাকে খেলাপি করদাতা হিসাবে গণ্য করিবেন না।

(৭) করদাতাকে উপ-ধারা (৪) এর অধীন কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের অনুমতি প্রদান করা হইলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করদাতা যদি কোনো একটি কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হন তবে তাহাকে উক্ত দিনে অনাদায়ী অর্থের জন্য এবং অন্যান্য কিস্তি বা কিস্তিসমূহের জন্য খেলাপি করদাতা হিসাবে গণ্য করা হইবে এবং যে কিস্তিটি পরিশোধে তিনি ব্যর্থ হইয়াছেন উক্ত কিস্তি পরিশোধের জন্য ধার্য দিনই অবশিষ্ট সকল কিস্তি পরিশোধ করিবার কথা ছিল মর্মে গণ্য করা হইবে।

(৮) বাংলাদেশের বাহির হইতে উপার্জিত আয়ের উপর যদি কোনো করদাতার কর নির্ধারণ করা হয় এবং উক্ত দেশ হইতে বাংলাদেশে অর্থ প্রেরণের বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা বা বিধি-নিষেধ আরোপিত থাকে, তবে এইরূপ নিষেধাজ্ঞা বা বিধি-নিষেধ আরোপের কারণে যেই পরিমাণ আয় বাংলাদেশে আনয়ন করা সম্ভব হয় নাই সেই পরিমাণ আয়ের উপর আরোপিত আয়করের জন্য, বর্ণিত নিষেধাজ্ঞা বা বিধি-নিষেধ দূরীভুত না হওয়া পর্যন্ত উপকর কমিশনার সংশ্লিষ্ট করদাতাকে খেলাপি করদাতা হিসাবে গণ্য করিবেন না।

(৯) এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, একজন করদাতার আয় তখনই বাংলাদেশে আনয়ন করা হইয়াছে মর্মে বিবেচনা করা হইবে, যখন উক্ত আয় বাংলাদেশের বাহিরে করদাতার কোনো প্রকৃত ব্যয় নির্বাহের জন্য ব্যবহৃত হইয়াছে বা হইতে পারিত অথবা তাহা পুঁজি আকারে বা অন্য কোনোভাবে বাংলাদেশে আনয়ন করা হইয়াছে।

সরাসরি আদায় ও প্রত্যর্পণ

২১৫। (১) করদাতার ব্যাংক হিসাব হইতে সরাসরি সরকারের ব্যাংক হিসাবে ট্রান্সফারের মাধ্যমেও করদাতার নিকট হইতে বকেয়া কর আদায় করা যাইবে।

(২) করদাতার পাওনা অর্থ করদাতার ব্যাংক হিসাবে ইলেক্ট্রনিক ট্রান্সফারের মাধ্যমে ফেরত প্রদান করিতে হইবে।

(৩) এই আইন বা অন্য আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, করদাতা স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিল করিলে, উপকর কমিশনার কর্তৃক রিটার্ন প্রসেস (process) সম্পন্ন হইবার ফলে প্রর্ত্যপণ সৃষ্টি হইলে উক্ত প্রর্ত্যপণ করদাতার রিটার্নে উল্লিখিত ব্যাংক হিসাবে ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে ইলেক্ট্রনিক ট্রান্সফার করিতে হইবে।

(৪) উপ-ধারা (১), (২) ও (৩)-এ বর্ণিত ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে কর আদায় বা ফেরত প্রদানের পদ্ধতি, শর্ত, যোগ্যতা ও সীমা নির্ধারণ করিয়া বোর্ড বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে।

কর আদায়ের জন্য সার্টিফিকেট

২১৬। (১) বকেয়া কর পরিশোধে কোনো করদাতা খেলাপি হইলে বা খেলাপি হিসাবে গণ্য হইলে উপকর কমিশনার করদাতার নিকট পাওনা বকেয়ার পরিমাণ উল্লেখপূর্বক তাহা আদায়ের উদ্দেশ্যে ট্যাক্স রিকোভারি অফিসারের নিকট তাহার স্বাক্ষরে সার্টিফিকেট প্রেরণ করিতে পারিবেন; এবং বকেয়া পাওনা আদায়ের জন্য অন্য যেকোনো কার্যক্রম গৃহীত হওয়া সত্ত্বেও এতদ্‌প্রকার সার্টিফিকেট ইস্যু করা যাইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো সার্টিফিকেট নিম্নবর্ণিত ট্যাক্স রিকোভারি অফিসারগণের নিকট প্রেরণ করা যাইবে, যথা:-

(ক) যেই ট্যাক্স রিকোভারি অফিসারের অধিক্ষেত্রাধীনে করদাতা ব্যবসা পরিচালনা করেন অথবা যেখানে করদাতার ব্যবসার প্রধান স্থান অবস্থিত;

(খ) যেই ট্যাক্স রিকোভারি অফিসারের অধিক্ষেত্রাধীনে করদাতা বসবাস করেন অথবা করদাতার কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি অবস্থিত; বা

(গ) উপকর কমিশনার কর্তৃক কর নির্ধারণযোগ্য কোনো করদাতা, যাহার উপর সংশ্লিষ্ট যে ট্যাক্স রিকোভারি অফিসারের অধিক্ষেত্র রহিয়াছে।

ট্যাক্স রিকোভারি অফিসার কর্তৃক আদায়ের পদ্ধতি

২১৭। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ট্যাক্স রিকোভারি অফিসার ধারা ২১৬ এর অধীন সার্টিফিকেট প্রাপ্তির পর বোর্ড কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে প্রণীত বিধিমালা মোতাবেক করদাতার নিকট হইতে সার্টিফিকেটে বর্ণিত অর্থ নিম্নবর্ণিত এক বা একাধিক পদ্ধতিতে আদায় করিবেন, যথা:-

(ক) করদাতার যেকোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, অবরুদ্ধ বা ক্রোকপূর্বক বিক্রয় অথবা বাজেয়াপ্ত, অবরুদ্ধ বা ক্রোক না করিয়া বিক্রয়ের মাধ্যমে;

(খ) করদাতাকে গ্রেপ্তার এবং তাহাকে কারাগারে আটক রাখিবার মাধ্যমে;

(গ) করদাতার স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার জন্য রিসিভার নিয়োগের মাধ্যমে।

(২) ট্যাক্স রিকোভারি অফিসার, তাহার নিকট উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রেরিত সার্টিফিকেটে উল্লিখিত পরিমাণ অর্থ আদায়কালে খেলাপি করদাতার নিকট হইতে উক্ত অর্থ ছাড়াও একই পদ্ধতিতে বকেয়া কর আদায় কার্যক্রমের সহিত সংশ্লিষ্ট যেকোনো খরচ ও চার্জসহ কোনো নোটিশ বা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য ব্যয়িত অর্থও আদায় করিতে পারিবেন।

(৩) ধারা ২১৬ এর অধীন সার্টিফিকেট অগ্রায়ন করা হইয়াছে এইরূপ কোনো ট্যাক্স রিকোভারি অফিসার যদি তাহার অধিক্ষেত্রাধীন কোনো করদাতার স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়ের মাধ্যমে সম্পূর্ণ অর্থ আদায় করিতে সক্ষম না হন, কিন্তু তাহার নিকট এই মর্মে তথ্য থাকে যে, অন্য ট্যাক্স রিকোভারি অফিসারের অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় উক্ত করদাতার সম্পত্তি রহিয়াছে, তবে সেইক্ষেত্রে উক্ত ট্যাক্স রিকোভারি অফিসার যাহার অধিক্ষেত্রাধীন এলাকায় উক্ত করদাতার সম্পত্তি রহিয়াছে বা উক্ত করদাতা বসবাস করেন, তাহার নিকট সংশ্লিষ্ট সার্টিফিকেট পাঠাইতে পারিবেন, অতঃপর উক্ত সার্টিফিকেট প্রাপ্ত কর্মকর্তা এই অধ্যায়ের অধীন অবশিষ্ট অনাদায়ী অঙ্ক আদায়ের জন্য এইরূপভাবে অগ্রসর হইবেন, যেন তিনি উক্ত সার্টিফিকেটটি উপকর কমিশনারের নিকট হইতে প্রাপ্ত হইয়াছেন।

সার্টিফিকেট প্রত্যাহার এবং কার্যক্রম স্থগিতকরণের ক্ষমতা

২১৮। (১) ধারা ২১৬ এর অধীন কর আদায়ের লক্ষ্যে সার্টিফিকেট ইস্যু করা সত্ত্বেও, উপকর কমিশনার ট্যাক্স রিকোভারি অফিসারকে ইন্টিমেশন প্রদান করিয়া, তাহা প্রত্যাহার করিবার অথবা কোনো করণিক বা গাণিতিক ভুল সংশোধনের ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।

(২) যেই পরিমাণ করদাবি আদায়ের জন্য সার্টিফিকেট জারি করা হয়, আপিল বা এই আইনের আওতায় পরিচালিত অন্য কোনো কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে যদি তাহা হ্রাস পায়, কিন্তু আদেশটি চূড়ান্ত মীমাংসার লক্ষ্যে এই আইনের আওতায় আরও কার্যক্রম গ্রহণের আবশ্যকতা থাকে তবে সেইক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত পরবর্তী আপিল বা মামলার অন্য কোনো কার্যক্রম অমীমাংসিত থাকিবে ততক্ষণ পর্যন্ত উপকর কমিশনার সার্টিফিকেট হইতে হ্রাসকৃত অর্থের সমপরিমাণ অর্থ আদায় স্থগিত রাখিবেন।

(৩) বকেয়া কর আদায়ের লক্ষ্যে কোনো সার্টিফিকেট ইস্যু করিবার পর আপিল বা এই আইনের অধীন পরিচালিত অন্য কোনো কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে বকেয়া দাবির পরিমাণ হ্রাস পাইলে এবং আদেশটির বিষয়বস্তু আপিল বা এই আইনের অধীন পরিচালিত অন্য কোনো কার্যক্রম চূড়ান্ত এবং সমাপ্তিমূলক হইলে উপকর কমিশনার সার্টিফিকেটটির প্রয়োজনীয় সংশোধন বা, প্রয়োজ্য ক্ষেত্রে, প্রত্যাহার করিবেন।

(৪) উপকর কমিশনার কর আদায় সংক্রান্ত সার্টিফিকেটটি বাতিলকরণ, ভুল সংশোধন, কার্যক্রম স্থগিতকরণ, প্রত্যাহার বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, সংশোধন সংক্রান্ত আদেশ সম্পর্কে আদায়কারী কর্মকর্তাকে অবহিত করিবেন।

আদায়ের সার্টিফিকেটের বৈধতা বিবাদযোগ্য নহে

২১৯। উপকর কমিশনার ধারা ২১৬ এর অধীন কর আদায়ের নিমিত্তে ট্যাক্স রিকোভারি অফিসারের নিকট সার্টিফিকেট প্রেরণ করিলে করদাতা কর নির্ধারণের সঠিকতার বিষয়ে ট্যাক্স রিকোভারি অফিসারের নিকট আপত্তি তুলিবেন না এবং ট্যাক্স রিকোভারি অফিসার সার্টিফিকেটের কোনো গ্রাউন্ডের বিষয়ে কোনোরূপ আপত্তি গ্রহণ করিবেন না।

জেলা কালেক্টরের মাধ্যমে কর আদায়

২২০। (১) উপকর কমিশনার, যেই জেলায় তাহার অফিস অবস্থিত সেই জেলার কালেক্টর বরাবর অথবা যে জেলায় করদাতা বসবাস করেন বা সম্পত্তির মালিক বা ব্যবসা পরিচালনা করেন সেই জেলার কালেক্টর বরাবর বকেয়া পাওনা অর্থের পরিমাণ উল্লেখ করিয়া তাহার স্বাক্ষরযোগে সার্টিফিকেট প্রেরণ করিতে পারিবেন, এবং কালেক্টর এইরূপ সার্টিফিকেট প্রাপ্তির পর করদাতার নিকট হইতে উক্ত সার্টিফিকেটে উল্লিখিত বকেয়া অর্থ ভূমি রাজস্বের বকেয়ার ন্যায় বিবেচনা করত তাহা আদায়ের ব্যবস্থা করিবেন।

(২) জেলা কালেক্টরের অন্য কোনো ক্ষমতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, Code of Civil Procedure, 1908 (Act No. V of 1908) এর বিধান মোতাবেক ডিক্রির আওতায় অর্থ আদায়ের জন্য দেওয়ানি আদালতের যে ক্ষমতা রহিয়াছে, উপ-ধারা (১) এর অধীন তাহার নিকট প্রেরিত সার্টিফিকেটে উল্লিখিত বকেয়া আদায়ের জন্য জেলা কালেক্টরেরও সেই ক্ষমতা থাকিবে।

(৩) উপকর কমিশনার যেকোনো সময় উপ-ধারা (১) এর অধীন জেলা কালেক্টরের নিকট প্রেরিত সার্টিফিকেট প্রত্যাহার করিয়া আনিতে পারিবেন এবং এইরূপ প্রত্যাহার করিয়া আনিবার ফলে সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সমস্ত কার্যক্রম বাতিল হইবে।

(৪) সার্টিফিকেট প্রত্যাহার দ্বারা কালেক্টর কর্তৃক উক্ত প্রত্যাহারের পূর্ব আদায় ক্ষুণ্ন হইবে না, এইক্ষেত্রে আদায়কৃত অর্থের সমপরিমাণ অর্থের জন্য সার্টিফিকেট প্রত্যাহার করা হয় নাই মর্মে গণ্য হইবে; অথবা নূতন করিয়া সার্টিফিকেট ইস্যুর মাধ্যমে সার্টিফিকেট প্রত্যাহারের সময় আদায়যোগ্য অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো বাধা হইবে না।

আদায়ের অন্যান্য পদ্ধতি

২২১। (১) বকেয়া কর আদায়ের লক্ষ্যে ধারা ২১৬ বা ধারা ২২০ এর অধীন সার্টিফিকেট ইস্যু করা সত্ত্বেও, উপকর কমিশনার উপ-ধারা (২) বা (৩) এ বর্ণিত পদ্ধতিতে উহা আদায় করিতে পারিবেন।

(২) কোনো আপিল ফোরামে বিচারাধীন নহে করদাতার নিকট এইরূপ করদাবি আদায়ের উদ্দেশ্যে উপকর কমিশনার, করদাতাকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিয়া, কমিশনারের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে, উল্লিখিত করদাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত উক্ত করদাতার ব্যবসার স্থান হইতে যেকোনো পণ্য এবং সেবার স্থানান্তর নিষিদ্ধ করিতে পারিবেন এবং ব্যবসার স্থান বন্ধও করিতে পারিবেন অথবা এইরূপ কর আদায়ের জন্য যেকোনো সন্তোষজনক ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন।

(৩) করদাতার নিকট পাওনা করদাবি আদায়ের উদ্দেশ্যে, উপকর কমিশনার, লিখিত নোটিশ দ্বারা, নিম্নবর্ণিত যেকোনো ব্যক্তিকে নোটিশে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে বর্ণিত সরকারি কোষাগারে অর্থ জমাদান বা কর্তনপূর্বক অর্থ জমাদান করিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং, ক্ষেত্রমত, অর্থ বা পরিসম্পদ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন, যথা:-

(ক) যাহার নিকট করদাতার কোনো অর্থ বা পণ্য পাওনা রহিয়াছে বা পাওনা হইতে পারে;

(খ) যিনি করদাতার মালিকানাধীন অর্থ বা পণ্য ধারণ বা গ্রহণ বা নিষ্পত্তি নিয়ন্ত্রণ করেন বা পরবর্তীকালে ধারণ বা গ্রহণ বা নিষ্পত্তি নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবেন;

(গ) করদাতার পক্ষে করদাতার কোনো পরিসম্পদ, তাহা যেই প্রকারের হউক না কেন, ধারণ করেন বা তত্ত্বাবধান বা পরিচালনা করেন;

(ঘ) যিনি কোনো অনিবাসী করদাতার এজেন্ট হিসাবে অনিবাসী পক্ষে কোনো পরিসম্পদ বা পণ্য ধারণ বা গ্রহণ বা নিষ্পত্তি নিয়ন্ত্রণ করেন বা পরবর্তীকালে ধারণ বা গ্রহণ বা নিষ্পত্তি নিয়ন্ত্রণ করিতে পারেন;

(ঙ) যিনি করদাতার চাকরি হইতে আয় খাতে যেকোনো পরিমাণ অর্থ পরিশোধের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত; বা

(চ) যিনি করদাতার “ভাড়া হইতে আয়” খাতে যেকোনো পরিমাণ অর্থ পরিশোধ
করেন।

(৪) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (৩) এর বিধানমতে কোনো অর্থ পরিশোধ করিলে, এইরূপ পরিশোধ করদাতার নিয়ন্ত্রণাধীনে তাহার দ্বারা সম্পন্ন করা হইয়াছে এবং উপকর কমিশনার, উক্ত ব্যক্তির নিকট হইতে যেই পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করিয়া রশিদ দিবেন করদাতার নিকট হইতে উক্ত ব্যক্তি সেই পরিমাণ দায় হইতে মুক্তি পাইবেন মর্মে গণ্য হইবে।

(৫) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (৩) এর অধীন নোটিশ পাওয়া সত্ত্বেও নোটিশ অনুসারে অর্থ পরিশোধে বা কর্তনে ব্যর্থ হন, তবে নোটিশে বর্ণিত অর্থের জন্য তাহাকে খেলাপি করদাতা হিসাবে গণ্য করা হইবে এবং অর্থ আদায়ের জন্য তাহার বিরুদ্ধে এইরূপ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইতে পারে যাহাতে বকেয়া কর তাহার নিকট পাওনা এবং এইক্ষেত্রে এই অধ্যায়ের বিধানাবলি সমভাবে প্রযোজ্য হইবে।

(৬) উপকর কমিশনার যেকোনো সময় উপ-ধারা (৩) এর অধীন ইস্যুকৃত নোটিশ সংশোধন বা প্রত্যাহার করিতে পারিবেন অথবা এইরূপ নোটিশ অনুসারে যেকোনো অর্থ পরিশোধের সময় বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।

(৭) উপকর কমিশনার বকেয়া কর আদায়ের লক্ষ্যে করদাতার গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, বা অন্যান্য সেবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন বা বন্ধ করিবার জন্য সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নোটিশের মাধ্যমে নির্দেশ দিবেন এবং গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, বা অন্যান্য সেবা সরবরাহের দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তি এই ধারার অধীন নোটিশ প্রাপ্তির ২১ (একুশ) দিনের মধ্যে উক্ত সেবাসমূহের সংযোগ বিচ্ছিন্ন বা বন্ধ করিয়া দিবেন।

(৮) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (৬) এর অধীন প্রাপ্ত নোটিশ পরিপালনে ব্যর্থ হইলে উক্ত ব্যক্তি নিজে খেলাপি করদাতা হিসাবে গণ্য হইবেন এবং বকেয়া করদাবি পরিশোধের জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হইবেন।

(৯) যেইক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (৭) এর অধীন প্রাপ্ত নোটিশ পরিপালন করিয়া কোনো গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, বা অন্যান্য সেবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন বা বন্ধ করিয়াছেন সেইক্ষেত্রে উপকর কমিশনারের নিকট হইতে অনুমতি প্রাপ্তির পর উক্তরূপ সেবার সংযোগ পুনর্বহাল করিবেন।

(১০) যেইক্ষেত্রে কমিশনার নির্দেশ প্রদান করেন যে, উক্ত এলাকায় বলবৎযোগ্য বকেয়া পৌর কর আদায় বা বাংলাদেশের যেকোনো অংশে প্রযোজ্য আইন অনুসারে ধার্যকৃত স্থানীয় কর অথবা বাংলাদেশে বলবৎ অন্যান্য আইনে কর আদায়ের জন্য যেই প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়, সেই প্রক্রিয়ায় কর আদায় করিতে হইবে এবং সেইক্ষেত্রে উপকর কমিশনার বকেয়া অর্থ আদায়ের জন্য এইরূপ একই প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হইবেন।

(১১) উপ-ধারা (১০) এর আওতায় পৌর কর, স্থানীয় কর বা অন্যান্য কর আদায় করিবার জন্য কোনো বিধিবদ্ধ আইনের আওতায় প্রয়োগযোগ্য কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে বা মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৪৭ নং আইন), Customs Act, 1969 (Act No. IV of 1969) এর কর আদায় করিবার জন্য প্রয়োগযোগ্য কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কী ধরনের ক্ষমতা ও কর্তব্য কী পরিমাণে অনুশীলন করা হইবে, তাহা কমিশনার কর্তৃক নির্ধারণ করিয়া দেওয়া থাকিবে।

কর আদায়ে যুগপৎ ব্যবস্থা গ্রহণ

২২২। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন বা এই আইনের কোনো ধারা বা বিধানানুসারে কর আদায় কার্যক্রম চলমান থাকিলে তাহা এই আইন বা অন্য কোনো আইনের অন্য কোনো ধারা বা বিধানানুসারে অন্য কোনো প্রকারে কর আদায় কার্যক্রম গ্রহণকে বারিত করিবে না।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs