প্রিন্ট ভিউ

আয়কর আইন, ২০২৩

( ২০২৩ সনের ১২ নং আইন )

দ্বিতীয় অধ্যায়

অব্যাহতি ও বৈদেশিক কর ক্রেডিট

সংজ্ঞা

২৪৫। (১) এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে,-

(ক) “বাংলাদেশ কর” অর্থ এই আইনের বিধান অনুসারে আরোপিত আয়কর;

(খ) “বৈদেশিক কর” অর্থ, ধারা ২৪৪ এর বিধান অনুসারে, বিদেশি রাষ্ট্রের সহিত কার্যকর চুক্তির ক্ষেত্রে, উক্ত দেশের আইন অনুসারে আরোপযোগ্য কর যাহা চুক্তির অধীন সমন্বয়ে গ্রহণযোগ্য;

(গ) “বৈদেশিক আয়কর” অর্থ আয়করের সহিত সঙ্গতিপূর্ণ যেকোনো বৈদেশিক আয়কর।

(২) যেইক্ষেত্রে ধারা ২৪৪ এর অধীন কার্যকর চুক্তি অনুসারে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের আইনের অধীন আরোপযোগ্য কোনো কর আয়কর হিসাবে বিবেচনার করা হয়, সেইক্ষেত্রে সেই কর ক্ষেত্রমতে বিদেশি কর বা বৈদেশিক আয়কর ব্যতীত, বিদেশি কর হিসাবে বিবেচিত হইবে।

(৩) এই অধ্যায়ের কোনো চুক্তির অধীন অনুমোদিত রেয়াতের ক্ষেত্রে বিদেশি কর বা বৈদেশিক আয়কর সম্পর্কিত যেকোনো বরাত, যে দেশের সহিত উক্ত চুক্তি সম্পাদিত হইয়াছে, সেই দেশের আইনের অধীন সরকার কর্তৃক আরোপিত করের বরাত হিসাবে বিবেচিত হইবে।

বৈদেশিক কর ক্রেডিট

২৪৭। (১) এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, যেইক্ষেত্রে ধারা ২৪৪ এর অধীন সম্পাদিত চুক্তির আওতায়, যেকোনো আয়ের উপর আরোপিত বাংলাদেশে করের বিপরীতে সমন্বয় সুবিধা অনুমোদিত হয়, সেইক্ষেত্রে উক্ত চুক্তির বিধানাবলি সাপেক্ষে, আরোপযোগ্য কর এইরূপ সমন্বয় সুবিধার সমপরিমাণ অর্থ দ্বারা হ্রাস পাইবে।

(২) কোনো আয়করবর্ষে যে করদাতার আয়ের উপর কর আরোপযোগ্য হইয়াছে তিনি, যে সময়ের ভিত্তিতে উক্তরূপ আয় নিরূপিত হইয়াছে সেই সময়ে নিবাসী না থাকেন, তাহা হইলে উক্ত আয়করের বিপরীতে উপ-ধারা (১) এর অধীন সমন্বয় অনুমোদনযোগ্য হইবে না।

(৩) যেকোনো আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে করের বিপরীতে বৈদেশিক কর পরিশোধের সূত্রে অনুমোদনযোগ্য সমন্বয়ের পরিমাণ দ্বৈত করযোগ্য আয়ের উপর বর্ণিত করের গড় হারে নিরূপিত অর্থের পরিমাণকে অতিক্রান্ত করিবে না।

বৈদেশিক কর সমন্বয় অনুমোদনের উপর আয় গণনার কার্যকারিতা

২৪৮। (১) যেইক্ষেত্রে আয়ের মধ্যে লভ্যাংশ অন্তর্ভুক্ত হয়, এবং চুক্তির অধীন উক্ত ডিভিডেন্ডের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ করের বিপরীতে কোনো রেয়াত অনুমোদিত হইবে কিনা বা প্রদেয় রেয়াতের পরিমাণ কত হইবে, তাহা নিরূপণের লক্ষ্যে কোনো বৈদেশিক কর (সরাসরি দাবিযোগ্য বা লভ্যাংশের সূত্রে কর্তনযোগ্য হউক বা না হউক) বিবেচনা করা আবশ্যক, সেইক্ষেত্রে রেয়াতের পরিমাণ নিরূপণের উদ্দেশ্যে বিবেচিত লভ্যাংশের সহিত সম্পর্কিত বৈদেশিক করের সমপরিমাণ অংশ দ্বারা সংশ্লিষ্ট আয় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইয়াছে মর্মে বিবেচিত হইবে।

(২) যেইক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর অধীন, কোনো আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইয়াছে মর্মে বিবেচিত হয়, সেইক্ষেত্রে বৈদেশিক কর, সরাসরি বা বিয়োজনের মাধ্যমে, আরোপযোগ্য না হইলে, উহা লভ্যাংশ প্রদানকারী সংবিধিবদ্ধ সংস্থা কর্তৃক কোনো নির্দিষ্ট সময়ে প্রদত্ত লভ্যাংশের উপর পরিশোধকৃত বৈদেশিক কর; অথবা উক্ত লভ্যাংশ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা না হইলে, লভ্যাংশ প্রদেয় হইবার পূর্বে উক্ত সংবিধিবদ্ধ সংস্থা কর্তৃক সমাপ্তকৃত সর্বশেষ হিসাব প্রস্তুতকালীন সময়ে প্রদত্ত লভ্যাংশ বিবেচনায় আনিতে হইবে।

ব্যাখ্যা।-এই উপ-ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, “পরিশোধিত” অর্থ প্রদত্ত, জমাকৃত বা বণ্টনকৃত অথবা প্রদত্ত, জমাকৃত বা বণ্টনকৃত হইয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইবে।

(৩) এই ধারা এবং ধারা ৫৫ এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো আয়ের সূত্রে বৈদেশিক করের অংশবিশেষ বাংলাদেশ করের বিপরীতে রেয়াত অনুমোদিত না হইলে, উক্ত আয়ের পরিমাণ উক্ত বৈদেশিক করের অংশের সমপরিমাণ দ্বারা হ্রাস পাইয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইবে।

(৪) যেইক্ষেত্রে বাংলাদেশ হইতে গৃহীত অর্থের ভিত্তিতে কোনো আয়কর পরিশোধযোগ্য হয়, সেইক্ষেত্রে উক্ত অর্থের পরিমাণ আয়করের বিপরীতে রেয়াত হিসাবে অনুমোদিত সুবিধার সমহারে বৃদ্ধি পাইয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইবে।

(৫) ধারা ২৪৭ এর উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত হার নির্ধারণের উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তির মোট আয় গণনাকালে এই ধারার উপ-ধারা (১) এবং (৩) এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে না, এবং এই ধারার উপ-ধারা (৪) অনুসারে ‘আয়করের বিপরীতে অনুমোদিত রেয়াত সুবিধা’ ‘আয়ের সূত্রে প্রদত্ত বৈদেশিক কর’ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হইবে।

বৈদেশিক করের ক্রেডিট দাবির সীমাবদ্ধতা

২৪৯। (১) উপ-ধারা (২) এর বিধানাবলি সাপেক্ষে, কোনো আয়ের সূত্রে প্রদত্ত বৈদেশিক করের জন্য ক্রেডিট হিসাবে অনুমোদন প্রাপ্তির দাবি, যে করবর্ষে উক্তরূপ আয় বাংলাদেশে আরোপ করা হইয়াছিল বা আরোপযোগ্য হইত সেই বৎসরের পরবর্তী ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে যে কার্যালয়ে উক্ত পরিশোধকারীর আয়কর আরোপ করা হইয়াছে সেই কার্যালয়ের উপকর কমিশনারের নিকট উত্থাপন করিতে হইবে।

(২) যেইক্ষেত্রে বাংলাদেশে পরিশোধযোগ্য কোনো করের সমন্বয়ের ফলশ্রুতিতে বা অন্য কোনো রাষ্ট্রের আইন দ্বারা পরিশোধযোগ্য কোনো করের সমন্বয়ের ফলশ্রুতিতে চুক্তির অধীন প্রদত্ত সুবিধা অতিরিক্ত বা অপর্যাপ্ত হিসাবে গণ্য হয়, সেইক্ষেত্রে সমন্বয়ের ফলশ্রুতিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর রিফান্ডের দাবি বা নূতন করিয়া কর নির্ধারণ করিবার উদ্দেশ্যে এই আইনে বর্ণিত সময়সীমা প্রযোজ্য হইবে না, যদি এইরূপ সকল কর নির্ধারণী, সমন্বয় ও তাহা হইতে উদ্ভূত অন্যান্য নিরূপণ বাংলাদেশে বা অন্যত্র সম্পন্ন হইবার পরবর্তী ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে কর নির্ধারণী বা রিফান্ডের দাবি পূরণ না করা হয়।

আপিল

২৫০। উপকর কমিশনার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশে কোনো পরিশোধকারী কর্তৃক দাবিকৃত বৈদেশিক কর রেয়াত, পূর্ণ বা আংশিক, অননুমোদন করা হইলে, উপকর কমিশনার কর্তৃক প্রদত্ত উক্ত আদেশ পরিশোধকারীর নিকট পৌঁছাইবার ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে পরিশোধকারী আপিল যুগ্ম কমিশনার এর নিকট আপিল করিতে পারিবেন এবং একইভাবে অংশ ২০ এর দ্বিতীয় অধ্যায়ের বিধানাবলি, প্রয়োজনীয় সংশোধনসহ প্রযোজ্য হইবে।

দ্বৈত কর চুক্তি রহিয়াছে এইরূপ ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের বিধানাবলি

২৫১। (১) যেইক্ষেত্রে সরকারের সহিত সম্পাদিত কোনো চুক্তি ধারা ২৪৪ এর বিধানাবলি অনুসারে এইরূপে কার্যকর থাকে যে, উক্তরূপ চুক্তিবদ্ধ কোনো দেশে নিবাসী কোনো ব্যক্তির পক্ষে অর্জিত কোনো বিশেষ শ্রেণির আয় বাংলাদেশে কর অব্যাহতি পাইবে এবং এই আইনের বিধানাবলি অনুসারে উক্ত আয় হইতে কর কতর্নযোগ্য হইবে, সেইক্ষেত্রে এই ধারার বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।

(২) যেইক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি এইরূপ যেকোনো শ্রেণিভুক্ত আয় (এই অনুচ্ছেদে বাংলাদেশি পরিশোধকারী হিসাবে উল্লিখিত) বর্ণিত দেশের আয় ভোগের অধিকারী ব্যক্তিকে (এই অনুচ্ছেদে অনিবাসী হিসাবে উল্লিখিত) প্রদান করেন, সেইক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি বোর্ড দ্বারা বা বোর্ডের অধীন নির্দেশিত নোটিশের অধীন অনিবাসীকে এইরূপ যেকোনো আয় কর কর্তন ব্যতিরেকে পরিশোধ করিতে পারিবেন এবং এইরূপ নোটিশ যেই তারিখে জারি করা হইয়াছিল, তাহা সেই তারিখে বাংলাদেশি পরিশোধকারী, উক্ত নোটিশে উল্লিখিত অনিবাসী ব্যক্তির নিকট নোটিশে বর্ণিত উৎস হইতে এই ধারার বিধানাবলির অধীন কোনো প্রকার কর্তন ব্যতিরেকে যেকোনো পরিমাণ আয়, বা এইরূপ কোনো বৎসরের সম্ভাব্য আয়, যাহার উপর চুক্তি বলবৎ রহিয়াছে, পরিশোধ করিতে হইবে।

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রদত্ত যেকোনো নোটিশ অকার্যকর মর্মে গণ্য হইবে যদি কোনো ক্ষেত্রে, এইরূপ বর্ণনা থাকুক বা নাই থাকুক, বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশ দ্বারা বা তাহার অধীন জারীকৃত বাতিল নোটিশ দ্বারা তাহা অকার্যকর হয়; এবং যদি বাংলাদেশি পরিশোধকারী জানামতে এইরূপ কোনো ঘটনা সংঘটিত হয় বা তাহাকে বাতিল নোটিশ প্রদান করা হয়, তাহা হইলে এইরূপ কোনো ঘটনা বাংলাদেশি পরিশোধকারীর গোচরীভূত হইবার পর বা, ক্ষেত্রমতে, বাংলাদেশি পরিশোধকারী নোটিশ প্রাপ্তির পর বাংলাদেশি পরিশোধকারী কর্তৃক উক্ত অনিবাসীকে কোনো অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলি অনুসারে কর কর্তন করিতে হইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs