প্রিন্ট ভিউ
দ্বিতীয় অধ্যায়
আপিল এবং রেফারেন্স
২৮৬। (১) কোনো করদাতা আয়কর কর্তৃপক্ষের আদেশে সংক্ষুব্ধ হইলে সংশ্লিষ্ট আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষের নিকট নিম্নবর্ণিত বিষয়ে আপিল করিতে পারিবেন, যথা:-
(ক) আয় নির্ধারণ;
(খ) পরিশোধ্য করদায় নিরূপণ;
(গ) ক্ষতির সমন্বয় বা জের টানা;
(ঘ) দণ্ড বা সুদ আরোপ;
(ঙ) চার্জ এবং সারচার্জ বা অন্য কোনো অর্থ হিসাব;
(চ) প্রত্যর্পণের পরিমাণ নিরূপণ;
(ছ) করের ক্রেডিট; এবং
(জ) কোনো প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত।
(২) উপ-ধারা (৩) এর বিধান সাপেক্ষে, নিম্নবর্ণিত বিষয়ে কেবল কমিশনার (আপিল) বরাবর আপিল করা যাইবে, যথা:-
(ক) কোম্পানি কর্তৃক আপিল;
(খ) ধারা ২১৩ এর অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশের বিরুদ্ধে আপিল; এবং
(গ) আন্তর্জাতিক লেনদেন সংশ্লিষ্ট সমন্বয় বা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল।
(৩) বোর্ড-
(ক) আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষের উপর কোনো আপিল নিষ্পত্তির দায়িত্ব অর্পণ করিতে পারিবে; এবং
(খ) এক আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে অন্য আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল নিষ্পত্তির দায়িত্ব হস্তান্তর করিতে পারিবে।
(৪) করারোপিত শেয়ার আয় হিসাবে পরিগণিত কোনো আয়ের ক্ষেত্রে আপিল করা যাইবে না।
(৫) নিম্নবর্ণিত সারণীতে উল্লিখিত ক্ষেত্রে, কর নিরূপণ আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করা যাইবে না, যথা:-
সারণী
রিটার্ন দাখিলের পরিস্থিতি |
শর্ত |
(১) |
(২) |
যেইক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল করা হইয়াছে |
1[স্বীকৃত করদায়] পরিশোধ করা হয় নাই |
যেইক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল করা হয় নাই |
উপকর কমিশনার কর্তৃক নির্ধারিত করের ন্যূনতম ১০% (দশ শতাংশ) কর পরিশোধ করা হয় নাই: |
তবে শর্ত থাকে যে, যদি আপিলকারী আপিল দায়েরের পূর্বে তাহার রিটার্নের ভিত্তিতে কর পরিশোধ করিয়া থাকেন এবং আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, সন্তোষজনক কারণে আপিলকারী রিটার্ন দাখিলের পূর্বে কর পরিশোধ করিতে পারেন নাই, তাহা হইলে আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ শুনানির জন্য আপিল গ্রহণ করিতে পারিবে।
২৮৭। (১) উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, ধারা ২৮৬ এর অধীন প্রত্যেক আপিল নির্ধারিত ফরমে এবং পদ্ধতিতে করিতে হইবে।
(২) বোর্ড, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা,-
ক) ইলেক্ট্রনিক্যালি বা অন্য কোনো যন্ত্রে পাঠযোগ্য বা কম্পিউটারে পাঠযোগ্য মাধ্যমে আপিল দায়েরের ক্ষেত্রসমূহ নির্ধারণ করিতে পারিবে; এবং
(খ) উক্ত আপিল দায়েরের ফরম ও পদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(৩) আপিলকারীকে আপিল দায়েরের তারিখে বা উহার পূর্বে ২০০ (দুইশত) টাকা ফি পরিশোধ করিতে হইবে।
(৪) আপিলকারীকে উপ-ধারা (৫) এর বিধান সাপেক্ষে, ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে আপিল দায়ের করিতে হইবে, যদি-
(ক) কর নির্ধারণ বা দণ্ড সংক্রান্ত হইলে, উক্তরূপ কর নির্ধারণ বা, ক্ষেত্রমত, দণ্ড সংশ্লিষ্ট করদাবি নোটিশ জারির তারিখ হইতে; এবং
(খ) অন্যান্য ক্ষেত্রে, যে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হয়, তাহা জারির তারিখ হইতে।
(৫) আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (৪) এ বর্ণিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পরও আপিল গ্রহণ করিতে পারিবেন, যদি উহার নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত সময়সীমার মধ্যে সংশ্লিষ্ট আপিলকারীর আপিল দায়েরকরণে ব্যর্থ হইবার পর্যাপ্ত কারণ বিদ্যমান ছিল।
২৮৮। (১) আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ আপিল শুনানির জন্য তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করিবেন, এবং তৎসম্পর্কিত একটি নোটিশ আপিলকারী ও সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারকে প্রদান করিবেন।
(২) আপিলকারী এবং উপকর কমিশনার ব্যক্তিগতভাবে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে আপিল শুনানিতে অংশগ্রহণের অধিকার সংরক্ষণ করিবেন।
(৩) আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন বিবেচনা করিলে, সময় সময়, আপিল শুনানি মুলতবি রাখিতে পারিবেন।
(৪) আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ শুনানিকালে বা তৎপূর্বে আবেদনে উপস্থাপিত কারণ ছাড়াও আপিলের অন্যান্য কারণ অন্তর্ভুক্ত করিবার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে, যদি কর্তৃপক্ষ এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, আপিল আবেদন ফরমে ইচ্ছাকৃতভাবে এইরূপ কারণসমূহ বাদ দেওয়া হয় নাই এবং উক্তরূপ বাদ পড়া অযৌক্তিক ছিল না।
(৫) আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ আপিল নিস্পত্তির পূর্বে যেইরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবে সেইরূপ তদন্ত সম্পাদন করিতে পারিবে অথবা প্রয়োজন বিবেচনা করিলে আপিলের কারণ সম্পর্কিত তথ্যাদি তলব করিতে পারিবে অথবা উপকর কমিশনার কর্তৃক বিষয়টি সম্পর্কে অধিকতর তদন্ত সম্পাদনের ব্যবস্থা করিতে পারিবে।
(৬) আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ আপিল শুনানি চলাকালে এইরূপ কোনো দলিলাদি বা সাক্ষ্য-প্রমাণ গ্রহণ করিতে পারিবেন না, যাহা উপকর কমিশনারের নিকট সময়মত উপস্থাপন করা হয় নাই, যদি না তাহার নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এইরূপ দলিলাদি বা সাক্ষ্য প্রমাণ যুক্তিসঙ্গত কারণে উপকর কমিশনারের নিকট উপস্থাপন করা সম্ভব ছিল না।
২৮৯। (১) কোনো আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ –
(ক) কর নির্ধারণী আদেশের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট কর নির্ধারণ চূড়ান্তকরণ, হ্রাস, বর্ধিত, নাকচ বা রদ করিতে পারিবে;
(খ) জরিমানা আরোপের আদেশ সংক্রান্ত মামলায়, এইরূপ আদেশ চূড়ান্তকরণ, নাকচ বা বাতিল অথবা ভিন্ন পন্থায় জরিমানা বৃদ্ধি বা হ্রাস করিতে পারিবে; এবং
(গ) অন্য যেকোনো মামলায়, কর্তৃপক্ষ যেইরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবে, সেইরূপ আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(২) ধারা ৩৩৫ এর বিধানাবলি অনুসারে করদাতার উপর নোটিশ জারি করা হয় নাই মর্মে অতিরিক্ত কর কমিশনার (আপিল) বা কমিশনার (আপিল) এর নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান না হইলে, কোনো কর নির্ধারণী বা জরিমানা আরোপের আদেশ নাকচ করা যাইবে না।
(৩) আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ কোনো কর নির্ধারণীতে করের পরিমাণ বা আরোপিত জরিমানার অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি অথবা কর প্রত্যার্পনের ক্ষেত্রে প্রদেয় অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি বা হ্রাস করিতে পারিবেন না, যদি না আপিলকারীকে এইরূপ বৃদ্ধি বা হ্রাসের কারণ দর্শানোর যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান না করা হয়।
(৪) আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিষ্পত্তিকৃত আপিলের রায় লিখিতভাবে প্রদান করিতে হইবে এবং নিষ্পত্তির বিষয়বস্তু, তৎসম্পর্কিত সিদ্ধান্ত ও সিদ্ধান্তের সমর্থনে যথাযথ কারণসমূহের উল্লেখ করিতে হইবে।
(৫) যেইক্ষেত্রে কোনো আপিল মামলার ফলে কোনো ফার্ম বা ব্যক্তিসংঘের কর নির্ধারণী আদেশে কোনো পরিবর্তন আনীত হয়, সেইক্ষেত্রে আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ ফার্মের অংশীদার বা ব্যক্তিসংঘের সদস্যদের আয়কর নির্ধারণীতে সেই অনুযায়ী সংশোধনী আনয়নের জন্য উপকর কমিশনারকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(৬) কোনো আপিল মামলা নিষ্পত্তির পর আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ তৎকর্তৃক জারীকৃত আদেশ প্রদানের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্ত আদেশ জারির বিষয়টি আপিলকারী, উপকর কমিশনার এবং কমিশনারকে অবহিত করিবে।
(৭) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো আপিল যেই তারিখে আপিল দায়ের করা হইয়াছিল, সেই তারিখের সংশ্লিষ্ট মাস সমাপ্তির পরবর্তী ১৫০ (একশত পঞ্চাশ) দিনের মধ্যে যদি আপিল আয়কর কর্তৃপক্ষ সেটির উপর কোনো আদেশ প্রদানে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে আপিলটি অনুমোদিত হইয়াছে মর্মে গণ্য হইবে।
২৯০। ধারা ২১৭ এর অধীন ট্যাক্স রিকোভারি অফিসারের জারীকৃত আদেশে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি আদেশটি জারির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে এই মর্মে কর কমিশনার কর্তৃক নির্ধারিত পরিদর্শী অতিরিক্ত কর কমিশনারের নিকট আপিল করিতে পারিবেন, এবং এইরূপ আপিলের ক্ষেত্রে, পরিদর্শী অতিরিক্ত কর কমিশনারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
২৯১। (১) যদি কোনো করদাতা ধারা ২৭২ অথবা ২৮৯ এর অধীন, অতিরিক্ত কর কমিশনার (আপিল) বা, ক্ষেত্রমত, কমিশনার (আপিল) কর্তৃক জারীকৃত আদেশে সংক্ষুদ্ধ হন, তাহা হইলে তিনি আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করিতে পারিবেন।
(২) করদাতা, অতিরিক্ত কর কমিশনার (আপিল) বা, ক্ষেত্রমত, কমিশনার (আপিল) এর আদেশের ভিত্তিতে ধার্যকৃত কর, এবং 2[স্বীকৃত করদায়ের] মধ্যকার যে পার্থক্য হইবে, তাহার ১০% (দশ শতাংশ), কর পরিশোধ না করিয়া থাকিলে, অতিরিক্ত কর কমিশনার (আপিল) বা, ক্ষেত্রমত, কমিশনার (আপিল) কর্তৃক প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো আপিল দায়ের করিতে পারিবেন না।
(৩) আপিলকারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে কর কমিশনার, আবেদনে উল্লিখিত কারণ তাহার নিকট সন্তোষজনক প্রতীয়মান হইলে, উপ-ধারা (২) এর অধীন পরিশোধের বাধ্যবাধকতা শিথিল করিতে পারিবেন এবং আবেদন প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে তিনি যেইরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন সেইরূপ আদেশ প্রদান করিবেন।
(৪) উপকর কমিশনার কর কমিশনারের পূর্বানুমোদন গ্রহণপূর্বক ধারা ২৮৯ এর অধীন অতিরিক্ত কর কমিশনার (আপিল) বা, ক্ষেত্রমত, কমিশনার (আপিল) কর্তৃক প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করিতে পারিবেন।
(৫) যে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হইবে সেই আদেশ সম্পর্কে করদাতা অথবা, ক্ষেত্রমত, কমিশনারকে অবহিত করিবার পরবর্তী ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে উপ-ধারা (১) অথবা উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রত্যেক আপিল দাখিল করিতে হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, নির্ধারিত ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে আপিল দায়ের করিতে ব্যর্থ হইলেও, যদি আপিল ট্রাইব্যুনাল এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, উক্ত ব্যর্থতার জন্য পর্যাপ্ত কারণ বিদ্যমান ছিল, তাহা হইলে উক্ত মেয়াদপূর্তির পরও উক্ত আপিল গৃহীত হইবে।
(৬) নির্ধারিত ফরমে এবং পদ্ধতিতে প্রতিপাদনপূর্বক আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করিতে হইবে এবং উপ-ধারা (২) এর ক্ষেত্র ব্যতীত, অন্যান্য ক্ষেত্রে উত্থাপিত আপিল আবেদনের সহিত ১ (এক) হাজার টাকা ফি প্রদান করিতে হইবে।
(৭) বোর্ড, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা,-
(ক) ইলেক্ট্রনিক্যালি বা অন্য কোনো যন্ত্রে পাঠযোগ্য বা কম্পিউটারে পাঠযোগ্য মাধ্যমে আপিল দায়েরের ক্ষেত্রসমূহ নির্ধারণ করিতে পারিবে; এবং
(খ) উক্ত আপিল দায়ের করিবার ফরম ও পদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
২৯২। (১) আপিল ট্রাইব্যুনাল আপিল মামলার উভয় পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদানের পর আপিলটির ক্ষেত্রে যেইরূপ যথাযথ বিবেচনা করিবে সেইরূপ আদেশ প্রদান করিবে।
(২) কোনো আপিল নিষ্পত্তির প্রাক্কালে আপিল ট্রাইব্যুনাল আপিল সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য তলব করিতে পারিবে অথবা উপকর কমিশনার কর্তৃক এতদ্বিষয়ে অধিকতর তদন্তের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
(৩) যেইক্ষেত্রে আপিল মামলার কারণে কোনো ফার্ম বা ব্যক্তিসংঘের কর নির্ধারণী আদেশে কোনো পরিবর্তন আনীত হয়, অথবা ফার্ম বা ব্যক্তিসংঘের কর নির্ধারণী আদেশ নূতনভাবে করিতে হয়, সেইক্ষেত্রে আপিল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক আনীত উক্ত পরিবর্তন মোতাবেক উপকর কমিশনারকে উক্ত ফার্মের অংশীদার বা ব্যক্তিসংঘের সংশ্লিষ্ট কর নির্ধারণী সংশোধনের নির্দেশ প্রদান করিবে।
(৪) কোনো আপিল মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আপিল ট্রাইব্যুনাল তৎকর্তৃক জারীকৃত আদেশ প্রদানের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্ত আদেশটি আপিলকারীকে এবং কমিশনারকে অবহিত করিবেন।
(৫) এই অধ্যায়ে বর্ণিত ক্ষেত্র ব্যতীত আপিল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কোনো আপিলের বিষয়ে প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
(৬) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো করদাতা কর্তৃক আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল আবেদন দাখিল করা হইলে, যে মাসে উহা দাখিল করা হইয়াছে, তৎপরবর্তী ১৮০ (একশত আশি) দিন অতিবাহিত হইবার পূর্বে আপিল ট্রাইব্যুনাল উক্ত আপিলের উপর কোনো আদেশ প্রদানে ব্যর্থ হইলে, আপিলটি অনুমোদিত হইয়াছে মর্মে গণ্য করা হইবে এবং যেইক্ষেত্রে ২ (দুই) সদস্য বিশিষ্ট আপিল ট্রাইব্যুনাল মামলা শুনানি করেন এবং সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে দ্বিমত পোষণের কারণে একজন অতিরিক্ত সদস্য নিয়োগ করা হইলে, উক্ত মেয়াদ হইবে যেই মাসে আপিল দাখিল করা হইয়াছে, তৎপরবর্তী ২৪০ (দুইশত চল্লিশ) দিন।
২৯৩। (১) ধারা ২৯২ এর অধীন করদাতা অথবা কমিশনার কর্তৃক আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশ প্রাপ্ত হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে কমিশনার বা করদাতা এইরূপ আদেশ হইতে উদ্ভূত কোনো আইনি প্রশ্নে বিষয়টি হাইকোর্ট বিভাগে রেফারেন্স মামলার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করিতে চাহিলে এই উদ্দেশ্যে নির্ধারিত ফরমে হাইকোর্ট বিভাগ বরাবর আবেদন করিতে পারিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, কর আপিল ট্রাইব্যুনালের কোনো আদেশের বিরুদ্ধে উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো রেফারেন্স মামলা দায়ের করা যাইবে না, যদি না করদাতা নিম্নবর্ণিত হারে ফি এবং কর পরিশোধ করেন, যথা:-
(ক) করদাতার ক্ষেত্রে আবেদনের সহিত ২ (দুই) হাজার টাকা ফি সংযুক্ত করা না হয়; এবং
(খ) যেইক্ষেত্রে করদাবি ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অতিক্রম না করে, সেইক্ষেত্রে যদি আপিল ট্রাইব্যুনলের আদেশের ভিত্তিতে নির্ধারিত কর এবং 3[স্বীকৃত করদায়ের] মধ্যকার পার্থক্যের সমপরিমাণ অর্থের ১৫% (পনেরো শতাংশ) করদাতা কর্তৃক পরিশোধ না করা হয়;
(গ) যেইক্ষেত্রে করদাবি ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অতিক্রম করে, সেইক্ষেত্রে যদি আপিল ট্রাইব্যুনলের আদেশের ভিত্তিতে নির্ধারিত কর এবং 4[স্বীকৃত করদায়ের] মধ্যকার পার্থক্যের সমপরিমাণ অর্থের ২৫% (পঁচিশ শতাংশ) করদাতা কর্তৃক পরিশোধ না করা হয়।
(২) বোর্ড, করদাতার আবেদনের প্রেক্ষিতে, উপ-ধারা (১) এর অধীন ফি ব্যতীত এইরূপ পরিশোধের পরিমাণ হ্রাস বা মওকুফ করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন ৩ (তিন) প্রস্থে করিতে হইবে এবং এর সহিত নিম্নবর্ণিত দলিলাদি সংযোজন করিতে হইবে, যথা:-
(ক) আপিল ট্রাইব্যুনালের যে আদেশে আইনগত প্রশ্নের উদ্ভব হইয়াছে, সেই আদেশের সত্যায়িত ৩ (তিন) টি অনুলিপি;
(খ) উপকর কমিশনার, পরিদর্শী অতিরিক্ত কর কমিশনার অথবা আপিল অতিরিক্ত বা যুগ্ম কমিশনার অথবা, ক্ষেত্রমত, কর কমিশনার (আপিল), এর যে আদেশ আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিলের বিষয়বস্তু ছিল উহার সত্যায়িত ৩ (তিন) টি অনুলিপি, এবং
(গ) আবেদনপত্রের বিষয়বস্তু অনুসারে উদ্ভূত আইনগত প্রশ্ন সম্পর্কিত অন্য যেকোনো দলিলের ৩ (তিন) টি সত্যায়িত অনুলিপি, যাহা দফা (ক) বা (খ)-তে উল্লিখিত আদেশের সহিত সংশ্লিষ্ট মামলার কার্যক্রমে, উপকর কমিশনার, পরিদর্শী অতিরিক্ত কর কমিশনার অথবা কমিশনার (আপিল) অথবা ক্ষেত্রমত, আপিল ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হইয়াছিল।
(৪) যেইক্ষেত্রে করদাতা বাদী, সেইক্ষেত্রে কমিশনার বিবাদী এবং যেইক্ষেত্রে কমিশনার বাদী সেইক্ষেত্রে করদাতা বিবাদী হিসাবে গণ্য হইবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, করদাতার মৃত্যু ঘটিলে বা অন্য কেহ তাহার স্থলাভিষিক্ত হইলে বা করদাতা একটি অবসায়িত কোম্পানি হইলে আবেদন বাতিলযোগ্য হইবে না, এবং করদাতা বাদী হইলে করদাতার নির্বাহক, প্রশাসক বা উত্তরাধিকারী বা অন্য আইনানুগ প্রতিনিধি কর্তৃক, অথবা করদাতা বিবাদী হইলে, পক্ষে বা বিপক্ষে, কিংবা ক্ষেত্রমত, অবসায়ক বা প্রাপকের দ্বারা আবেদনটি সক্রিয় থাকিবে।
(৫) আবেদনটির শুনানির তারিখ ধার্য সংক্রান্ত নোটিশ প্রাপ্তির পর বিবাদী কর্তৃক শুনানির অন্যূন ৭ (সাত) দিন পূর্বে উক্ত আবেদন সংক্রান্ত একটি লিখিত জবাব দাখিল করিতে হইবে; এবং আপিল ট্রাইব্যুনালের সংশ্লিষ্ট আদেশের সূত্রে বাদী কর্তৃক আইনগত প্রশ্ন সত্যিই উত্থাপিত হইয়াছিল কিনা তাহা স্পষ্টরূপে উক্ত জবাবে বর্ণনা স্বীকার বা অস্বীকার করিতে হইবে।
(৬) বাদী কর্তৃক উত্থাপিত প্রশ্নটি বিবাদীর মতানুসারে ত্রুটিপূর্ণ মর্মে গণ্য হইলে, যে প্রেক্ষাপটে তাহা ত্রুটিপূর্ণ হইতে পারে, তাহা উপর্যুক্ত জবাবে বর্ণনা করিতে হইবে এবং সংশ্লিষ্ট আদেশে কোনো আইনগত প্রশ্ন নিহিত থাকিলে প্রশ্নটি প্রকৃত অর্থে কী হইতে পারে তাহা সেই জবাবে উল্লেখ করিতে হইবে; এবং জবাবটি ৩ (তিন) প্রস্থে দাখিল করিতে হইবে এবং আবেদনপত্রের সহিত উত্থাপিত প্রশ্নটির সহিত সম্পৃক্ত যাবতীয় দলিলপত্র সংযুক্ত করিতে হইবে যাহা উপ-ধারা (২) এর দফা (ক) অথবা (খ)-তে বর্ণিত কোনো আদেশের সহিত সম্পৃক্ত কার্যক্রমের প্রয়োজনে উপকর কমিশনার, পরিদর্শী অতিরিক্ত কর কমিশনার, অতিরিক্ত কর কমিশনার (আপিল), কমিশনার (আপিল) অথবা, ক্ষেত্রমত, আপিল ট্রাইব্যুনালের বরাবর সরবরাহ করা হইয়াছিল।
(৭) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদনের ক্ষেত্রে Limitation Act, 1908 (Act No. IX of 1908) এর section 5 প্রযোজ্য হইবে।
২৯৪। (১) যেইক্ষেত্রে ধারা ২৯৩ এর অধীন কোনো রেফারেন্স মামলা হাইকোর্ট বিভাগে আনীত হয়, সেইক্ষেত্রে অন্তত ২ (দুই) জন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ইহার উপর শুনানি করিবে এবং এইক্ষেত্রে যতদূর সম্ভব Code of Civil Procedure 1908 (Act No. V of 1908) এর section 98 এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।
(২) হাইকোর্ট বিভাগ ধারা ২৯৩ এর অধীন আনীত রেফারেন্স মামলার উপর শুনানি গ্রহণের পর মামলাটিতে উত্থাপিত আইনগত জটিলতা নিরসনে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে এবং উক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রেক্ষাপট বর্ণনাক্রমে রায় প্রদান করিবে এবং আদালতের সীলমোহরাঙ্কন করিয়া রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষরযোগে এইরূপ, রায়ের একটি অনুলিপি আপিল ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করিবে এবং ট্রাইব্যুনাল উক্তরূপ রায়ের সহিত সামঞ্জস্য বিধানপূর্বক নিষ্পত্তির লক্ষ্যে যেইরূপ আবশ্যক গণ্য করিবে সেইরূপ আদেশ জারি করিবে।
(৩) ধারা ২৯৩ এর অধীন হাইকোর্ট বিভাগের রেফারেন্স মামলার ব্যয়সমূহ আদালতের স্ববিবেচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত হইবে।
(৪) ধারা ২৯৩ এর অধীন হাইকোর্ট বিভাগে রেফারেন্স মামলা যেভাবেই গৃহীত বা দায়েরকৃত হউক না কেন, উক্ত মামলার কর আদায়ের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগ কোনো স্থগিতাদেশ জারি না করিয়া থাকিলে, কর নির্ধারণীর ভিত্তিতে কর পরিশোধযোগ্য হইবে।
২৯৫। (১) ধারা ২৯৪ এর অধীন হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত কোনো রায়ের ক্ষেত্রে, হাইকোর্ট বিভাগ যদি উক্ত রায় আপিল বিভাগে আপিলযোগ্য মর্মে প্রত্যয়ন করে, তাহা হইলে সেইক্ষেত্রে আপিল করা যাইবে।
(২) হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক Code of Civil Procedure 1908 (Act No. V of 1908) এর বিধানাবলি ডিক্রির ক্ষেত্রে যেইভাবে প্রয়োগ করা হয়, আপিল বিভাগে এই ধারার অধীন বর্ণিত আপিলের ক্ষেত্রে উক্ত বিধানাবলি যতদূর সম্ভব, সেইভাবে প্রয়োগযোগ্য হইবে:
তবে শর্ত থাকে যে, এই ধারার কোনো কিছুই ধারা ২৯৪ এর উপ-ধারা (২) বা (৪) এর বিধানাবলিকে প্রভাবিত করিয়াছে মর্মে ব্যক্ত হইবে না:
আরও শর্ত থাকে যে, আপিল বিভাগের আদেশ হিসাবে যে ব্যয়াদি অনুমোদিত হয়, তদসংক্রান্ত আদেশ বাস্তবায়নের নিমিত্ত আনীত দায়েরকৃত পিটিশন হাইকোর্ট বিভাগ উহার অধস্তন যেকোনো আদালতে সরবরাহ করিতে পারিবে।
(৩) যেইক্ষেত্রে এই ধারার অধীন হাইকোর্ট বিভাগের প্রদত্ত রায় পরিবর্তিত হয়, সেইক্ষেত্রে ধারা ২৯৪ এর উপ-ধারা (২) ও (৪) এ বর্ণিত হাইকোর্ট বিভাগের রায় কার্যকর করিবার যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় সেই একই পদ্ধতিতে আপিল বিভাগের আদেশের কার্যকারিতা প্রদান করিতে হইবে।
(৪) ব্যয় এবং কর পরিশোধ সংক্রান্ত ধারা ২৯৪ এর উপ-ধারা (৩) ও (৪) এর বিধানাবলি হাইকোর্ট বিভাগে রেফারেন্স মামলায় ধারা ২৯৪ এর অধীন যেভাবে প্রয়োগ হয়, আপিল বিভাগে আপিলের ক্ষেত্রেও উক্ত বিধানসমূহ সমভাবে প্রয়োগযোগ্য হইবে।