প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন আইন, ২০২৩

( ২০২৩ সনের ২৫ নং আইন )

চতুর্থ অধ্যায়

কর্পোরেশনের আর্থিক ব্যবস্থাপনা, ইত্যাদি

ঋণ প্রদান

২৯। (১) কর্পোরেশন কুটির শিল্প, অতি ক্ষুদ্র শিল্প, ক্ষুদ্র শিল্প, মাঝারি শিল্প এবং হস্ত ও কারু শিল্পখাতে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করিতে পারিবে।

(২) কর্পোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত ঋণের উপর আরোপিত সুদের হার, সময় সময়, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।

ঋণ বা চাঁদার জামানত

৩০। কর্পোরেশন কর্তৃক কোনো ঋণ বা চাঁদা প্রদান করা যাইবে না, যদি না উহা স্থাবর বা অস্থাবর কোনো সম্পত্তির পণ, বন্ধক, দায়বদ্ধকরণ বা অনুরূপ সম্পত্তি স্বত্বনিয়োগ দ্বারা পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করা হয় :

তবে শর্ত থাকে যে, ব্যক্তি পর্যায়ে এইরূপ ঋণ বা চাঁদা সর্বসাকুল্যে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) লক্ষ টাকা হইলে উহা একজন জামিনদারসহ অঙ্গীকারপত্র গ্রহণ করিয়া প্রদান করা যাইবে।

সমুদয় অর্থ তাৎক্ষণিক পরিশোধের দাবি করিবার ক্ষমতা

৩১। (১) কর্পোরেশনের সহিত ঋণগ্রহীতার সম্পাদিত কোনো চুক্তিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ঋণগ্রহীতা যদি-

(ক) ভুল, মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করেন; বা

(খ) ঋণচুক্তির কোনো শর্ত ভঙ্গ করেন; বা

(গ) যে উদ্দেশ্যে ঋণ প্রদান করা হইয়াছিল তৎব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ঋণ বা উহার অংশবিশেষ ব্যবহার করেন; বা

(ঘ) ঋণ পরিশোধে অসমর্থ হইবেন বা দেউলিয়া হইয়া যাইবেন মর্মে যুক্তিসংগতভাবে প্রতীয়মান হয়; বা

(ঙ) কর্পোরেশনের নিকট জামানত হিসাবে পণ, বন্ধক, দায়বদ্ধকরণ, স্বত্বনিয়োজিত সম্পত্তি যথাযথ অবস্থায় না রাখেন অথবা নির্ধারিত হারের চাইতে অধিক হারে বন্ধকি সম্পত্তি অবচয় ধরিয়া থাকেন এবং কর্পোরেশনের সন্তুষ্টির জন্য অতিরিক্ত জামানত প্রদানে ব্যর্থ হন; বা

(চ) পর্ষদের অনুমতি ব্যতিরেকে, ঋণের জামানত হিসাবে বন্ধকি ঘর, ভূমি বা অন্য সম্পত্তি বিক্রয় করেন বা তাহার তত্ত্বাবধানে রাখেন; বা

(ছ) পর্ষদের অনুমতি ব্যতিরেকে, কোনো যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম প্রতিস্থাপন না করিয়া কারখানার যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম অপসারণ করেন; বা

জ) পর্ষদের বিবেচনায় কর্পোরেশনের স্বার্থের পরিপন্থি কোনো কাজ করেন,

তাহা হইলে পর্ষদ বা এতদুদ্দেশ্যে পর্ষদ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ঋণ বা উহার অধীন প্রদেয় সুদ সংক্রান্ত ঋণের অপরিশোধিত সম্পূর্ণ অর্থ অথবা যে কোনো অংশ পরিশোধ করিবার জন্য অথবা কর্পোরেশনের স্বার্থ রক্ষার্থে পর্ষদ কর্তৃক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পালনের জন্য ঋণগ্রহীতাকে নোটিশ প্রদান করিতে পারিবে।

(২) উপধারা (১) এ উল্লিখিত নোটিশে উল্লেখ থাকিবে যে, যদি ঋণগ্রহীতা দাবিকৃত ঋণ নোটিশে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে পরিশোধে ব্যর্থ হন অথবা উহাতে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে পর্ষদের নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে পর্ষদ ঋণগ্রহীতাকে ঋণখেলাপি হিসাবে ঘোষণা করিয়া একটি সনদ প্রদান করিবে।

(৩) যদি ঋণগ্রহীতা, উপধারা (২) এর অধীন প্রদত্ত নোটিশে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে প্রদত্ত নির্দেশনা পালন করিতে, অথবা দাবিকৃত দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে পর্ষদ নির্ধারিত ফরমে এবং পদ্ধতিতে ঋণ গ্রহীতাকে ঋণখেলাপি হিসাবে ঘোষণাপূর্বক এবং নির্দিষ্ট তারিখে বা তারিখের পর সুদসহ কর্পোরেশনকে প্রদেয় মোট অর্থের পরিমাণ এবং সুদের হার উল্লেখপূর্বক একটি সনদ জারি করিতে পারিবে।

(৪) ঋণগ্রহীতা উপধারা (৩) এর অধীন জারীকৃত সনদের বিরুদ্ধে সনদ জারির তারিখ হইতে ১৫ (পনেরো) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট আপিল দায়ের করিতে পারিবেন এবং সরকার জারীকৃত সনদ বহাল, বাতিল বা সংশোধন করিতে পারিবে।

(৫) উপধারা (৪) এর বিধান সাপেক্ষে, উপধারা (৩) এর অধীন প্রদত্ত সনদ এই মর্মে চূড়ান্ত সাক্ষ্য হইবে যে প্রত্যয়িত পাওনা কর্পোরেশন কর্তৃক ঋণ গ্রহীতার নিকট হইতে আদায়যোগ্য ছিল এবং উহা অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ (২০০৩ সনের ৮ নং আইন) এর অধীন আদায়যোগ্য হইবে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহিত চুক্তি

৩২। কর্পোরেশন কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহিত এই মর্মে চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে যে, অনুরূপ আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ঋণ প্রদানের ফলে সৃষ্ট ক্ষতি ও মন্দ ঋণ, যদি থাকে, এবং ঋণের সুদ কর্পোরেশন ও অনুরূপ আর্থিক প্রতিষ্ঠান পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে আনুপাতিক হারে বহন করিবার শর্তসাপেক্ষে, শিল্পের উদ্যোক্তাদেরকে সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে প্রণীত নীতিমালা ও বিধি-বিধানের আলোকে ঋণ প্রদান করিতে পারিবে।

ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা

৩৩। কর্পোরেশন এই আইনের অধীন কার্যাবলি সম্পাদনের নিমিত্ত দেশি বা বিদেশি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো উৎস হইতে প্রয়োজনীয় ঋণ বা অনুদান গ্রহণ করিতে পারিবে, তবে বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs