প্রিন্ট
নবম অধ্যায়
পেটেন্ট অধিকার কার্যকরকরণ
৪৪। (১) কোনো ব্যক্তি, এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর সহিত চুক্তি সম্পাদন ব্যতিরেকে, ধারা ২৫ এর অধীন ঘোষিত কোনো অধিকার লঙ্ঘন করিলে, পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে উক্ত অধিকার লঙ্ঘনের মামলা করিতে পারিবেন।
(২) যদি-
(ক) কোনো পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী, একচেটিয়া লাইসেন্সি, বাধ্যতামূলক লাইসেন্সি বা একচেটিয়া লাইসেন্সি নহে এইরূপ কোনো লাইসেন্সি চুক্তির সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়ন না করেন তাহা হইলে উক্তরুপ কোনো লাইসেন্সি কোনো চুক্তির সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়নের জন্য পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবেন;
(খ) কোনো একচেটিয়া লাইসেন্সি, বাধ্যতামূলক লাইসেন্সি বা একচেটিয়া লাইসেন্সি নহে এইরূপ কোনো লাইসেন্সি লাইসেন্সে প্রদত্ত শর্ত ভঙ্গ করেন, তাহা হইলে উক্তরূপ কোনো লাইসেন্সির বিরুদ্ধে পেটেন্টের স্বত্বাধিকারী চুক্তির সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়নের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবেন;
(গ) দফা (ক) ও (খ) তে উল্লিখিত শর্ত ভঙ্গ হয় তাহা হইলে, লাইসেন্সি বা পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর অধিকার সংরক্ষণের জন্য আদালত নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করিতে পারিবে;
(ঘ) আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো পক্ষ লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করিয়াছে এবং উক্তরূপ শর্ত ভঙ্গ দ্বারা অপরপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন, তাহা হইলে আদালত শর্ত ভঙ্গকারী কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দিতে পারিবে।
(৩) দেওয়ানি কার্যবিধি বা মামলার বিষয়বস্তুর সহিত সম্পর্কিত অন্য কোনো আইনের অধীন কোনো আদালত ধারা ২৫ এর বিধান ভঙ্গের জন্য আদেশ জারি করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, যদি বিবাদি কর্তৃক পেটেন্ট প্রত্যাহারের কোনো পাল্টা-দাবি উত্থাপন করা হয়, তাহা হইলে আদালত বিধান ভঙ্গের মামলা ও পাল্টা-দাবি উভয়টি একসঙ্গে বিচার করিবে।
৪৫। ধারা ৪৪ এর অধীন কোনো মোকদ্দমা কেবল জেলা আদালতের অধস্তন নয় এইরূপ কোনো উপযুক্ত আদালতে দায়ের করা যাইবে।
৪৬। (১) যদি পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়বস্তু কোনো পণ্য লাভের পদ্ধতি হয়, তাহা হইলে আদালত স্বত্বাধিকার লঙ্ঘনকারীকে তদ্কর্তৃক উদ্ভাবিত অভিন্ন পণ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতি পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতি হইতে পৃথক উহা প্রমাণ করিবার জন্য আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(২) যদি কোনো অভিন্ন পণ্য পেটেন্টের স্বত্বাধিকারীর সম্মতি ব্যতীত উৎপাদন করা হয়, সেইক্ষেত্রে ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত উহা পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতি দ্বারা অর্জিত হইয়াছে মর্মে গণ্য হইবে, যদি না পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতির দ্বারা অর্জিত উক্তরূপ পণ্য নূতন হয়।
(৩) কোনো পক্ষ তাহার উপর উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ পালন করিয়াছে কি না তাহা বিবেচনাক্রমে, আদালত তাহাকে কোনো উৎপাদন বা ব্যবসার গোপনীয়তা প্রকাশ করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিবে না, যদি এইরূপ নির্দেশ প্রদান করা আদালতের নিকট অযৌক্তিক মনে হয়।
৪৭। (১) যদি চুক্তির লঙ্ঘন বা সুনির্দিষ্ট প্রতিপালন সংক্রান্ত কোনো মোকদ্দমা ধারা ৪৪ এর বিধান ভঙ্গের জন্য হয়, তাহা হইলে আদালত কোনো একতরফা অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা বা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করিবে না।
(২) পেটেন্ট অধিকার লঙ্ঘন বা চুক্তির সুনির্দিষ্ট প্রতিপালন সংক্রান্ত কোনো মোকদ্দমা বিচারের পূর্বে আদালত অপর পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিবে।
(৩) নিম্নবর্ণিত বিষয়াদির ভিত্তিতে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা বা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) যদি প্রাথমিক প্রমাণ, সুবিধার ভারসাম্য, অপূরণীয় ক্ষতি আবেদনকারী বা পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীর পক্ষে হয়;
(খ) ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য বা প্রক্রিয়া সংক্রান্ত মোকদ্দমার ক্ষেত্রে, চিকিৎসা পণ্য সহজলভ্য হওয়ার উপর এইরূপ অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা বা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হইবে;
(গ) বিরোধীয় অপর পক্ষের অধিকার রক্ষার্থে জামানত বা সমপরিমাণ নিশ্চয়তা প্রদানের আদেশ প্রতিপালন না করা বা করিতে ব্যর্থ হওয়া:
তবে শর্ত থাকে যে, আদালত, অপর পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান ব্যতিরেকে, অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করিবে না।
(৪) কোনো পক্ষ কর্তৃক দাখিলকৃত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করিতে হইবে।
(৫) সংক্ষুব্ধ পক্ষ, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে অবহিত হইবার অনূর্ধ্ব ১৪ ( চৌদ্দ) দিনের মধ্যে, উহা পুনর্বিবেচনার আবেদন দাখিল করিতে পারিবেন।
(৬) যদি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির পর আদালত এইরূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, বিরোধীয় পক্ষ দ্বারা পেটেন্টের কোনো শর্ত লঙ্ঘিত হয় নাই এবং উহা লঙ্ঘিত হইবার আশঙ্কা নাই, তাহা হইলে আদালত বিরোধীয় পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে সংঘটিত ক্ষতির জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে আবেদনকারী পক্ষকে আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(৭) আদালত নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে, ক্ষতিপূরণ আদেশের হানি না ঘটাইয়া, ধারা ৪৪ এ উল্লিখিত শর্ত ভঙ্গের কারণে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বা সুনির্দিষ্ট প্রতিকার মঞ্জুর করিবে না, যথা:-
(ক) পেটেন্ট মঞ্জুরের পর, বাদী বা তদ্কর্তৃক অনুমতিপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, যদি-
(অ) বাংলাদেশে উক্ত পণ্য উৎপাদনের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ না করেন; বা
(আ) পেটেন্টপ্রাপ্ত উদ্ভাবন বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার না করেন; বা
(ই) পেটেন্টপ্রাপ্ত উদ্ভাবন এমনভাবে ব্যবহার করেন যাহা মানসম্মতভাবে বাজারের চাহিদা পূরণে অক্ষম;
(খ) জনস্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইবার আশংকা থাকিলে;
(গ) পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বা পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতিতে উৎপাদিত পণ্য বাদী বা বাদীর সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ভোক্তার গড় ক্রয়-ক্ষমতার অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় হয়;
(ঘ) পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বা পেটেন্টপ্রাপ্ত পদ্ধতিতে উৎপাদিত পণ্য ভোক্তার সুনির্দিষ্ট চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়;
(ঙ) পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বাজারে কোনো প্রতিযোগিতামূলক পণ্যের বিদ্যমানতা বা অবিদ্যমানতার কারণে উক্ত পণ্য অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় হয়;
(চ) যদি বাদী এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘনক্রমে পেটেন্ট অর্জন করেন।
(৮) যদি সরকারি কোনো সংস্থা কর্তৃক বা সরকারি সেবা প্রদানের কারণে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘিত হয়, তাহা হইলে আদালত, ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের বিষয়টি ক্ষুণ্ন না করিয়া, পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারীর নিয়ন্ত্রণাধীন সাক্ষ্য লাভের জন্য আবশ্যকতা ব্যতীত, কোনো নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারি করিবে না।
৪৮। এই আইনের ধারা ২৯, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০ এবং ৪১ এর অধীন কোনো কার্যের বিরুদ্ধে অস্থায়ী, অন্তর্বর্তীকালীন বা স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা যাইবে না।
৪৯। (১) শর্ত ভঙ্গের মোকাদ্দমায় আদালত প্রতিকার হিসাবে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও ক্ষতিপূরণ বা লাভজনক হিসাব মঞ্জুর করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান সাপেক্ষে, পেটেন্ট অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আদালত তৎবিবেচনায় ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করিবে।
(৩) পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনের জন্য ক্ষতিপূরণের আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে আদালত নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি বিবেচনা করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) কোন তারিখে নিবন্ধন সরকারি নোটিশে, ওয়েবসাইটে বা প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপনে প্রকাশ করা হইয়াছিল;
(খ) নিবন্ধনের জন্য কোন তারিখে আবেদনকারী আবেদনের বিষয়ে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারীকে নোটিশ প্রদান করিয়াছিলেন;
(গ) কোন তারিখে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারী আবেদনের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জ্ঞাত হইয়াছিলেন;
(ঘ) পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য ন্যায্য মূল্যে পাওয়া যায় কি না;
(ঙ) পেটেন্টপ্রাপ্ত পণ্য বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় কি না;
(চ) পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীর অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হইয়াছে কি না;
(ছ) স্থানীয় শিল্প বা পণ্যের উপর বিরূপ প্রভাব পড়িয়াছে কি না।
(৪) যদি পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনের মোকদ্দমায় বিবাদী আদালত কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে লাইসেন্স গ্রহণ করিতে ইচ্ছুক হন ও প্রস্তুত থাকেন, তাহা হইলে তাহার বিরুদ্ধে কোনো স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা যাইবে না এইরূপ ক্ষেত্রে আদালত লাইসেন্সের জন্য উপযুক্ত পারিতোষিকসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলি নির্ধারণ করিবে।
(৫) অন্য কোনোভাবে প্রমাণিত না হইলে, আদালত পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনকারীর আইনানুগ অধিকার ও তাহার ব্যবসায়িক গোপনীয়তা রক্ষাসহ অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।
৫০। (১) পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনের মামলায়, ধারা ৩৩ এর অধীন যেসকল কারণে পেটেন্ট রদ (Revocation) করা যায়, সেই সকল কারণ আত্মপক্ষ সমর্থনে ব্যবহার করা যাইবে।
(২) অন্য কোনো পণ্যের মেশিন, যন্ত্রপাতি তৈরি, ব্যবহার বা আমদানির মাধ্যমে বা কোনো পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে বা কোনো চিকিৎসা সরঞ্জাম বা ঔষধ আমদানি, ব্যবহার বা বিতরণের মাধ্যমে পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনের মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের একটি ভিত্তি হইবে যে, এইরূপ তৈরি, ব্যবহার, আমদানি বা বিতরণ এই আইনের ধারা ২৯, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১ এবং ৪৩ এ বর্ণিত এক বা একাধিক শর্ত অনুযায়ী করা হইয়াছে।
৫১। (১) পেটেন্টের অধিকার লঙ্ঘনের মামলায় বা এই আইনের অধীন কোনো কার্যধারায় আদালত, যে কোনো সময়, এবং এইরূপ উদ্দেশ্যে কোনো আবেদন দাখিল করা হউক বা না হউক, আদালতকে সহায়তা করিবার জন্য বা তদন্ত করিবার জন্য বা এইরূপ কোনো প্রশ্ন বা মতামত, আইনের ব্যাখ্যা সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন জড়িত থাকা ব্যতীত, সম্পর্কে রিপোর্ট প্রদানের জন্য স্বতন্ত্র বা স্বাধীন উপদেষ্টা নিয়োগ করিতে পারিবে।
(২) আদালত বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টার পারিতোষিক নির্ধারণ করিবে এবং উহাতে প্রতিবেদন তৈরির ব্যয় এবং বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা আদালত কর্তৃক উহার সামনে কোনো দিবসে উপস্থিত হইবার জন্য নির্দেশিত হইলে উক্ত দিবসের উপযুক্ত দৈনিক ফি অন্তর্ভুক্ত থাকিবে।
৫২। এই আইনের অধীন, মহাপরিচালক কর্তৃক, প্রদত্ত যে কোনো সিদ্ধান্ত, বিশেষত বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের মঞ্জুরি এবং বাধ্যতামূলক লাইসেন্স এর জন্য পারিতোষিক প্রদান সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, সিদ্ধান্ত প্রদানের তারিখ হইতে ২ (দুই) মাসের মধ্যে, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আপিল দায়ের করিতে হইবে।