প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, ২০২৩

( ২০২৩ সনের ৫৩ নং আইন )

চতুর্থ অধ্যায়

পেটেন্ট মঞ্জুরির আবেদন

পেটেন্ট আবেদনের পদ্ধতি

৮।  (১) একটি উদ্ভাবনের বিপরীতে পেটেন্টের জন্য, নির্ধারিত ফরমে, কেবল একটি আবেদন করা যাইবে এবং উক্ত আবেদন অধিদপ্তরে দাখিল করিতে হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদনে উদ্ভাবনটি আবেদনকারীর দখলে রহিয়াছে কিনা তাহাসহ যথার্থ ও প্রথম উদ্ভাবনের দাবিদারের নাম উল্লেখ করিতে হইবে এবং দাবিদার নিজে আবেদনকারী না হইলে বা একাধিক আবেনকারীর কোনো একজন না হইলে আবেদনে এই মর্মে একটি ঘোষণা প্রদান করিতে হইবে যে, উল্লিখিত নামের ব্যক্তিকে যথাযথ ও প্রথম উদ্ভাবক বলিয়া আবেদনকারী বিশ্বাস করেন ।

(৩) পেটেন্ট আবেদনের সহিত নিম্নবর্ণিত দলিলাদি সংযুক্ত করিতে হইবে, যথা:-

(ক) আবেদনকারী কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদন দাখিল করিলে উক্ত প্রতিনিধির অনুকূলে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৩৫ নং আইন) এর অধীন প্রদত্ত পাওয়ার অব অ্যাটর্নির কপি;

(খ) পেটেন্ট আবেদনকারী নিজে উদ্ভাবক না হইলে তাহার অধিকারের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করিয়া একটি প্রত্যয়নপত্র বা হস্তান্তরপত্র;

(গ) অগ্রাধিকার সংক্রান্ত দাবির ক্ষেত্রে, এই আইনের ধারা ৫ (চ) এর অধীন প্রত্যায়িত অনুলিপি।

(৪) কোনো উদ্ভাবনের দাবিদার ব্যক্তি একক বা যৌথভাবে বা তাহার আইনানুগ প্রতিনিধি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে এবং নির্দিষ্টকৃত ফি প্রদানপূর্বক, নিম্নবর্ণিত শর্তে পেটেন্টের জন্য মহাপরিচালকের নিকট সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা (complete specification) বা সাময়িক বিশেষত্বনামাসহ (provisional specification) আবেদন করিতে পারিবেন, যথা:-

(ক) আবেদনকারী কর্তৃক সাময়িক বিশেষত্বনামা দাখিলের ১২ (বারো) মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা দাখিল করিতে হইবে;

(খ) সাময়িক বিশেষত্বনামায় উদ্ভাবনের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য থাকিতে হইবে এবং উহা পরবর্তীতে দাখিলকৃত সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হইতে হইবে।

(৫) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত ফরমে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত থাকিতে হইবে, যথা:-

(ক) আবেদনকারী এবং উদ্ভাবকের নাম ও পরিচয় সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ তথ্য;

(খ) উদ্ভাবনের বিষয়বস্তুর সহিত সম্পর্কযুক্ত উদ্ভাবনের যথাযথ শিরোনাম;

(গ) প্রার্থিত পেটেন্টের সুস্পষ্ট ও স্বয়ংসম্পূর্ণ বর্ণনা;

(ঘ) যদি বিশেষ ক্ষেত্রে মহাপরিচালকের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, উদ্ভাবনকে ব্যাখ্যা করে বা উদ্ভাবন গঠন করে এইরূপ কোনো নির্দিষ্ট মডেল বা নমুনা আবেদনের সহিত সংযুক্ত করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি পেটেন্টের জন্য আবেদনের পূর্বে এইরূপ মডেল বা নমুনা দাখিলের নির্দেশ দিতে পারিবেন, তবে উক্ত মডেল বা নমুনা বিশেষত্বনামার অংশ হিসাবে গণ্য হইবে না;

(ঙ) উদ্ভাবনের সার-সংক্ষেপ;

(চ) অগ্রাধিকার সংক্রান্ত দাবির নম্বর ও তারিখ, যদি থাকে;

(ছ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় উদ্ভাবনের লিখিত তথ্য সন্নিবেশ।

(৬) প্রত্যেকটি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় নিম্নলিখিত বিষয়াদি থাকিবে, যথা:-

(ক) সংশ্লিষ্ট বা সমরূপ প্রযুক্তিতে জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি কর্তৃক উদ্ভাবনের প্রতিটি অঙ্গ মূল্যায়ন, সম্পাদন, প্রতিপালন, কার্যকরকরণ বা বাস্তবায়নের জন্য পরিপূর্ণ বা সম্পূর্ণ স্পষ্ট, সংক্ষিপ্ত ও পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা;

(খ) আবেদন দাখিলের সময় বা অগ্রাধিকার তারিখে আবেদকারীর জ্ঞাত উদ্ভাবনটি কার্যকর বা বাস্তবায়নের সর্বোত্তম পদ্ধতিসহ প্রত্যেকটি ধাপ বা পদ্ধতির বিস্তারিত বর্ণনা;

(গ) সুরক্ষার জন্য দাবিকৃত উদ্ভাবনের বৈশিষ্ট্য উল্লেখপূর্বক এক বা একাধিক দাবি;

(ঘ) সার-সংক্ষেপে উদ্ভাবনের কারিগরি তথ্য সন্নিবেশ;

(ঙ) বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত সার-সংক্ষেপ ৩০০ (তিনশত) শব্দের অধিক হইবে না:

তবে শর্ত থাকে যে, মহাপরিচালক তৃতীয় পক্ষের নিকট অধিকতর তথ্য প্রদানের জন্য উক্ত সার-সংক্ষেপ সংশোধন করিতে পারিবেন;

(চ) উদ্ভাবন সুস্পষ্টভাবে প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বা মহাপরিচালকের নির্দেশ অনুযায়ী এক বা একাধিক অংকন-চিত্রের (drawing diagram) মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যাইবে।

(৭) উদ্ভাবনের বিষয়বস্তু-

(ক) দাবি আকারে উল্লেখ করিতে হইবে,

(খ) সুস্পষ্ট ও সংক্ষিপ্ত হইতে হইবে এবং উহা বর্ণনার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গরূপে সমর্থিত হইতে হইবে,

(গ) ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে উদ্ভাবনটি লেখচিত্রের মাধ্যমে বর্ণনা ও অংকন ব্যবহার করা যাইবে।

(৮) আবেদনে বা অন্য কোনোভাবে বর্ণিত থাকিলে, আবেদনের সময় বা অগ্রাধিকার তারিখে সংশ্লিষ্ট সকল জ্ঞাতপূর্বত্বসহ উদ্ভাবনটি পেটেন্টযোগ্য হইবার জন্য আবেদনকারীর কর্তৃক জ্ঞাত গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্য মহাপরিচালকের নিকট প্রকাশ করিবেন।

(৯) যদি উদ্ভাবনটি ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য সম্পর্কিত হয় তাহা হইলে আবেদনকারী, পণ্যটির আন্তর্জাতিক স্বত্বাধিকারবিহীন নাম (International Nonproprietary Name -INN), অগ্রাধিকার তারিখে উক্ত নাম পাওয়া গেলে উহা প্রকাশ করিবে এবং আন্তর্জাতিক স্বত্বাধিকারবিহীন নাম, পাওয়া না গেলে আবেদনকারী অনূর্ধ্ব ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্ত নাম অবগত হইয়া মহাপরিচালককে অবহিত করিবেন, তবে পেটেন্ট আবেদনটি নামঞ্জুর করা হইলে বা পেটেন্টটি মেয়াদোত্তীর্ণ হইলে উক্ত নাম অবহিত করিতে হইবে না।

(১০) পেটেন্টের সুরক্ষার পরিধি কেবল পেটেন্টে প্রকাশিত ও স্পষ্টভাবে দাবিকৃত ব্যবহার, উদ্দেশ্য বা কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকিবে।

(১১) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার এক বা একাধিক দাবি একটি স্বতন্ত্র উদ্ভাবন সম্পর্কিত হইবে এবং উহা এইরূপে পারস্পরিক সংযুক্ত উদ্ভাবন সমষ্টি সম্পর্কিত হইবে যাহা একক উদ্ভাবনের ধারণা গঠন করে এবং উহা সুস্পষ্ট ও সংক্ষিপ্তভাবে বিশেষত্বনামায় প্রকাশিত যথাযথ বিষয়ের ভিত্তিতে হইবে।

(১২) যদি আবেদন গ্রহণের সময় মহাপরিচালকের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, উপ-ধারা (৫), (৬), (৮), (৯), (১০) ও (১১) তে উল্লিখিত শর্তাদি পূরণ করা হয় নাই, তাহা হইলে তিনি আবেদনকারীকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনয়নের জন্য নির্দেশ প্রদান করিবেন এবং নির্দেশ মোতাবেক উক্ত সময়ের মধ্যে আবেদন প্রয়োজনীয়রূপে সংশোধন করা না হইলে আবেদন পরিত্যক্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(১৩) বায়োলজিক্যাল রিসোর্স এর সোর্স ও ভৌগোলিক উৎস (origin) এবং উহাদের সহিত সম্পৃক্ত এইরূপ ঐতিহ্যগত জ্ঞানের উপাদান যাহা দাবিকৃত উদ্ভাবনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যবহার করা হইয়াছে তাহা উদ্ভাবনের বিবরণীতে উল্লেখ করিতে হইবে।

(১৪) মহাপরিচালক, পেটেন্টকৃত প্রযুক্তি বাংলাদেশে ব্যবহারের বিস্তার ঘটাইবার লক্ষ্যে, পেটেন্ট মঞ্জুরের পূর্বে কোনো বিদেশি পেটেন্ট আবেদনকারীকে তাহার পেটেন্টের বর্ণনা বাংলাদেশের নাগরিকদের সাধারণ দক্ষতার উপযোগী করিয়া অভিযোজিত করিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।

(১৫) উদ্ভাবনের মালিকানাস্বত্ব সম্পর্কিত একটি ঘোষণা সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার সহিত, নির্ধারিত ফরমে, সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বা উক্ত বিশেষত্বনামা দাখিলের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংযুক্ত করিতে হইবে।

অণুজীব (Microorganism) সম্পর্কিত আবেদন

৯। (১) যদি উদ্ভাবনটি অণুজীব সম্পর্কিত হয় তাহা হইলে আবেদনকারী আবেদন দাখিলের পূর্বে উহার একটি কালচার বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কোনো ডিপোজিটরি প্রতিষ্ঠানে গচ্ছিত রাখিবেন, তবে যদি উক্ত অণুজীব সম্পর্কিত উদ্ভাবনটি পরিচালনা করিতে প্রযুক্তিতে সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তিকে সক্ষম করা সম্ভব না হয় এবং যদি উক্ত পণ্যটি জনসাধারণের নিকট অন্য কোনোভাবে সহজলভ্য না হয়, তাহা হইলে উক্ত পক্ষ কালচারের নমুনাটি আইন অনুযায়ী ব্যবহার করিবার শর্তে কালচারটি ব্যবহার করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন নিম্নলিখিত শর্তসমূহ প্রতিপালন সাপেক্ষে দাখিল করিতে হইবে, যথা:-

(ক) বাংলাদেশে পেটেন্ট আবেদন দাখিলের পূর্বে পণ্যটি গচ্ছিত রাখিতে হইবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিষয়টি বিশেষত্বনামায় উল্লেখ করিতে হইবে;

(খ) পণ্যটি সঠিকভাবে শনাক্ত করিবার জন্য বা নির্দেশ করিবার জন্য প্রয়োজনীয় সকল বিদ্যমান বৈশিষ্ট্য, যে ডিপজিটরি প্রতিষ্ঠানে উহা গচ্ছিত রাখা হইয়াছে উহার নাম, ঠিকানা, তারিখ এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানে গচ্ছিত পণ্যের নম্বরসহ বিশেষত্বনামায় অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে;

(গ) কেবল বাংলাদেশে পেটেন্ট আবেদন দাখিলের তারিখের পর, বা অগ্রাধিকার দাবি করা হইলে অগ্রাধিকার তারিখের পর, ডিপজিটরি প্রতিষ্ঠানে পণ্যটি প্রাপ্তিযোগ্য হইতে হইবে;

(ঘ) বায়োলজিক্যাল রিসোর্স এর সোর্স ও ভৌগোলিক উৎস এবং উহাদের সহিত সম্পৃক্ত এইরূপ ঐতিহ্যগত জ্ঞানের উপাদান যাহা দাবিকৃত উদ্ভাবনে ব্যবহার করা হইয়াছে, তাহা বিশেষত্বনামায় উল্লেখ করিতে হইবে।

পেটেন্ট আবেদন প্রত্যাহার ও পুনরায় আবেদন

১০।   (১) আবেদনকারী তৎকর্তৃক দাখিলকৃত আবেদনটি মঞ্জুর হইবার পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো সময় প্রত্যাহার করিতে পারিবেন।

(২) যেক্ষেত্রে-

(ক) পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত না করিয়াই কোনো আবেদন প্রত্যাহার করা হয়;

(খ) কোনো অগ্রাধিকার দাবি করা না হয়;

(গ) বাংলাদেশে উক্ত আবেদনের সহিত দাবিকৃত কোনো অধিকার সম্পর্কিত কার্যধারা চলমান না থাকে, সেইক্ষেত্রে উক্ত উদ্ভাবনের জন্য পুনরায় আবেদন করা যাইবে।

(৩) বাংলাদেশে দাখিলকৃত আবেদন প্রথম আবেদন হিসাবে বিবেচিত হইবে এবং উপ-ধারা (২) এর দফা (গ) এর অধীন পুনরায় আবেদন দাখিল করা হইলে, প্রথমবার দাখিলকৃত আবেদনের জন্য কোনো অগ্রাধিকার দাবি করা যাইবে না।

আবেদন সংশোধন ও উদ্ভাবনের ঐক্য (Unity of innovation)

১১।  (১) দাবিত্যাগ, সংশোধন বা ব্যাখ্যার মাধ্যম ব্যতীত কোনো আবেদন বা সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা বা তৎসম্পর্কিত কোনো দলিল সংশোধনের আবেদন করা যাইবে না এবং প্রকৃত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করিবার উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কোনো সংশোধনী মঞ্জুর করা যাইবে না।

(২) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় এইরূপ কোনো সংশোধনী মঞ্জুর করা যাইবে না যাহার ফলে সংশোধিত বিশেষত্বনামায় এইরূপ কোনো বিষয় দাবি করা হয় বা বর্ণনা করা হয় যাহা সংশোধনের পূর্বের বিশেষত্বনামায় প্রকাশিত বা প্রদর্শিত হয় নাই।

(৩) যদি পেটেন্ট মঞ্জুরের তারিখের পর মহাপরিচালক বা, ক্ষেত্রমত, আদালত কর্তৃক বিশেষত্বনামা বা তৎসম্পর্কিত কোনো দলিল সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর করা হয়, তাহা হইলে-

(ক) সংশোধনীটি সকল উদ্দেশ্যে বিশেষত্বনামা ও তৎসংশ্লিষ্ট দলিলপত্রের অংশ হিসাবে গণ্য হইবে;

(খ) বিশেষত্বনামা ও তৎসংশ্লিষ্ট দলিলপত্র সংশোধন করা হইলে উহা, যতদ্রুত সম্ভব, প্রকাশ করা হইবে; এবং

(গ) পেটেন্ট আবেদনকারী বা স্বত্বাধিকারীর সংশোধনের অধিকার বিষয়ে, প্রতারণার ভিত্তিতে না হইলে, উক্ত বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

(৪) সংশোধিত বিশেষত্বনামা ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথমে গৃহীত বিশেষত্বনামার উল্লেখ করিতে হইবে।

আবেদন, বিশেষত্বনামা (Specification) বা মহাপরিচালকের নিকট দাখিলকৃত কোনো দলিল সংশোধন

১২।  (১) মহাপরিচালক, ধারা ১১ এর বিধান সাপেক্ষে, এই ধারার অধীন কোনো আবেদনকারী বা পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী, নির্ধারিত ফরমে, আবেদন করিলে, তৎকর্তৃক নির্ধারিত শর্তে পেটেন্টের আবেদন বা বিশেষত্বনামা বা এতৎসম্পর্কিত অন্য কোনো দলিল সংশোধনের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, যদি কোনো আদালতে উক্ত পেটেন্ট লঙ্ঘনের কোনো মামলা বা জেলা আদালতে উক্ত পেটেন্ট প্রত্যাহারের কোনো কার্যধারা চলমান থাকে, এইরূপ মামলা বা কার্যধারা উক্ত আবেদন দাখিলের পূর্বে বা পরে যখনই শুরু হউক না কেন, মহাপরিচালক, এই ধারার অধীন কোনো পেটেন্ট বা বিশেষত্বনামা বা তৎসংশ্লিষ্ট কোনো দলিল সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর বা প্রত্যাখ্যানের কোনো আদেশ জারি করিবেন না ।

(২) এই ধারার অধীন পেটেন্ট বা সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা বা তৎসংশ্লিষ্ট কোনো দলিল সংশোধনের আবেদনে প্রস্তাবিত সংশোধনীর বৈশিষ্ট্য এবং এইরূপ আবেদনের বিস্তারিত কারণ উল্লেখ করিতে হইবে।

(৩) কোনো আবেদন প্রকাশ করা হইলে, স্বার্থসংশ্লিষ্ট যে কোনো ব্যক্তি উহা প্রকাশের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উহার বিরোধিতা করিয়া আবেদনকারীকে নোটিশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং উক্ত মেয়াদের মধ্যে এইরূপ নোটিশ প্রদান করা হইলে মহাপরিচালক উহা আবেদনকারীকে অবহিত করিবেন এবং বিষয়টি নিষ্পত্তি করিবার পূর্বে আবেদনকারী ও বিরোধিতাকারী উভয়পক্ষকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিবেন।

(৪) যেক্ষেত্রে উপ-ধারা (৩) এর অধীন কোনো আবেদন প্রকাশিত হয় সেইক্ষেত্রে কোনো আগ্রহী ব্যক্তি উহা প্রকাশের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, বিরোধিতাকারী ব্যক্তিকে নোটিশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং যেক্ষেত্রে পূর্বোক্ত সময়ের মধ্যে উক্তরূপ নোটিশ প্রদান করা হয় সেইক্ষেত্রে মহাপরিচালক এই ধারার অধীন আবেদন দাখিলের বিষয়টি উক্ত ব্যক্তিকে অবহিত করিবেন এবং উক্ত ব্যক্তি ও প্রতিপক্ষকে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে শুনানির সুযোগ দেবেন।

(৫) এই ধারার বিধান মোতাবেক বিশেষত্বনামা বা তৎসংশ্লিষ্ট অন্য কোনো দলিল সংশোধনের ভিত্তিতে আবেদনকারীর অনুকূলে পেটেন্ট মঞ্জুর করিবার পূর্বে মহাপরিচালক কর্তৃক জারীকৃত কোনো নির্দেশনা প্রতিপালনের কোনো অধিকার ক্ষুণ্ন করিবে না।

মহাপরিচালকের আবেদন বিভাজন (Division) সংক্রান্ত ক্ষমতা

১৪।  (১) কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন পেটেন্টের জন্য আবেদন করিলে, অথবা সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামাটি একাধিক উদ্ভাবনের সহিত সম্পর্কিত মর্মে মহাপরিচালক কর্তৃক উত্থাপিত অভিযোগ প্রতিকার করিবার উদ্দেশ্যে, প্রথমোক্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দাখিলকৃত সাময়িক বা সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় প্রকাশিত উদ্ভাবনের জন্য বিভাজিত আবেদন (Divisional Application) করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ দ্বিতীয় আবেদন প্রথম আবেদন দাখিলের ৩ (তিন) বৎসরের মধ্যে দাখিল করিতে হইবে এবং এইরূপ ক্ষেত্রে অনধিক ৩ (তিন) টি আবেদন করা যাইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পুনঃআবেদনের সহিত একটি সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা সংযুক্ত করিতে হইবে, তবে এইরূপ বিশেষত্বনামার পরিপ্রেক্ষিতে দাখিলকৃত সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ নহে এইরূপ কোনো বিষয় অন্তর্ভুক্ত হইবে না।

(৩) প্রথম বা পুনঃআবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা সংশোধনের ক্ষেত্রে, মহাপরিচালক এই মর্মে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন যে, সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার কোনোটিতেই এইরূপ কোনো দাবি নাই যাহা অপরটিতে রহিয়াছে।

(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন পুনঃআবেদনটি প্রথম আবেদন দাখিলের তারিখে দাখিল করা হইয়াছিল মর্মে গণ্য হইবে এবং, ক্ষেত্রমত, প্রথম আবেদনের অগ্রাধিকার তারিখ বিভাজিত আবেদনের অগ্রাধিকার তারিখ হিসাবে বিবেচিত হইবে।

(৫) বিভাজিত আবেদনটি মূল আবেদনের অনুরূপ বিবেচিত হইবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষার জন্য আবেদন করা হইলে উহা পরীক্ষা করা হইবে।

বিদেশি পেটেন্ট আবেদনের দলিলাদি সংক্রান্ত তথ্য

১৫।   (১) যদি কোনো আবেদনকারী, এককভাবে বা অন্য কোনো ব্যক্তির সহিত যৌথভাবে, বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোনো দেশে আবেদন করেন, তাহা হইলে সমরূপ আবেদনের ক্ষেত্রে বা যদি তাহার জানামতে অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক আবেদন দাখিল করা হয় যাহার মাধ্যমে তিনি পেটেন্ট দাবি করিয়া থাকেন বা এইরূপ ব্যক্তি কর্তৃক দাখিল করা হয় যিনি তাহার নিকট হইতে অধিকার লাভ করেন, তাহা হইলে তিনি তাহার আবেদনের সহিত বা পরবর্তী ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে উপরিউক্ত আবেদন সংশ্লিষ্ট নিম্নবর্ণিত দলিলাদি দাখিল করিবেন, যথা :-

(ক) উক্ত আবেদনের বিস্তারিত তথ্য সংবলিত একটি বিবৃতি;

(খ) বিদেশি আবেদন পরীক্ষার ফলাফল এবং অনুসন্ধান তথ্য সংক্রান্ত কোনো পত্র আবেদনকারীকে প্রদান করা হইলে, উহার একটি কপি;

(গ) বিদেশি আবেদনের ভিত্তিতে প্রদত্ত পেটেন্ট মঞ্জুরের একটি কপি;

(ঘ) বিদেশি আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হইলে উহার একটি কপি;

(ঙ) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, মঞ্জুরিকৃত পেটেন্ট প্রত্যাহার বা পরিত্যাগের নোটিশের একটি কপি;

(চ) পেটেন্ট বাতিল, অবৈধকরণ, সংশোধন বা আদালতের আদেশসহ পেটেন্ট বা পেটেন্ট আবেদন সংক্রান্ত অন্য কোনো আদেশ।

(২) আবেদনকারী কর্তৃক দলিলাদি অনুবাদের জন্য সময় প্রার্থনা করা হইলে মহাপরিচালক উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত মেয়াদ সর্বোচ্চ ৬০ (ষাট) দিন বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।

(৩) আবেদনকারী পেটেন্ট মঞ্জুর বা প্রত্যাখ্যান না হওয়া পর্যন্ত প্রতি ৬ (ছয়) মাস পর পর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত আবেদন সম্পর্কিত তথ্য মহাপরিচালক বরাবর দাখিল করিবেন।

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন তথ্য প্রাপ্তির পর মহাপরিচালক উহা অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করিবেন।

(৫) যদি আবেদনকারী উপ-ধারা (১) ও (৩) এর শর্ত প্রতিপালনে, তাহার নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কোনো কারণ ব্যতীত, ব্যর্থ হন তাহা হইলে আবেদন প্রত্যাখ্যাত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

পেটেন্ট আবেদন দাখিলের তারিখ

১৬।   মহাপরিচালক, পেটেন্ট আবেদন গ্রহণের তারিখকে পেটেন্ট আবেদন দাখিলের তারিখ হিসাবে বিবেচনা করিবেন।

আবেদন প্রকাশনা

১৭।  (১) মহাপরিচালক, আবেদন দাখিলের ১৮ (আঠারো) মাস অতিবাহিত হইবার পর, পেটেন্ট আবেদন জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করিবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পেটেন্ট আবেদনের বিষয়বস্তু ওয়েবসাইটে প্রকাশ বা প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নিম্নবর্ণিত বিষয় প্রকাশের মাধ্যমে জনসাধারণকে অবহিত করিতে হইবে, যথা:-

(ক) উদ্ভাবনের শিরোনাম;

(খ) পেটেন্ট আবেদনকারী ও উদ্ভাবকের নাম, ঠিকানা ও জাতীয়তা;

(গ) আবেদন দাখিলের তারিখ ও নম্বর;

(ঘ) অগ্রাধিকার নম্বর ও তারিখ, যদি থাকে;

(ঙ) পেটেন্ট এর শ্রেণিবিন্যাস;

(চ) মূল উদ্ভাবনের লেখচিত্র বা অংকন, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে;

(ছ) বিষয়বস্তুর সার-সংক্ষেপ।

(৩) পেটেন্ট আবেদনটি অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বা গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত, মহাপরিচালক, কোনো তৃতীয় পক্ষকে উক্ত আবেদন পরিদর্শনের সুযোগ ‍প্রদান করিবেন না বা পেটেন্ট আবেদন সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করিবেন না।

(৪) ১৮ (আঠারো) মাস মেয়াদ সমাপ্তির পূর্বে যে কোনো সময়ে বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফি পরিশোধপূর্বক, আবেদনকারীর অনুরোধের প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক, পেটেন্ট আবেদন জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করিতে পারিবেন।

(৫) আবেদনকারী পেটেন্ট মঞ্জুর না হওয়া পর্যন্ত উহা লঙ্ঘনের কোনো কার্যধারা দায়ের করিতে পারিবেন না।

জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট পেটেন্ট আবেদন

১৮।  (১) জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট যে কোনো পেটেন্ট আবেদন গোপন রাখিতে হইবে এবং মহাপরিচালক, কোনো আবেদন জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট মনে করিলে, তাহা জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট যাচাইয়ের জন্য প্রেরণ করিবেন।

(২) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট আবেদন প্রাপ্তির অনধিক ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে দাবিকৃত উদ্ভাবন জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কি না সে বিষয়ে মহাপরিচালককে অবহিত করিবেন এবং যদি উক্ত সময়ের মধ্যে বিষয়টি মহাপরিচালককে অবহিত করা না হয়, তাহা হইলে পেটেন্টের আবেদনটি প্রকাশ করা যাইবে।

(৩) আবেদনকারী, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পেটেন্ট এর বিষয়ে মহাপরিচালক কর্তৃক অবহিত না হওয়া পর্যন্ত বা, ক্ষেত্রমত, উপ-ধারা (২) এর অধীন সময়সীমা অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত, এতৎবিষয়ক কোনো পেটেন্ট আবেদন বিদেশে দাখিল করিবেন না।

(৪) জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কোনো উদ্ভাবন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত, ব্যবহার, লাইসেন্স প্রদান এবং হস্তান্তর করা যাইবে না।

মঞ্জুরের পূর্বে আবেদনের বিরোধিতা (Opposition)

১৯।   (১) এই আইনের ধারা ১৭ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন পেটেন্ট আবেদন প্রকাশের পর এবং পেটেন্ট মঞ্জুরের পূর্বে যে কোনো ব্যক্তি উক্ত পেটেন্টের বিরোধিতা করিতে পারিবেন:

শর্ত থাকে যে, উল্লিখিত প্রকাশের ০৬ (ছয়) মাস সময় পর্যন্ত উক্ত পেটেন্ট মঞ্জুর করা যাইবে না।

(২) বিরোধিতার আপত্তিপত্রে আপত্তিকৃত পেটেন্ট আবেদন শনাক্ত করিতে হইবে এবং আপত্তির কারণ উল্লেখপূর্বক উহার সমর্থনে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণাদি দাখিল করিতে হইবে।

(৩) পেটেন্ট আবেদনের বিরোধিতাকারী ব্যক্তি নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ উত্থাপন করিতে পারিবেন, যথা:-

(ক) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি দাবিদারের অগ্রাধিকার তারিখে বা উহার পর অন্য কোনো সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবি করা হইয়াছে এবং পেটেন্টের জন্য বাংলাদেশে একটি আবেদন দাখিল করা হইয়াছে এবং উক্ত দাবিটির অগ্রাধিকার তারিখ আবেদনকারীর দাবির অগ্রাধিকার তারিখের পূর্ববর্তী হয়;

(খ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি উক্ত দাবির অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে বাংলাদেশে বা অন্য কোনো স্থানে জনসাধারণের নিকট পরিচিত ছিল বা জনসাধারণ কর্তৃক ব্যবহৃত হইয়াছিল, অথবা যদি ধারা ২ এর দফা (১০) এর বিধান প্রতিপালিত না হইয়া থাকে;

(গ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত এবং ধারা ২ এর দফা (৮) অনুযায়ী প্রকাশিত বিষয় বিবেচনায় বা বাংলাদেশে বা অন্য কোনো স্থানে ব্যবহৃত বিষয়ের বিবেচনায় অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে উহা ধারা ২ এর দফা (৭) অনুযায়ী কোনো উদ্ভাবনী ধাপ সংশ্লিষ্ট নহে;

(ঘ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবির বিষয়টি ধারা ২ এর দফা (১৯) এর বিধান অনুযায়ী নহে অথবা উহা ব্যবহার্য নহে;

(ঙ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত বিষয়টি এই আইনের অধীন কোনো উদ্ভাবনই নহে, অথবা এই আইনের ধারা ২ এর দফা (৬) অনুযায়ী পেটেন্টযোগ্য নহে;

(চ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত বিষয়টি এই আইনের অধীন কোনো উদ্ভাবনই নহে, অথবা এই আইনের ধারা ৬ অনুযায়ী পেটেন্টযোগ্য নহে;

(ছ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় এই আইনের ধারা ৮ এর উপ-ধারা (৫), (৬), (৮), (৯), (১০) এবং (১১) এর বিধান অনুযায়ী উদ্ভাবনটি বা উহা ব্যবহারের পদ্ধতি পূর্ণাঙ্গ ও সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত নহে;

(জ) আবেদনকারী ধারা ১৫ অনুযায়ী মহাপরিচালকের নিকট তথ্য প্রকাশ করিতে ব্যর্থ হইয়াছেন অথবা তাহার জানামতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দাখিলকৃত তথ্য মিথ্যা বা অপূর্ণ;

(ঝ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় উদ্ভাবনে ব্যবহৃত বায়োলজিক্যাল রিসোর্স এর সোর্স ও ভৌগোলিক উৎস এবং উহাদের সহিত সম্পৃক্ত এইরূপ ঐতিহ্যগত জ্ঞান প্রকাশিত হয় নাই বা ভুলভাবে বর্ণিত হইয়াছে;

(ঞ) মৌখিক বা অন্য কোনোভাবে প্রাপ্ত জ্ঞানের বিবেচনায় অনুমান করা হয় যে, বাংলাদেশের বা অন্য কোনো স্থানের স্থানীয় বা সাধারণ কমিউনিটিতে সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি বিদ্যমান রহিয়াছে।

(৪) মহাপরিচালক ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো অফিসিয়াল মাধ্যমে আপত্তির নোটিশ প্রকাশ করিবেন।

(৫) আবেদনকারী নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে অভিযোগ খণ্ডন করিয়া প্রতি বিবৃতি দাখিল করিতে পারিবেন।

(৬) মহাপরিচালক, আবেদনকারী ও বিরোধিতাকারী পক্ষের শুনানি গ্রহণ করিতে পারিবেন এবং উভয় পক্ষকে যুক্তি বা পাল্টা-যুক্তি প্রদানসহ যুক্তিখণ্ডনের সুযোগ প্রদান করিবেন।

(৭) পেটেন্ট আবেদনকারী কর্তৃক দাখিলকৃত লিখিত বিবৃতি ও সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং বিরোধিতাকারী কর্তৃক দাখিলকৃত বিরোধ ও সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং উভয়পক্ষ কর্তৃক উপস্থাপিত বক্তব্যের ভিত্তিতে, এবং উভয়পক্ষকে শুনানির পর, মহাপরিচালক-

(ক) বিরোধ প্রত্যাখ্যান করিতে পারিবেন; অথবা

(খ) পেটেন্ট মঞ্জুরের পূর্বে সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা ও অন্যান্য দলিল সংশোধনের নির্দেশ দিতে পারিবেন; অথবা

(গ) পেটেন্ট আবেদন মঞ্জুর করিতে অস্বীকার করিতে পারিবেন।

(৮) মহাপরিচালক, এই ধারার অধীন কারণ উল্লেখসহ একটি লিখিত আদেশ জারি করিবেন এবং বিরোধ নিষ্পত্তি হইবার ১ (এক) মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ বিষয়টি অবহিত করিবেন।

পেটেন্টের বিরোধিতা (Opposition to patent)

২০।   (১) এই আইনের ধারা ২৪ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন পেটেন্ট মঞ্জুরির পর বিষয়টি অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হইবার ২৪ (চব্বিশ) মাসের মধ্যে যে কোনো স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সাক্ষ্য-প্রমাণসহ মহাপরিচালক বরাবর বিরোধিতার নোটিশ প্রদান করিতে পারিবেন।

(২) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, বিরোধের নোটিশ প্রদান করা যাইবে, যথা:-

(ক) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি দাবিদারের অগ্রাধিকার তারিখে বা উহার পর অন্য কোনো সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবি করা হইয়াছে এবং পেটেন্টের জন্য একটি আবেদন বাংলাদেশে দাখিল করা হইয়াছে এবং উক্ত দাবিটির অগ্রাধিকার তারিখ আবেদনকারীর দাবির অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে;

(খ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি উক্ত দাবির অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে বাংলাদেশে বা অন্য কোনো স্থানে জনসাধারণের নিকট পরিচিত ছিল বা জনসাধারণ কর্তৃক ব্যবহৃত হইয়াছিল, অথবা যদি ধারা ২ এর দফা (১০) এর বিধান প্রতিপালিত না হয়;

(গ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত এবং ধারা ২ এর দফা (৮) অনুযায়ী প্রকাশিত বিষয়ের বিবেচনায় বা বাংলাদেশে বা অন্য কোনো স্থানে ব্যবহৃত বিষয়ের বিবেচনায় অগ্রাধিকার তারিখের পূর্বে ধারা ২ এর দফা (৭) দফা অনুযায়ী কোনো উদ্ভাবনী ধাপ সংশ্লিষ্ট নহে;

(ঘ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবির বিষয়টি ধারা ২ এর দফা (১৯) এর বিধান অনুযায়ী নহে অথবা উহা ব্যবহার্য নহে;

(ঙ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত বিষয়টি এই আইনের অধীন কোনো উদ্ভাবন নহে, অথবা এই আইনের ধারা ২ এর দফা (৬) অনুযায়ী পেটেন্টযোগ্য নহে;

(চ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত বিষয়টি এই আইনের অধীন কোনো উদ্ভাবনই নহে, অথবা এই আইনের ধারা ৬ অনুযায়ী পেটেন্টযোগ্য নহে;

(ছ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় এই আইনের ধারা ৮ এর উপ-ধারা (৫), (৬), (৮), (৯), (১০) এবং (১১) এর বিধান অনুযায়ী উদ্ভাবনটি বা উহা ব্যবহারের পদ্ধতি পূর্ণাঙ্গ ও সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত নহে;

(জ) আবেদনকারী ধারা ১৫ অনুযায়ী মহাপরিচালকের নিকট তথ্য প্রকাশ করিতে ব্যর্থ হইয়াছে অথবা তাহার জানামতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দাখিলকৃত তথ্য মিথ্যা বা অপূর্ণ;

(ঝ) সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় উদ্ভাবনে ব্যবহৃত বায়োলজিক্যাল রিসোর্স এর সোর্স ও ভৌগোলিক উৎস এবং উহাদের সহিত সম্পৃক্ত এইরূপ ঐতিহ্যগত জ্ঞান প্রকাশিত হয় নাই বা ভুলভাবে বর্ণিত হইয়াছে;

(ঞ) মৌখিক বা অন্য কোনোভাবে প্রাপ্ত জ্ঞানের বিবেচনায় অনুমান করা হয় যে, বাংলাদেশের বা অন্য কোনো স্থানের স্থানীয় বা সাধারণ কমিউনিটিতে সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামায় দাবিকৃত উদ্ভাবনটি বিদ্যমান রহিয়াছে।

(৩) মহাপরিচালক, পেটেন্ট স্বত্বাধিকারীকে বিরোধের নোটিশ প্রদান করিবেন এবং ই-গেজেটে বা অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে উহা প্রকাশ করিবেন।

(৪) পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে বিরোধ নোটিশ খণ্ডন করিয়া প্রতি-বিবৃতি দাখিল করিতে পারিবেন।

(৫) মহাপরিচালক, একটি শুনানির ব্যবস্থা করিবেন এবং শুনাননিতে পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী ও বিরোধী উভয়পক্ষ তাহাদের যুক্তি বা পাল্টা-যুক্তি প্রদানসহ মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করিতে পারিবেন, অতঃপর মহাপরিচালক পেটেন্টটি বহাল, সংশোধন বা প্রত্যাহারের আদেশ প্রদান করিয়া বিরোধটি নিষ্পত্তি করিবেন এবং নিষ্পত্তির ১ (এক) মাসের মধ্যে উভয়পক্ষকে কারণ উল্লেখসহ তাহার সিদ্ধান্ত অবহিত করিবেন।

পেটেন্ট আবেদন পরীক্ষার অনুরোধ

২১।   (১) আবেদনকারী, পেটেন্ট আবেদন দাখিলের তারিখ হইতে ৩৬ (ছত্রিশ) মাসের মধ্যে, নির্ধারিত ফি পরিশোধপূর্বক, মহাপরিচালককে তাহার পেটেন্ট আবেদন পরীক্ষার অনুরোধ করিতে পারিবেন।

(২) পেটেন্ট পরীক্ষার অনুরোধ করিয়া কোনো আবেদন দাখিল করা না হইলে, উক্ত আবেদনটি পরিত্যক্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(৩) উক্ত মেয়াদ সমাপ্ত হইবার পূর্বে মহাপরিচালকের নিকট নির্ধারিত ফি-সহ মেয়াদ বৃদ্ধির অনুরোধপত্র দাখিল করা হইলে, উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত মেয়াদ ৩ (তিন) মাস বৃদ্ধি করা যাইবে।

(৪) মহাপরিচালক, এই আইনের বিধান মোতাবেক পেটেন্ট আবেদন পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।

আবেদন পরীক্ষা

২২। (১) যদি ধারা ২১ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত পদ্ধতিতে কোনো পেটেন্ট আবেদন পরীক্ষার অনুরোধ করা হয়, তাহা হইলে আবেদন ও বিশেষত্বনামা এবং তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য দলিল, যতদ্রুত সম্ভব, পরীক্ষকের নিকট প্রেরণ করিবেন যাহাতে তিনি নিম্নবর্ণিত বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করিতে পারেন, যথা:-

(ক) আবেদন ও বিশেষত্বনামা এবং তৎসংক্রান্ত অন্যান্য দলিল এই আইন এবং তদধীন প্রণীত বিধি মোতাবেক হইয়াছে কি না;

(খ) আবেদনের ভিত্তিতে এই আইনের অধীন পেটেন্ট মঞ্জুরের ক্ষেত্রে আপত্তির কোনো আইনগত ভিত্তি রহিয়াছে কি না;

(গ) ধারা ২৩ এর অধীন পরিচালিত অনুসন্ধানের ফলাফল;

(ঘ) নির্ধারিত অন্য কোনো বিষয়।

(২) যদি কোনো পেটেন্ট আবেদনের ক্ষেত্রে মহাপরিচালক কর্তৃক গৃহীত পরীক্ষকের রিপোর্ট আবেদনকারীর প্রতিকূলে হয় এবং অতঃপর উল্লিখিত বিধান অনুযায়ী আবেদনটি নিষ্পত্তি করিবার ক্ষেত্রে কার্যধারা প্রতিপালন নিশ্চিত করিবার জন্য আবেদন ও বিশেষত্বনামা এবং তৎসংক্রান্ত অন্যান্য দলিল সংশোধনের প্রয়োজন হয়, তাহা হইলে মহাপরিচালক, যতদ্রুত সম্ভব, আপত্তির সার-সংক্ষেপ আবেদনকারীকে অবহিত করিবেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদনকারী চাহিলে তাহাকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিবেন।

পেটেন্ট পরীক্ষার সময় অনুসন্ধান (Patent Searching)

২৩।  (১) যাহাকে ধারা ২২ এর অধীন কোনো পেটেন্ট আবেদন প্রেরণ করা হয় তিনি কোনো সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামার দাবিতে দাবিকৃত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি সম্পর্কে নিশ্চিত হইবার জন্য একটি অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করিবেন, যথা:-

(ক) ধারা ২ এ বর্ণিত উদ্ভাবন, নূতনত্ব, উদ্ভাবনী ধাপ, শিল্পক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্যতার মাপকাঠিতে উহা উত্তীর্ণ কি না;

(খ) এই আইনের ধারা ৬ এর উপ-ধারা (১) এর শর্ত পূরণ করিয়াছে কি না;

(গ) উদ্ভাবনী ধাপ প্রমাণ করিবার জন্য বিশেষত্বনামা যথাযথভাবে সাক্ষ্য-প্রমাণ ও তুলনামূলক উপাত্ত দ্বারা সমর্থিত কি না।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার অতিরিক্ত হিসাবে আবেদনকারীর সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা দাখিলের তারিখের পূর্বে উক্ত উদ্ভাবন বাংলাদেশে বা অন্য কোনো স্থানে কোনো দলিলে প্রকাশের মাধ্যমে অনুমিত হইয়াছে কি না, উহা নিশ্চিত হইবার জন্যও পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করিবেন।

(৩) যদি কোনো সম্পূর্ণ বিশেষত্বনামা বা কোনো একটি দাবি এই আইনের অধীন পেটেন্ট মঞ্জুরের পূর্বে সংশোধন করা হয়, তাহা হইলে সংশোধিত বিশেষত্বনামা বা সংশোধিত দাবি মূল বিশেষত্বনামা বা দাবির অনুরূপ একই পদ্ধতিতে পরীক্ষা করা হইবে।

(৪) ধারা ২২ ও এই ধারার অধীন পরিচালিত পরীক্ষা ও অনুসন্ধান কোনোভাবেই কোনো পেটেন্টের বৈধতা দান করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে না, এবং উক্ত পরীক্ষা বা তদন্ত বা কোনো প্রতিবেদন বা উহার ফলে কোনো কার্যধারার কারণে বা এতৎসম্পর্কিত বিষয়ে সরকার বা সরকারের কোনো কর্মচারী কোনো দায় বহন করিবে না।

পেটেন্ট মঞ্জুর (Granting), প্রত্যাখ্যান (Refusal) ও পরিবর্তন (Modification)

২৪।  (১) পেটেন্ট আবেদন পরীক্ষার পর কোনো উদ্ভাবন পেটেন্ট মঞ্জুর সংক্রান্ত শর্তাবলি পূরণ করিয়াছে বলিয়া মহাপরিচালকের নিকট যথাযথভাবে প্রতীয়মান হইলে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ধারা ১৯ এর বিধানাবলী প্রতিপালন সাপেক্ষে, তিনি উদ্ভাবনটির পেটেন্ট মঞ্জুর করিয়া আদেশ জারি করিবেন এবং উক্ত শর্তাবলি পূরণ না হইলে আবেদন প্রত্যাখ্যান করিবেন, তবে উভয় ক্ষেত্রেই, তিনি গৃহীত সিদ্ধান্ত আবেদনকারীকে যথাশীঘ্র সম্ভব লিখিতভাবে অবহিত করিবেন।

(২) মহাপরিচালক পেটেন্ট মঞ্জুরের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন, যথা:-

(ক) পেটেন্ট মঞ্জুরের বিষয়টি ওয়েবসাইটে বা প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রকাশ;

(খ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়ে ফি পরিশোধ সাপেক্ষে আবেদনকারীকে পেটেন্ট মঞ্জুরের সনদ প্রদান;

(গ) পেটেন্ট আবেদনটি নিবন্ধন বহিতে নিবন্ধন।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs