প্রিন্ট

05/12/2024
কাস্টমস আইন, ২০২৩

কাস্টমস আইন, ২০২৩

( ২০২৩ সনের ৫৭ নং আইন )

দ্বাবিংশ অধ্যায়

উপকূলীয় পণ্য এবং নৌযান সম্পর্কিত বিধানাবলি

ব্যাগেজের ক্ষেত্রে এই অধ্যায়ের অপ্রযোজ্যতা

১৬১। এই অধ্যায়ের বিধানাবলি ব্যাগেজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।

উপকূলীয় পণ্যের এন্ট্রি

১৬২। (১) উপকূলীয় পণ্যের প্রেরক, বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে, যথাযথ কর্মকর্তার নিকট উক্ত পণ্য সম্পর্কিত একটি বিল পেশ করিবেন।

(২) উপ- ধারা (১) এ উল্লিখিত প্রত্যেক প্রেরক তাহার পেশকৃত উপকূলীয় পণ্য সম্পর্কিত বিলে উহার অন্তর্ভুক্ত পণ্যের সত্যতা সম্পর্কে একটি ঘোষণা প্রদান করিবেন।

উপকূলীয় পণ্য সম্পর্কিত বিল ছাড় না হওয়া পর্যন্ত উহা বোঝাই না করা

১৬৩। যথাযথ কর্মকর্তা কর্তৃক উপকূলীয় পণ্য সম্পর্কিত বিল ছাড় না হওয়া পর্যন্ত এবং উহা পণ্যের প্রেরক কর্তৃক নৌযানের মাস্টারের নিকট অর্পণ না করা পর্যন্ত কোনো নৌযান উপকূলীয় পণ্য গ্রহণ করিবে না:

তবে শর্ত থাকে যে, ব্যতিক্রমী অবস্থায় নৌযানের মাস্টার কর্তৃক লিখিত আবেদনক্রমে যথাযথ কর্মকর্তা উক্ত পণ্য সম্পর্কিত বিলের উপস্থাপন এবং ছাড় প্রদান অপেক্ষমান রাখিয়া উপকূলীয় পণ্য বোঝাই করিবার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন।

গন্তব্যস্থলে উপকূলীয় পণ্যের ছাড়পত্র

১৬৪। (১) উপকূলীয় পণ্য বহনকারী নৌযানের মাস্টার ধারা ১৬৩ এর অধীন তাহার নিকট অর্পিত সকল বিল নৌযানে বহন করিবেন এবং উক্ত নৌযান কোনো কাস্টমস বন্দর অথবা উপকূলীয় বন্দরে পৌঁছাইবার ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টার মধ্যে যে পণ্য উক্ত বন্দরে নামানো হইবে সেই পণ্য সম্পর্কিত সকল বিল যথাযথ কর্মকর্তার নিকট অর্পণ করিবেন।

(২) যে ক্ষেত্রে কোনো উপকূলীয় পণ্য কোনো বন্দরে নামানো হয় সেই ক্ষেত্রে যথাযথ কর্মকর্তা যদি এইমর্মে সন্তুষ্ট হন যে, উক্ত পণ্য উপ- ধারা (১) এর অধীন তাহার নিকট অর্পিত বিলের অন্তর্ভুক্ত রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি উহা খালাসের অনুমতি প্রদান করিবেন।

উপকূলীয় নৌযানের বিদেশি বন্দর স্পর্শ করা সম্পর্কিত ঘোষণা

১৬৫। উপকূলীয় পণ্য বহনকারী নৌযান বাংলাদেশের কোনো বন্দরে পৌঁছাইবার অব্যবহিত পূর্বে কোনো বিদেশি বন্দর স্পর্শ করিয়া থাকিলে উহার মাস্টার ধারা ১৬৪ এ উল্লিখিত বিলসমূহের সহিত উক্ত ঘটনা বিবৃত করিয়া এবং উক্ত বিদেশি বন্দরে খালাসকৃত অথবা সেইস্থান হইতে নৌযানে বোঝাইকৃত পণ্যের, যদি থাকে, বিবরণ এবং বিনির্দেশ উল্লেখ করিয়া একটি ঘোষণা প্রদান করিবেন।

কার্গো বুক

১৬৬। (১) প্রত্যেক উপকূলীয় নৌযানে নৌযানের নাম, যেখানে নিবন্ধিত সেই বন্দরের নাম এবং মাস্টারের নাম উল্লেখপূর্বক একটি কার্গো বুক সংরক্ষণ করিতে হইবে।

(২) প্রত্যেক উপকূলীয় নৌযানের মাস্টারের কর্তব্য হইবে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি কার্গো বুকে লিপিবদ্ধকরণের ব্যবস্থা করা, যথা:-

(ক) নৌযানের গন্তব্য বন্দর এবং প্রতিটি সমুদ্রযাত্রা;

(খ) প্রত্যেক পণ্য বোঝাই করা বন্দর হইতে প্রস্থানের এবং প্রত্যেক পণ্য খালাস হওয়া বন্দরে পৌঁছার ভিন্ন ভিন্ন সময়;

(গ) প্রত্যেক পণ্য বোঝাই করা বন্দরের নাম এবং নৌযানে বোঝাইকৃত প্যাকেজসমূহের বর্ণনা ও পরিমাণ এবং উহাতে ধারণকৃত অথবা খোলা সাজানো পণ্যের বর্ণনাসহ সকল পণ্যের হিসাব এবং রপ্তানিকারকের এবং প্রাপকের নামসমূহ এবং বর্ণিত তথ্যাদি যতখানি নিরূপণ সম্ভবপর হয়; এবং

(ঘ) প্রত্যেক পণ্য খালাসে প্রতিটি বন্দরের নাম এবং উক্ত নৌযান হইতে প্রতিটি পণ্য খালাসের তারিখ।

(৩) পণ্য বোঝাই এবং খালাস সম্পর্কিত এন্ট্রিসমূহ যথাক্রমে বোঝাই এবং খালাস করিবার বন্দরে সম্পন্ন করিতে হইবে।

(৪) যথাযথ কর্মকর্তার পরিদর্শনের জন্য চাহিবামাত্র প্রত্যেক মাস্টার কার্গো বুক উপস্থাপন করিবেন এবং উহাতে উক্ত কর্মকর্তা যেরূপ আবশ্যক বিবেচনা করিবেন সেইরূপ নোট অথবা মন্তব্য লিপিবদ্ধ করিতে পারিবেন।

কাস্টমস বন্দর অথবা উপকূলীয় বন্দর ব্যতীত অন্যত্র উপকূলীয় পণ্য বোঝাই অথবা খালাস না করা

১৬৭। ধারা ৮ এর অধীন ঘোষিত কাস্টমস বন্দর অথবা উপকূলীয় বন্দর ব্যতীত অন্য কোনো বন্দরে কোনো উপকূলীয় পণ্য কোনো নৌযানে বোঝাই অথবা নৌযান হইতে খালাস করা যাইবে না।

প্রস্থানের পূর্বে উপকূলীয় নৌযান কর্তৃক লিখিত আদেশ গ্রহণ

১৬৮। (১) যথাযথ কর্মকর্তা কর্তৃক লিখিত আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত কোনো কাস্টমস বন্দরে অথবা উপকূলীয় বন্দরে উপকূলীয় পণ্য আনয়নকারী অথবা বোঝাইকারী কোনো উপকূলীয় নৌযান উক্ত বন্দর হইতে প্রস্থান করিতে পারিবে না।

(২) উপ- ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো আদেশ প্রদান করা যাইবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না-

(ক) নৌযানের মাস্টার তাহার নিকট জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের, যদি থাকে, উত্তর প্রদান করেন;

(খ) উক্ত নৌযান সম্পর্কিত অথবা উহার মাস্টার কর্তৃক প্রদেয় সকল চার্জ এবং জরিমানা, যদি থাকে, পরিশোধ করা হয় অথবা যথাযথ কর্মকর্তা কর্তৃক নির্দেশিত গ্যারান্টি দ্বারা উহার পরিশোধ নিশ্চিত করা হয়।

উপকূলীয় পণ্যের ক্ষেত্রে এই আইনের কতিপয় বিধানের প্রয়োগ

১৬৯। (১) আমদানিকৃত পণ্য অথবা রপ্তানিতব্য পণ্যের ক্ষেত্রে ধারা ৬৫ যেরূপ প্রযোজ্য হয় সেইরূপ, যতদূর সম্ভব, উপকূলীয় পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।

(২) আমদানিকৃত পণ্য অথবা রপ্তানিতব্য পণ্য বহনকারী নৌযানের ক্ষেত্রে ধারা ৫১ এর উপ- ধারা (২), ধারা ৫২ এবং ধারা ৬০ যেরূপ প্রযোজ্য হয় সেইরূপ, যতদূর সম্ভব, উপকূলীয় পণ্য বহনকারী নৌযানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।

(৩) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে যে, নবম অধ্যায়ের সকল বিধানাবলি অথবা যে কোনো বিধান এবং ধারা ৭৬ এর বিধানাবলি প্রজ্ঞাপনে যেরূপ উল্লেখ থাকে সেইরূপ ব্যতিক্রম এবং পরিবর্তনসহ উপকূলীয় পণ্যের ক্ষেত্রে অথবা উপকূলীয় পণ্য বহনকারী নৌযানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।

কতিপয় পণ্যের উপকূলীয় বাণিজ্য নিষিদ্ধ

১৭০। কোনো আইন দ্বারা অথবা আইনের অধীন আরোপিত নিষিদ্ধকরণ অথবা বিধি- নিষেধ লঙ্ঘন করিয়া উপকূলবাহী কোনো পণ্য অথবা রসদ ও ভাণ্ডার সামগ্রী হিসাবে কোনো পণ্য উপকূলীয় নৌযানে বহন করা যাইবে না অথবা উক্ত পণ্য অথবা রসদ ও ভাণ্ডার সামগ্রী এইরূপ বহন করিবার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের কোনো স্থানে আনয়ন করা যাইবে না।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs