প্রিন্ট ভিউ

কাস্টমস আইন, ২০২৩

( ২০২৩ সনের ৫৭ নং আইন )

ষষ্ঠ অধ্যায়

কাস্টমস শুল্ক আরোপ ও অব্যাহতি

শুল্কযোগ্য পণ্য

১৮। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, আমদানিকৃত বা রপ্তানিতব্য সকল পণ্যের উপর প্রথম তফসিলে বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের অধীন নির্ধারিত হারে কাস্টমস শুল্ক প্রদেয় হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, বোর্ড কর্তৃক বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, এই আইন বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের অধীন কোনো কাস্টমস কর্মকর্তা কর্তৃক আরোপণীয় কোনো শুল্ক ও কর আরোপ বা আদায় করা হইবে না, যদি কোনো একটি চালানের পণ্যমূল্য ২ (দুই) হাজার টাকার অধিক না হয়।

(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেইরূপ সমীচীন মনে করিবে সেইরূপ শর্ত, সীমা বা বিধি- নিষেধ আরোপ সাপেক্ষে, প্রথম তফসিলে বিনির্দিষ্ট সকল বা যে কোনো পণ্যের উপর উক্ত তফসিলে নির্ধারিত কাস্টমস শুল্কের সর্বোচ্চ হারের দ্বিগুণের অধিক নয়, এমন হারে রেগুলেটরি শুল্ক আরোপ করিতে পারিবে।

ব্যাখ্যা।- কোনো পণ্যের উপর রেগুলেটরি শুল্কের হার উক্ত পণ্যের উপর প্রথম তফসিলে নির্ধারিত আরোপযোগ্য কাস্টমস শুল্ক হারের অধিক হইতে পারিবে, তবে উক্ত রেগুলেটরি শুল্ক উক্ত তফসিলের সর্বোচ্চ কাস্টমস শুল্ক হারের দ্বিগুণের অধিক হইতে পারিবে না।

(৩) উপ ধারা (২) এর অধীন আরোপিত রেগুলেটরি শুল্ক উপ ধারা (১) অথবা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের অধীন আরোপিত শুল্কের অতিরিক্ত হইবে।

(৪) উপ ধারা (২) এর অধীন জারিকৃত কোনো প্রজ্ঞাপন পূর্বে রহিত করা না হইলে, যেই অর্থ- বৎসরে উহা জারি করা হইয়াছে সেই অর্থ- বৎসর সমাপনান্তে (on the expiry) উহা স্বয়ংক্রিয়ভাবে রহিত হইয়া যাইবে।

কাউন্টারভেইলিং শুল্ক আরোপ

১৯। (১) যদি কোনো দেশ বা এলাকা কোনো পণ্যের প্রস্তুত বা উৎপাদন অথবা উক্ত স্থান হইতে রপ্তানিতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, উক্ত পণ্য পরিবহণে ভর্তুকিসহ অন্য কোনো ভর্তুকি প্রদান করে, তাহা হইলে, উক্ত পণ্য যে দেশে প্রস্তুত, উৎপাদিত বা ভিন্নভাবে প্রাপ্ত, সেই দেশ হইতে সরাসরি আমদানি করা হউক বা না হউক এবং উহা প্রস্তুতকৃত বা উৎপাদিত দেশ হইতে রপ্তানির সময়ে যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থায় বা প্রস্তুতকরণ, উৎপাদন দ্বারা বা ভিন্নভাবে পরিবর্তিত অবস্থায় আমদানি করা হউক না কেন, উক্ত পণ্য আমদানির ফলে অনুরূপ দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা হইবার সম্ভাবনা থাকিলে এবং আমদানির সহিত দেশীয় উক্ত শিল্পের ক্ষতির কার্যকারণ সম্পর্ক থাকিলে বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশক্রমে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উহার উপর উক্ত ভর্তুকির অধিক নহে, এইরূপ পরিমাণ কাউন্টারভেইলিং শুল্ক আরোপ করিতে পারিবে।

ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ভর্তুকি প্রদান করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে, যদি-

(ক) রপ্তানিকারক বা উৎপাদক দেশের অভ্যন্তরে সরকার বা কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত আর্থিক সহায়তা থাকে, যেখানে-

(অ) সরকারের কোনো প্রচলিত কার্যক্রম, যাহাতে সরাসরি তহবিল হস্তান্তর (কোনো অনুদান, ঋণ এবং অংশীদারি মূলধন প্রবাহসহ) অথবা তহবিল বা দায় বা উভয়ের সম্ভাব্য (potential) সরাসরি হস্তান্তর সংশ্লিষ্ট থাকে;

(আ) সরকারি রাজস্ব, যাহা অন্যবিধভাবে প্রাপ্য থাকা সত্ত্বেও ছাড় দেয়া হয় বা আদায় করা না হয় (আর্থিক প্রণোদনাসহ);

(ই) সরকার সাধারণ অবকাঠামো ব্যতিরেকে অন্য যে কোনো পণ্য বা সেবা প্রদান করে অথবা পণ্য ক্রয় করে;

(ঈ) উপ- দফা (অ) (আ) বা (ই) তে বর্ণিত এক বা একাধিক ধরনের কার্যক্রম, যাহা সচরাচর সরকারের উপর ন্যস্ত থাকে, তাহা পরিচালনার জন্য সরকার কোনো অর্থায়ন প্রক্রিয়ায় তহবিল সরবরাহ করে অথবা কোনো বেসরকারি সংস্থার উপর দায়িত্ব ন্যস্ত করে অথবা নির্দেশ প্রদান করে, যাহার প্রচলিত পদ্ধতি প্রকৃত অর্থে সরকার কর্তৃক সচরাচর অনুসৃত পদ্ধতি হইতে ভিন্ন না হয়; অথবা

(খ) সরকার যে কোনো ধরনের আয় বা মূল্য সহায়তা প্রদান করে বা বহাল রাখে, যাহা উক্ত দেশ হইতে কোনো পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি বা উক্ত দেশে কোনো পণ্যের আমদানি হ্রাসে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়ক হয় এবং ইহার ফলে কোনো সুবিধা প্রদত্ত হয়।

(২) ভর্তুকির পরিমাণ নির্ধারণ সাপেক্ষে, সরকার, এই ধারার বিধান এবং তদ&ধীন প্রণীত বিধি অনুসারে সাময়িকভাবে প্রাক্কলিত ভর্তুকির অধিক নহে এইরূপ কাউন্টারভেইলিং শুল্ক এই উপ- ধারার অধীনে আরোপ করিতে পারিবে, এবং যদি উক্ত কাউন্টারভেইলিং শুল্ক পরবর্তীকালে নির্ধারিত ভর্তুকির পরিমাণ হইতে অধিক হয়, তাহা হইলে সরকার-

(ক) উক্ত ভর্তুকি নির্ধারণের বিষয় বিবেচনায় রাখিয়া এবং যথাশীঘ্র সম্ভব উক্ত নির্ধারণের পরে উক্ত কাউন্টারভেইলিং শুল্ক হ্রাস করিবে; এবং

(খ) এইরূপ হ্রাস করিবার ফলে যে পরিমাণ অতিরিক্ত কাউন্টারভেইলিং শুল্ক আদায় হইয়াছে উহা ফেরত প্রদান করিবে।

(৩) উপ- ধারা (১) বা (২) এর অধীন কাউন্টারভেইলিং শুল্ক আরোপিত হইবে না, যদি না ইহা নিরূপিত হয় যে-

(ক) ভর্তুকি কোনো রপ্তানি সক্ষমতার সহিত সম্পর্কিত; বা

(খ) ভর্তুকি রপ্তানিকৃত পণ্য উৎপাদনে ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমদানিকৃত কাঁচামালের পরিবর্তে স্থানীয় কাঁচামালের ব্যবহার সম্পর্কিত; অথবা

(গ) পণ্য প্রস্তুতকরণ, উৎপাদন বা রপ্তানিতে নিয়োজিত কতিপয় সীমিত সংখ্যক ব্যক্তিকে ভর্তুকি প্রদান করা হইয়াছে, যদি না উক্ত ভর্তুকি-

(অ) প্রস্তুতকরণ, উৎপাদন বা রপ্তানিতে নিয়োজিত ব্যক্তি কর্তৃক বা তাহার পক্ষে পরিচালিত গবেষণা কার্যের জন্য; বা

(আ) রপ্তানিকারক দেশের অভ্যন্তরে কোনো অনগ্রসর এলাকার সহায়তার জন্য; বা

(ই) নূতন পরিবেশগত আবশ্যকতার সহিত বিদ্যমান সুবিধাদির অভিযোজন উন্নয়নকল্পে সহায়তার জন্য-

প্রদান করা হয়।

(৪) যদি সরকার এই অভিমত পোষণ করে যে, ভর্তুকি সুবিধাপ্রাপ্ত পণ্য তুলনামূলক স্বল্প সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণে আমদানির ফলে স্থানীয় শিল্পের স্বার্থহানি হইয়াছে, যাহা পূরণ করা কঠিন এবং যেক্ষেত্রে উক্ত স্বার্থহানির পুনরাবৃত্তি রোধ করিবার জন্য ভূতাপেক্ষভাবে কাউন্টারভেইলিং শুল্ক আরোপ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে সেইক্ষেত্রে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপ- ধারা (২) এর অধীন কাউন্টারভেইলিং শুল্ক আরোপের পূর্ববর্তী কোনো তারিখ হইতে ভূতাপেক্ষভাবে কাউন্টারভেইলিং শুল্ক আরোপ করিতে পারিবে; তবে উহা উক্ত উপ- ধারার অধীন প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ হইতে ৯০ (নব্বই) দিনের পূর্বে হইবে না এবং, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উক্ত শুল্ক এই উপ- ধারার অধীন জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত তারিখ হইতে প্রদেয় হইবে।

(৫) এই ধারার অধীন আরোপযোগ্য কাউন্টারভেইলিং শুল্ক এই আইন অথবা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের অধীন আরোপিত অন্যান্য শুল্কের অতিরিক্ত হইবে।

(৬) পূর্বেই প্রত্যাহার করা না হইলে, এই ধারার অধীন আরোপিত কাউন্টারভেইলিং শুল্ক, আরোপের তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর সমাপ্তির পর অকার্যকর হইয়া যাইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার পুনর্বিবেচনা করিয়া যদি এই অভিমত পোষণ করে যে, উক্ত শুল্ক প্রত্যাহারের ফলে ভর্তুকি কার্যক্রম এবং স্বার্থহানি অব্যাহত থাকিতে অথবা উহাদের পুনরাবৃত্তি ঘটিতে পারে, তাহা হইলে সরকার, সময় সময়, এই শুল্ক আরোপের মেয়াদ অতিরিক্ত ৫ (পাঁচ) বৎসরের জন্য মেয়াদের জন্য বৃদ্ধি করিতে পারিরে:

আরও শর্ত থাকে যে, যদি উল্লিখিত ৫ (পাঁচ) বৎসর মেয়াদ সমাপ্তি হওয়ার পূর্বে আরম্ভ হওয়া কোনো পুনর্বিবেচনা কার্যক্রম উক্ত মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বে চূড়ান্ত না হয়, তাহা হইলে, পুনর্বিবেচনার ফলাফল সাপেক্ষে, কাউন্টারভেইলিং শুল্ক ১ (এক) বৎসরের অধিক নহে, এইরূপ অতিরিক্ত সময়ের জন্য বলবৎ থাকিবে।

(৭) সরকার, সময় সময় যেরূপ প্রয়োজন মনে করিবে সেইরূপ তদন্তের পর উপ- ধারা (১) বা (২) এ উল্লিখিত ভর্তুকির পরিমাণ নিরূপণ ও নির্ধারণ করিবে এবং এইরূপ পণ্য শনাক্তকরণ ও আমদানির পর এই ধারার অধীন আরোপিত কাউন্টারভেইলিং শুল্ক নিরূপণ ও আদায় করিবার জন্য বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

(৮) এই ধারার অধীন কাউন্টারভেইলিং শুল্ক আরোপের কোনো কার্যক্রম শুরু করা যাইবে না, যদি না কোনো স্থানীয় শিল্প কর্তৃক অথবা উহার পক্ষ হইতে পেশকৃত লিখিত আবেদন প্রাপ্তির পর অথবা স্ব- প্রণোদিত হইয়া বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন সরকারকে অবহিত করে যে, কোনো নির্দিষ্ট আমদানিকৃত পণ্যের উপর প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ ভর্তুকির কারণে সৃষ্ট স্বার্থহানির দৃশ্যমান প্রমাণ রহিয়াছে।

অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক আরোপ

২০। (১) যদি কোনো দেশ অথবা এলাকা, অতঃপর এই ধারায় রপ্তানিকারক দেশ অথবা এলাকা বলিয়া উল্লিখিত, হইতে কোনো পণ্য উহার স্বাভাবিক মূল্য অপেক্ষা কম মূল্যে বাংলাদেশে রপ্তানি করা হয় এবং উক্ত রপ্তানির ফলে দেশীয় অনুরূপ শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকে, তাহা হইলে সরকার, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে, ডাম্পিং মার্জিনের অধিক নহে এইরূপ পরিমাণ, অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করিতে পারিবে।

ব্যাখ্যা- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে-

(ক) “ডাম্পিং মার্জিন” অর্থ উহার রপ্তানি মূল্য এবং স্বাভাবিক মূল্যের মধ্যকার পার্থক্য;

(খ) “রপ্তানি মূল্য” অর্থ রপ্তানিকারক দেশ বা এলাকা হইতে রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য এবং যে স্থানে কোনো রপ্তানি মূল্য নাই বা রপ্তানিকারক এবং আমদানিকারক বা কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যে সম্পৃক্ততা (association) বা কোনো ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থার কারণে যখন রপ্তানিমূল্য বিশ্বাসযোগ্য হয় না তখন যে মূল্যে আমদানিকৃত পণ্য কোনো নিরপেক্ষ ক্রেতার নিকট প্রথম পুনঃবিক্রয় হয় সেই মূল্যের ভিত্তিতে অথবা যে অবস্থায় পণ্য আমদানি করা হইয়াছে, সেই অবস্থায় যদি কোনো নিরপেক্ষ ক্রেতার নিকট পুনঃবিক্রয় না হয়, তাহা হইলে উপ- ধারা (৬) এর অধীন প্রণীত বিধিমালা অনুসারে নির্ধারণযোগ্য যুক্তিসংগতভিত্তিতে রপ্তানি মূল্য নির্ণয় করা যাইবে;

(গ) “স্বাভাবিক মূল্য” অর্থ-

(অ) উপ- ধারা (৬) এর অধীন প্রণীত বিধিমালা অনুসারে রপ্তানিকারক দেশে অথবা এলাকায় ভোগের জন্য সমজাতীয় পণ্যের (like product) সাধারণ ব্যবসা প্রক্রিয়ায় নিরূপিত তুলনীয় মূল্য; অথবা

(আ) রপ্তানিকারক দেশের বা এলাকার স্থানীয় বাজারে যখন স্বাভাবিক ব্যবসা প্রক্রিয়ায় সমজাতীয় পণ্যের কোনো বিক্রয় থাকে না, অথবা যখন বিশেষ বাজার পরিস্থিতির কারণে অথবা রপ্তানিকারক দেশের বা এলাকার (territory) স্থানীয় বাজারে স্বল্প পরিমাণ বিক্রয়ের কারণে উক্ত বিক্রয় যথাযথ তুলনা অনুমাদন করে না, তখন স্বাভাবিক মূল্য হইবে-

(i) উপ- ধারা (৬) এর অধীন প্রণীত বিধিমালা অনুসারে রপ্তানিকারক দেশ বা এলাকা বা কোনো উপযুক্ত তৃতীয় কোনো দেশ হইতে রপ্তানিকৃত সমজাতীয় পণ্যের নিরূপিত তুলনীয় প্রতিনিধিত্বমূলক মূল্য; অথবা

(ii) উপ- ধারা (৬) এর অধীন প্রণীত বিধিমালা অনুসারে উক্ত পণ্যের উৎস দেশের উৎপাদন ব্যয়ের সহিত যুক্তিসংগত পরিমাণ প্রশাসনিক, বিক্রয় ও সাধারণ ব্যয় এবং মুনাফা বাবদ যুক্তিসংগত সংযোজনসহ উক্ত পণ্যের উৎপাদন ব্যয়:

তবে শর্ত থাকে যে, উৎস দেশ (country of origin) ব্যতীত অন্য কোনো দেশ হইতে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে যদি রপ্তানিকারক দেশের মাধ্যমে পণ্য কেবল স্থানান্তরিত হয় (transhipped) অথবা এইরূপ পণ্য রপ্তানিকারক দেশে উৎপাদিত না হয়, সেই ক্ষেত্রে উৎস দেশের মূল্যের ভিত্তিতে পণ্যের স্বাভাবিক মূল্য নির্ধারিত হইবে।

(২) কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক মূল্য এবং ডাম্পিং মার্জিন নিরূপণ না হওয়া পর্যন্ত সরকার এই ধারার বিধান এবং তদ&ধীন প্রণীত বিধি অনুসারে সাময়িকভাবে প্রাক্কলিত উক্ত মূল্য এবং ডাম্পিং মার্জিন ভিত্তিতে এইরূপ পণ্য বাংলাদেশে আমদানির উপর অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করিতে পারিবে এবং যদি উক্ত অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক পরবর্তীকালে নির্ধারিত মার্জিন হইতে অধিক হয়, তাহা হইলে সরকার-

(ক) উক্তরূপ নির্ধারণের বিষয় বিবেচনায় রাখিয়া এবং উক্তরূপ নির্ধারণের পর যথাশীঘ্র সম্ভব এই প্রকার অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক হ্রাস করিবে; এবং

এইরূপ হ্রাস করিবার ফলে আদায়কৃত অতিরিক্ত অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক যতটুকু অতিরিক্ত আদায় করা হইয়াছে, ততটুকু ফেরত প্রদান করিবে।

(৩) যদি সরকার তদন্তাধীন ডাম্পকৃত কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে এইরূপ অভিমত পোষণ করে যে, ডাম্পিং এর কারণে শিল্পের স্বার্থহানির ইতিহাস রহিয়াছে অথবা রপ্তানিকারক ডাম্পিং চর্চা করে এবং ইহাতে স্থানীয় শিল্পের স্বার্থহানি ঘটে মর্মে আমদানিকারক জানিতেন বা তাহার জানা উচিত ছিল, তাহা হইলে সরকার, সরকারি গেজটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপ- ধারা (২) এর অধীন অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক আরোপের পূর্ববর্তী কোনো তারিখ হইতে ভূতাপেক্ষভাবে অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করিতে পারিবে; তবে তাহা উক্ত উপ- ধারার অধীন প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ হইতে নব্বই দিনের পূর্বে হইবে না এবং, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, উক্ত শুল্ক এই উপ- ধারার অধীন জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত হার ও তারিখ হইতে প্রদেয় হইবে।

(৪) এই ধারার অধীন আরোপযোগ্য অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক এই আইন বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের অধীন আরোপিত অন্যান্য শুল্কের অতিরিক্ত হইবে।

(৫) পূর্বেই প্রত্যাহার করা না হইলে, এই ধারার অধীন আরোপিত অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক, আরোপের তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর সমাপ্তির পর অকার্যকর হইয়া যাইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার পর্যালোচনা করিয়া যদি এই অভিমত পোষণ করে যে উক্ত শুল্ক অকার্যকর (cessation) করিবার ফলে ডাম্পিং এবং স্বার্থহানি অব্যাহত থাকিতে অথবা উহাদের পুনারাবৃত্তি ঘটিতে পারে, তাহা হইলে সরকার, সময় সময়, এইরূপ শুল্ক আরোপের মেয়াদ অতিরিক্ত ৫ (পাঁচ) বৎসরের জন্য মেয়াদের জন্য বৃদ্ধি করিতে পারিবে:

আরও শর্ত থাকে যে, যদি উল্লিখিত ৫ (পাঁচ) বৎসর মেয়াদ সমাপ্তি হওয়ার পূর্বে আরম্ভ হওয়া কোনো পর্যালোচনা কার্যক্রম উক্ত মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বে চূড়ান্ত করা না হয়, তাহা হইলে, পর্যালোচনার ফলাফল সাপেক্ষে, অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক অনধিক এক বৎসর অতিরিক্ত সময়ের জন্য বলবৎ থাকিবে।

(৬) সরকার, সময় সময়, যেরূপ প্রয়োজন মনে করিবে সেইরূপ তদন্তের পর উপ- ধারা (১) বা (২) এ উল্লিখিত ডাম্পিং এর ডাম্পিং মার্জিন নিরূপণ ও নির্ধারণ করিবে এবং এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং উপরি- উক্ত ক্ষমতার সামগ্রিকতা ক্ষুণ্ন না করিয়া, উক্তরূপ বিধিমালায় এই ধারার অধীন অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্কারোপযোগ্য পণ্য কোনো উপায়ে শনাক্ত করা যায় এবং উক্ত পণ্য সম্পর্কিত রপ্তানি মূল্য, স্বাভাবিক মূল্য এবং ডাম্পিং মার্জিন কিভাবে নির্ধারণ করা যায়, উহার পদ্ধতি এবং উক্ত অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক নিরূপণ এবং আদায়ের বিধান করিতে পারিবে।

(৭) এই ধারার অধীন অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক আরোপের কোনো কার্যক্রম আরম্ভ করা যাইবে না, যদি না কোনো স্থানীয় শিল্প কর্তৃক অথবা উহার পক্ষ হইতে পেশকৃত লিখিত আবেদন প্রাপ্তির পর অথবা স্ব- উদ্যোগে সংগৃহীত পর্যাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন সরকারকে অবহিত করে যে কোনো নির্দিষ্ট আমদানিকৃত পণ্যের ডাম্পিং এর কারণে দেশীয় শিল্পের স্বার্থহানির দৃশ্যমান প্রমাণ রহিয়াছে।

কতিপয় ক্ষেত্রে কাউন্টারভেইলিং শুল্ক বা অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক আরোপণীয় নহে

২১। (১) ধারা ১৯ বা ২০ এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন,-

(ক) ডাম্পিং অথবা রপ্তানি ভর্তুকির অভিন্ন পরিস্থিতিতে ক্ষতিপূরণের জন্য যুগপৎভাবে কোনো পণ্যের উপর কাউন্টারভেইলিং শুল্ক ও অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করা যাইবে না;

(খ) সরকার,-

(অ) উৎস দেশে ভোগের জন্য বা রপ্তানির জন্য অনুরূপ পণ্যের উপর প্রযোজ্য শুল্ক বা কর হইতে উক্ত পণ্যকে অব্যাহতি প্রদানের কারণে অথবা রপ্তানির কারণে বা উক্ত শুল্ক বা কর ফেরত (refund) প্রদানের কারণে ধারা ১৯ বা ২০ এর অধীন কোনো কাউন্টার ভেইলিং শুল্ক বা অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক;

(আ) কোনো নির্দিষ্ট দেশ হইতে বাংলাদেশে কোনো পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে, যদি ভর্তুকি বা ডাম্পিং এবং উহার পরিণতিতে স্থানীয় শিল্পের স্বার্থহানি হইবে মর্মে প্রাথমিকভাবে নিরূপণ করে, এবং আরও নিরূপণ করে যে, তদন্তকালীন সময়ে উক্ত স্বার্থহানি প্রতিরোধে শুল্ক আরোপ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে, উপ- ধারা (২) এর অধীন প্রণীত বিধি অনুসরণ ব্যতীত, উক্তক্ষেত্রে, ধারা ১৯ এর উপ- ধারা (২) ও ধারা ২০ এর উপ- ধারা (২) এর অধীন কোনো কাউন্টারভেইলিং শুল্ক বা অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক-

আরোপ করিবে না:

তবে শর্ত থাকে যে, যদি বাংলাদেশে অনুরূপ পণ্য রপ্তানিকারী কোনো তৃতীয় দেশের স্থানীয় শিল্পের স্বার্থহানি বা স্বার্থহানির হুমকি রোধের উদ্দেশ্যে কোনো পণ্যের উপর কাউন্টারভেইলিং শুল্ক বা অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করা হইয়া থাকে, তাহা হইলে এই বিধান প্রযোজ্য হইবে না।

(গ) সরকার,-

(অ) যে কোনো সময়ে, রপ্তানিকারক দেশ বা অঞ্চলের সরকারের নিকট হইতে ভর্তুকি বিলুপ্ত বা সীমিত করিবার অথবা উহার প্রভাব সম্পর্কিত অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের সম্মতি সম্বলিত সন্তোষজনক স্বেচ্ছাপ্রণোদিত অঙ্গীকারনামাপ্রাপ্ত হইলে অথবা পণ্যের মূল্য সংশোধনে (revision) রপ্তানিকারক সম্মত হইলে এবং যদি সন্তুষ্ট হয় যে, ইহার ফলে ভর্তুকির ক্ষতিকর প্রভাব তিরোহিত হইবে, তাহা হইলে ধারা ১৯ এর অধীন কোনো কাউন্টারভেইলিং শুল্ক; এবং

(আ) যে কোনো সময়ে, রপ্তানিকারকের নিকট হইতে মূল্য সংশোধনের অথবা ডাম্পকৃত মূল্যে বিবেচ্য এলাকায় রপ্তানি বন্ধ করিবার সন্তোষজনক স্বেচ্ছাপ্রণোদিত অঙ্গীকারনামাপ্রাপ্ত হইলে এবং যদি সন্তুষ্ট হয় যে, এইরূপ ব্যবস্থার ফলে ডাম্পিং এর ক্ষতিকর প্রভাব তিরোহিত হইবে, তাহা হইলে ধারা ২০ এর অধীন কোনো অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক-আরোপ করিবে না ।

(২) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বিধি প্রণয়ন করা যাইবে।

কাউন্টারভেইলিং অথবা অ্যান্টি- ডাম্পিং শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে আপিল

২২। (১) কোনো পণ্য আমদানির সহিত সম্পর্কিত কোনো ভর্তুকি বা ডাম্পিং এর অস্তিত্ব, মাত্রা এবং প্রভাব বিষয়ে নির্ধারণী আদেশ বা উহার পুনর্বিবেচনার বিরুদ্ধে আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করা যাইবে।

(২) এই ধারার অধীন প্রত্যেক আপিল আপিলাধীন আদেশের তারিখ হইতে ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে দায়ের করিতে হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, আপিলকারী যুক্তিসংগত কারণে সময়মত আপিল দায়েরে বাধাগ্রস্ত হইয়াছে মর্মে আপিল ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হইলে উপরিউক্ত ৯০ (নব্বই) দিন সময় সমাপ্তির পরও আপিল গ্রহণ করা যাইবে।

(৩) আপিলের পক্ষসমূহকে শুনানির সুযোগ প্রদান করিবার পর আপিল ট্রাইব্যুনাল যে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হইয়াছে উহা বহাল রাখিয়া, পরিবর্তন করিয়া বা বাতিল করিয়া ইহার বিবেচনায় সংগত যে কোনো আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(৪) আপিল ট্রাইব্যুনালের সভাপতি কর্তৃক উক্ত আপিলসমূহ শুনানির জন্য গঠিত একটি বিশেষ বেঞ্চে উপ- ধারা (১) এর অধীন প্রত্যেক আপিলের শুনানি হইবে এবং উক্ত বেঞ্চ সভাপতি ও অন্যূন দুইজন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে।

সেইফগার্ড শুল্ক আরোপ

২৩। (১) সরকার উপযুক্ত তদন্ত করিয়া যদি সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো পণ্য বাংলাদেশে এইরূপ বেশি পরিমাণে এবং এইরূপ শর্তে আমদানি করা হইতেছে যাহা স্থানীয় শিল্পের গুরুতর স্বার্থহানি ঘটাইতে পারে অথবা স্বার্থহানি ঘটাইবার হুমকির সৃষ্টি করিতে পারে, তাহা হইলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত পণ্যের উপর সেইফগার্ড শুল্ক আরোপ করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উহার বিবেচনায় যেরূপ সংগত মনে হয়, সেইরূপ শর্ত, সীমা বা বিধি- নিষেধ আরোপ সাপেক্ষে, যে কোনো পণ্যকে আরোপণীয় সেইফগার্ড শুল্ক হইতে সম্পূর্ণ বা আংশিক অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।

(২) উপ- ধারা (১) এর অধীন স্বার্থহানি বা স্বার্থহানির হুমকি নির্ধারণের বিষয়টি অনিষ্পন্ন থাকা অবস্থায়, যদি নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালিত প্রাথমিক নির্ধারণে দেখা যায় যে, বর্ধিত আমদানি স্থানীয় শিল্পের গুরুতর স্বার্থহানি করিয়াছে অথবা স্বার্থহানির হুমকি সৃষ্টি করিয়াছে, তাহা হইলে তদ্‌ভিত্তিতে সরকার সাময়িক সেইফগার্ড শুল্ক আরোপ করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, যদি চূড়ান্ত নির্ধারণের পর সরকার এইরূপ অভিমত পোষণ করে যে, বর্ধিত আমদানি কোনো স্থানীয় শিল্পের স্বার্থহানি ঘটায় নাই বা স্বার্থহানির হুমকি সৃষ্টি করে নাই, তাহা হইলে সরকার উক্তরূপে আদায়কৃত শুল্ক ফেরত প্রদান করিবে:

আরও শর্ত থাকে যে, সাময়িক সেইফগার্ড শুল্ক, আরোপের তারিখ হইতে ২০০ (দুইশত) দিবসের অধিক বলবৎ থাকিবে না।

(৩) এই ধারার অধীন আরোপিত শুল্ক এই আইনের অধীন অথবা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের অধীন আরোপিত শুল্কের অতিরিক্ত হইবে।

(৪) পূর্বেই প্রত্যাহার করা না হইলে, এই ধারার অধীন আরোপিত শুল্ক আরোপের তারিখ হইতে ৪ (চার) বৎসর সমাপ্তির পর অকার্যকর হইয়া যাইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, যদি সরকার এই অভিমত পোষণ করে যে, স্থানীয় শিল্প উক্ত স্বার্থহানি অথবা স্বার্থহানির হুমকির সহিত খাপ খাওয়ানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়াছে এবং উক্ত সেইফগার্ড শুল্ক আরোপ বহাল থাকা প্রয়োজন, তাহা হইলে সরকার উক্ত আরোপের মেয়াদ বাড়াইতে পারিবে:

আরও শর্ত থাকে যে, কোনো অবস্থাতেই উক্ত সেইফগার্ড শুল্ক উহা প্রথম আরোপের তারিখ হইতে ১০ (দশ) বৎসর সময়ের অধিক আরোপ করা যাইবে না।

(৫) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বিধি প্রণয়ন করা যাইবে।

ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে-

(ক)“স্থানীয় শিল্প” অর্থ সেই সকল উৎপাদনকারীগণ-

(অ) যাহারা সম্পূর্ণভাবে কোনো অনুরূপ পণ্য বা কোনো প্রত্যক্ষভাবে প্রতিযোগি পণ্য বাংলাদেশে উৎপাদন করেন; অথবা

(আ) যাহাদের বাংলাদেশে কোনো অনুরূপ পণ্যের বা কোনো প্রত্যক্ষভাবে প্রতিযোগি পণ্যের মোট সম্মিলিত উৎপাদনের পরিমাণ বাংলাদেশে উক্ত পণ্যের মোট উৎপাদনের একটি প্রধান হিস্যা গঠন করে;

(খ) “গুরুতর স্বার্থহানি” অর্থ এইরূপ কোনো স্বার্থহানি, যাহা কোনো স্থানীয় শিল্পের অবস্থানকে লক্ষ্যনীয় মাত্রায় ভারসাম্যহীন করে; এবং

(গ) “গুরুতর স্বার্থহানির হুমকি” অর্থ গুরুতর স্বার্থহানির কোনো সুস্পষ্ট এবং অত্যাসন্ন ঝুঁকি।

কাস্টমস সেবার জন্য ফি

২৪। (১) বোর্ড কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির অনুকূলে প্রদত্ত নিম্নরূপ সেবার জন্য ফি প্রদানের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে, যথা:-

(ক) পণ্য বোঝাই বা খালাসের জন্য নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনো স্থানে বা এতদ্‌সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্ধারিত কর্মসময়ের বাহিরে কোনো পণ্য বোঝাই বা খালাস করা;

(খ) এই আইনের অধীন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্ধারিত কর্মসময়ের বাহিরে বা নির্ধারিত কাস্টমস স্টেশন ব্যতীত অন্য কোনো স্থানে কোনো পণ্যের ঘোষণা, সত্যতা প্রতিপাদন বা ছাড় করা;

(গ) কাস্টমস কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানের প্রয়োজনীয়তা রহিয়াছে এইরূপ কোনো কাস্টমস বন্ডেড ওয়্যারহাউস বা অস্থায়ী সংরক্ষণাগারে কোনো পণ্যের মালিক বা আমদানিকারক কর্তৃক প্রবেশ বা পণ্যের হ্যান্ডলিং বা নমুনা সংগ্রহ করা;

(ঘ) এই আইনের অধীন কোনো বেসরকারি ওয়্যারহাউস প্রতিষ্ঠা বা বন্দরের সীমানার মধ্যে পণ্য নামানো ও জাহাজীকরণের জন্য কার্গো- বোট বা কোনো এজেন্ট হিসাবে বাণিজ্যিক লেনদেনের জন্য কোনো লাইসেন্স প্রদান বা নবায়ন সংক্রান্ত;

(ঙ) কোনো ব্যক্তির অনুরোধের প্রেক্ষিতে তথ্য, ফরম বা দলিল সরবরাহ সংক্রান্ত;

(চ) সত্যতা প্রতিপাদনের উদ্দেশ্যে পণ্যের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা, বা পণ্য ধ্বংস করিবার জন্য কাস্টমস কর্মকর্তা ব্যবহারের ব্যয় ব্যতীত অন্য কোনো ব্যয় জড়িত থাকার ক্ষেত্রে; এবং

(ছ) ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্ট সংক্রান্ত কার্যক্রম:

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপে আরোপিত কোনো ফি এর পরিমাণ সম্ভাব্য প্রশাসনিক ব্যয় এবং প্রদত্ত সেবার ব্যয়ের অধিক হইবে না।

(২) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বিধি প্রণয়ন করা যাইবে।

(৩) সুস্পষ্টভাবে ভিন্নরূপ কিছু উল্লেখ না থাকিলে, শুল্ক প্রত্যর্পণ বা পরিশোধ বিলম্বিতকরণ সম্পর্কিত বিধানাবলি ব্যতীত, এই আইন ও বিধির অধীন অন্য সকল প্রশাসনিক ও প্রয়োগ ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিধানাবলি, এই ধারার অধীন প্রদেয় ফি এবং উক্ত ফি পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তির ক্ষেত্রে, এইরূপে প্রযোজ্য হইবে যেন উক্ত ফি কোনো কাস্টমস শুল্ক, এবং এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কাস্টমস শুল্কের পরিমাণ সংশ্লিষ্ট নিরূপণীয় দণ্ড, উক্ত শুল্ক বাস্তবিক পক্ষে প্রদেয় বা পরিশোধযোগ্য হউক বা না হউক, এই ধারার অধীন প্রদেয় কোনো ফি প্রদানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য একই পদ্ধতি অনুসারে নিরূপিত হইবে।

শুল্ক ও কর হইতে অব্যাহতি প্রদানের ক্ষমতা

২৫। (১) সরকার, বোর্ডের সহিত পরামর্শক্রমে, জনস্বার্থে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপযুক্ত শর্ত, সীমা অথবা বিধি- নিষেধ, যদি থাকে, আরোপ সাপেক্ষে, কোনো পণ্য আমদানি বা রপ্তানির উপর আরোপনীয় সমুদয় বা আংশিক শুল্ক ও কর হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, যদি কোনো অর্থ- বৎসরে কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক অব্যাহতি প্রদান করা হয়, তাহা হইলে সেই বৎসরে একবারের অধিক শুল্কহার বৃদ্ধি করা যাইবে না।

(২) সরকার, বোর্ডের সহিত পরামর্শক্রমে, জনস্বার্থে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সীমা অথবা বিধি- নিষেধ, যদি থাকে, আরোপ সাপেক্ষে, কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি বা দ্বিপক্ষীয় চুক্তি পারস্পরিক ভিত্তিতে (reciprocal basis) বাস্তবায়নের জন্য, কোনো পণ্য বা পণ্য শ্রেণি আমদানি বা রপ্তানির উপর আরোপনীয় সমুদয় বা আংশিক শুল্ক ও কর হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।

(৩) সরকার, বিশেষ আদেশ দ্বারা, প্রত্যেক ক্ষেত্রে কারণ উল্লেখপূর্বক, আমদানিকৃত কোনো পণ্য বা পণ্য চালানের উপর আমদানি পর্যায়ে আরোপযোগ্য সমুদয় বা আংশিক শুল্ক ও কর হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।

পণ্যের পুনঃআমদানি

২৬। যদি বাংলাদেশে উৎপাদিত বা প্রস্তুত কোনো পণ্য অথবা বাংলাদেশে দেশীয় ভোগের জন্য ইতঃপূর্বে ছাড়কৃত কোনো পণ্য অথবা ইনওয়ার্ড প্রসেসিং বা কাস্টমস ওয়্যারহাউস পদ্ধতির অধীন বাংলাদেশে প্রক্রিয়াজাত বা প্রস্তুতকৃত কোনো পণ্য রপ্তানি হইবার ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে কোনোরূপ প্রক্রিয়াকরণ ব্যতীত বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়, তাহা হইলে উক্ত পণ্য অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব কাস্টমস এর নিম্নে নহে, এইরূপ কর্মকর্তা কর্তৃক কাস্টমস শুল্ক পরিশোধ ব্যতিরেকে দেশে প্রবেশ করিতে দেওয়া যাইবে:

তবে শর্ত থাকে যে,-

(ক) উক্ত পণ্য রপ্তানির সময়ে প্রত্যর্পণ প্রদান করা হইলে, উক্ত প্রত্যর্পণ পরিশোধ করিতে হইবে;

(খ) যদি উক্ত পণ্য ইনওয়ার্ড প্রসেসিং বা কাস্টমস ওয়্যারহাউস পদ্ধতির অধীন বাংলাদেশে প্রক্রিয়াজাত বা প্রস্তুতকৃত হইয়া থাকে এবং নিম্নলিখিত শুল্ক ও কর পরিশোধ ব্যতিরেকে রপ্তানি করা হইয়া থাকে, যথা:-

(অ)উক্ত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ বা প্রস্তুতকরণে ব্যবহৃত কোনো আমদানিকৃত উপাদান, যদি থাকে, উহার উপর আরোপণীয় শুল্ক ও কর;

(আ) উক্ত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ বা প্রস্তুতকরণে ব্যবহৃত স্থানীয় কাঁচামাল, যদি থাকে, উহার উপর আরোপণীয় শুল্ক ও কর; বা

(ই) উক্ত স্থানীয় পণ্য, যদি থাকে, উহার উপর আরোপণীয় শুল্ক ও কর,-

তাহা হইলে উক্ত পণ্য আমদানির সময় এবং স্থানে বিদ্যমান হারে হিসাবকৃত সকল শুল্ক ও করের সমপরিমাণ কাস্টমস শুল্ক পরিশোধ করিতে হইবে।

শুল্কায়নের উদ্দেশ্যে পণ্যের কাস্টমস মূল্য (assessable value)

২৭। (১) কোনো পণ্যের উপর কাস্টমস শুল্ক উহার মূল্যের ভিত্তিতে আরোপণীয় হইলে, এই ধারার অন্যান্য বিধান অনুযায়ী নিরূপিত উক্ত পণ্যের মূল্যই হইবে কাস্টমস মূল্য।

(২) এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি অনুসারে যদি কোনো আমদানিকৃত পণ্যের উপর কাস্টমস শুল্ক উহার মূল্যের ভিত্তিতে আরোপণীয় হয়, তাহা হইলে সেই মূল্য হইবে বিনিময় মূল্য অর্থাৎ প্রকৃতপক্ষে পরিশোধিত বা পরিশোধযোগ্য মূল্য বা উক্ত মূল্যের নিকটতম নিরূপণযোগ্য সমতুল্য মূল্য যে মূল্যে সম্পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রক্রিয়ায় উক্ত পণ্য অথবা অনুরূপ পণ্য আমদানির সময় এবং স্থানে অর্পণের উদ্দেশ্যে সাধারণত বিক্রয় করা হয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করা হয়, যেখানে বিক্রেতা এবং ক্রেতার মধ্যে একে অন্যের ব্যবসায়ে কোনো স্বার্থ থাকে না এবং বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাবই মূল্য নিরূপণের একমাত্র বিবেচ্য বিষয় হয়।

ব্যাখ্যা।- এই উপ- ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, “আমদানির স্থান” অর্থ কাস্টমস বন্দর, কাস্টমস বিমানবন্দর অথবা কাস্টমস স্টেশন, যেখানে ধারা ৮৩ এর অধীন পণ্য ঘোষণা নিবন্ধিত হয়।

(৩) কোনো রপ্তানিকৃত পণ্য বা অনুরূপ পণ্য রপ্তানির সময় যে মূল্যে সম্পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক অবস্থাধীনে সাধারণ বাণিজ্য প্রক্রিয়ায় বিক্রয় বা বিক্রয়ের প্রস্তাব করা হয়, সেই মূল্য, বাংলাদেশের যে কাস্টমস স্টেশনের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি হইবে সেই কাস্টমস স্টেশন পর্যন্ত পরিবহন ব্যয়সহ, হইবে রপ্তানিকৃত পণ্যের কাস্টমস মূল্য:

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো রপ্তানিকৃত পণ্যের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করিতে পারিবে, যাহা উক্ত নির্ধারিত মূল্য উক্ত পণ্যের ঘোষিত মূল্য অপেক্ষা অধিক হওয়ার ক্ষেত্রে, উক্ত পণ্যের কাস্টমস মূল্য নিরূপণের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হইবে।

(৪) কোনো আমদানিকৃত বা রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য হিসাব করিবার জন্য মুদ্রার বিনিময় হার হইবে, যে মাসে ধারা ৮৩ এর অধীন পণ্য ঘোষণা নিবন্ধিত হয় উহার পূর্ববর্তী মাসের তৃতীয় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের পূর্বের ৩০ (ত্রিশ) দিবস সময়ে বিদ্যমান গড় বিনিময় হার এবং উক্ত হার বোর্ড কর্তৃক অথবা এতদুদ্দেশ্যে বোর্ড কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক নির্ধারণ করা হইবে।

(৫) এই ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, মূল্য ভিত্তিক (ad valorem) কাস্টমস শুল্ক আরোপযোগ্য হয় এমন কোনো আমদানিকৃত অথবা রপ্তানিকৃত পণ্যের উপর কাস্টমস শুল্ক আরোপণের উদ্দেশ্যে ট্যারিফ মূল্য অথবা ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যেই ক্ষেত্রে আমদানিকৃত বা রপ্তানিকৃত কোনো পণ্যের ঘোষিত মূল্য এই উপ ধারার অধীনে নির্ধারিত ট্যারিফ মূল্য অথবা ন্যূনতম মূল্যের চেয়ে অধিক হয়, সেই ক্ষেত্রে উক্ত পণ্যের কাস্টমস শুল্ক আরোপিত হইবে পণ্যটির ঘোষিত মূল্যের ভিত্তিতে।

ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে,-

(ক) “বিনিময় হার” বলিতে বাংলাদেশি মুদ্রা বৈদেশিক মুদ্রায় বা বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশি মুদ্রায় রূপান্তরের জন্য বিদ্যমান বাজার হার অনুযায়ী নির্ধারিত বিনিময় হারকে বুঝাইবে;

(খ) “বৈদেশিক মুদ্রা” এবং “বাংলাদেশ মুদ্রা” বলিতে Foreign Exchange Regulation Act, 1947 (Act No. VII of 1947) এ যথাক্রমে "foreign currency" এবং "Bangladesh currency" যেই অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে বুঝাইবে।

ক্ষতিগ্রস্ত, অবনতিপ্রাপ্ত, নিখোঁজ অথবা ধ্বংসপ্রাপ্ত পণ্যের শুল্ক হ্রাসকরণ

২৮। (১) যেক্ষেত্রে মালিক কর্তৃক আবেদনের সূত্রে কোনো আমদানিকৃত পণ্যের প্রথম পরীক্ষাকালে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব কাস্টমস পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এইরূপ কর্মকর্তা সন্তুষ্ট হন যে-

(ক) অবতরণকালে অথবা তাহার পূর্বে যে কোনো সময়ে পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত বা অবনতিপ্রাপ্ত হইয়াছে; বা

(খ) অবতরণের পর, কিন্তু উক্ত পরীক্ষার পূর্বে যে কোনো সময় কোনো দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা দৈবদুর্বিপাক (act of God) দ্বারা, যাহা মালিক অথবা তাহার এজেন্টের কোনো ইচ্ছাকৃত কর্ম, অবহেলা অথবা ব্যর্থতার কারণে নহে, পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে;

সেইক্ষেত্রে মালিকের লিখিত আবেদনক্রমে উক্ত পণ্যের মূল্য যথাযথ কর্মকর্তা কর্তৃক নিরূপণ করা হইবে এবং পণ্যের উক্তরূপ হ্রাসকৃত মূল্য নিরূপণের অনুপাত অনুসারে মালিককে শুল্ক অব্যাহতি প্রদান করা হইবে।

(২) যেক্ষেত্রে কোনো আমদানিকৃত পণ্যের মালিক কর্তৃক লিখিতভাবে আবেদনের সূত্রে কমিশনার অব কাস্টমস এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, আমদানির পর কিন্তু দেশীয় ভোগের উদ্দেশ্যে খালাসের পূর্বে দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা দৈবদুর্বিপাকের ফলে পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত, অবনতিপ্রাপ্ত, নিখোঁজ অথবা ধ্বংসপ্রাপ্ত হইয়াছে সেই ক্ষেত্রে উক্ত ক্ষতি, অবনতি, নিখোঁজ অথবা ধ্বংসের সত্যতা প্রমাণের জন্য সকল প্রয়োজনীয় তথ্য উপস্থাপনপূর্বক পণ্যের মালিক কর্তৃক পেশকৃত আবেদনক্রমে কমিশনার অব কাস্টমস একজন যথাযথ কর্মকর্তা কর্তৃক উক্ত পণ্যের মূল্য নিরূপণের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন এবং পণ্যের মালিককে উক্তরূপ মূল্য নিরূপণে যে হারে মূল্য হ্রাস পাইয়াছে সেই আনুপাতিক হারে উক্ত পণ্যের উপর প্রদেয় অথবা পরিশোধিত শুল্ক অব্যাহতি বা ফেরত প্রদান করিতে পারিবেন।

(৩) যে ক্ষেত্রে কমিশনার অব কাস্টমস এর সন্তুষ্টিমতে দেখা যায় যে, ওয়্যারহাউসকৃত কোনো পণ্য দেশীয় ভোগের জন্য খালাসের পূর্বে কোনো দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা দৈবদুর্বিপাকে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে, সেই ক্ষেত্রে উক্ত ক্ষতির সত্যতা প্রমাণের জন্য সকল প্রয়োজনীয় তথ্য উপস্থাপনপূর্বক পণ্যের মালিক কর্তৃক পেশকৃত আবেদনক্রমে কমিশনার অব কাস্টমস একজন যথাযথ কর্মকর্তা কর্তৃক উক্ত পণ্যের মূল্য নিরূপণের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন এবং পণ্যের মালিককে উক্তরূপ মূল্য নিরূপণে যে হারে মূল্য হ্রাস পাইয়াছে সেই আনুপাতিক হারে শুল্ক অব্যাহতি প্রদান করা হইবে।

আমদানিকৃত স্পিরিট পরীক্ষা এবং পান করিবার অনুপযোগী (denature) করিবার ক্ষমতা

২৯। আপাতত বলবৎ কোনো আইন দ্বারা যদি পান করিবার অনুপযোগী করা স্পিরিটের উপর এই আইনে নির্ধারিত শুল্ক হইতে কম শুল্ক আরোপিত থাকে, তাহা হইলে এইরূপ স্পিরিট আমদানি করা হইলে উহা, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, কাস্টমস কর্মকর্তা কর্তৃক পরীক্ষা করা যাইবে এবং, প্রয়োজনে, কাস্টমস শুল্ক আরোপ করিবার পূর্বে উহা আমদানিকারকের খরচে পর্যাপ্তভাবে পানাহার অনুপযোগী করা যাইবে।

পণ্যের শুল্কহার, মূল্য এবং বিনিময় হার নির্ধারণের তারিখ

৩০। কোনো আমদানিকৃত বা রপ্তানিকৃত পণ্যের উপর প্রযোজ্য শুল্ক ও করের পরিমাণ নিম্নবর্ণিত তারিখে বলবৎ বিনিময় হার ও বাণিজ্যের শ্রেণি, পণ্যের শ্রেণিবিন্যাস, রুলস অব অরিজিন, এবং উক্ত পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শুল্ক ও কর হারের ভিত্তিতে গণনা করিতে হইবে, যথা:-

(ক) ধারা ৮৩ এর অধীন পণ্য ঘোষণা নিবন্ধিত হওয়ার তারিখ;

(খ) ধারা ১৩৪ এর দফা (ক) এর উপ- দফা (অ) এর অধীন ওয়্যারহাউস হইতে দেশীয় ভোগের জন্য পণ্য ছাড়করণের ক্ষেত্রে যে তারিখে ধারা ৮৩ এর অধীন কোনো পণ্য ঘোষণা নিবন্ধিত হয় সেই তারিখ; এবং

(গ) অন্যান্য ক্ষেত্রে শুল্ক পরিশোধের তারিখ:

তবে শর্ত থাকে যে, যে যানবাহনে পণ্য আমদানি করা হইবে উহা আগমনের প্রত্যাশায় যদি ধারা ৮৪ এর উপ- ধারা (২) অনুসারে কোনো পণ্য ঘোষণা দাখিল করা হয়, তাহা হইলে, এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে পণ্য আগমনের বিষয়ে অবহিতকরণের (notify) তারিখ হইবে পণ্যের শুল্ক হার, মূল্য এবং বিনিময় হার নির্ধারণের তারিখ:

আরও শর্ত থাকে যে, পণ্য ঘোষণা ব্যতীত বা এইরূপ ঘোষণা অর্পণের প্রত্যাশায় কোনো পণ্য রপ্তানি অনুমোদিত হইলে, উক্ত পণ্যের উপর প্রযোজ্য শুল্ক হার এবং মূল্য নিরূপণের জন্য বিনিময় হার হইবে, যে তারিখ বহির্গমনোদ্যত যানবাহনে পণ্য জাহাজীকরণ আরম্ভ করা হয় সেই তারিখে প্রযোজ্য শুল্ক হার, বা, ক্ষেত্রমত, বিনিময় হার।

মূল্য এবং কার্যকর শুল্ক হার

৩১। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ৩০ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মূল্য এবং শুল্ক হারের অন্তর্ভুক্ত হইবে যথাক্রমে ধারা ২৭ এর অধীন নির্ধারিত মূল্য, এবং ধারা ১৮, ১৯, ২০ বা ২৩ এর অধীন আরোপিত শুল্কের পরিমাণ এবং কোনো পণ্যের বিক্রয়ের জন্য চুক্তি সম্পাদনের অথবা ঋণপত্র খোলার পূর্বে অথবা পরে শুল্ক হইতে অব্যাহতি বা রেয়াত সম্পূর্ণ বা আংশিক প্রত্যাহারের ফলে যে পরিমাণ শুল্ক প্রদেয় হইত সেই পরিমাণ শুল্ক।

শুল্ক, কর ও সুদ পরিশোধের সময়সীমা

৩২। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, কোনো শুল্ক, কর ও অন্যান্য চার্জ পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তিকে উহা অবহিতকরণের বিজ্ঞপ্তিতে অন্য কোনো তারিখ প্রদান করা না হইলে, ১০ (দশ) দিনের মধ্যে উক্ত শুল্ক, কর ও অন্যান্য চার্জ প্রদেয় হইবে।

(২) যদি কোনো শুল্ক, কর বা অন্যান্য চার্জ পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তি ধারা ৩৫ এর উপ- ধারা (২) এর অধীন বিলম্ব পরিশোধের জন্য অনুমতি প্রাপ্ত হন, তাহা হইলে উক্ত উপ- ধারায় উল্লিখিত মেয়াদের মধ্যে পরিশোধ করা যাইবে।

(৩) কোনো শুল্ক, কর বা অন্যান্য চার্জ প্রদেয় তারিখের মধ্যে পরিশোধিত না হইলে, উক্ত শুল্ক, কর বা অন্যান্য চার্জের উপর, উহা পরিশোধযোগ্য বা প্রদেয় হইবার সর্বশেষ তারিখ হইতে আরম্ভ করিয়া উহা পরিশোধিত হইবার তারিখ পর্যন্ত মেয়াদের জন্য বার্ষিক ১০ (দশ) শতাংশ সাধারণ সুদের হারে সুদ পরিশোধ করিতে হইবে।

(৪) কোনো শুল্ক, কর বা অন্যান্য চার্জ কোনো পণ্য ছাড়ের পর বকেয়া থাকিলে, উক্ত নির্ধারিত বকেয়ার অতিরিক্ত হিসাবে, উক্ত পণ্য ছাড়ের তারিখ হইতে উক্ত নির্ধারিত বকেয়া 1[পরিশোধের] তারিখ পর্যন্ত বার্ষিক ১০ (দশ) শতাংশ হারে সুদ ধার্য করা হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, বোর্ড, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত নীতিমালা অনুসারে, যদি ইহা নির্ধারণ করে যে, ধার্যকৃত সুদ পরিশোধের ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি গুরুতর অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হইবেন, তাহা হইলে বোর্ড উক্তরূপ সুদ ধার্য করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে।

অসত্য বিবৃতি, ইত্যাদি

৩৩। (১) কোনো ব্যক্তি কাস্টমস সংশ্লিষ্ট নিম্নবর্ণিত কোনো বিষয়ে অসত্য তথ্য বা বিবৃতি বা, ক্ষেত্রমত, দলিল দাখিল করিবেন না, যথা:-

(ক) কাস্টমস কর্মকর্তার নিকট কোনো ঘোষণা, নোটিশ, প্রত্যয়নপত্র অথবা অন্য যে কোনো দলিল দাখিল বা স্বাক্ষর করা অথবা অর্পণ করা বা অর্পণ করিবার ব্যবস্থা করা;

(খ) এই আইন বা বিধির অধীন কোনো প্রশ্নের উত্তর প্রদানে বাধ্যবাধকতা রহিয়াছে এইরূপ কোনো কাস্টমস কর্মকর্তা কর্তৃক জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের জবাবে কোনো ঘোষণা প্রদান করা; অথবা

(গ) ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে কোনো ঘোষণা, দলিল, তথ্য অথবা রেকর্ড প্রেরণ করা অথবা উহাদের সফট কপি উপস্থাপন করা।

(২) উপ- ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো অসত্য তথ্য বা বিবৃতি বা দলিল দাখিলের কারণে অথবা কোনোরূপ যোগসাজশের কারণে যদি কোনো শুল্ক অথবা চার্জ আরোপ করা না হয় অথবা কম আরোপিত হয় অথবা ভুলক্রমে ফেরত প্রদান করা হয়, তাহা হইলে যে ব্যক্তি উক্ত কারণে কোনো অর্থ পরিশোধের জন্য দায়বদ্ধ তাহার উপর নোটিশে উল্লিখিত পরিমাণ অর্থ তিনি কেন পরিশোধ করিবেন না উহার কারণ দর্শানোর জন্য দাবিনামা সম্বলিত নোটিশ জারি করিতে হইবে।

(৩) উপ- ধারা (২) এ বর্ণিত ব্যক্তির যদি কোনো বক্তব্য থাকে, তাহা হইলে যথাযথ কর্মকর্তা তাহা বিবেচনাপূর্বক উক্ত ব্যক্তি কর্তৃক প্রদেয় শুল্কের পরিমাণ নির্ধারণ করিবেন, যাহা নোটিশে উল্লিখিত অর্থের পরিমাণ হইতে বেশি হইবে না, এবং উক্ত ব্যক্তি এইরূপে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করিবেন।

(৪) উপ- ধারা (২) এর অধীন কোনো নোটিশ জারির ক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা থাকিবে না।

তিন বৎসরের মধ্যে ফেরত প্রদান দাবি করা

৩৪। (১) অসাবধানতা, ভুলবশত, ভুল ব্যাখ্যা বা অন্য কোনোভাবে পরিশোধিত বা অতিরিক্ত পরিশোধিত বলিয়া দাবিকৃত কোনো কাস্টমস শুল্ক বা চার্জ পরিশোধের তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসরের মধ্যে দাবি করা না হইলে, উহা ফেরত প্রদান করা হইবে না এবং উক্ত দাবির সত্যতা প্রতিপাদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনো অযৌক্তিক বিলম্ব না করিয়া ফেরত প্রদান করিতে হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ দাবিকৃত অর্থের পরিমাণ ধারা ১৮ এর উপ- ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত পরিমাণের কম হইলে, ফেরত প্রদান করা হইবে না।

(২) ধারা ৯৩ এর অধীন সাময়িক পরিশোধের ক্ষেত্রে, উক্ত ৩ (তিন) বৎসর সময়, চূড়ান্ত শুল্ক নিরূপণের পর শুল্ক সমন্বয় করিবার তারিখ হইতে গণনা করা হইবে।

শুল্ক, কর ও চার্জ জমা এবং বিলম্বিত পরিশোধ

৩৫। (১) অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব কাস্টমস পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এইরূপ কাস্টমস কর্মকর্তা কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা সরকারি সংস্থার ক্ষেত্রে যদি তাহার বিবেচনায় যথাযথ হয় তাহা হইলে কাস্টমস শুল্ক বা চার্জ যেভাবে এবং যখন প্রদেয় হয় সেইভাবে এবং তখন পরিশোধে বাধ্য করিবার পরিবর্তে উক্ত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সহিত উক্ত শুল্ক এবং চার্জের চলতি হিসাব রক্ষণ করিতে পারিবেন, যে হিসাব এক মাসের অতিরিক্ত নহে এইরূপ বিরতিতে নিষ্পত্তি করিতে হইবে, এবং উক্ত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা এইরূপ পরিমাণ অর্থ জমা প্রদান করিবে বা জামানত দাখিল করিবে, যাহা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিবেচনায় যে কোনো সময়ে যে পরিমাণ শুল্ক বা চার্জ প্রদেয় তাহা মিটাইবার জন্য যথেষ্ট হয়।

(২) ধারা ৯৭ অনুসারে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ইকোনোমিক অপারেটরের মর্যাদাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, পর্যাপ্ত গ্যারান্টি প্রদান সাপেক্ষে, তাহার অনুকূলে ছাড়কৃত পণ্যের ক্ষেত্রে প্রদেয় শুল্ক ও কর পরিশোধ বিলম্বিত করিবার অনুরোধ জ্ঞাপন করিতে পারিবে, তবে উক্তরূপ বিলম্বের অনুরোধ উক্ত ছাড়ের তারিখ হইতে ১৪ (চৌদ্দ) দিনের অধিক হইবে না।

(৩) বোর্ড, বিশেষ আদেশ দ্বারা, জনস্বার্থে, কোনো সরকারি বা আধা- সরকারি প্রতিষ্ঠান অথবা বিধিবদ্ধ সংস্থা কাস্টমস শুল্ক বা অন্যান্য চার্জ পরিশোধ ব্যতিরেকে বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে উক্ত শুল্ক এবং চার্জ পরিশোধ করিবার গ্যারান্টি দাখিলপূর্বক পণ্য খালাস নেওয়ার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে।


  • 1
    “পরিশোধের” শব্দ “অবহিতকরণের” শব্দের পরিবর্তে অর্থ আইন, ২০২৪ (২০২৪ সনের ৫ নং আইন) এর ৯১ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত যাহা ২০২৪ সনের ১ জুলাই হইতে কার্যকর।
Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs