প্রিন্ট ভিউ
ষষ্ঠ অধ্যায়
তফসিলি ব্যাংকের অবসায়ন
৪৮। (১) কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ এবং ব্যাংক-কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বাংলাদেশ ব্যাংক নিম্নবর্ণিত কোনো কারণে কোনো তফসিলি ব্যাংকের অবসায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) যদি উক্ত তফসিলি ব্যাংক ধারা ১৫-তে উল্লিখিত রেজল্যুশনের শর্তাবলি পূরণ করে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, রেজল্যুশন টুলস প্রয়োগ করা সত্ত্বেও উক্ত তফসিলি ব্যাংকের ক্ষেত্রে ধারা ৯ এ উল্লিখিত এক বা একাধিক উদ্দেশ্য অর্জিত হইবে না;
(খ) যদি উক্ত তফসিলি ব্যাংকের সম্পদ ও দায় ব্রিজ ব্যাংকসহ হস্তান্তরগ্রহীতার নিকট আংশিকভাবে হস্তান্তরিত হয়; অথবা
(গ) যদি বাংলাদেশ ব্যাংক, রেজল্যুশন প্রক্রিয়ায় এই মর্মে সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, উক্ত তফসিলি ব্যাংকের কার্যকর রেজল্যুশনের সম্ভাবনা নাই।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো তফসিলি ব্যাংক অবসায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিলে উহার লাইসেন্স বাতিলের পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক লাইসেন্স বাতিল করা হইলে উক্ত লাইসেন্স বাতিলের তারিখ হইতে উক্ত তফসিলি ব্যাংক উহার ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধ করিবে।
৪৯। (১) ধারা ৪৮ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক কোনো তফসিলি ব্যাংকের লাইসেন্স বাতিল করা হইলে বাংলাদেশ ব্যাংক উক্ত তফসিলি ব্যাংকের অবসায়ন কার্যক্রম আরম্ভ করিবার জন্য হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদনপত্রের সহিত অবসায়নের কারণ সংশ্লিষ্ট দলিলাদি সংযুক্ত করিতে হইবে।
(৩) হাইকোর্ট বিভাগে আবেদনের সময় হইতে তফসিলি ব্যাংকের অবসায়ন কার্যক্রম আরম্ভ হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
(৪) হাইকোর্ট বিভাগ, উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদন বিবেচনার পর, আবেদন দাখিলের তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) কার্যদিবসের মধ্যে, উহা শুনানির তারিখ নির্ধারণ করিবে।
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন নির্ধারিত শুনানির তারিখ বাংলাদেশ ব্যাংক উহার ওয়েবসাইট এবং বাংলাদেশে বহুল প্রচারিত অন্যূন একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করিবে এবং উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে প্রদত্ত ফরম অনুসারে উহাতে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের পাওনাদার অথবা অন্য কোনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যা প্রতিষ্ঠানকে উক্ত আবেদনে পক্ষভুক্ত, অতঃপর এই অধ্যাদেশে হস্তক্ষেপকারী পক্ষ বলিয়া উল্লিখিত, হইবার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করিবার জন্য অনুরোধ থাকিবে।
(৬) উপ-ধারা (৫) এর বিধান অনুসারে কোনো পাওনাদার, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আবেদনে পক্ষভুক্ত হইলে উক্ত হস্তক্ষেপকারী পক্ষের বিবরণ হাইকোর্ট বিভাগে দাখিল করিতে হইবে।
(৭) হাইকোর্ট বিভাগ নিম্নবর্ণিত বিষয় বিবেচনাক্রমে, অবসায়ন আবেদনে উল্লিখিত দায়ী ব্যক্তিগণের সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ সম্পর্কিত সকল কার্যক্রম স্থগিত (freeze) বা সম্পদ ক্রোক (attachunent) করাসহ তফসিলি ব্যাংকের অবসায়নের আদেশ, অতঃপর এই অধ্যাদেশে অবসায়ন আদেশ বলিয়া উল্লিখিত, প্রদান করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদন;
(খ) হস্তক্ষেপকারী পক্ষগণের আবেদন;
(গ) বাংলাদেশ ব্যাংক আইনানুগভাবে কাজ করিয়াছে কি না এবং যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে কি না;
(ঘ) বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য ঘাটতি বা ভুল না থাকিলে অবসায়নের শর্ত পূরণ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষায়িত মূল্যায়ন (technical assessment)।
(৮) হাইকোর্ট বিভাগ আবেদন দাখিলের তারিখ হইতে ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে উপ-ধারা (৭) এ উল্লিখিত আদেশ প্রদান করিবে।
(৯) অবসায়ন আদেশ জারির সঙ্গে সঙ্গে, ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০ এর বিধানাবলি এবং এই অধ্যাদেশের ধারা ৫১ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ঙ) এর বিধান ক্ষুণ্ণ না করিয়া, উক্ত তফসিলি ব্যাংকের বহি অথবা রেকর্ডে লিপিবদ্ধ কোনো আমানতকারী, পাওনাদার অথবা চুক্তির পক্ষের অধিকার, স্বত্ব বলবতকরণ এবং তফসিলি ব্যাংকের বহি অথবা রেকর্ডে প্রবেশাধিকার অবিলম্বে স্থগিত হইবে।
৫০। (১) অবসায়ন আদেশের অংশ হিসাবে হাইকোর্ট বিভাগ তফসিলি ব্যাংকের অবসায়ন কার্যক্রম সম্পাদনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক মনোনীত কোনো ব্যক্তিকে অবসায়ক হিসাবে নিয়োগ করিবে।
(২) অবসায়ককে ধারা ২২ এ উল্লিখিত যোগ্যতা ও উপযুক্ততার মানদণ্ড পূরণ করিতে হইবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন অবসায়ক নিয়োগের অব্যবহিত পর, বাংলাদেশ ব্যাংক অবসায়ন আদেশ এবং উপ-ধারা (১) এর অধীন অবসায়ক নিয়োগের আদেশ উক্ত তফসিলি ব্যাংককে প্রেরণ করিবে এবং উহা বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট ও উক্ত তফসিলি ব্যাংকের ওয়েবসাইট এবং বাংলাদেশে বহুল প্রচারিত অন্যূন একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করিবে।
(৪) নিয়োগ প্রাপ্তির পর, অবসায়ক সুরক্ষিত আমানত পরিশোধে সহযোগিতা করিবার নিমিত্ত ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০ এর বিধান অনুযায়ী সুরক্ষিত আমানতের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরণের পাশাপাশি আমানতকারীগণের সুরক্ষাকে প্রাধান্য দিয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সহিত কাজ করিবে।
৫১। (১) অবসায়কের দায়িত্ব, ক্ষমতা ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
(ক) অবসায়ক অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের একমাত্র আইনানুগ প্রতিনিধি হইবেন;
(খ) অবসায়ক অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা, নিয়ন্ত্রণ, পরিচালনা ও অবসায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ক্ষমতাসহ উহার শেয়ারধারক, পরিচালনা পর্যদ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সকল অধিকার ও ক্ষমতা লাভ করিবেন;
(গ) অবসায়ক, অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের সম্পূর্ণ অথবা আংশিক সম্পদ ও দায় তৃতীয় পক্ষের নিকট হস্তান্তরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট অনুরোধ করিতে পারিবেন এবং এইরূপ হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নকালে পাওনাদারগণ কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করিতে পারিবেন না:
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ অনুরোধের প্রেক্ষিতে গৃহীত সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ বা আপত্তি জানানোর অধিকার ক্ষুণ্ণ হইবে না এবং উক্তরূপ চ্যালেঞ্জ বা আপত্তির প্রেক্ষিতে কেবল আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করা যাইবে, হস্তান্তরিত দায় ও সম্পদের প্রত্যাবর্তন (reverse transfer) করা হইবে না;
(ঘ) অবসায়ক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক অবসায়ন সম্পর্কিত দায়িত্ব, ক্ষমতা ও কার্যাবলি পালন, প্রয়োগ ও সম্পাদন করিবেন;
(ঙ) অবসায়ক অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের কার্যালয়, বহি, রেকর্ড এবং অন্যান্য তথ্য ও সম্পদের দায়িত্ব ও নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করিবেন;
(চ) অবসায়ক তফসিলি ব্যাংকের অবসায়ন সম্পর্কিত দায়িত্ব, ক্ষমতা ও কার্যাবলি পালন, প্রয়োগ ও সম্পাদন করিবার উদ্দেশ্যে, তফসিলি ব্যাংকের ব্যয়ে, পারস্পরিক লিষিত চুক্তির ভিত্তিতে স্বতন্ত্র আইনজীবী, হিসাবরক্ষক, নিরীক্ষক, পরামর্শক, জামানত মূল্যায়নকারী সংস্থা অথবা এইরূপ অন্যান্য ব্যক্তির পরিষেবা গ্রহণ করিতে পারিবেন।
(২) অবসায়ক এই অধ্যায়ের বিধান অনুযায়ী তাঁহার কোনো কার্য, নিষ্ক্রিয়তা বা সিদ্ধান্তের জন্য ব্যক্তিগত দায় হইতে অব্যাহিত লাভ করিবেন।
৫২। (১) অবসায়ক বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রস্তাবিত এবং আদালত কর্তৃক অনুমোদিত পারিশ্রমিক পাইবেন।
(২) অবসায়কের পারিশ্রমিক এবং অবসায়ন প্রক্রিয়ায় অবসায়ক কর্তৃক ব্যয়িত যুক্তিসঙ্গত ও আনুষঙ্গিক ব্যয় অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের বিদ্যমান সম্পদ হইতে নির্বাহ করা হইবে।
৫৩। (১) হাইকোর্ট বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক দাখিলকৃত আবেদনের প্রেক্ষিতে, নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে অবসায়ককে অপসারণ করিবে, যথা:-
(ক) অবসায়ক মৃত্যুবরণ করিলে অথবা অবসায়ক হিসাবে কার্য সম্পাদন করিতে অক্ষম হইলে;
(খ) অবসায়ক পদত্যাগপত্র দাখিল করিলে;
(গ) অবসায়ক তাহার কোনো দায়িত্ব, ক্ষমতা ও কার্যাবলি পালন, প্রয়োগ ও সম্পাদন করিতে ব্যর্থ হইয়াছেন মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংক সন্তুষ্ট হইলে; অথবা
(ঘ) অবসায়ক অন্য কোনো কারণে উক্ত পদে বহাল থাকিবার জন্য যোগ্য নহেন মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংক সন্তুষ্ট হইলে।
(২) উপ-ধারা (১) অনুসারে কোনো অবসায়ক অপসারিত হইলে হাইকোর্ট বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক মনোনীত অন্য কোনো ব্যক্তিকে অবসায়ক হিসাবে নিয়োগ করিবে।
(৩) বাংলাদেশ ব্যাংক, উপ-ধারা (২) এর অধীন অবসায়ক নিয়োগের অব্যবহিত পরে অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংককে নূতন অবসায়ক নিয়োগের নোটিশ প্রদান করিবে, এবং উহা বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট ও উক্ত তফসিলি ব্যাংকের ওয়েবসাইট এবং বাংলাদেশে বহল প্রচারিত অন্যূন একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করিবে।
৫৪। (১) হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক অবসায়ন আদেশ জারির তারিখ হইতে ৩ (তিন) মাসের মধ্যে অবসায়ক অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের জন্য একটি বিস্তারিত অবসায়ন পরিকল্পনা প্রস্তুত করিবেন এবং উক্ত পরিকল্পনা অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিল করিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অবসায়ন পরিকল্পনায় নিম্নবর্ণিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথা:-
(ক) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের সম্পদ ও দায় অন্তর্ভুক্ত করিয়া প্রণীত হালনাগাদ আর্থিক অবস্থার বিবরণী;
(খ) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের পূর্ববর্তী ২ (দুই) বৎসরের আয় ও ব্যয়ের ত্রৈমাসিক বিবরণী এবং পরবর্তী ২ (দুই) বৎসরের সম্ভাব্য আয় ও ব্যয়ের প্রক্ষেপণ;
(গ) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের মূল সম্পদ বা সম্পদসমষ্টি বিক্রয় এবং বিক্রয় পরিকল্পনার প্রতিবেদন;
(ঘ) অবসায়নাধীন তফসিলে ব্যাংকের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অনুসৃতব্য বিচারিক এবং অন্যান্য পদক্ষেপ সংবলিত একটি বিবরণী, যাহাতে কোনো জালিয়াতিপূর্ণ হস্তান্তর এবং তদ্ধীন সৃষ্ট কোনো অধিকার বাতিল সংক্রান্ত পদক্ষেপসমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে;
(ঙ) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের পরিচালক বা কর্মকর্তাগণের অপরাধ ও অন্যান্য অবৈধ কার্যক্রম এবং উক্ত পরিচালক বা কর্মকর্তাগণের নিকট হইতে তফসিলি ব্যাংকের ক্ষতিপূরণ আদায়ের পদক্ষেপ সংক্রান্ত প্রতিবেদন;
(চ) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের বীমা, কর্মসংস্থান এবং পরিষেবা চুক্তির মতো চলমান চুক্তিসমূহের ধারাবাহিকতা বা অবসানের প্রতিবেদন, যাহাতে উক্ত ব্যাংকের কর্মচারীগণের জন্য আর্থিক বিধানাবলির বিস্তারিত বিশ্লেষণ থাকিবে;
(ছ) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের দায় এবং উহার পাওনাদারগণের পাওনা পরিশোধসূচি সংক্রান্ত প্রতিবেদন; এবং
(জ) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের অবসায়নের পরবর্তী ২ (দুই) বৎসরের অনুমিত ভবিষ্যৎ খরচ এবং সম্ভাব্য অবসায়ন ব্যয়ের প্রতিবেদন।
(৩) বাংলাদেশ ব্যাংক অবসায়ক কর্তৃক দাখিলকৃত অবসায়ন পরিকল্পনার বিষয়ে সন্তুষ্ট হইলে, উক্ত পরিকল্পনা অনুমোদন করিবে এবং অবসায়ককে লিখিতভাবে উক্ত অনুমোদন সম্পর্কে অবহিত করিবে।
(৪) অবসায়ন পরিকল্পনা অনুমোদিত হইবার পর, অবসায়ক বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট ও উক্ত তফসিলি ব্যাংকের ওয়েবসাইট এবং বাংলাদেশে বহুল প্রচারিত অন্যূন একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সপ্তাহে একবার করিয়া ধারাবাহিকভাবে ৩ (তিন) সপ্তাহ এতদ্সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিবেন।
(৫) উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে ধারা ৬১ এর অধীন নিবন্ধিত দাবিদারগণ কখন এবং কোথায় অবসায়ন পরিকল্পনা এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্য পরিদর্শন করিতে পারিবেন সে সংক্রান্ত তথ্য থাকিবে।
(৬) অবসায়ক অবসায়ন পরিকল্পনা ত্রৈমাসিকভাবে হালনাগাদ করিবেন এবং অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিল করিবেন।
৫৫। ব্যাংক-কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৭১, ৭৮ এবং ৮১-তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন,-
(ক) অবসায়ন আদেশ অনুসারে কোনো তফসিলি ব্যাংকের অবসায়ন কার্যক্রম আরম্ভ হইলে উক্ত তফসিলি ব্যাংকের বিরুদ্ধে কোনো বিচারিক কার্যক্রম আরম্ভ করা যাইবে না এবং চলমান সকল বিচারিক কার্যক্রম আদালতের আরোপিত শর্ত সাপেক্ষে স্থগিত থাকিবে;
(খ) অবসায়ন আদেশ অনুসারে সুরক্ষিত পাওনাদার ব্যতীত অন্য কোনো পাওনাদার অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের বিরুদ্ধে তাহার ব্যক্তিগত অধিকার, স্বত্ব বা স্বার্থ প্রয়োগ অথবা উক্ত ব্যাংকের সম্পদের উপর অন্য কোনো প্রকার নিয়ন্ত্রণ আরোপ করিতে পারিবে না;
(গ) অবসায়ন আদেশ কার্যকর হইবার তারিখের পর সম্পদ আদায় ব্যতীত অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের সম্পদের উপর জারীকৃত সকল ক্রোক আদেশ বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে;
(ঘ) অবসায়ন আদেশ কার্যকর হইবার তারিখের পর কোনো তফসিলি ব্যাংকের দায়ের উপর কোনো সুদ বা অন্য কোনো চার্জ আরোপিত হইবে না।
৫৬। (১) অবসায়ক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহিত পরামর্শক্রমে অবসায়ন আদেশ জারির তারিখের পূর্বের ৫ (পাঁচ) বৎসরের মধ্যে অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বাতিল ও অকার্যকর হিসাবে ঘোষণার জন্য হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করিতে পারিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর সংক্ষুদ্ধ পক্ষগণের শুনানিক্রমে, হাইকোর্ট বিভাগ যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, উক্ত তফসিলি ব্যাংক এবং উক্ত কার্যক্রমে জড়িত পক্ষগণ উক্ত কার্যক্রম সম্পাদনকালে অবগত ছিলেন বা তাহাদের অবগত থাকা উচিত ছিল যে, উহা তফসিলি ব্যাংকের আমানতকারী বা অন্যান্য পাওনাদারের স্বার্থের ক্ষতি করিতে পারে, তাহা হইলে হাইকোর্ট বিভাগ উক্ত কার্যক্রম বাতিল ও অকার্যকর বলিয়া ঘোষণা করিতে পারিবে।
(৩) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত অবগতির বিষয়টি অনুমিত হইবে, যথা:-
(ক) কোনো প্রতিদান ব্যতীত কোনো ব্যক্তিকে প্রদত্ত কোনো উপহার বা অন্য কোনো হস্তান্তর;
(খ) তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক উহার কোনো শেয়ারধারক, পরিচালক, প্রশাসক, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বা কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনুকূলে পরিশোধিত অর্থ, হস্তান্তরিত সম্পদ অথবা অন্য কোনো স্বার্থ, যাহা সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ এতদ্বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত বিবেচনাক্রমে, হাইকোর্ট বিভাগের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে, প্রমাণ করিতে ব্যর্থ হয় যে,-
(অ) উক্ত তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক এতদ্বিষয়ে প্রদত্ত উপস্থাপনার ভিত্তিতে উক্ত ব্যক্তির বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিল যে, তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক তাহার অনুকূলে অর্থ পরিশোধ অথবা সম্পদ বা স্বার্থ হস্তান্তরের বিষয়টি যথাযথ; এবং
(আ) তফসিলি ব্যাংকের অর্থ পরিশোধ অথবা সম্পদ বা স্বার্থ হস্তান্তরের বিষয়টি উক্ত তফসিলি ব্যাংকের আমানতকারী ও পাওনাদারের স্বার্থের পরিপন্থি এই বিষয়ে উক্ত ব্যক্তি অবগত ছিলেন না;
(গ) নির্ধারিত তারিখের পূর্বে দায় পরিশোধ বা সম্পদ হস্তান্তর অথবা ঋণ পরিশোধযোগ্য হইবার তারিখের পূর্বে ঋণের জামানত হস্তান্তর;
(ঘ) তফসিলি ব্যাংকের সহিত সম্পাদিত এইরূপ কোনো চুক্তি যাহাতে চুক্তির অন্য পক্ষের উপর আরোপিত বাধ্যবাধকতার তুলনায় উক্ত তফসিলি ব্যাংকের উপর আরোপিতা বাধ্যবাধকতা কঠোর হয়;
(ঙ) আর্থিক চুক্তি ব্যতীত উক্ত তফসিলি ব্যাংক এবং অন্য এক বা একাধিক ব্যক্তির মধ্যে সম্পাদিত এইরূপ কোনো বন্দোবস্ত, যাহা উক্ত তফসিলি ব্যাংকের অবসায়নের আদেশ জারির পূর্বেই উক্ত ব্যাংক ও চুক্তিবদ্ধ অন্য পক্ষের পারস্পরিক দায়-দেনা নিষ্পত্তির অনুমতি দেয়; অথবা
(চ) তফসিলি ব্যাংক এবং উহার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হস্তান্তর।
৫৭। অবসায়ক, যথাশীঘ্র সম্ভব, নিম্নবর্ণিত কার্যক্রম সম্পাদন করিবেন, যথা:-
(ক) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক জিম্মাদারি ক্ষমতায় নির্বাহকৃত সকল কার্যক্রম সমাপ্ত করা;
(খ) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক জিম্মাদারি ক্ষমতায় বা জামিনদার হিসাবে রক্ষিত সকল তহবিল, সম্পদ, সেফ ডিপোজিট আইনগতভাবে ফেরত প্রাপ্তির অধিকারী ব্যক্তি বা তাহার আইনানুগ উত্তরাধিকারী বা প্রতিনিধিগণের নিকট ফেরত প্রদান করা; এবং
(গ) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের জিম্মাদারি হিসাব নিষ্পত্তি করা।
৫৮। (১) অবসায়ন আদেশ জারির তারিখ হইতে ৪ (চার) মাসের মধ্যে অবসায়ক, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে, এক মাস পূর্বে লিখিত বিজ্ঞপ্তি জারির শর্তে এবং উক্ত সময়ে বলবৎ অন্য কোনো আইনের বিধান সাপেক্ষে, নিম্নবর্ণিত চুক্তির অবসান করিতে পারিবেন, যথা:-
(ক) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের সহিত সম্পাদিত যেকোনো কর্মসংস্থান চুক্তি;
(খ) কোনো পরিষেবা চুক্তি যাহাতে উক্ত তফসিলি ব্যাংক পক্ষভুক্ত; এবং
(গ) উক্ত তফসিলি ব্যাংকের দায় সংক্রান্ত কোনো চুক্তি যাহাতে নিম্নবর্ণিত দায় অন্তর্ভুক্ত থাকিতে পারে, যথা:-
(অ) তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত কোনো ঋণ বা বিনিয়োগ সুবিধার অধীন দায়;
(আ) ইজারাগ্রহীতা হিসাবে দায়;
(ই) সিকিউরিটিজ, পরিশোধের দলিল অথবা বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ অথবা গ্রহণের বাধ্যবাধকতা;
(ঈ) ঋণপত্রের অধীন দায়: এবং
(উ) গ্যারান্টি, বিকল্প এবং অন্যান্য আকস্মিক দায়ের অধীন সৃষ্ট দায়।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন জারীকৃত বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে সংক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি, উক্ত বিজ্ঞপ্তি জারির তারিখ হইতে এক মাসের মধ্যে উহার বিরুদ্ধে আপিল করিতে পারিবেন।
৫৯। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন,-
(ক) তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক সম্পাদিত বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বীকৃত পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্পন্নযোগ্য কোনো অপ্রত্যাহারযোগ্য লেনদেন উক্ত তফসিলি ব্যাংকের অবসায়ন আদেশ জারি হওয়া সত্ত্বেও উহা কার্যকর হইরার পূর্বে অপ্রত্যাহারযোগ্য হইয়া থাকিলে উহা আইনগতভাবে বলবৎযোগ্য এবং তৃতীয় পক্ষের জন্য বাধ্যকর হইবে; অথবা
(খ) কোনো তফসিলি ব্যাংকের অবসায়ন আদেশ জারির পর যদি উক্ত ব্যাংক কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বীকৃত পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্পন্নযোগ্য কোনো অপ্রত্যাহারযোগ্য লেনদেন সংঘটিত হইয়া থাকে এবং উক্ত আদেশ কার্যকর হইবার তারিখে যদি উক্ত লেনদেন সম্পন্ন হইয়া থাকে, তাহা হইলে তাহা আইনগতভাবে বলবৎযোগ্য এবং তৃতীয় পক্ষের জন্য বাধ্যকর হইবে।
(২) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের অবসায়নের আদেশ কার্যকর হইবার তারিখের পূর্বে যদি উক্ত ব্যাংক কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বীকৃত পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্পন্নযোগ্য লেনদেনের নেটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট সম্পাদিত হইয়া থাকে, তাহা হইলে উক্ত অ্যারেঞ্জমেন্ট আইনগতভাবে সুরক্ষিত থাকিবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বীকৃত পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থায় সংঘটিত যেকোনো লেনদেন উক্ত ব্যবস্থার জন্য প্রযোজ্য আইন, বিধি বা প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত সময়ে অপ্রত্যাহারযোগ্য হইবে।
৬০। (১) ধারা ৫১ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ঙ) এর অধীন তফসিলি ব্যাংকের সম্পদ, বহি, রেকর্ড এবং অন্যভাবে রক্ষিত তথ্যাদির দায়িত্ব ও নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের তারিখ হইতে এক মাসের মধ্যে অবসায়ক উক্ত ব্যাংকের সকল সম্পদ, দাবি, চুক্তি এবং প্রধান লেনদেনসমূহ উল্লেখ করিয়া বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দাখিল করিবেন।
(২) বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা তাহার নিয়ন্ত্রণে থাকা অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের দায় ও সম্পদ সংক্রান্ত এইরূপ তথ্যাবলি অবসায়ককে প্রদান করিতে পারিবেন যে তথ্য ব্যাংকটির দায় ও সম্পদ চিহ্নিত করিবার জন্য প্রয়োজনীয়।
৬১। (১) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের উপর কোনো দাবি অবসায়ন আদেশ জারির তারিখ হইতে ২ (দুই) মাসের মধ্যে অবসায়কের নিকট লিখিতভাবে দাখিল করিতে হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত কোনো দাবির সহিত উক্ত দাবির প্রমাণক হিসাবে অন্যূন নিম্নবর্ণিত তথ্যাবলি সংযুক্ত করিতে হইবে, যথা:-
(ক) পাওনাদারের নাম ও ঠিকানা;
(খ) অবসায়নের আদেশ কার্যকর হইবার তারিখ পর্যন্ত মূল দাবির উপর আরোপিত সুদ ও অন্যান্য চার্জ, জরিমানা ও করের পরিমাণ উল্লেখপূর্বক দাবির ধরন; এবং
(গ) জামিনদাতার নাম ও ঠিকানাসহ দাবি সুরক্ষাকারী কোনো বন্ধক, লিয়েন বা গ্যারান্টি সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ।
(৩) ধারা ৬২ এর উপ-ধারা (৪) এর বিধান সাপেক্ষে, অবসায়ক তাহার নিকট দাখিলকৃত প্রতিটি দাবি নিবন্ধন করিবেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত ফরমে একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র ইস্যু করিবেন, যাহা দাবি নিবন্ধনের প্রাথমিক প্রমাণক হিসাবে গণ্য হইবে।
৬২। (১) উপ-ধারা (৪) এবং (৫) এর বিধান সাপেক্ষে, অবসায়ক কর্তৃক কেবল নিবন্ধিত দাবিসমূহ তফসিলি ব্যাংকের অবসায়ন কার্যক্রম কার্যকর করিবার উদ্দেশ্যে বিবেচনা করা হইবে।
(২) তফসিলি ব্যাংকের এইরূপ কোনো পাওনাদার যাহার পাওনা কোনো বন্ধক বা লিয়েন দ্বারা সুরক্ষিত, তিনি উক্ত বন্ধককৃত বা লিয়েনকৃত সম্পদ প্রকাশ্য নিলামে বিক্রয়ের মাধ্যমে লব্ধ প্রত্যাশিত মূল্যের অতিরিক্ত অথবা, কোনো পেশাদার জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উক্ত সম্পদের নির্ধারিত বাজারমূল্যের অধিক পরিমাণ দাবি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করিতে পারিবেন।
(৩) কোনো দাবির মূল্য অজানা হইলে ধারা কোনো স্বতন্ত্র জামানত মূল্যায়নকারী সংস্থার সহিত পরামর্শক্রমে, মূল্য নির্ধারণপূর্বক অবসায়ক উক্ত দাবি অনুমোদন করিতে পারিবেন।
(৪) অবসায়ক তাহার নিকট নিবন্ধিত প্রতিটি দাবি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর, উক্ত দাবিসমূহকে নিম্নবর্ণিতভাবে শ্রেণিবদ্ধ করিবেন, যথা:-
(ক) অবসায়ক কর্তৃক অনুমোদিত দাবি; এবং
(খ) অবসায়ক কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত দাবি।
(৫) অবসায়ক, উপ-ধারা (৪) এর অধীন শ্রেণিবদ্ধ দাবিসমূহ লিপিবদ্ধ করিবার উদ্দেশ্যে ২ (দুই)টি পৃথক তালিকা করিবেন এবং প্রত্যাখ্যাত দাবি শ্রেণিবদ্ধ করিবার ক্ষেত্রে উক্ত তালিকায় শ্রেণিবদ্ধ করিবার কারণ উল্লেখ করিবেন।
(৬) উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত উভয় শ্রেণিতে দাবি নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা হইতে এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করিয়া হাইকোর্ট বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট দাখিল করিতে হইবে।
(৭) অবসায়ক প্রত্যাখ্যাত হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ দাবির প্রত্যেক দাবিদারকে এইরূপ প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি ধারা ৬১ এর উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রাপ্তি স্বীকারপত্র ইস্যুর তারিখ হইতে এক মাসের মধ্যে লিখিতভাবে অবহিত করিবেন।
৬৩। (১) ধারা ৬২ এর উপ-ধারা (৪) এর অধীন কোনো ব্যক্তির দাবি প্রত্যাখ্যাত হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ হইলে তিনি ধারা ৬২ এর উপ-ধারা (৭) এর অধীন অবহিতকরণের তারিখ হইতে এক মাসের মধ্যে উক্ত দাবি অনুমোদনের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করিতে পারিবেন।
(২) হাইকোর্ট বিভাগ উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদন এবং অবসায়কের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য কোনো ঘাটতি বা সুস্পষ্ট কোনো ভুল না থাকিলে অবসায়কের বিশেষায়িত মূল্যায়নক (technical assessment) বিবেচনার পর, উক্ত দাবি অনুমোদন অথবা প্রত্যাখ্যানের আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক কোনো দাবি অনুমোদিত হইবার পর উহা প্রত্যাখ্যাত দাবির তালিকা হইতে বাদ দেওয়া হইবে এবং অনুমোদিত দাবির একটি পৃথক তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হইবে।
(৪) কোনো দাবি হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হইলে অবসায়ক উক্ত দাবি পরিশোধ করিবেন না।
৬৪। ধারা ৬৭ এর বিধান সাপেক্ষে, অবসায়ক অবসায়ন পরিকল্পনা অনুসারে, এই অধ্যায়ের অধীন অবসায়ন আরম্ভ হইবার পর তফসিলি ব্যাংকের যেকোনো বা সকল সম্পদ বিক্রয় করিতে পারিবেন এবং উহার দায়, আইনগত অধিকার ও বাধ্যবাধকতা নিষ্পন্ন ও পরিপালন করিবেন।
৬৫। (১) এই অধ্যাদেশের বিধানাবলি এবং তদনুসারে গৃহীত কোনো সিদ্ধান্ত অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংক এবং ইহার চুক্তির পক্ষগণের মধ্যে প্রচলিত আইনি প্রক্রিয়ায় পারস্পরিক দায় সমন্বয়ে বাধা হইবে না।
(২) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংক এবং ইহার চুক্তির পক্ষগণের মধ্যে অধিকার ও দায় নির্ধারণের ক্ষেত্রে, উক্ত তফসিলি ব্যাংক এবং ইহার চুক্তির পক্ষগণের মধ্যে আর্থিক চুক্তিপত্রে অন্তর্ভুক্ত নেট দায় নির্ধারণ ও পারস্পরিক দায় সমন্বয় সংক্রান্ত বিধানাবলি বিবেচনা করা হইবে।
(৩) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংক এবং ইহার সংশ্লিষ্ট চুক্তির পক্ষগণের মধ্যে আর্থিক চুক্তি অনুসারে নির্ধারিত চূড়ান্ত নিষ্পত্তিমূল্য,-
(ক) চুক্তির পক্ষগণের উপর উক্ত তফসিলি ব্যাংকের একটি দাবি হইবে; অথবা
(খ) ধারা ৬১ এর অধীন তফসিলি ব্যাংকের উপর প্রতিপক্ষের দাবি হিসাবে নিবন্ধনের পর উহা অনুমোদিত হইবে।
ব্যাখ্যা।- এই উপ-ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, “চূড়ান্ত নিষ্পত্তিমূল্য” অর্থ কোনো আর্থিক চুক্তির শর্তানুসারে উক্ত চুক্তির পক্ষগণের মধ্যে পারস্পরিক দেনা-পাওনা সমন্বয় করিবার পর নির্ণীত নিট পরিমাণ।
(৪) বাংলাদেশ ব্যাংক, সময় সময়, নির্দেশনা জারির মাধ্যমে আর্থিক চুক্তিপত্রের পরিশোধ সমন্বয় এবং নেটিং সম্পর্কিত বিষয়াবলি নির্ধারণ করিবে।
৬৬। (১) অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের সুরক্ষিত পাওনাদারগণের অনুমোদিত দাবি সুরক্ষাকারী সম্পদ ব্যতীত অন্যান্য সকল সম্পদ, অবসায়ক কর্তৃক বাণিজ্যিকভাবে যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতিতে বিক্রয় করা হইবে।
(২) নিম্নবর্ণিতভাবে সম্পদ বিক্রয় করা হইলে উহা উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত বাণিজ্যিকভাবে যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতিতে বিক্রয় করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে, যথা:-
(ক) সিকিউরিটিজ, বৈদেশিক মুদ্রা এবং অন্যান্য সম্পদ, যাহা সহজে বিক্রয় করা যায়, উহা লেনদেনকৃত বাজারে প্রচলিত মূল্যে বিক্রয় করা হইলে; এবং
(খ) এইরূপ সম্পদ প্রকাশ্য নিলামে বিক্রয় করা হইলে:
তবে শর্ত থাকে যে, যদি অবসায়ক এই মর্মে অভিমত পোষণ করেন যে, প্রকাশ্য নিলামে সম্পদের জন্য যুক্তিসঙ্গত মূল্য পাওয়া যাইবে না, তাহা হইলে তিনি মধ্যস্থতার (negotiate) মাধ্যমে সম্পদ বিক্রয়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন চাহিবেন।
(৩) দাবিকৃত জামানত হিসাবে থাকা সম্পদের মূল্য সম্পর্কে অবসায়ক এবং সুরক্ষিত পাওনাদারের মধ্যে কোনো বিরোধ উদ্ভূত হইলে, যদি উক্ত সম্পদ কোনো স্বতন্ত্র জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত বাজার মূল্যে অথবা প্রকাশ্য নিলামে বিক্রয় করা হয়, তাহা হইলে বাজার মূল্যে অথবা প্রকাশ্য নিলামের বিক্রয় মূল্য উক্ত সম্পদের মূল্যের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত হইবে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক উক্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করা হইবে।
৬৭। (১) অবসায়ক অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের সম্পদ, নিম্নবর্ণিত দাবির পর্যায়ক্রম অনুসারে বন্টন করিবেন, যথা:-
(ক) অবসায়ক কর্তৃক ব্যয়িত অবসায়ন প্রক্রিয়ার প্রশাসনিক সকল যুক্তিসঙ্গত ব্যয়;
(খ) সুরক্ষিত আমানতকারী এবং বীমাকৃত আমানতকারীগণের অধিকার হস্তান্তরের ফলে সৃষ্ট আমানত সুরক্ষা তহবিলের দাবি;
(গ) ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০ এ নির্ধারিত সুরক্ষিত সীমার অতিরিক্ত সুরক্ষণযোগ্য আমানত;
(ঘ) আদালত কর্তৃক অবসায়ন আদেশ জারির তারিখের পূর্বের অনধিক এক বৎসর সময়ের মধ্যে সরকার এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত তফসিলি ব্যাংকের প্রদেয় কর ও বিল;
(ঙ) উক্ত তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত ভবিষ্য তহবিল, পেনশন তহবিল, গ্র্যাচুইটি তহবিল অথবা অন্য কোনো কল্যাণ তহবিল হইতে কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে প্রদেয় অর্থ;
(চ) আদালত কর্তৃক অবসায়ন আদেশ জারির তারিখ পর্যন্ত তফসিলি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং পরবর্তী ৩ (তিন) স্তর ব্যতীত সকল স্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর অর্জিত বেতন ও মজুরি এবং তফসিলি ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট প্রদেয় অথবা তাহাদের পক্ষে প্রদেয় অন্য কোনো সংবিধিবদ্ধ পাওনা;
(ছ) এই অধ্যাদেশের অধীন রেজল্যুশন অর্থায়নের জন্য সরকারকে প্রদেয় কোনো অর্থ;
(জ) রেজল্যুশনের কারণে সৃষ্ট তফসিলি ব্যাংকের দায় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ব্যাংক পুনর্গঠন ও রেজল্যুশন তহবিলের নিকট প্রদেয় ও বকেয়া;
(ঝ) ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০ এর অধীন অসুরক্ষিত পাওনাদার এবং অরক্ষিত আমানতসহ অন্যান্য সকল সাধারণ পাওনাদারগণের দাবি;
(ঞ) টিয়ার ২ মূলধন উপাদানধারক ব্যতীত সাবঅর্ডিনেটেড ভেটহোল্ডারগণের দাবি;
(ট) টিয়ার ২ মূলধন উপাদানধারকগণের দাবি;
(ঠ) অতিরিক্ত টিয়ার ১ মূলধন উপাদানধারকগণের দাবি;
(ড) যেকোনো সুরক্ষিত দাবিসহ দায়ী ব্যক্তিগণের দাবি; এবং
(ঢ) কমন ইক্যুইটি টিয়ার ১ মূলধন উপাদানধারকগণের দাবি।
(২) ইসলামি ব্যাংকসমূহের অবসায়নের ক্ষেত্রে, সম্পদ বন্টনের দাবির অগ্রাধিকারের বিষয়াবলি বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রয়োজনে, সময় সময়, নির্দেশনা জারির মাধ্যমে নির্ধারণ করিতে পারিবে।
৬৮। (১) অবসায়নাধীন কোনো তফসিলি ব্যাংকের আমানতকারী বা অন্যান্য পাওনাদারের দাবি কেবল বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত এতদসংক্রান্ত বন্টনসূচিতে উল্লিখিত পরিমাণে পরিশোধ করা হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অবসায়ক অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের আমানতকারী এবং অন্যান্য পাওনাদারকে পরিশোধের জন্য ধারা ৬১ ও ৬২ এর অধীন অনুমোদিত দাবির সমন্বয়ে একটি বন্টনসূচি প্রস্তুত করিবেন এবং উক্ত বণ্টনসূচি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য দাখিল করিবেন।
(৩) প্রতিটি পরিশোধ বন্টনসূচি ধারা ৬৭-তে উল্লিখিত নির্ধারিত দাবির শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী অনুমোদিত দাবির ভিত্তিতে প্রদেয় অর্থের ক্রম নির্ধারণ ও সংযোজন করিবে, কেবল যদি-
(ক) অন্তর্ভুক্ত দাবির তুলনায় অগ্রগণ্য সকল উচ্চ অগ্রাধিকারযুক্ত অনুমোদিত দাবির উপর প্রদেয় অর্থ যাহা, পূর্ববর্তী বিতরণ সময়সূচী অনুযায়ী সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হইয়াছে বা এই বিতরণ সময়সূচীর অধীনে সম্পূর্ণ পরিশোধ করা সম্ভব; এবং
(খ) যে সকল দাবির অগ্রাধিকারের ক্রম অন্তর্ভুক্ত দাবির তুলনায় উচ্চতর এবং এখনো অনুমোদিত হয়নি, সেগুলোর সম্পূর্ণ পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল সংরক্ষিত রহিয়াছে এবং যে সকল দাবির অগ্রাধিকারের ক্রম অন্তর্ভুক্ত দাবির সমান এবং এখনো অনুমোদিত হয়নি, সেগুলোর সমতুল্যতার নীতি নিশ্চিত করা হইয়াছে।
(৪) যদি বিদ্যমান তহবিলের অপর্যাপ্ততার কারণে উক্ত তহবিল হইতে কোনো নির্দিষ্ট অগ্রাধিকারের সমস্ত দাবি সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ করা সম্ভব না হয়, তাহা হইলে উক্ত দাবিসমূহের আনুপাতিক হারে তহবিল হইতে পরিশোধ করা হইবে, এবং উক্ত দাবিসমূহ সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ করা না সম্ভব না হইলে নিম্ন অগ্রাধিকারের দাবিসমূহের পরিশোধের জন্য কোনো তহবিল বরাদ্দ করা হইবে। না।
(৫) পরিশোধ বন্টনসূচি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদনের অব্যবহিত পর, অবসায়ক বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট ও উক্ত তফসিলি ব্যাংকের ওয়েবসাইট এবং বাংলাদেশে বহল প্রচারিত অন্যূন একটি বাংলা এবং একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সপ্তাহে একবার করিয়া ধারাবাহিকভাবে ৩ (তিন) সপ্তাহ একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিবেন, যাহাতে অনুমোদিত দাবির অধিকারী ব্যক্তিগণ কর্তৃক পরিশোধ গ্রহণের তারিখ ও স্থানের উল্লেখ থাকিবে অথবা পরিশোধ গ্রহণের অন্য কোনো পদ্ধতির উল্লেখ থাকিবে।
(৬) বন্টনসূচিতে তালিকাভুক্ত কোনো অর্থ শনাক্তকরণ অথবা সংশ্লিষ্ট আমানতকারী ও পাওনাদারগণের সহিত যোগাযোগে ব্যর্থতার কারণে পরিশোধ করা সম্ভব না হইলে উক্ত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে এতদুদ্দেশ্যে রক্ষিত একটি বিশেষ হিসাবে জমা করিতে হইবে।
(৭) উপ-ধারা (৬) এর অধীন জমাকৃত কোনো তহবিল, এই ধারার অধীন তফসিলি ব্যাংকের আমানতকারী বা পাওনাদারগণের মধ্যে চূড়ান্ত বন্টনের নির্ধারিত তারিখের ১০ (দশ) বৎসরের মধ্যে প্রাপ্য ব্যক্তি কর্তৃক দাবি করা না হইলে উহা ব্যাংক-কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর অধীন অদাবিকৃত আমানত হিসাবে গণ্য হইবে।
৬৯। (১) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থিত প্রধান কার্যালয় বিশিষ্ট কোনো তফসিলি ব্যাংকের বিরুদ্ধে অবসায়ন প্রক্রিয়া আরম্ভ করা যাইবে, যথা:-
(ক) যদি উক্ত তফসিলি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ব লিখিত অনুমোদনক্রমে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত শর্ত ও নিয়ম পরিপালন করিয়া বাংলাদেশে তাহার ব্যবসা বন্ধ করিতে ইচ্ছুক হয়;
(খ) যদি ধারা ৪৮ এর উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো কারণ উক্ত তফসিলি ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়; অথবা
(গ) যদি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক দাখিলকৃত আবেদনের প্রেক্ষিতে, উক্ত তফসিলি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় যে দেশে অবস্থিত অথবা যে স্থানে উক্ত ব্যাংক তাহার মূল ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে, উক্ত স্থানে উহার অবসায়ন কার্যক্রম আরম্ভ হয়।
ব্যাখ্যা।- এই দফার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, “মূল ব্যবসায়িক কার্যক্রম (Core Business Lines)” অর্থ কোনো তফসিলি ব্যাংকের জন্য উল্লেখযোগ্য রাজস্ব, মুনাফা বা ফ্র্যাঞ্চাইজি মূল্যের প্রধান উৎস হিসাবে বিবেচিত এইরূপ কোনো ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও সংশ্লিষ্ট সেবা।
(২) তফসিলি ব্যাংক অবসায়ন সম্পর্কিত এই অধ্যায়ের বিধানাবলি, বাংলাদেশের বাহিরে প্রধান কার্যালয় বিশিষ্ট তফসিলি ব্যাংকের অবসায়নের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রযোজ্য হইবে।
(৩) এই ধারার বিধানাবলি প্রয়োগ করিবার ক্ষেত্রে, বাংলাদেশের বাহিরে প্রধান কার্যালয় বিশিষ্ট এইরূপ অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের সকল সম্পদ, দায়, কার্য ও নিষ্ক্রিয়তা, যাহা বাংলাদেশে উক্ত তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত ব্যবসা হইতে উদ্ভূত বা অন্য কোনোভাবে সম্পর্কিত, উক্ত তফসিলি ব্যাংকের উপর বর্তাইবে।
(৪) অবসায়ক উক্ত তফসিলি ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে বাংলাদেশে প্রধান কার্যালয় অবস্থিত এইরূপ তফসিলি ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষমতাপ্রাপ্ত হইবেন।
(৫) বাংলাদেশের বাহিরে প্রধান কার্যালয় অবস্থিত এইরূপ তফসিলি ব্যাংকের বিরুদ্ধে অবসায়ন কার্যক্রম আরম্ভ করিবার জন্য আদালতের আদেশ জারির সময় হইতে, উক্ত তফসিলি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ব লিখিত অনুমোদনক্রমে, অনুমতিপ্রাপ্ত কার্যক্রম ব্যতীত, বাংলাদেশে পরিচালিত অন্যান্য সকল কার্যক্রম বন্ধ করিবে।
(৬) বাংলাদেশের বাহিরে প্রধান কার্যালয় অবস্থিত এইরূপ অবসায়নাধীন তফসিলি ব্যাংকের সকল বাধ্যবাধকতা ও দায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক উক্ত ব্যাংককে প্রদান করা লাইসেন্স অনুযায়ী পরিশোষিত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত ব্যাংকের কোনো সম্পদ বাংলাদেশ হইতে অপসারণ রোধ করিবার লক্ষ্যে অবসায়ক প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
৭০। (১) অবসায়ন সম্পন্নের পর, অবসায়ক বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নিযুক্ত একজন বহিঃনিরীক্ষকের মতামতসহ, তফসিলি ব্যাংকের অবসায়ন সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন ও নিরীক্ষিত হিসাব-বিবরণী প্রস্তুত করিবেন এবং অনুমোদনের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে দাখিল করিবেন।
(২) বহিঃনিরীক্ষকের পারিশ্রমিক উক্ত তফসিলি ব্যাংকের সম্পদ হইতে নির্বাহ করা হইবে।
(৩) বহিঃনিরীক্ষকের মতামতে নিম্নবর্ণিত বিষয়ের উল্লেখ থাকিবে, যথা:-
(ক) অবসায়কের হিসাব-বিবরণী সত্য ও যথাযথ কি না এবং উহা সঠিকভাবে প্রস্তুত করা হইয়াছে কি না;
(খ) অবসায়ক কর্তৃক প্রস্তুতকৃত হিসাব-বিবরণী তফসিলি ব্যাংকের সম্পদের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সঠিক কি না;
(গ) যেক্ষেত্রে বহিঃনিরীক্ষক অবসায়কের নিকট হইতে কোনো ব্যাখ্যা বা তথ্য তলব করিয়াছেন, সেই ক্ষেত্রে অবসায়ক কর্তৃক সরবরাহকৃত ব্যাখ্যা বা তথ্য সন্তোষজনক কি না; এবং
(ঘ) অবসায়ক বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসারে কাজ করিয়াছেন কি না।
(৪) হাইকোর্ট বিভাগ, নিরীক্ষিত হিসাব-বিবরণী এবং অবসায়ন সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুমোদন করিতে পারিবে এবং অবসায়ককে তফসিলি ব্যাংকের হিসাব-বহি ও নথিপত্র এবং অবসায়ন সম্পর্কিত অন্যান্য দলিলপত্র, হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত উপযুক্ত কোনো স্থানে দাখিল করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, অবসায়ন কার্যক্রম সমাপ্তির লক্ষ্যে অবসায়কের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য কোনো ঘাটতি বা সুস্পষ্ট কোনো ভুল না থাকিলে আদালত অবসায়কের বিশেষায়িত মূল্যায়নকে (technical assessment) বাতিল করিবেন না।
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন অনুমোদন প্রাপ্তির পর, অবসায়ক উক্ত অনুমোদনের একটি বিজ্ঞপ্তি সাধারণ জনগণের জ্ঞাতার্থে বাংলাদেশে ব্যাংকের ওয়েবসাইট ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওয়েবসাইট এবং বাংলাদেশে বহুল প্রচারিত অন্যূন একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করিবেন।
(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর, অবসায়ক যৌগমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের নিবন্ধককে কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ অনুসারে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর কর্তৃক রক্ষিত রেজিস্টার হইতে উক্ত কোম্পানির নাম অপসারণ করিবার জন্য অবহিত করিবেন।
(৭) উপ-ধারা (৬) এর অধীন অবহিত হইবার পর যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের নিবন্ধক উক্ত কোম্পানির নাম রেজিস্টার হইতে অপসারণ করিবেন এবং এতদ্মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি বাংলাদেশ ব্যাংক ও যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর এবং বাংলাদেশে বহল প্রচারিত অন্যূন একটি বাংলা ও একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করিবেন।
(৮) উপ-ধারা (৭) এর অধীন কোনো কোম্পানির নাম অপসারণের কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ হইতে, তফসিলি ব্যাংকের অবসায়ন কার্যক্রম সমাপ্ত হইবে এবং কোম্পানিটি বিলুপ্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
(৯) হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক নিরীক্ষিত হিসাব-বিবরণী এবং অবসায়ন সম্পর্কিত প্রতিবেদনের অনুমোদন সাপেক্ষে, অবসায়ক তফসিলি ব্যাংকের অবসায়ন সম্পর্কিত কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সকল দায় হইতে অব্যাহতি লাভ করিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, তফসিলি ব্যাংকের অবসায়নের ফলে এই অধ্যাদেশ বা অন্য কোনো আইনের অধীন দায়ী ব্যক্তিগণের দায় এইরূপভাবে বহাল থাকিবে যেন কোম্পানিটি বিলুপ্ত হয় নাই।