প্রিন্ট ভিউ

দেউলিয়া বিষয়ক আইন, ১৯৯৭

( ১৯৯৭ সনের ১০ নং আইন )

পঞ্চম অধ্যায়

দায়মুক্তি ও দায়গ্রস্ত দেউলিয়া

দায়মুক্তি
৪৭৷ (১) কোন একক দেউলিয়ার ব্যাপারে আদালত তাহার দায়মুক্তির আদেশ দিতে পারিবে, এবং এইরূপ আদেশের ফলে উক্ত দেউলিয়া ৩৯ ধারার অধীনে প্রমাণযোগ্য সকল দাবী, দেনা ও দায় হইতে অব্যাহতি লাভ করিবেন, যদি আদেশে সুনির্দিষ্টভাবে ভিন্নরূপ কোন কিছু না থাকে৷
 
 
 
 
(২) দেনাদার আর্জি দাখিল করিলে উক্ত আর্জিতেই তিনি তাঁহার দায়মুক্তির জন্য প্রার্থনা করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, এবং যেক্ষেত্রে এক বা একাধিক যথাযোগ্য পাওনাদার উক্ত দরখাস্ত দাখিল করেন, সেক্ষেত্রে ধারা ৩০(১)(খ)(অ) এর অধীনে নির্ধারিত তারিখের পূর্বে দেনাদার তাহার দায়মুক্তির জন্য আবেদন করিবেন৷
 
 
 
 
(৩) দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদানের সময় আদালত উক্ত আদেশের একটি তারিখ নির্ধারণ করিবে যে তারিখে অনুষ্ঠিতব্য শুনানীর উদ্দেশ্য হইবে দেনাদারকে দায়মুক্ত করা হইবে কি না তাহা সর্বপ্রথম বিবেচনা করা, এবং উক্ত তারিখ হইবে উক্ত আদেশ প্রদানের তারিখের ৬০ (ষাট) দিনের পরবর্তী কোন তারিখ:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ২৭(৩) মোতাবেক দেউলিয়ার জিজ্ঞাসাবাদ সমাপ্ত না হইয়া থাকিলে উক্তরূপ শুনানী মুলতবী করিতে হইবে৷
 
 
 
 
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন শুনানীকালে আদালত যদি সন্তুষ্ট হয় যে, দেনাদারের নৈতিক স্খলন বা অবহেলার কারণে নহে, বরং সম্পূর্ণভাবে তাহার নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে তাহার দেউলিয়া অবস্থার সৃষ্টি হইয়াছে, তাহা হইলে আদালত অবিলম্বে তাহার দায়মুক্তির আদেশ প্রদান করিবে৷
 
 
 
 
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীনে কোন দায়মুক্তির আদেশ প্রদান করা না হইলে, দেউলিয়া তাহার দায়মুক্তির জন্য আদালতের নিকট একটি স্বতন্ত্র আবেদন করিতে পারিবেন এবং আদালত তত্সম্পর্কে একটি শুনানীর তারিখ ধার্য করিবে, তবে ২৭(৩) ধারার অধীনে অনুষ্ঠিত দেনাদারের জিজ্ঞাসাবাদ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত শুনানী করা হইবে না৷
 
 
 
 
(৬) যদি দেনাদার বাংলাদেশের বাহিরে বসবাস করেন এবং আদালত মনে করে যে, সঙ্গতির অভাবে বা অন্য কোন সন্তোষজনক কারণে তিনি বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করিতে অসমর্থ, অথবা যদি দেনাদার একজন উন্মাদ (lunatic) হন বা আদালত যদি মনে করে যে, দেনাদার এমন কোন দৈহিক বা মানসিক অসুস্থতা বা অক্ষমতায় ভুগিতেছেন যে, প্রকাশ্য জিজ্ঞাসাবাদে উপস্থিত থাকিবার জন্য তিনি উপযুক্ত নহেন, তাহা হইলে আদালত জিজ্ঞাসাবাদ হইতে তাহাকে অব্যাহতি দিতে বা আদালতের বিবেচনামতে যথাযথ শর্তাধীনে, পদ্ধতিতে এবং স্থানে তাহাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(৭) দায়মুক্তির আবেদন সম্পর্কে শুনানীর জন্য আদালতের নথিতে লিপিবদ্ধ প্রত্যেক পাওনাদারকে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে এবং এইরূপ কোন বিধি না থাকিলে আদালত কর্তৃক নির্দেশিত পদ্ধতিতে নোটিশ প্রদান করিতে হইবে৷
 
 
 
 
(৮) শুনানীর সময় আদালত আবশ্যিকভাবে রিসিভারের বক্তব্য শুনিবে এবং কোন পাওনাদারের বক্তব্যও শুনিতে পারে, এবং আদালত প্রয়োজন মনে করিলে দেনাদারকে কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিতে এবং সাক্ষ্য গ্রহণ করিতে পারেন৷
দায়মুক্তি প্রভাবিত করিতে পারে এমন বিষয়সমূহ
৪৮৷ (১) ধারা ৪৭(৫) এর অধীনে দাখিলকৃত আবেদনপত্রের শুনানীকালে, আদালত-
 
 
 
 
(ক) দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারা নিষ্পন্নাধীন থাকাকালে দেনাদারের আচরণসহ তাহার সাধারণ আচরণ এবং কার্যকলাপ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত ও দাখিল করিবার জন্য রিসিভারকে নির্দেশ প্রদান করিবে;
 
 
 
 
(খ) উক্ত প্রতিবেদন বিবেচনাক্রমে, নিঃশর্ত দায়মুক্তির আদেশ প্রদান করিতে বা উহা প্রত্যাখ্যান করিতে পারিবে অথবা দায়মুক্তির আদেশ প্রদানের পরবর্তীকালে দেনাদারের প্রাপ্ত বা তত্কর্তৃক অর্জিতব্য কোন আয় বা অর্জন সম্পর্কে কোন শর্ত আরোপ করিয়া দায়মুক্তির আদেশ দিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(২) আদালত দায়মুক্তির আদেশ প্রদানের আবেদন প্রত্যাখ্যান করিতে অথবা এইরূপ আদেশ প্রদত্ত হইলে উহার কার্যকারিতা নির্ধারিত মেয়াদের জন্য স্থগিত করিতে পারিবে, যদি আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে-
 
 
 
 
(ক) দেনাদার এই আইনের অধীন, অথবা দণ্ডবিধির ৪২১, ৪২২, ৪২৩ বা ৪২৪ ধারার অধীন কোন অপরাধ করিয়াছেন; অথবা
 
 
 
 
(খ) উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত কোন ঘটনা প্রমাণিত হইয়াছে:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, আদালত উহার নথিতে লিপিবদ্ধ মোট দেনার অন্ততঃ ৫০% এর সমপরিমাণ অর্থ দেনাদার কর্তৃক আদালতে জমাকরণের শর্ত সাপেক্ষে উক্ত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের আদেশ দিতে পারে৷
 
 
 
 
(৩) এই ধারার অধীনে প্রদত্ত কোন শর্তযুক্ত আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে দুই বত্সর অতিক্রান্ত হওয়ার পর যে কোন সময় আদালত যদি সংশ্লিষ্ট দায়গ্রস্ত দেউলিয়ার ব্যাপারে এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, উক্ত আদেশের শর্ত পালন করার মত অবস্থায় আসার সম্ভাবনা তাহার নাই, তাহা হইলে আদালত, উহার বিবেচনামতে উপযুক্ত পদ্ধতিতে এবং শর্তসাপেক্ষে, উক্ত আদেশ বা পরবর্তী কোন আদেশ সংশোধন করিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(৪) উপ-ধারা (২) (খ) তে উল্লিখিত ঘটনাসমূহ হইতেছে এই যে,-
 
 
 
 
(ক) দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদানের অব্যবহিত পূর্বের তিন বত্সরের মধ্যে বা বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আদালত কর্তৃক নির্ধারিত স্বল্পতর সময়, এর মধ্যে, দেনাদার তাহার ব্যবসায়িক লেন-দেন এবং আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য প্রদানকারী হিসাব-বহি রক্ষণাবেক্ষণ করেন নাই;
 
 
 
 
(খ) দেনাদার নিজেকে দেউলিয়ারূপে জানার পরও বা তাহা বিশ্বাস করার সংগত কারণ থাকা সত্বেও, তিনি তাহার কারবার চালু রাখিয়াছিলেন;
 
 
 
 
(গ) দেনাদার এইরূপ কোন দেনার চুক্তি করিয়াছেন যাহা তিনি পরিশোধ করিতে পারিবেন বলিয়া উক্ত চুক্তির সময় আশা করার যুক্তিসংগত কারণ ছিল না; এইরূপ পরিশোধের আশা করার যৌক্তিকতা প্রমাণের দায়িত্ব দেনাদারের উপর বর্তাইবে;
 
 
 
 
(ঘ) দেনাদারের বেপরোয়া ফটকামূলক কাজকর্ম (rash speculation), বা অসংযমী জীবন-যাপন, বা হটকারিতা, বা ব্যবসা-বাণিজ্যে ও বিষয়াদিতে যুক্তিসংগত সতর্কতা ও মনোযোগের অভাব, তাহাকে দেউলিয়া করিয়াছে, অথবা দেউলিয়া হইতে অবদান রাখিয়াছে;
 
 
 
 
(ঙ) দেউলিয়ার বিরুদ্ধে যথাযথভাবে আনীত কোন মামলা বা অন্য কোন কার্যধারায় তুচ্ছ বা হয়রানিমূলক (frivolous or vexatious) আপত্তিকর অবতারণা করিয়া দেনাদার উক্ত মামলা বা কার্যধারার নিষ্পত্তি বিলম্ব করিয়াছেন বা তাহার সংশ্লিষ্ট পাওনাদারকে অপ্রয়োজনীয় খরচ করিতে বাধ্য করিয়াছেন;
 
 
 
 
(চ) আর্জি দাখিলকৃত হওয়ার তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন মাসের মধ্যে দেনাদার তাহার কোন পাওনাদারকে অবৈধ অগ্রাধিকার প্রদান করিয়াছেন;
 
 
 
 
(ছ) দেনাদার ইতিপূর্বে বাংলাদেশে বা অন্যত্র দেউলিয়া ঘোষিত হইয়াছেন, অথবা তাহার দেনা পরিশোধের ব্যাপারে কোন আপোষ-মিমাংসা বা পুনর্বিন্যাস পরিকল্পনা বা পুনর্গঠন পরিকল্পনা অনুমোদিত হইয়াছে;
 
 
 
 
(জ) দেনাদার কোন প্রতারণার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হইয়াছেন;
 
 
 
 
(ঝ) আর্জি দাখিল হওয়ার তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন মাসের মধ্যে দেনাদার এইরূপ পরিস্থিততে বাংলাদেশের বাহিরে কোন সামগ্রী প্রেরণ করিয়াছেন যাহা হইতে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ রহিয়াছে যে, উক্ত সামগ্রী প্রেরণ সদুদ্দেশ্যমূলক বাণিজ্যিক লেন-দেন ছিল না;
 
 
 
 
(ঞ) দেনাদারের বণ্টনযোগ্য সম্পদের মূল্য তাহার জামানতবিহীন দায় (unsecured liabilities) এর ৫০% এর সম-পরিমাণ নহে, যদি না তিনি আদালতকে এই মর্মে সন্তুষ্ট করিতে পারেন যে, এই পরিস্থিতি উদ্ভূত হওয়ার জন্য তাহাকে ন্যায়সংগতভাবে দায়ী করা যায় না৷
 
 
 
 
(৫) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে রিসিভারের প্রতিবেদন উহাতে উল্লিখিত ঘটনাসমূহের ব্যাপারে প্রাথমিক সাক্ষ্য বলিয়া গণ্য করিতে হইবে৷
 
 
 
 
(৬) দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারায় প্রমাণযোগ্য যে দেনা দায়মুক্তির আদেশ প্রদানের তারিখে অপরিশোধিত থাকে তত্সম্পর্কে বা উহার অংশ-বিশেষ সম্পর্কে আদালত, এই ধারার অধীন আরোপণীয় অন্যতম শর্ত হিসাবে, দেনাদারকে এইরূপ নির্দেশ দিতে পারিবে যে, তিনি উক্ত অপরিশোধিত দেনা বা উহার অংশ-বিশেষ সম্পর্কে রিসিভারের সিদ্ধান্তে সম্মতি দিবেন৷
 
 
 
 
(৭) দেনাদার উপ-ধারা (৬) এর বিধান মোতাবেক রিসিভারের কোন সিদ্ধান্তে সম্মতি প্রদান করিলে, উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত অপরিশোধিত দেনা বা উহার অংশ-বিশেষ আদায়ের জন্য, আদালতের অনুমতি ব্যতীত, কোন কার্যধারা গ্রহণ করা যাইবে না; এবং আদালত এইরূপ অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে, যদি উহা প্রমাণিত হয় যে, দেনাদারের দায়মুক্তির পর তাহার অর্জিত সম্পত্তি বা আয় উক্ত দেনা বা উহার অংশ-বিশেষ পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত৷
 
 
 
 
(৮) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নিম্্নরূপ ধারণাগুলি (Presumptions) প্রযোজ্য হইবে, যথা:-
 
 
 
 
(ক) যদি দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারার যেকোন পর্যায়ে দেনাদার আদালতে উপস্থিত হন এবং এইরূপ উপস্থিত হওয়ার আগে বা পরে যখন হউক, উক্ত কার্যধারায় তাহাকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়, তাহা হইলে ধরিয়া লওয়া হইবে (Presumed) যে, তিনি নিজেকে দেউলিয়ারূপে জানিতেন অথবা তাহার উক্তরূপ বিশ্বাস করার কারণ ছিল;
 
 
 
 
(খ) যদি রিসিভার আদালতকে এই মর্মে অবহিত (report) করেন যে, দেনাদারের বণ্টনযোগ্য সম্পদের মধ্যে উদ্ধারকৃত এবং উদ্ধারযোগ্য সম্পত্তিগুলির (assets) আনুমানিক মূল্য প্রমাণিত দেনাসমূহের ৫০% পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত নহে, তাহা হইলে আদালত, বিপরীত প্রমাণিত না হইলে, ধরিয়া লইবে (shall presume) যে, দেনাদার নিজেকে দেউলিয়ারূপে জানিবার পরও অথবা তাহার উক্তরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকা সত্ত্বেও, তিনি তাহার কারবার চালু রাখিয়াছেন :
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কোন নির্দিষ্ট তারিখে দেনাদার নিজেকে দেউলিয়ারূপে জানিতেন কিনা, অথবা তাহার উক্তরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ ছিল কিনা তাহা নিরূপণের ক্ষেত্রে, উক্ত তারিখে তাহার যে সকল দেনা বার মাসের অধিককালব্যাপী অপরিশোধিত ছিল সেই সকল দেনা পূর্বোক্ত সম্পত্তিগুলির (assets) মূল্যমান হইতে বাদ দিতে হইবে;
 
 
 
 
(গ) একজন দেনাদার নিজেকে দেউলিয়ারূপে জানিবার পরও, বা তাহার উক্তরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকা সত্ত্বেও, তিনি তাহার কারবার চালু রাখিয়াছেন বলিয়া ধরিয়া লওয়া হইবে, যদি দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর তিনি বাস্তবে তাহার কারবার চালু রাখিয়া থাকেন, এবং তিনি-
 
 
 
 
(অ) আদালতকে এই মর্মে সন্তুষ্ট করিতে না পারেন যে, নিজেকে স্বচ্ছল বলিয়া বিশ্বাস করিবার মত যুক্তিসংগত কারণ ছিল, অথবা
 
 
 
 
(আ) যুক্তিসংগত কারণ ব্যতীত আর্জি দাখিলকৃত হওয়ার তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন বত্সরের প্রতি বত্সরের জন্য তাহার কারবারের ব্যালেন্সশীট দাখিল করিতে ব্যর্থ হন; এইরূপ যুক্তিসংগত কারণ প্রমাণের দায়িত্ব বর্তাইবে তাহার উপর;
 
 
 
 
(ঘ) আর্জি দাখিলকৃত হওয়ার তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন মাসের মধ্যে দেনাদার কর্তৃক তাহার কোন পাওনাদারকে প্রদত্ত যেকোন অগ্রাধিকার, বিপরীত প্রমাণিত না হইলে, অযৌক্তিকভাবে প্রদত্ত হইয়াছে বলিয়া ধরিয়া লইতে হইবে৷
দায়মুক্তির আবেদন না করা, ইত্যাদির ফলাফল
৪৯৷ (১) যদি-
 
 
 
 
(ক) দেনাদার তাহার দায়মুক্তির বিষয়ে শুনানীর জন্য ধারা ৩০(১) (খ) (অ) এর অধীনে নির্ধারিত তারিখে বা, ধারা ৫০(১) এর বিধান সাপেক্ষে, আদালত কর্তৃক নির্ধারিত পরবর্তী কোন তারিখে উপস্থিত হইতে ব্যর্থ হন, অথবা
 
 
 
 
(খ) ধারা ৫০(১) এর অধীনে নির্ধারিত তারিখের পূর্বে দেনাদার তাহার দায়মুক্তির আবেদন পেশ না করেন, অথবা
 
 
 
 
(গ) দেনাদারের উক্তরূপ আবেদন শুনানীর পর আদালত যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, দায়মুক্তির আদেশ প্রদান করা যথাযথ হইবে না,
 
 
 
 
তাহা হইলে আদালত উক্ত দেনাদারকে দায়গ্রস্ত দেউলিয়া বলিয়া ঘোষণা করিয়া একটি আদেশ প্রদান করিবে৷
 
 
 
 
(২) এই অধ্যাদেশের অধীনে কোন দেনাদার কারাগার বা অন্য কোন হেফাজত হইতে মুক্তি লাভের পর উপ-ধারা (১) এর অধীনে দায়গ্রস্ত দেউলিয়া ঘোষিত হইলে, এবং আদালত যথাযথ মনে করিলে দেনাদারকে উক্ত কারাগার বা হেফাজতে পুনঃসোপর্দ করিতে পারিবে এবং তদনুসারে উক্ত কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাহার হেফাজতে রাখিবার উদ্দেশ্যে দেনাদারকে গ্রহণ করিতে বাধ্য থাকিবেন; এইরূপ ক্ষেত্রে দেনাদারের মুক্তি লাভের পূর্বে তাহাকে দৈহিকভাবে আটক অবস্থায় রাখার ব্যাপারে যে ব্যবস্থা বলবত্ ছিল, তাহা পুনঃসোপর্দ করার পরও বলবত্ আছে বলিয়া গণ্য হইবে৷
দায়গ্রস্ত দেউলিয়া
৫০৷ (১) যে ক্ষেত্রে কোন দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদান করা হয়, সেক্ষেত্রে-
 
 
 
 
(ক) দেউলিয়া, উক্ত আদেশের তারিখের পরবর্তী ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে, আদালতে, তাহার দায়মুক্তির আবেদন করিবেন;
 
 
 
 
(খ) উক্ত মেয়াদের মধ্যে আবেদন করা হইলে আবেদনটি শুনানীর উদ্দেশ্যে আদালত, উক্ত মেয়াদ অতিক্রান্ত হওয়ার পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, একটি তারিখ নির্ধারণ করিবে এবং তত্সম্পর্কে রিসিভার ও আদালতের নথিতে লিপিবদ্ধ পাওনাদারগণকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে অথবা এইরূপ বিধি না থাকিলে আদালতের বিবেচনা অনুসারে যথাযথ পদ্ধতিতে, নোটিশ প্রদান করিবে;
 
 
 
 
(গ) আদালত, উপস্থিত সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে শুনানীর যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদানের পর, দেউলিয়ার দায়মুক্তির আদেশ প্রদান করিতে পারিবে;
 
 
 
 
(ঘ) দায়মুক্তির আদেশ প্রদত্ত না হইলে, দেনাদার একজন দায়গ্রস্ত দেউলিয়া থাকিয়া যাইবে৷
 
 
 
 
(২) একজন দায়গ্রস্ত দেউলিয়া-
 
 
 
 
(ক) প্রতি ৬ (ছয়) মাস অন্তর একবার রিসিভারের নিকট এইরূপ একটি বিবরণী দাখিল করিবেন যাহাতে উক্ত ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে দেনাদার কর্তৃক প্রাপ্ত বা অর্জিত সকল অর্থ ও সম্পত্তির হিসাব লিপিবদ্ধ থাকিবে, এবং দেনাদার তাহার নিজের ও পরিবারবর্গের ভরণ-পোষণের জন্য প্রয়োজনীয় খরচ বাবদ ব্যয়িত অর্থ বাদে অবশিষ্ট অর্থ ও সম্পত্তি রিসিভারের নিকট অর্পণ করিবেন;
 
 
 
 
(খ) আদালতের পূর্বানুমতি ব্যতীত বাংলাদেশ ত্যাগ করিবেন না৷
 
 
 
 
(৩) কোন দায়গ্রস্ত দেউলিয়া-
 
 
 
 
(ক) উপ-ধারা (২)(ক) এর বিধান পালনে ব্যর্থ হইলে, তিনি এক বত্সর কারাদণ্ডে বা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন;
 
 
 
 
(খ) উপ-ধারা (২)(খ) এর বিধান ভংগ করিলে, দুই বত্সর কারাদণ্ডে বা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷
দায়মুক্তি আদেশের ফলাফল
৫১৷ (১) দায়মুক্তি আদেশের কারণে দেনাদার নিম্্নবর্ণিত কোন দেনার দায় হইতে অব্যাহতি লাভ করিবেন না, যথা:-
 
 
 
 
(ক) সরকারের প্রাপ্য কোন দেনা:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে শ্রেণীর দেনাকে এতদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট করিবে, আদালত ঐ শ্রেণীর দেনার ব্যাপারে দায়মুক্তির আদেশ প্রদান করিতে পারিবে;
 
 
 
 
(খ) দেনাদার জড়িত ছিলেন এইরূপ প্রতারণা বা প্রতারণামূলক বিশ্বাস ভংগের কারণে সৃষ্ট দেনা বা দায় (liability);
 
 
 
 
(গ) দেনাদার জড়িত ছিলেন এইরূপ প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত ছাড় (forbearance) সংক্রান্ত দেনা বা দায়;
 
 
 
 
(ঘ) ফৌজদারী কার্যবিধির ৪৮৮ ধারা অথবা Family Courts Ordinance, 1985 (XVIII of 1985) এর অধীনে খোরপোষ প্রদানের আদেশজনিত দায়৷
 
 
 
 
(২) দায়মুক্তি আদেশের ফলে দেনাদার, উপ-ধারা (১) এর বিধান সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন প্রমাণযোগ্য সকল দেনার ব্যাপারে দায়মুক্ত হইবেন৷
 
 
 
 
(৩) কোন দায়মুক্তি আদেশের ফলে এইরূপ কোন ব্যক্তি দায়মুক্ত হইবেন না, যিনি, আর্জি দাখিলের তারিখে, দেনাদারের অংশীদার অথবা সহ-ট্রাষ্টী ছিলেন অথবা কোন চুক্তির আওতায় দেনাদারের সহিত যৌথভাবে দায়বদ্ধ ছিলেন বা যৌথভাবে চুক্তি সম্পাদন করিয়াছিলেন অথবা দেনাদারের জামিনদার (surety) ছিলেন৷
 
 
 
 
(৪) কোন দায়মুক্তি আদেশ দেনাদারের দেউলিয়াত্বের এবং সংশ্লিষ্ট দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারার বৈধতার চূড়ান্ত সাক্ষ্য হইবে, এবং দায়মুক্তি প্রদত্ত দেনা বা দাবী সম্পর্কিত অপর যে কোন কার্যধারায় দেনাদার দাবী করিতে পারিবেন যে, দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারাটি সূচিত হওয়ার কারণ ঘটিয়াছিল, এবং তিনি আরও দাবী করিতে পারিবেন যে, আর্জি দাখিলের পূর্বেই উক্ত দেনা বা দাবী উদ্ভূত হইয়াছিল এবং দায়মুক্তি আদেশের দ্বারা উক্ত দেনা বা দায় সম্পর্কিত অপর কার্যধারাটি বারিত৷
 
 
 
 
(৫) কোন দেনাদারের দায়মুক্তি সত্ত্বেও, রিসিভারে ন্যস্ত এবং তত্কর্তৃক উদ্ধারযোগ্য সম্পত্তি উদ্ধারের ব্যাপারে রিসিভার যেইরূপ সহায়তা করার জন্য নির্দেশ দেন, সেইরূপ সহায়তা করিতে উক্ত দেনাদার বাধ্য থাকিবেন এবং দেনাদার উহাতে ব্যর্থ হইলে, তিনি অনধিক ১ (এক) বত্সরের কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন, এবং আদালত যথাযথ বিবেচনা করিলে দায়মুক্তি আদেশ প্রত্যাহার করিতে পারিবে, তবে দায়মুক্তি আদেশ প্রদানের পর হইতে উহার প্রত্যাহার পর্যন্ত যথাযথভাবে সম্পাদিত কোন বিক্রয়, হস্তান্তর, অর্থ পরিশোধ বা কৃত অন্য কিছুর বৈধতা উক্তরূপ প্রত্যাহারের ফলে ক্ষুণ্ন হইবে না৷
 
 
 
 
 
 
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs