প্রিন্ট ভিউ

[সেকশন সূচি]

দেউলিয়া বিষয়ক আইন, ১৯৯৭

( ১৯৯৭ সনের ১০ নং আইন )

চতুর্থ অধ্যায়

আপোষ মিমাংসা, পুনবির্ন্যাস ও পুর্নগঠন

আপোষ মিমাংসা এবং পুনর্বিন্যাস পরিকল্পনা

পুনর্গঠন আদেশ
৪৬৷ (১) দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদানের পূর্বে বা পরে যেকোন সময়, একজন যথাযোগ্য (eligible) দেনাদার তাহার দেনাসমূহ পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে আদালতের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন এবং এইরূপ আবেদনপত্রে পুনর্গঠনের কারণ উল্লেখপূর্বক উহার সহিত একটি পুনর্গঠন পরিকল্পনা (plan of reorganisation) উপস্থাপন করিবেন৷
 
 
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীনে কোন আবেদন প্রাপ্তির পর যদি আদালত সন্তুষ্ট হয় যে, আবেদনকারী একজন যথাযোগ্য দেনাদার, তাহা হইলে আদালত উক্ত আবেদন প্রাপ্তির ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে তত্সম্পর্কে শুনানীর একটি তারিখ নির্ধারণ করিবে; এবং কোন রিসিভার নিযুক্ত হইয়া থাকিলে তাহাকে এবং আদালতের নথিতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যথাযোগ্য পাওনাদারগণকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে অথবা এইরূপ কোন বিধি না থাকিলে আদালতের বিবেচনামতে উপযুক্ত পদ্ধতিতে, উক্ত আবেদন শুনানীর তারিখ সম্পর্কে নোটিশ প্রদান করিবে৷
 
 
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীনে শুনানীর তারিখ নির্ধারণের সময় আদালত একজন অন্তর্বর্তী রিসিভার নিয়োগ করিবে, যদি ইতিপূর্বে কোন রিসিভার বা অন্তর্বর্তী রিসিভার নিযুক্ত না হইয়া থাকে৷
 
 
 
 
(৪) আবেদনটি শুনানীর তারিখ নির্ধারণের পর আদালত, প্রয়োজনীয় মনে করিলে-
 
 
 
 
(ক) ধারা ২৪(১) এর (ক) এবং (খ) দফায় বর্ণিত যেকোন ক্ষমতা প্রয়োগ এবং তদনুসারে যেকোন আদেশ প্রদান করিতে পারিবে; এবং
 
 
 
 
(খ) উহার নথিতে প্রাপ্ত তথ্যাদির নিরীখে পুনর্গঠন পরিকল্পনা পরীক্ষা করিতে এবং আদালত কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, যাহা উপ-ধারা (২) এর অধীনে নির্ধারিত শুনানীর তারিখের পর হইবে না, এর মধ্যে উক্ত পরিকল্পনা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রণয়নের জন্য রিসিভারকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে; এবং এইরূপ নির্দেশ অনুসারে রিসিভার, প্রস্তাবিত পরিকল্পনার বাস্তবায়নযোগ্যতা সম্পর্কে তাহার মতামতসহ, উক্ত পরিকল্পনার উপর একটি প্রতিবেদন দাখিল করিবেন৷
 
 
 
 
(৫) যথাযোগ্য পাওনাদারগণ এবং রিসিভার আবেদন শুনানীর তারিখের পূর্বে প্রস্তাবিত পুনর্গঠনের ব্যাপারে তাহাদের লিখিত আপত্তি বা পরামর্শ দাখিল করিতে পারিবেন; এবং আদালত উপ-ধারা (৪)(খ) অনুসারে রিসিভার কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদন, যদি থাকে, এবং উক্ত আবেদন ও কোন আপত্তি বা পরামর্শ দাখিল করা হইলে তদ্‌সম্পর্কে শুনানীর পর নিম্্নবর্ণিত বিষয়াদি বিবেচনায় রাখিয়া একটি পুনর্গঠন আদেশ প্রদান করিতে পারিবে, যথা:-
 
 
 
 
(ক) জাতীয় স্বার্থ;
 
 
 
 
(খ) পাওনাদারগণের স্বার্থ;
 
 
 
 
(গ) দেনাদারের স্বার্থ:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, আদালতে প্রমাণিত সকল দেনার মূল্যমানের ভিত্তিতে যদি দুই-তৃতীয়াংশ পাওনাদার, ব্যক্তিগতভাবে বা তাহাদের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে, উক্ত পুনর্গঠন পরিকল্পনা সম্পর্কে লিখিত সম্মতি জ্ঞাপন না করেন, তাহা হইলে কোন পুনর্গঠন আদেশ প্রদান করা হইবে না;
 
 
 
 
আরও শর্ত থাকে যে, আদালত, পুনর্গঠন আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে, উক্ত পরিকল্পনায় সম্মতি প্রদান করে নাই এইরূপ পাওনাদার বা বিভিন্ন শ্রেণীর পাওনাদারগণ বা সাধারণভাবে সকল পাওনাদারগণের স্বার্থ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে, বিধির বিধান সাপেক্ষে, উক্ত পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় রদবদলসহ উহার বিবেচনামত প্রয়োজনীয় শর্ত আরোপ করিতে পারিবে, এবং এইরূপ রদবদল ও শর্ত পরিকল্পনার অংশ হইবে৷
 
 
 
 
(৬) পুনর্গঠনের আদেশ প্রদানের তারিখের পূর্বে প্রাপ্য হয় এইরূপ দেনাসহ এই আইনের অধীন প্রমাণযোগ্য সকল দেনার ব্যাপারে উক্ত আদেশ দেনাদার এবং সকল পাওনাদারের উপর বাধ্যতামূলক হইবে৷
 
 
 
 
(৭) উপ-ধারা (৫) এর অধীনে কোন পুনর্গঠন আদেশ প্রদান করা হইলে, ইতিপূর্বে প্রদত্ত দেউলিয়া ঘোষণাদেশ, যদি থাকে, আপনা-আপনি রদ হইয়া যাইবে; কিন্তু এইরূপ রদ হওয়ার ফলে উক্ত ঘোষণাদেশ প্রদত্ত হওয়ার পর এই আইনের অধীনে যথাযথভাবে সম্পাদিত কোন হস্তান্তর বা অর্থ পরিশোধ বা অন্য কোন কিছুর বৈধতা ক্ষুণ্ন হইবে না৷
 
 
 
 
(৮) উপ-ধারা (৫) এর অধীনে পুনর্গঠন আদেশ প্রদত্ত হইলে, দেনাদারের বণ্টনযোগ্য সম্পদ (Estate) আপনা আপনি রিসিভারে ন্যস্ত হইবে, এবং দেনাদার, এই আইনের বিধানাবলী ও রিসিভারের তত্ত্বাবধান সাপেক্ষে, তাহার বণ্টনযোগ্য সম্পদ এবং তত্সংশ্লিষ্ট কোন ব্যবসা-বাণিজ্য থাকিলে তিনি উহার বিশেষ ব্যবস্থাপক (special manager) হইবেন৷
 
 
 
 
(৯) আদালত-
 
 
 
 
(ক) স্বীয় উদ্যোগে অথবা রিসিভার বা কোন যথাযোগ্য পাওনাদারের আবেদনক্রমে, এবং
 
 
 
 
(খ) যাহার বিরুদ্ধে আবেদন করা হইয়াছে তাহাকে অথবা, ক্ষেত্রমত, যথাযোগ্য পাওনাদার বা রিসিভারকে বা দেনাদারকে নোটিশ প্রদান করিয়া এবং বিষয়টি সম্পর্কে শুনানীর যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদানের পর,
 
 
 
 
রিসিভার বা তৃতীয় কোন ব্যক্তিকে দেনাদারের স্থলে বিশেষ ব্যবস্থাপক, অতঃপর বিকল্প ব্যবস্থাপক বলিয়া অভিহিত, নিয়োগ করিতে পারিবে৷
 
 
 
 
(১০) এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলী পুনর্গঠন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে, এই ধারার বিধান সাপেক্ষে, সেই একইরূপে প্রযোজ্য হইবে যেরূপে সেগুলি কোন দেউলিয়া বিষয়ক কার্যধারার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়৷
 
 
 
 
(১১) যে ক্ষেত্রে পুনর্গঠন আদেশ প্রদত্ত হয়, সেই ক্ষেত্রে-
 
 
 
 
(ক) আর্জি দাখিলের তারিখের পর এবং পুনর্গঠন আদেশের তারিখের পূর্বে যে কোন সময়, দেনাদার কর্তৃক অর্জিত কিংবা তাহার উপর ন্যস্ত সকল সম্পদ বণ্টনযোগ্য সম্পদের অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
 
 
(খ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বা এইরূপ বিধান না থাকিলে আদালত কর্তৃক ধার্যকৃত তারিখের পূর্বে যেকোন সময় যেকোন পাওনাদার তাহার দাবী প্রমাণ করিতে পারিবেন;
 
 
 
 
(গ) আর্জি দাখিলের পর দেনাদার যদি কোন দেনা করেন, তবে তাহা প্রশাসনিক (administrative) দাবী বলিয়া গণ্য হইবে;
 
 
 
 
(ঘ) অনুমোদিত পুনর্গঠন পরিকল্পনার শর্ত মোতাবেক দেনাদার দায়মুক্তি পাইতে পারেন, যদি আদালত সেইমর্মে আদেশ প্রদান করে;
 
 
 
 
(ঙ) ধারা ৪৭ এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, দেনাদার কোন সম্পত্তির দখলে থাকিলে এবং পুনর্গঠনের স্বার্থে উক্ত সম্পত্তি তত্কর্তৃক ব্যবহার করা প্রয়োজনীয় হইলে, তিনি উক্ত সম্পত্তির দখল অব্যাহত রাখিতে পারিবেন, যদিও উক্ত সম্পত্তি কোন পূর্বস্বত্ব (lien) বা বন্ধক সাপেক্ষ হয় বা অন্য কোনভাবে জামানতসহ দায়বদ্ধ থাকে:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ সম্পত্তির দখল গ্রহণের জন্য আদালত কোন জামানতকারী পাওনাদারকে অনুমতি দিতে পারিবে, যদি আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, পুনর্গঠনের বিষয়টি নিষ্পন্নাধীন থাকাকালে উক্ত সম্পত্তিতে তাহার স্বার্থ যথাযথভাবে রক্ষিত হয় নাই অথবা উক্ত সম্পত্তিতে দেনাদারের আর কোন ন্যায়ানুগ স্বার্থ (equity) নাই;
 
 
 
 
(চ) ধারা ৬৬-তে বিধৃত হারে রিসিভার ফিস গ্রহণের অধিকারী হইবেন;
 
 
 
 
(ছ) রিসিভার, বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অথবা এইরূপ বিধি না থাকিলে আদালত কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, অনধিক সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি পাওনাদার কমিটি গঠন করিবেন; তবে সদস্যগণকে এমন পাওনাদার হওয়া প্রয়োজন যে, তাহাদের পাওনা জামানতবিহীন ও পরিমাণের দিক হইতে সর্বোচ্চ এবং তাহারা কমিটিতে সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হইতে ইচ্ছুক৷
 
 
 
 
(১২) এতদুদ্দেশ্যে প্রণীত কোন বিধির বিধানের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া আদালত পুনর্গঠন আদেশে নিম্্নবর্ণিত বিষয়গুলি নির্ধারণ করিয়া দিবে, যথা:-
 
 
 
 
(ক) বণ্টনযোগ্য সম্পদ ও তদ্‌সংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে দেনাদারের ক্ষমতা ও কর্তব্য এবং তাহার উপর আরোপিত বাধা নিষেধ;
 
 
 
 
(খ) উক্তরূপ ব্যবস্থাপনা রিসিভার কর্তৃক পরিবীক্ষণের (monitor) পদ্ধতি;
 
 
 
 
(গ) পাওনাদার কমিটি কর্তৃক রিসিভারকে পরামর্শ প্রদানের ক্ষেত্রসমূহ;
 
 
 
 
(ঘ) উক্তরূপ ব্যবস্থাপনা ও পরামর্শের ব্যাপারে রিসিভারের ক্ষমতা ও দায়িত্ব;
 
 
 
 
(ঙ) পুনর্গঠন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যাপারে প্রযোজ্য সময়সীমা এবং দিক নির্দেশনা৷
 
 
 
 
(১৩) পুনর্গঠন আদেশ প্রদানের পর আদালত যদি, স্বীয় উদ্যোগে বা রিসিভার বা কোন যথাযোগ্য পাওনাদারের আবেদনক্রমে, লিখিত কারণ উল্লেখপূর্বক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, পুনর্গঠন আদেশ প্রদান যথাযথ হয় নাই বা পরিবর্তিত পরিস্থিততে উক্ত আদেশ সংশোধন বা প্রত্যাহার করা উচিত, অথবা আদালত এবং পাওনাদারগণের নিকট গ্রহণযোগ্য ও যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করিতে বিশেষ ব্যবস্থাপক বা বিকল্প-ব্যবস্থাপক অক্ষম, তাহা হইলে আদালত, হয় পুনর্গঠন আদেশ, উহার বিবেচনায় যথাযথভাবে, সংশোধন করিবে নতুবা উহা রদ করিবে; এইরূপ রদকরণের ক্ষেত্রে, আদালত দেউলিয়া ঘোষণাদেশ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করিবে এবং এইরূপ আদেশ প্রদত্ত হইলে উহা আর্জি দাখিলের তারিখে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে, এবং তদনুসারে এই অধ্যায় ব্যতীত এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলী সংশ্লিষ্ট কার্যধারা ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে:
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ সংশোধন বা রদকরণের ফলে, উহার পূর্বে অনুমোদিত পুনর্গঠন পরিকল্পনার অধীনে যথাযথভাবে সম্পাদিত কোন হস্তান্তর বা অর্থ পরিশোধ বা অন্য কোন কিছুর বৈধতা ক্ষুণ্ন হইবে না৷
 
 
 
 

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs