প্রিন্ট ভিউ

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১

( ২০০১ সনের ১৮ নং আইন )

চতুর্থ অধ্যায়

সাধারণ উদ্দেশ্য, ক্ষমতা ও দায়িত্ব

কমিশনের সাধারণ (broad) উদ্দেশ্যসমূহ
২৯৷ কমিশনের সাধারণ (broad) উদ্দেশ্যসমূহ হইতেছে নিম্নরূপঃ-
 
 
 
 
(ক) বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত এবং সুসংহত করিতে পারে এমন একটি টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার সুশৃংখল উন্নয়ন এবং উহাতে উত্সাহ দান;
 
 
 
 
(খ) বাংলাদেশের বিরাজমান অর্থনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা অনুসারে যতদূর সম্ভব বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর জন্য একটি নির্ভরযোগ্য, যুক্তিসংগত ব্যয়-সাপেক্ষ ও আধুনিক মানের টেলিযোগাযোগ সেবা ও ইন্টারনেট সেবা প্রাপ্তির সুযোগ নিশ্চিত করা;
 
 
 
 
(গ) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে দেশীয় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার দক্ষতা এবং প্রতিযোগিতা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা;
 
 
1[(ঘ) টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক ও বাজারমুখী ব্যবস্থার উপর ক্রমবর্ধমান হারে নির্ভরতা অর্জন, উহার পরিপন্থী বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা প্রতিরোধ ও অবসান এবং সেই লক্ষ্যে কমিশনের উদ্দেশ্যের সহিত সংগতি রাখিয়া যথাযথ ক্ষেত্রে কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা;]
 
 
 
(ঙ) নূতন নূতন টেলিযোগাযোগ সেবা প্রবর্তন এবং টেলিযোগাযোগ খাতে দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগে যাহারা বাংলাদেশের বাহিরে থাকেন তাহাদিগকে বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত ব্যবসাস্থল স্থাপনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা৷
কমিশনের দায়িত্ব
৩০৷ (১) কমিশনের দায়িত্ব হইবে:
 
 
(ক) বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান নিয়ন্ত্রণ;
 
 
(খ) দেশীয় গ্রাহকগণের উপর আরোপিত চার্জের হার, এবং টেলিযোগাযোগ সেবার প্রাপ্যতা, মান ও বৈচিত্রের ব্যাপারে তাহাদের স্বার্থ রতগা করা;
 
 
(গ) টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়নকে এবং টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী কার্যক্রম ও বিনিয়োগকে উত্সাহ প্রদান;
 
 
(ঘ) গ্রাহকগণের সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রতগা ও তাহাদের প্রয়োজন অনুসারে যথাযথ সাড়া দেওয়া; এবং টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারীর বিদ্যমান কিংবা সম্ভাব্য পীড়নমূলক বা বৈষম্যমূলক আচরণ বা কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ ও দূরীকরণের ব্যবস্থা করা;
 
 
(ঙ) উন্নত টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান নিশ্চিত করার লতেগ্য উক্ত সেবা প্রদানকারীগণের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতি বজায় রাখা এবং উহাতে উত্সাহ দান;
 
 
(চ) টেলিযোগাযোগের একান্ততা (privacy) রতগার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা;
 
 
(ছ) বাংলাদেশ এবং বহির্বিশ্ব হইতে টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ এবং বাংলাদেশে উহাদের প্রভাব সম্পর্কে পর্যালোচনা করা এবং তদ্‌নুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ বা ক্ষেত্রমত সরকারের নিকট সুপারিশ করা;
 
 
(জ) টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় নম্বর বা সংখ্যা (numbering plan) সংক্রান্ত জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং প্রয়োজনে ইহা সংশোধন 2[;
 
 
(ঝ) ইন্টারনেট ডোমেইন নেম (Internet Domain Name) সংক্রান্ত নিদের্শনা (guide line) প্রণয়ন, যথাযথ ক্ষেত্রে উহা পরিবর্তন বা সংশোধন, বাস্তবায়ন, ইন্টারনেট ডোমেইন নেম সংক্রান্ত অভিযোগ ও বিরোধ নিষ্পত্তিকরণ।]
 
 
(২) উপধারা (১) এ বর্ণিত কমিশনের সামগ্রিক দায়িত্বের আওতায় নিম্নবর্ণিত সুনির্দিষ্ট দায়িত্বগুলিও অন্তর্ভুক্ত:
 
 
(ক) দেশীয় পরিচালনাকারীগণ কর্তৃক অনুসরণীয় কার্যপদ্ধতির কোড (code of practice) এবং তাহাদের সহিত বিদেশী পরিচালনাকারীগণের যোগাযোগের বিষয়ে অনুসরণীয় কার্যপদ্ধতির কোড (code of practice) প্রণয়ন;
 
 
(খ) এই আইনের অধীনে ইস্যুকৃত লাইসেন্স, পারমিট ও কারিগরী গ্রহণযোগ্যতা সনদ প্রদানের পর তত্সম্পর্কে সময় সময় মন্ত্রীকে অবহিতকরণ;
 
 
(গ) একই পরিচালনাকারী কর্তৃক একাধিক ধরনের টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে একটি সেবার আয় হইতে অন্য সেবা খাতে ভর্তুকী (subsidy) প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
(ঘ) ধারা ৩৪ এর অধীনে সরকার প্রদত্ত নির্দেশ ও দায়িত্ব পালন;
 
 
(ঙ) টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে সরকারের আন্তর্জাতিক দায়দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে সরকার প্রদত্ত নির্দেশ অনুযায়ী কমিশন কর্তৃক উহা নিজে পালন করা বা পরিচালনাকারীগণের মাধ্যমে পালন নিশ্চিত করা;
 
 
(চ) টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় মান এবং পদ্ধতির বিষয়ে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নসহ অন্যান্য টেলিযোগাযোগ ও আঞ্চলিক সংস্থার কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সহায়তা প্রদান; আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের বিভিন্ন নোটিশ, এবং যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ এবং বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি অবহিত করা;
 
 
(ছ) সরকার ভিন্নতর সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করিলে, টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিক সম্মেলনে বা বিদেশী সংস্থার সহিত অনুষ্ঠিত সভায় সরকারের প্রতিনিধিত্ব করা;
 
 
(জ) টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিক সম্মেলন সম্পর্কে তথ্যাদি সংগ্রহ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সংস্থাসমূহকে তাহা সরবরাহ করা; এইরূপ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য উপযুক্ত প্রতিনিধি প্রেরণের জন্য সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সংস্থাকে পরামর্শদান এবং প্রতিনিধিদল গঠনের বিষয় ও দলের দায়িত্ব সম্পর্কে যথাযোগ্য ভূমিকা পালন;
 
 
(ঝ) প্রয়োজনবোধে দ্বিপাতিগক, উপ-আঞ্চলিক ও আঞ্চলিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকার বা আঞ্চলিক সংস্থাসমূহকে পরামর্শদান;
 
 
(ঞ) টেলিযোগাযোগ সেবার প্রযুক্তিগত মান ও মানদণ্ড নির্ধারণ, পরিচালনাকারীগণ প্রদত্ত সেবার মান পরিবীক্ষণ এবং উক্ত মান যাহাতে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত মানের সহিত সংগতিপূর্ণ হয় তাহা নিশ্চিত করা;
 
 
(ট) কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত মান অনুসারে সেবা প্রদান করা হইতেছে কি না তাহা পরিবীক্ষণের ব্যবস্থা করা;
 
 
(ঠ) পরিচালনাকারী এবং টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানে নিয়োজিত অন্যান্য ব্যক্তির অন্যায্য কার্যকলাপ হইতে গ্রাহকগণের স্বার্থ রতগাসহ সামগ্রিক জনস্বার্থের প্রতি লতগ্য রাখিয়া এই আইনের বিধান পালন নিশ্চিত করা;
 
 
(ড) নিম্নবর্ণিত দায়িত্বসহ সামগ্রিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতির উন্নয়ন:
 
 
(অ) টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বা সেবার পরিচালনাকারীকে অন্যান্য পরিচালনাকারীর এমন কার্যাকলাপ হইতে রতগা করা যাহা প্রতিযোগিতামূলক পরিস্থিতি বিনষ্ট করে;
 
 
(আ) কোন ব্যক্তি টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বা টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের বাজারে পরিচালনাকারী হিসাবে প্রবেশ করিতে ইচ্ছুক হইলে তাহার প্রবেশের পথ সুগম করা;
 
 
(ঢ) উন্মুক্তভাবে এবং ন্যায্যতা ও স্বচছতা সহকারে যাহাতে সকল বিষয়ে কমিশন কর্তৃক ত্বরিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহা নিশ্চিত করা;
 
 
( 3[ণ]) কমিশনের দায়িত্বের সহিত সংগতিপূর্ণ হওয়া এবং প্রয়োজনীয় আর্থিক ও সহায়ক অন্যান্য সম্পদের প্রাপ্যতা সাপেক্ষে, সরকার কর্তৃক সময় সময় প্রদত্ত অন্যান্য কার্যাবলী সম্পাদন;
 
 
(ত) গ্রাহকগণের স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে এমন পদ্ধতি প্রবর্তন করা যাহাতে তাহাদের মতামত ও অভিযোগ নির্দিষ্ট সময় অন্তর গ্রহণ ও উহার উপর যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়;
 
 
(থ) জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদির উপর জনসংযোগ ও গণশুনানীর ব্যবস্থা করা৷
কমিশনের ক্ষমতা
4[৩১। (১) ধারা ৩০ এ বর্ণিত কমিশনের দায়িত্ব ফলপ্রসূভাবে সম্পাদনের জন্য কমিশন এই আইন, বিধি ও প্রবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে, প্রয়োজনীয় সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে।
 
(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত ক্ষমতার আওতায় নিম্নবর্ণিত সুনির্দিষ্ট ক্ষমতাগুলিও অন্তর্ভুক্তঃ
 
(ক) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সরকার বা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ফিস প্রদান সাপেক্ষে
 
(অ) টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন বা পরিচালনা বা টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের জন্য সরকারের পূর্বাণুমোদনক্রমে লাইসেন্স ইসু্যকরণ;
 
(আ) টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন বা পরিচালনা বা টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের জন্য পারমিট বা কারিগরি গ্রহণযোগ্যতা সনদ ইসু্যকরণ;
 
(ই) টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন বা পরিচালনা বা টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের জন্য কমিশন কতর্ৃক ইসু্যকৃত লাইসেন্স, পারমিট ও কারিগরি গ্রহণযোগ্যতা সনদের নিয়ন্ত্রণ ও স্থগিতকরণ;
 
(ঈ) বেতার ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দকরণ ও উহা ব্যবহারের কতর্ৃত্ব প্রদান, বেতার ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহারের পরিবীক্ষণ ও স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনা;
 
(উ) বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য ইসু্যকৃত লাইসেন্স, সরকারের পূর্বাণুমোদনক্রমে পারমিট ও সনদ এর নবায়ন, হস্তান্তর নিয়ন্ত্রণ, স্থগিতকরণ ও বাতিলকরণ;
 
(ঊ) বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স পারমিট বা কারিগরি গ্রহণযোগ্যতা সনদ ইসু্যকরণ;
 
(খ) এই আইন, বিধি, প্রবিধান, লাইসেন্স, পারমিট বা কারিগরি গ্রহণযোগ্যতা সনদের শর্ত ভঙ্গ করার বিষয়ে উহার ধারকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ ও অন্যান্য দাবীর উপর তদন্ত অনুষ্ঠান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তদনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
(গ) টেলিযোগাযোগ ও বেতার পরিচালনকারীগণের বা ব্যবহারকারীগণের হিসাব সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় পদ্ধতি ও ব্যবস্থা নির্ধারণ এবং প্রয়োজনে উহা সংশোধনের নির্দেশ প্রদান;
 
(ঘ) সরকারের টেলিয়োগাযোগ নীতিমালার প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া লাইসেন্সযোগ্য বিভিন্ন ধরনের টেলিযোগাযোগ সেবা অনুমোদন;
 
(ঙ) সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সধারী কর্তৃক এই আইনের অধীন দাখিলকৃত ট্যারিফ, চার্জ, চুক্তি বা ব্যবস্থা বা উহাদের কোন অংশ এই আইনের সহিত অসংগতিপূর্ণ বলিয়া মনে হইলে উহা স্থগিতকরণ বা উহার সংশিস্নষ্ট অংশ নামঞ্জুর বা এতদ্বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান;
 
(চ) টেলিযোগাযোগ ও বেতার পরিচালনকারীগণের বা ব্যবহারকারীগণের মধ্যে আন্তঃসংযোগ ব্যবস্থাদির জন্য নির্দেশনা প্রণয়ন, যথাযথ ক্ষেত্রে শর্তাবলী নির্ধারণ এবং তাহাদের মধ্যে উদ্ভূত বিরোধ নিষ্পত্তি;
 
(ছ) টেলিযোগাযোগ ও বেতার পরিচালনকারীগণের বা ব্যবহারকারীগণের কর্মকান্ডের যে কোন বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যাদিসহ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান;
 
 
(জ) কমিশনের নির্দেশনা পালিত হইতেছে কি না তাহা যাচাইয়ের জন্য পরিচালন পদ্ধতি (Operator”s Procedure and Systems) নিরীক্ষা করানো, এবং টেলিযোগাযোগ ও বেতার পরিচালনকারীগণের বা ব্যবহারকারীগণের প্রতিবেদন পদ্ধতির সঠিকতা যাচাই এবং এতদ্বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দান;
 
(ঝ) কমিশনের কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল নথিপত্র এবং বহি পরিদর্শন ও পরিক্ষণের সুযোগ যাহাতে কমিশন পায় তাহা নিশ্চিত করার জন্য টেলিযোগাযোগ ও বেতার পরিচালনকারীগণের বা ব্যবহারকারীগণের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দান;
 
(ঞ) কোন এলাকায় টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কোন পরিচালনকারীর একচেটিয়া ব্যবসা থাকিলে তাহার মূলধন ব্যয়ের বার্ষিক পরিকল্পনা পর্যালোচনা ও তদসস্পর্কে ধারণা লাভের উদ্দেশ্যে উক্ত পরিকল্পনা দাখিলের জন্য উক্ত পরিচালনকারীকে নির্দেশ প্রদান;
 
(ট) এই আইনের অধীন কমিশনের ক্ষমতা প্রয়োগ, দায়িত্ব ও কার্যাবলী সম্পাদন এবং তদ্সংক্রান্ত বিষয়ে উহাকে পরামর্শ প্রদানের জন্য সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে পরামর্শক নিয়োগ;
 
(ঠ) এই আইনের বিধানাবলী পালন করার বিষয়ে নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় বাধ্যতামূলক বাস্তবায়ন(enforcement) আদেশ জারী করা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রশাসনিক জরিমানা আরোপ ও আদায়;
 
 
(ড) এন্টেনা ব্যবস্থাদিসহ বেতার যন্ত্রপাতি স্থাপনের প্রতিটি স্থান অনুমোদন এবং প্রতিটি মাস্তুল, স্তম্ভ এবং এন্টেনা, ধারক ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ অনুমোদন;
 
(ঢ) বেতার যন্ত্রপাতির লাইসেন্সের আবেদনকারী বা ধারক কর্তৃক প্রস্তাবিত বা বিদ্যমান বেতার যন্ত্রপাতি ব্যবহার, উহার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় এবং উক্ত যন্ত্রপাতির গুরুত্তপূর্ণ পরিবর্তন সম্পর্কে, কমিশনের বিবেচনায় যথাযথ যেকোন তথ্য সরবরাহের জন্য তাহাদিগকে নির্দেশ প্রদান;
 
(ণ) টেলিযোগাযোগের উন্নয়ন এবং সুশৃঙ্খল ও সুদক্ষ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অন্য যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ;
 
(ত) এই আইনের অধীন পরিচালিত কমিশনের কাজকর্মের বিষয়ে অনুসরণীয় বিষয়াদি, লাইসেন্সধারী ও সেবা প্রদানকারী কর্তৃক অনুসরণীয় বিষয়াদি, প্রান্তিক যন্ত্রপাতিসহ টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি, প্রতিবন্ধকতা যন্ত্রপাতি, বেতার ফ্রিকোয়েন্সি ও বেতার যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে অনুসরণীয় বিষয়াদি সম্পর্কে নির্দেশিকা প্রণয়ন ও প্রকাশ;
 
(থ) এই উপ-ধারায় কমিশনকে প্রদত্ত সুনির্দিষ্ট ক্ষমতা প্রয়োগের বিষয়ে এই আইনে কোন সুনিদিষ্ট বিধান না থাকিলে সেই বিষয়ে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে প্রবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে উক্ত ক্ষমতা প্রয়োগের পদ্ধতি ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি নির্ধারণ;
 
(দ) কমিশনের লাইসেন্সধারী, পারমিটধারী বা সেবা প্রদানকারীদের মধ্যে কোন বিরোধের উদ্ভব হইলে সংশ্লিষ্ট পক্ষগণ যদি উহা নিজেদের মধ্যে নিষ্পত্তি করিতে ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে কমিশন উক্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে মধ্যস্থতা করিতে পারিবে এবং কমিশনের মধ্যস্থতার মাধ্যমে প্রদত্ত লিখিত সিদ্ধান্ত
 
সংশ্লিষ্ট পক্ষগণ মানিতে বাধ্য থাকিবে।]
কমিশন কর্তৃক ক্ষমতা অর্পণ
৩২৷ এই আইনের অধীন তত্কর্তৃক প্রয়োগযোগ্য ক্ষমতা, তবে এই ধারা এবং ৯৯ ধারার অধীনে প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা ব্যতীত, কমিশন উহার চেয়ারম্যান বা অন্য কোন কমিশনার, কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা অন্য কোন ব্যক্তিকে প্রবিধান বা সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা কোন শর্তসহ বা শর্ত ব্যতিরেকে অর্পণ করিতে পারে৷
মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব
৩৩৷ (১) মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হইবে টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে সরকারের সাধারণ নীতিমালা নির্ধারণ এবং বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগের উন্নয়নে উত্সাহ দান৷
 
 
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত মন্ত্রণালয়ের সামগ্রিক দায়িত্বের আওতায় নিম্নবর্ণিত সুনির্দিষ্ট দায়িত্বগুলিও অন্তর্ভুক্ত, যথা:-
 
 
 
 
(ক) বাংলাদেশে ও বহির্বিশ্বে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়ের সহায়ক যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ;
 
 
 
 
(খ) দেশীয় সংস্কৃতির উন্নয়ন ও বিকাশ এবং সামাজিক বন্ধন সুসংহত করার লতেগ্য টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিতকরণ এবং এই সকল ক্ষেত্রে উক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারে উত্সাহ প্রদান;
 
 
 
 
(গ) একটি কার্যকর ও আধুনিক জাতীয় টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নের লতেগ্য সরকারী ও বেসরকারী বিনিয়োগের ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিতকরণ এবং সরকারী ও বেসরকারী খাতের পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে উক্ত বিনিয়োগে উত্সাহদান;
 
 
 
 
(ঘ) নিজ উদ্যোগে বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ এবং এই ব্যাপারে আগ্রহী আঞ্চলিক ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সহিত যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ;
 
 
 
 
(ঙ) টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনকারী, টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী এবং এই সকল বিষয়ের সহিত সংশ্লিষ্ট উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মানব সম্পদ উন্নয়নের জন্য শিতগা ও প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচী গ্রহণ;
 
 
 
 
(চ) টেলিযোগাযোগের স্থানীয় উত্পাদন ক্ষমতা এবং উদ্ভাবনমূলক টেলিযোগাযোগ সেবার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য সম্ভাব্য ক্ষেত্রে কমিশন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা প্রদান;
 
 
 
 
(ছ) টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান বা উহা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে, বৈষম্য বা বৈষম্যমূলক আচরণ বা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ বা দূরীকরণের উদ্দেশ্যে কমিশনের অনুরোধে কমিশনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দান;
 
 
(জ) এমন একটি টেলিযোগাযোগ ফোরামের ব্যবস্থা করা যেখানে মন্ত্রণালয়, সরকার, কমিশন, পরিচালনাকারীগণ, গ্রাহকগণ এবং অন্যান্য আগ্রহী পক্ষ মিলিত হইয়া সাধারণ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করিতে পারে;
 
 
 
 
(ঝ) টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় নীতি, প্রশিক্ষণ, মান এবং পদ্ধতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ব্যাপারে সমন্বয় সাধন;
 
 
 
 
(ঞ) উহার নিকট এই আইনের অধীনে দাখিলকৃত সকল আবেদন বা যোগাযোগ নিষ্পত্তি এবং উহার সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা৷
সরকারের ক্ষমতা
5[৩৪৷ এই আইনের আওতায় সরকার-
 
 
(ক) লাইসেন্সযোগ্য বিভিন্ন ধরনের টেলিযোগাযোগ সেবা অনুমোদন করিতে পারিবে;
 
(খ) টেলিযোগাযোগ সেবার বিষয়ে ট্যারিফ, কলচার্জ এবং অন্যান্য চার্জ এবং পরিচালনকারী কর্তৃক উহা নির্ণয়ের পদ্ধতি অনুমোদন করিতে পারিবে;
 
(গ) এই আইন, বিধি বা প্রবিধানে পর্যাপ্ত বিধান না থাকিলে, ট্যারিফ ও পর্যাপ্ত চার্জের হার এবং টেলিযোগাযোগ সেবার কোন বিষয়ে নির্দেশনা (guidelines) জারী এবং যথাযথ সিদ্ধান্তপ্রদান করিতে পারিবে;
 
(ঘ) আন্তর্জাতিক নিয়মাবলী অনুসারে বা কোন আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় টেলিযোগাযোগ বিষয়ে সরকারের অধিকার বা দায়-দায়িত্ব বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে;
 
(ঙ) সময় সময় টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত যে কোন বিষয়ে বিবেচনা ও তদসম্পর্কে সুপারিশের জন্য কমিশনের নিকট প্রেরণ করিতে পারিবে;
 
(চ) টেলিযোগাযোগ, বেতার যোগাযোগ এবং সমপ্রচারের কারিগরি কোন বিষয়ে, যাহা উক্তরূপ যোগাযোগের সহিত সম্পর্কিত এর উপর গবেষণার উদ্যোগ গ্রহণ করিতে বা অর্থ যোগান দিতে বা উহাতে সহায়তা প্রদান করিতে পারিবে;
 
(ছ) আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক টেলিযোগাযোগ সংস্থার সম্মেলন বা সভায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কমিশনকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে;
 
(জ) প্রয়োজনবোধে, কমিশনের পরামর্শ গ্রহণ করিতে পারিবে।]

  • 1
    দফা(ঘ) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৪১নং আইন) এর ৯ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
  • 2
    দফা (জ) এর প্রান্তস্থিত "দাড়ি" চিহ্ন্ টির পরিবর্তে "সেমিকোলন" চিহ্ন প্রতিস্থাপিত এবং অতঃপর নিম্নরূপ উপ-দফা (ঝ) টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৪১নং আইন) এর ১০ ধারাবলে সংযোজিত।
  • 3
    উপ-ধারা (২) এর দফা "(ণ)" দফা "(ন)" এর পরিবর্তে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৪১নং আইন) এর ১০ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
  • 4
    ধারা ৩১ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) আইন, (২০১০ সনের ৪১নং আইন) এর ১১ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
  • 5
    ধারা ৩৪ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৪১নং আইন) এর ১২ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs