প্রিন্ট

07/12/2024
সমবায় সমিতি আইন, ২০০১

সমবায় সমিতি আইন, ২০০১

( ২০০১ সনের ৪৭ নং আইন )

দশম অধ্যায়

সমবায় সমিতিসমূহের অবসায়ন ও বিলুপ্তি

সমবায় সমিতির অবসায়নের আদেশ প্রদান
৫৩৷ নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে নিবন্ধক বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কোন সমবায় সমিতির কার্যক্রম অবসায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কারণ উল্লেখপূর্বক লিখিতভাবে নির্দেশ দিতে পারেন, যদি-
 
 
 
 
(ক) ধারা ৪৩ এর অধীন সম্পাদিত নিরীক্ষা বা ধারা ৪৯ এর অধীন অনুষ্ঠিত তদন্তের ভিত্তিতে, তিনি মনে করেন যে, উক্ত সমিতির অবসায়ন প্রয়োজন;
 
 
 
 
(খ) এতদুদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত সমিতির বিশেষ সাধারণ সভায় উপস্থিত সদস্যদের তিন-চতুর্থাংশ সদস্যের সিদ্ধান্ত অনুসারে আবেদন করা হয়;
 
 
 
 
1[(গ) উক্ত সমিতির পর পর দুটি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত না হয় বা পর পর দুটি সাধারণ সভায় কোরাম না হয়;]
 
 
 
 
(ঘ) উক্ত সমিতি নিবন্ধিত হওয়া সত্ত্বেও বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উহার কার্যক্রম শুরু করা না হয়;
 
 
 
 
(ঙ) উক্ত সমিতির কার্যক্রম বিগত ১ (এক) বত্সর যাবত্ বন্ধ থাকে;
 
 
 
 
2[(চ) সমিতির পরিশেধিত শেয়ার মূলধন বা সঞ্চয় আমানত নির্ধারিত পরিমাণের কম হইয়া যায়;]
 
 
 
 
(ছ) এই আইন বা বিধিমালা বা উপ-আইনে উল্লিখিত নিবন্ধন সংক্রান্ত কোন শর্ত ভংগ করা হয়;
 
 
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, দফা (ঙ) এবং (চ) এর ক্ষেত্রে নিবন্ধক যথাযথ মনে করিলে অবসায়ক নিয়োগ না করিয়া 3[সমিতিকে কারণ দর্শানোর সুযোগ প্রদানপূর্বক নিবন্ধন বাতিল করিতে পারিবেন] ৷
অবসায়ক নিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা কমিটি অকার্যকর
৫৪৷ (১) ধারা ৫৩ এর অধীনে কোন সমবায় সমিতি অবসায়নের আদেশ প্রদান করা হইলে নিবন্ধক কোন ব্যক্তিকে সমিতির অবসায়ক নিয়োগ করিবেন এবং অনুরূপ ব্যক্তিকে অপসারণ করিতে, তাহার স্থলে অন্য ব্যক্তিকে নিয়োগ করিতে এবং অবসায়ন কার্যক্রম চলাকালে অবসায়কের নিকট অন্তর্বর্তী রিপোর্ট চাহিতে পারিবেন৷
 
 
 
 
(২) উপধারা (১) এর অধীনে অবসায়ক নিয়োগ হইলে ব্যবস্থাপনা কমিটি আর কোন ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে না৷
অবসায়কের ক্ষমতা
৫৫৷ (১) অবসায়ক তাহার নিয়োগের তারিখ হইতে সমিতির সমস্ত সম্পদ, সমিতির অধিকারভুক্ত যে কোন সামগ্রী, রেকর্ড পত্র এবং সমিতির ব্যবসা সম্পর্কীয় অন্যান্য দলিলাদি অবিলম্বে তাহার অধিকারে ও দখলে আনিবেন এবং সমিতির বিরুদ্ধে উত্থাপিত দাবী গ্রহণ করিবেন৷
 
 
4[(১ক) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সমবায় সমিতির দায়-দেনা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া না গেলে উহা কোন কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা জাতীয় সমবায় সমিতির সদস্য হইলে, অবসায়ক সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা জাতীয় সমবায় সমিতি হইতে উহার সম্পদ ও দায়-দেনা এর তথ্য সংগ্রহ করিতে পারিবেন।]
 
 
 
(২) বিধি সাপেক্ষে, অবসায়ক নিম্নবর্ণিত যে কোন কার্য করিতে এবং প্রয়োজনীয় আদেশ নির্দেশ দিতে পারিবেন:-
 
 
 
 
(ক) সমিতির পক্ষে বা বিপক্ষে মামলা দায়ের ও পরিচালনা এবং অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ;
 
 
 
 
(খ) অন্য কোন ব্যক্তি বা সমিতির সহিত বিদ্যমান বিরোধ আপোষ কিংবা মীমাংসার ব্যবস্থা করা;
 
 
 
 
(গ) সমিতির বর্তমান, অতীত, কিংবা মনোনীত ব্যক্তি, উত্তরাধিকারী অথবা বৈধ প্রতিনিধির নিকট সমিতির পাওনা নির্ধারণ ও আদায়ের ব্যবস্থা করা;
 
 
 
 
(ঘ) অবসায়নের ব্যয় নির্ধারণ করা এবং সমিতির পরিসম্পদ পর্যাপ্ত না হইলে উক্ত ব্যয় নির্বাহের উদ্দেশ্যে সদস্যদের দায় দায়িত্ব নির্ধারণ করা;
 
 
 
 
(ঙ) সদস্য, সাবেক সদস্য অথবা মৃত সদস্যদের এস্টেটসমূহ, মনোনীত ব্যক্তিবর্গ, উত্তরাধিকারী এবং আইনানুগ প্রতিনিধি কর্তৃক দফা (গ) ও (ঘ) তে বর্ণিত দাবীসমূহসহ, সময়ে সময়ে তাহাদের প্রদেয় চাঁদা নির্ণয় করা;
 
 
 
 
(চ) সমিতির বিরুদ্ধে উত্থাপিত দাবী তদন্ত করা এবং এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে দাবীদারদের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা;
 
 
 
 
(ছ) সমিতির বিরুদ্ধে উত্থাপিত দাবীসমূহ অবসায়নের আদেশের তারিখ পর্যন্ত সুদ সমেত যতদূর সম্ভব পরিশোধ করা;
 
 
 
 
(জ) সমিতির সম্পদ আদায়, সংগ্রহ ও বণ্টন সম্পর্কে বিবেচনামত প্রয়োনজীয় নির্দেশদান করা; 5[***]
 
 
 
 
(ঝ) সমিতির দেনা পরিশোধ হওয়ার পর উদ্বৃত্ত, যদি থাকে, সদস্যদের সম্মতি অনুসারে তাহাদের মধ্যে বণ্টন বা অন্যভাবে নিষ্পত্তি করা6[;
 
 
 
 
(ঞ) সমবায় সমিতির দখলে থাকা কোন সম্পদ অথবা সম্পত্তি, নিবন্ধকের অনুমোদনক্রমে, বিক্রয় করিতে পারিবেন;
 
 
(ট) সমিতির সংশ্লিষ্ট ঋণ বিতরণকারী কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি অথবা জাতীয় সমবায় সমিতিতে উক্ত সমিতির জমাকৃত শেয়ার, সঞ্চয়, বন্ধকী সম্পত্তি বা অন্য কোন আমানত হইতে পাওনা ঋণ সমন্বয় করার পরও যদি ঋণ পাওনা থাকে সেক্ষেত্রে অবসায়ক উক্ত ঋণ আদায়পূর্বক সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় অথবা জাতীয় সমবায় সমিতিকে পরিশোধ করিবেন;
 
 
(ঠ) ঋণ আদায় না হইলে অনাদায়ী ঋণকে কুঋণ হিসাবে চিহ্নিত করিয়া উহা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি অথবা জাতীয় সমবায় সমিতির কুঋণ তহবিলের সাথে সমন্বয় করিতে হইবে এবং এইরূপ সমন্বয়ের পরও ঋণ পাওনা থাকিলে অবসায়ক পাওনা ঋণের তালিকা চূড়ান্ত করিবে;
 
 
(ড) অবসায়ক কর্তৃক পাওনা ঋণের চূড়ান্ত তালিকা পাওয়ার পর নিবন্ধক পাওনা ঋণের তালিকা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি অথবা জাতীয় সমবায় সমিতিকে ঋণ আদায়ের নির্দেশ প্রদান করিবেন এবং উক্ত আদেশ পালন ব্যতীত সংশ্লিষ্ট সমিতির অন্যান্য কার্যাদি বন্ধ থাকিবে এবং এই ক্ষেত্রে নিবন্ধক পাওনা ঋণের চূড়ান্ত তালিকা মোতাবেক সমুদয় ঋণ আদায়ের পর সমবায় সমিতির বিবন্ধন বাতিল করিতে পারিবেন;
 
 
(ঢ) কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি ও জাতীয় সমবায় সমিতির কোন সদস্য সমবায় সমিতি অবসায়নে ন্যস্ত হইলে সংশ্লিষ্ট সমবায় সমিতির সকল পাওনা অবসায়কের নিকট প্রদান করার জন্য কেন্দ্রীয সমবায় সমিতি ও জাতীয় সমবায় সমিতির দায়িত্বে নিয়োজিত সচিব এবং সভাপতি বাধ্য থাকিবেন এবং এইরূপ ক্ষেত্রে যে কোন অসহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অবসায়কের সুপারিশের প্রেক্ষিতে নিবন্ধক মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিতে পারিবেন, তবে অবসায়কের যে কোন ধরনের অসহযোগিতা সরকারি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হিসেবে গণ্য করা হইবে;
 
 
(ণ) অবসায়নে ন্যস্ত সমবায় সমিতির সদস্যদের দায় এর তালিকা অবসায়ক চূড়ান্ত করার পর নিবন্ধক উহা অনুমোদন করিবেন এবং উক্ত তালিকা মোতাবেক ঋণ আদায়ে কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা জাতীয় সমবায় সমিতি বাধ্য থাকিবে, তবে নিবন্ধক এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বা জাতীয় সমিতিকে ঋণ আদায় করার নির্দেশ প্রদান করিবেন এবং উক্ত আদেশ পালন ব্যতীত সমিতির অন্যান্য কার্যাদি বন্ধ থাকিবে এবং এই ক্ষেত্রে ৬ (ছয়) বৎসর অতিক্রান্ত হওয়ার পর সমিতির নিবন্ধন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হইয়া যাইবে;
 
 
(ত) অবসায়ন কার্যে কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা জাতীয় সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটি কিংবা নির্বাহী কর্তৃপক্ষ অবসায়ককে অসহযোগিতা করিলে, নিবন্ধক ধারা ৮৪ মোতাবেক সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনা কমিটি কিংবা নির্বাহী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করিতে পারিবে।]
 
 
 
 
(৩) সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির সকল সদস্য, সমিতির সদস্য এবং সকল কর্মচারী অবসায়কের দায়িত্ব পালনে তাহাকে সকল প্রকার সহযোগিতা দিতে বাধ্য থাকিবেন৷
অবসায়ক কর্তৃক ধার্যকৃত পাওনা পরিশোধের অগ্রাধিকার
৫৬৷ দেউলিয়া বিষয়ক আইন, ১৯৯৭ (১৯৯৭ সনের ১০নং আইন) এ ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন দেউলিয়ার নিকট অবসায়ন প্রক্রিয়াধীন সমিতির পাওনা থাকিলে উক্ত পাওনা সরকারী বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পাওনার পরবর্তী ক্রমমানে অগ্রাধিকার পাইবে৷
অবসায়কের খাতাপত্র জমাকরণ এবং চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল
৫৭৷ যখন কোন সমবায় সমিতির অবসায়ন সম্পন্ন হয় তখন অবসায়ক নিবন্ধকের নিকট নির্ধারিত পদ্ধতিতে সমিতির রেকর্ডপত্র জমা দিবেন এবং চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করিবেন৷
অবসায়ন শেষে নিবন্ধন বাতিলকরণে নিবন্ধকের ক্ষমতা
7[(১)] ৫৮৷ অবসায়কের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিবন্ধক সমিতির নিবন্ধন বাতিল করার আদেশ দিতে পারিবেন, এবং এইরূপ প্রতিবেদন প্রাপ্তির পূর্বে যে কোন সময় কারণ উল্লেখপূর্বক অবসায়ন কার্যক্রম বন্ধ রাখিয়া সমিতির অস্তিত্ব বহাল রাখিতে পারিবেন৷
 
 
 
 
8[(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন সমবায় সমিতির নিবন্ধন বাতিল হইলেও বাতিলকৃত সমবায় সমিতির সদস্যের নিকট সরকারি পাওনা থাকিলে ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্তৃপক্ষ অবসায়কের প্রতিবেদন মোতাবেক সরকারি পাওনা হিসাবে আদায় করিতে পারিবে।]

  • 1
    দফা (গ) সমবায় সমিতি (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০১ নং আইন) এর ২৯(ক) ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
  • 2
    দফা (চ) সমবায় সমিতি (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০১ নং আইন) এর ২৯(খ) ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
  • 3
    “সমিতিকে কারণ দর্শানোর সুযোগ প্রদানপূর্বক নিবন্ধন বাতিল করিতে পারিবেন” শব্দগুলি “সমিতির নিবন্ধন সরাসরি বাতিল করিতে পারেন” শব্দগুলির পরিবর্তে সমবায় সমিতি (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০১ নং আইন) এর ২৯(গ) ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
  • 4
    উপ-ধারা (১ক) সমবায় সমিতি (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০১ নং আইন) এর ৩০(ক) ধারাবলে সন্নিবেশিত।
  • 5
    “এবং” শব্দটি সমবায় সমিতি (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০১ নং আইন) এর ৩০(খ) ধারাবলে বিলুপ্ত।
  • 6
    “;” সেমিকোলন প্রান্তস্থিত “।“ দাড়ি এর পরিবর্তে প্রতিস্থাপিত এবং অতঃপর দফা (ঞ), (ট), (ঠ), (ড), (ঢ), (ণ) ও (ত) সমবায় সমিতি (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০১ নং আইন) এর ৩০(খ) ধারাবলে সংযোজিত।
  • 7
    উপ-ধারা (১) হিসাবে ধারা ৫৮ এর বিদ্যমান বিধান সমবায় সমিতি (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০১ নং আইন) এর ৩১ ধারাবলে সংখ্যায়িত।
  • 8
    উপ-ধারা (২) সমবায় সমিতি (সংশোধন) আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ০১ নং আইন) এর ৩১ ধারাবলে সংযোজিত।
Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs